লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
ট্রাবলশুটার টিম
পিসির ঝুটঝামেলা
সমস্যা :
আমার মোবাইলে সিম্ফোনি ডবিস্নউ২০ মডেলে অপারেটিং সিস্টেম দেয়া আছে অ্যান্ড্রয়িড ২.৩ জিঞ্জারব্রেড। সেটটির র্যাম (র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরি) ২৫৬ মেগাবাইট এবং রম (রিড অনলি মেমরি) ৫১২ মেগাবাইট। মেমরি কার্ডকে কি রম হিসেবে ব্যবহার করা যায়? যদি যায় তবে তা কীভাবে করতে হয়? এতে ফোনের কোনো ক্ষতি হবে কি না জানালে উপকৃত হব।
-আবু সায়েদ
সমাধান :
সিম্ফোনি ডবিস্নউ২০ মডেল মেমরি কার্ড দিয়ে মেমরি বাড়ানো যায় ১৬ গিগাবাইট পর্যন্ত। র্যাম হচ্ছে মোবাইলের ইন্টারনাল মেমরি, তা বদল করা যায় না। মেমরি কার্ড লাগালে তা হবে মোবাইলের এক্সটারনাল মেমরি, যা ইন্টারনাল মেমরির সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। অ্যান্ড্রয়িড মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশনগুলোর যেগুলোকে র্যাম থেকে সরানো যায় না, তা সেখানেই রেখে দিন। অ্যান্ড্রয়িড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য গুগলের বানানো অ্যাপ্লিকেশন মার্কেটপ্লেস গুগলপ্লে থেকে মুভ টু এসডি কার্ড নামে সার্চ দিলে বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন পাবেন। এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশনের কাজ হচ্ছে রমে ইনস্টল করা অ্যাপ্লিকেশনগুলো এসডি কার্ডে ট্রান্সফার করা। মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশনের তালিকা থেকে পছন্দমতো অ্যাপ্লিকেশনগুলো মোবাইলের ইন্টারনাল মেমরি থেকে এক্সটারনাল মেমরিতে নিয়ে যাওয়া যাবে খুব সহজেই। এতে ইন্টারনাল মেমরি বা রম ফাঁকা থাকবে এবং মোবাইলে আরও বেশি অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করতে পারবেন। মোবাইলের র্যাম কম হওয়ার কারণে বেশ কিছু অ্যাপ্লিকেশন সেস্না চলতে পারে বা নাও চলতে পারে। সেজন্য মেমরি কার্ডের একাংশ র্যাম হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। আমরা পিসিতে র্যামের পারফরম্যান্স বাড়ানোর জন্য পিসির হার্ডডিস্কের পেজফাইল বানিয়ে নিই। ঠিক তেমনি মেমরি কার্ডের কিছু জায়গা র্যামের ওপর চাপ কমানোর জন্য ছেড়ে দেয়া যায়। এজন্য এসডি কার্ড পার্টিশন করে নিতে হবে। এ পদ্ধতিকে রুটিং (Rooting) বা রুট (Root) করা বলে। রুট করতে গেলে মোবাইলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি মোবাইল নষ্টও হয়ে যেতে পারে। তাই এ ঝামেলায় না যাওয়াই ভালো। রুট করতে চাইলে গুগলে সার্চ করে কীভাবে রুট করতে হয় তা জানার জন্য সার্চ করুন। এ বিষয়ে অনেক টিউটরিয়াল পাবেন।
সমস্যা :
মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে জেলকে নামে একটি টার্ম ব্যবহার করা হয়, এর মানে কী?
-হাসান মাসুদ, মোহাম্মদপুর
সমাধান :
জেলব্রেক ও জেলব্রেকিং শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয় অ্যাপলের ডিভাইসের ক্ষেত্রে, যা আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে চলে। অ্যাপল তাদের ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে রাখে, যাতে তা কন্ট্রোল না করা যায়। আইওএসে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। প্রথমত, নতুন কোনো অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল বা মডিফাই করা, অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল যাতে না করা যায় তা প্রতিরোধ করা, এ কাজ করা হয় লকড বুটলোডারের সাহায্যে। দ্বিতীয়ত, অজানা কোনো উৎস থেকে বা থার্ডপার্টি অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করতে না দেয়া। তৃতীয়ত, ইউজারের ইনস্টল করা কোনো অ্যাপ্লিকেশন মোবাইলের রুট ডিরেক্টরিতে যাতে না যেতে পারে তা প্রতিরোধ করা। অ্যাপলের মোবাইলে অপারেটিং সিস্টেমের এ প্রতিরোধগুলোকে বাইপাস করার পদ্ধতিকে বলা হয় জেলব্রেকিং। জেলব্রেক করতে পারলে ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমে ইচ্ছেমতো কিছু মডিফিকেশন করা যায় এবং আরও অনেক কিছু করা যায়। আন্ড্রয়িড অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিকে রুটিং বলা হয়। দুটি পদ্ধতির একই কাজ। তা হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেমের ওপর আরও বেশি কন্ট্রোল করার ক্ষমতা অর্জন করা।
সমস্যা :
আমি কয়েক মাস আগে নতুন পিসি কিনেছি। আমার পিসির কনফিগারেশন- ইন্টেল কোরআই৩-৩২২০ মডেল ৩.৩ গিগাহার্টজ প্রসেসর, গিগাবাইট জিএ-এম৬৮এমটি মাদারবোর্ড, ট্রান্সসেন্ড ৪ গিগাবাইট ১৩৩৩ বাসস্পিড ডিডিআর৩ র্যাম, স্যাফায়ার রাডেওন এইচডি ৭৭৫০ গ্রাফিক্স কার্ড ও স্যামসাং ৫০০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক। নতুন গেমগুলো মোটামুটি ভালোই চলছে। কিন্তু হাই ডিটেইলসে দিলে কিছুটা আটকে যায়। এক বন্ধু পরামর্শ দিল পিসি ওভারক্লক করতে। বলল ওভারক্লক করলে নাকি ফুল ডিটেইলসে গেম খেলা যাবে। আমার প্রশ্ন- ওভারক্লক কী, কীভাবে করতে হয় এবং ওভারক্লক করলে পিসির কোনো সমস্যা হবে কি না?
