• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গ্রাফিক্সকার্ড কেনার আগে জেনে নিন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: তৌহিদুল ইসলাম
মোট লেখা:২৬
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
চিপ ডিজাইন
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গ্রাফিক্সকার্ড কেনার আগে জেনে নিন

স্পার্কেল জিফোর্স জিটিএক্স ৫৫০টিআই: যারা একটু কম বাজেটের গেমিং পিসি তৈরি করতে চান তাদের জন্য বাজারে এসেছে স্পার্কেল কোম্পানির জিটিএক্স ৫৫০টিআই। ৫৬০টিআই বাজারে আসার বেশ কিছুদিন পর ৫৫০টিআই-এর বাজারে আসা। এ কার্ডের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ, এটি এনভিডিয়া কোম্পানির চিপ জিএফ ১১৬ ব্যবহার করে তৈরি করা। যদিও আগের ৫৮০, ৫৬০টিআই কার্ডগুলোতেও এ ইঞ্জিন ছিল। তথাপি আগের কার্ডগুলো থেকে এ কার্ডে বড় ধরনের মেমরি বাসের (১৯২১২৮) ব্যবহার হওয়ায় এর পারফরম্যান্স অনেক বেশি। জিএফ ১১৬ ইঞ্জিনের মূল সুবিধাগুলো হলো- এটি কম তাপ উৎপাদন করে, প্রসেসর উচ্চগতিসম্পন্ন, বড় ধরনের মেমরি বাস ব্যবহার করা যায়, কম বিদ্যুৎ খরচ। এ কার্ডের শেডার ইউনিট খুবই শক্তিশালী। আগের ৪৫০টিআই কার্ডের সমপরিমাণ ১৯২টি শেডার ইউনিট আছে। এটি ৯০০ থেকে ১০২৫ মেগাহার্টজ ক্লক গতিতে কাজ করতে পারে। কার্ডটিতে অ্যালুমিনিয়ামের হিটসিঙ্ক, বড় ধরনের ফ্যান ব্যবহার করায় কার্ডের তাপ দ্রুত শোষণ করতে পারে। কার্ডটির আউটপুটে আছে দুটি ডিভিআই পোর্ট এবং একটি মিনি এইচডি এমআই পোর্ট। কার্ডটি বেশিরভাগ গেমই ৬০ ফ্রেম/সে. গতিতে চালাতে পারে। কিছু কিছু গেম (রেসিডেন্ট এভিল, ফারক্রাই-২) ৭০ ফ্রেম/সে.-এর চেয়েও বেশি গতিতে রান করে। সর্বোচ্চ রেজ্যুলেশন (১৯২০১০৮০) ব্যবহার করে গেম চালালে ফ্রেম রেট কিছুটা কমে যায়। থ্রিডি মার্ক ভেনটেজে কার্ডটির মোট পারফরম্যান্স পাওয়া যায় ১২২৫২ স্কোর।

এক্সএফএক্সআর ৭৯৭০ ব্ল্যাক এডিশন : নতুন আর্কিটেকচার সমৃদ্ধ গ্রাফিক্সকার্ড এএমডির রেডিশন এইচডি ৭৯৭০, যা ২৮ ন্যানোমিটার প্রসেসর আর্কিটেকচারে তৈরি করা। কার্ডটির প্রসেসর ৪.৩১ বিলিয়ন ট্রানজিস্টরে তৈরি। এটি এএমডির জিসিএন (গ্রাফিক্স কোর নেক্সট) আর্কিটেকচার সমৃদ্ধ, যা গ্রাফিক্সকে পলিগনের মতো রেন্ডার করতে পারে। জিপিইউটির কোডনেম তাহিতি। কার্ডটির ফিচারগুলোই বলে দেয় গ্রাফিক্স নিয়ে এএমডির পরবর্তী পদক্ষেপ। কার্ডটির মেমরি বাস ৩৮৪ বিটবিশিষ্ট, যা রেডিয়ন এইচডি ৬৯৭০-এর ২৫৬ বিটের বেশি। মেমরিতে যুক্ত আছে ডিডিআর-৫-এর তিন গি.বা.। প্রসেসর সর্বোচ্চ ১৩৭৫ ও সর্বনিম্ন ৯২৫ মেগাহার্টজ ক্লকগতিতে চলতে পারে। প্রসেসরটিতে ২০৪৮টি স্ট্রিম প্রসেসর রয়েছে। শেডার ইউনিট আছে ১২৮টি। কার্ডটি পিসিআই-৩ সাপোর্ট করে। তাপ থেকে সুরক্ষার জন্য এতে দুটি ফ্যান আছে। এর অনন্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে সলিড স্টেট ক্যাপাসিটর, ফেরাইট কোর চোখ, ২ আউন্সের মোটা কপার পুরুত্বের পিসিবি। কার্ডটির নামের সাথে যুক্ত করা হয়েছে ডাস্ট ফ্রি। কারণ কার্ডটির কুলিং সিস্টেম এমনভাবে তৈরি, যা ৫ গতিতে চলা ফ্যানের বাতাসের জন্য ধুলা জমতে দেয়ে না। ওভারক্লক মোডে ৫০-৬০ মেগাহার্টজ প্রসেসিং স্পিড বাড়ে, যার জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। এ কার্ডে পাওয়ার কানেক্টর হিসেবে ৮৬ পিনের পিসিআই কানেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে। আউটপুটে তিনটি মনিটর একত্রে ব্যবহার করা যায়।