-আরিফুর রহমান, সূত্রাপুর
সমাধান :
বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া ওভারক্লক করা উচিত নয়। ওভারক্লক করলে প্রসেসরের ওপর চাপ পড়ে, বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়, প্রসেসর সাধারণের তুলনায় অনেক বেশি গরম হয়ে যায় এবং পুরো সিস্টেমের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। আগে ভালো করে চিন্তা করে নিন সত্যিই ওভারক্লকিং করা আপনার দরকার কি না। ওভারক্লক করলে পিসির পারফরম্যান্সে কিছু ভালো হবে ঠিকই। কিন্তু তারচেয়ে প্রসেসর বা গ্রাফিক্সকার্ড আপগ্রেড করে ভালোমানের পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট লাগিয়ে নিলে আরও ভালো পারফরম্যান্স পাবেন। ওভারক্লক করতে হলে ভালোমানের পাওয়ার সাপ্লাই, ভালোমানের থার্মাল ক্যাসিং যাতে ভালো ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেই সাথে বাড়তি কুলিং ফ্যান ও প্রসেসর কুলার লাগবে। আপনার পিসির কনফিগারেশন অনুযায়ী কোরআই৫ প্রসেসর বা আরেকটু হাইএন্ড গ্রাফিক্সকার্ড লাগিয়ে নিলেই নতুন গেমগুলো ফুল ডিটেইলসে খেলতে পারবেন অনায়াসে। ওভারক্লক করার ফলে যদি পিসির কোনো যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়, তবে তার জন্য ওয়ারেন্টি পাওয়ার নিশ্চয়তা অনেক কমে যাবে। অনেকে তাদের পণ্যে উল্লেখ করে থাকে যে ওভারক্লক করার ফলে নষ্ট হলে তার ওয়ারেন্টি তারা দেবে না। তাই কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ। মাদারবোর্ডের বায়োস থেকে ওভারক্লক করা যায়। এ ছাড়া নানা ধরনের ওভারক্লকিং সফটওয়্যার রয়েছে, যার সাহায্যে ওভারক্লক করা যায়। ওভারক্লক বলতে প্রসেসর বা গ্রাফিক্স কার্ডের ক্লকস্পিড পরিবর্তন করে বাড়ানোকে বোঝায়। যেমন আপনার পিসির প্রসেসরের ক্লকস্পিড ৩.০ গিগাহার্টজ এবং আপনি চাচ্ছেন তা ওভারক্লক করতে। তাহলে তা ওভারক্লক করে ৩.২ বা ৩.৪ গিগাহার্টজ বানানো যাবে। গ্রাফিক্স কার্ডের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি একই। র্যামও ওভারক্লক করা যায়। এ ক্ষেত্রে র্যামের বাসস্পিড পরিবর্তন করে তা বাড়ানো হয়। সব ক্ষেত্রেই ওভারক্লক করা হলে যন্ত্রাংশটির ১০০ ভাগ ব্যবহার করা হয়। সাধারণভাবে কমপিউটারে কাজ করলে আইডল অবস্থায় প্রসেসর ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ পাওয়ার কম টানে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। কিন্তু ওভারক্লক করা হলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় যাবে না সবসময়ই শতভাগ ব্যবহার করবে, যা যন্ত্রাংশের জন্য খারাপ। পর্যাপ্ত পাওয়ার সাপ্লাই ও কুলিং প্রসেস না থাকলে সিস্টেমের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। আপনার পিসি কয়েক মাস আগে কিনেছেন, তার অর্থ আপনার পিসির ওয়ারেন্টি আছে। ওভারক্লক করার ফলে যন্ত্রাংশ পুড়ে গিয়ে যদি ক্ষতি হয় তবে তার ওয়ারেন্টি পাবেন না। তাই ওভারক্লক না করে পিসির প্রসেসর বা গ্রাফিক্স কার্ড আপগ্রেড করে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ
কজওয়েব
ফিডব্যাক : jhutjhamela@comjagat.com