স্পার্কেল জিফোর্স জিটিএক্স ৫৮০ ভিজিও : বড় স্ক্রিনে গেম খেলার মজাই অন্যরকম। কিন্তু অনেক গ্রাফিক্সকার্ডের পারফরম্যান্স খুব ভালো হওয়া সত্ত্বেও খুব বড় স্ক্রিন সাপোর্ট করে না। ফলে অনেক গেমার বড় স্ক্রিনের গেম খেলার স্বাদ নিতে পারেন না। এদিক থেকে এগিয়ে আছে স্পার্কেলের ৫৮০ ভিজিও।

এ কার্ডটি ৩৮৪ বিটের মেমরি বাস ব্যবহার করে, যার ফলে তা শুধু গেমের পারফরম্যান্স বাড়ায় না, বাড়তি হিসেবে বড় স্ক্রিনের রেজ্যুলেশন সাপোর্ট করে। কার্ডের মূল প্রসেসরটি এনভিডিয়া ফার্মি আর্কিটেকচার জিএফ ১১০ দিয়ে তৈরি করা। যদিও এ ইঞ্জিন দিয়ে জিটিএক্স ৪৮০ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ৪৮০ কার্ডটি ব্যবহার করতো একটি স্ট্রিমিং প্রসেসর। সেখানে ৫৮০ ভিজিও ব্যবহার করে ১৬টি স্ট্রিমিং প্রসেসর। ১৬টি স্ট্রিমিং প্রসেসর একত্রে কাজ করলেও এর শক্তিশালী কুলিং সিস্টেমের জন্য খুব কম গরম হয়। পারফরম্যান্স ঠিক রাখতে এতে যুক্ত করা হয়েছে ডিডিআর-৫-এর ১.৫ গি.বা. মেমরি। প্রসেসরের কোর ক্লকস্পিড ৭৭২ মেগাহার্টজ এবং মেমরি ক্লকস্পিড ১০০২ মেগাহার্টজ। ৩৮৪ বিটের মেমরি বাস ব্যবহার করায় কম মেমরি থাকা সত্ত্বেও পারফরম্যান্স ভালো পাওয়া যায়। থ্রিডি মার্ক-১১-এ ওভার অল পারফরম্যান্স পাওয়া যায় ১৬৩২।



গিগাবিট জিভি-আর৬৯৫০সি-১ জিবি : গেম খেলার পাশাপাশি ব্লুরের ভিডিও সুন্দরভাবে উপভোগে এ কার্ডের জুড়ি নেই। কারণ কার্ডটি ব্লুরের থ্রিডি সাপোর্ট করে। পাশাপাশি এতে যুক্ত ইউভিডি-৩ ইঞ্জিন যা এইচডি সাপোর্ট করে। উন্নত সিগন্যাল পাওয়ার জন্য এর এইচডিএসআই পোর্টটি গোল্ড প্লেটেড করে তৈরি করা হয়েছে। ৩টি শক্তিশালী ফ্যান, ৮ মিমির দুটি কপারের হিট পাইপ এবং ১৪০৮৬ মিমি ভেপুর চেম্বার নিয়ে এর কুলিং সিস্টেম। ফলে কার্ডটি খুব বেশি গরম হয় না।

জিপিইউ কেনার গাইডলাইন : বর্তমান সময়ে গ্রাফিক্সকার্ড কিনতে হলে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

প্রথমত, দেখতে হবে গ্রাফিক্সকার্ডের প্রসেসরটি কোন কোম্পানির তৈরি, কোন আর্কিটেকচারে এবং কত ন্যানোমিটার টেকনোলজিতে তৈরি। প্রসেসরটিতে ট্রানজিস্টরের পরিমাণ কত, মূল কোর স্পিড কত এবং ওভারক্লকিং মোডে সর্বোচ্চ কত স্পিডে কাজ করতে পারে। কারণ মাল্টিটাস্কিং কাজের ক্ষেত্রে ওভারক্লকিংয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রসেসরটিতে কয়টি স্ট্রিমিং প্রসেসর আছে। বর্তমানে বিভিন্ন কার্ডের ধরন অনুযায়ী স্ট্রিমিং প্রসেসরের সংখ্যা ১২৮ থেকে শুরু করে ২০৪৮ পর্যন্ত পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়ত, কার্ডটিতে কী পরিমাণ ভিডিও মেমরি আছে। কারণ ভিডিও মেমরি যত বেশি হবে তত বড় গ্রাফিক্সের কাজ করতে সুবিধা হয়। বর্তমানে বেশিরভাগ কার্ডেই জিডিডিআর-৩ অথবা জিডিডিআর-৫ ব্যবহার হচ্ছে। তবে ডিডিআর-৩ থেকে ডিডিআর-৫-এর ব্যান্ডউইডথ বেশি বলে পাঁচের কার্যক্ষমতা বেশি। প্রসেসর থেকে মেমরিতে যে চ্যানেলে ডাটা আদান-প্রদান করে তাকে মেমরি বাস বলে। বাস উইডথ যত বড় হবে তত ডাটা আদান-প্রদান প্রসেসর ও মেমরিতে দ্রুত হবে। বর্তমানে বিভিন্ন কার্ডে ১২৮, ২৫৬, ৩৮৪, ৪৮০ পর্যন্ত বাস ব্যবহার হচ্ছে।



মাল্টি জিপিইউ সাপোর্ট গ্রাফিক্সকার্ডের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাল্টি জিপিইউ সাপোর্ট অপশন থাকলে পিসিতে একত্রে দুটি বা তিনটি গ্রাফিক্সকার্ড ব্যবহার করা যায়, যা পিসি ব্যবহারে বাড়তি সুবিধা দেবে।

গেম খেলায় ডিরেক্ট এক্সের ভূমিকা ব্যাপক। গেমের থ্রিডি পারফরম্যান্স বাড়াতে ডিরেক্ট এক্স কাজ করে। আর গ্রাফিক্সকার্ডটি যদি সর্বশেষ ভার্সনের ডিরেক্ট এক্স সাপোর্ট না করে, তবে নতুন আসা অনেক গেমই আপনার কার্ডে চালাতে পারবেন না। তাই কার্ড কেনার সময় দেখা উচিত ডিএক্স কত ভার্সন সাপোর্ট করে।

গ্রাফিক্সকার্ডের শেডার ইউনিটের কাজ হলো বিভিন্ন ধরনের রং তৈরি করা। ইনপুটের ছবি অনুযায়ী রং তৈরি করে ছবির বিভিন্ন অংশে বসিয়ে ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করা। শেডার ইউনিটকে টেক্সচার ইউনিটও বলা হয়। কার্ড কেনার ক্ষেত্রে কার্ডটিতে কয়টি শেডার/টেকচার ইউনিট আছে তা দেখতে হবে। শেডার ইউনিট যত বেশি হবে তত দ্রুত বেশি রংয়ের সমন্বয় খুব কম সময়ে করা যাবে। বর্তমানের কার্ডগুলোতে ১২৮ থেকে ৩২০ পর্যন্ত শেডার ইউনিট পাওয়া যায়।

যেকোনো গ্রাফিক্সকার্ডের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি পেতে সঠিক পাওয়ার সাপ্লাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জিপিইউ যে ওয়াটে চলবে তার থেকে কম ওয়াট হলে তার সঠিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হবে। অনেক সময় অতিরিক্ত/কম ভোল্টেজের কারণে আসেত্ম আসেত্ম কার্ডটি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জিপিইউ কেনার আগে কার্ডটির চলতে কত ওয়াট দরকার, কার্ডের পাওয়ার কানেক্টর কি ধরনের, পিএসইউ ইউনিটে শর্টসার্কিট প্রোটেকশন আছে কি না দেখা, কতটুকু কম ও বেশি ভোল্টেজে পিএসইউ ঠিকমতো কাজ করে তা জেনে পিএসইউ কেনা উচিত।

জিপিইউর কুলিং সিস্টেম কার্ডের আয়ু বাড়াতে বড় ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে দুটি ও তিনটি ফ্যানের গ্রাফিক্সকার্ড বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ওভারক্লকিং মোডে যদি কার্ডটি খুব গরম হয় তবে বুঝতে হবে কার্ডের কুলিং সিস্টেম খুব ভালো নয়। ফ্যানের স্পিড, হিট সিঙ্ক কি অ্যালুমিনিয়ামের? হিট পাইপ কয়টি? জিপিইউ ডাস্ট ফ্রি কি না দেখে কার্ড সিলেক্ট করা উচিত।

পরিশেষে দেখতে হবে কার্ডটির আউটপুটে কত ধরনের পোর্ট রয়েছে। অর্থাৎ কয়টি ডিভিআই, কয়টি এইচডিএমআই, কয়টি ডি-সাব পোর্ট আছে। এইচডিএমআই ভার্সন কত সাপোর্ট করে। বর্তমানে এইচডিএমআই ১.৪-এ ভার্সন কাজ করছে। এতকিছুর পর কার্ডটিতে আপনি কত দিনের ওয়ারেন্টি পাচ্ছেন তাও চিন্তা করুন। বেশিরভাগ কার্ডেই এখন তিন বছর ওয়ারেন্টি দিচ্ছে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : tohid@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস