• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ওয়েব যেভাবে নিজের কাজে লাগাতে পারেন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ওয়েব
তথ্যসূত্র:
ইন্টারনেট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ওয়েব যেভাবে নিজের কাজে লাগাতে পারেন
ওয়েবের প্রাথমিক কিছু বিষয় নিয়েই এ ধারাবাহিক লেখাটি। আমরা যারা প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তাদের অনেকেই হয়তো এ বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত নন। ওয়েবের এই প্রাথমিক ধারণা নিয়ে একে নিজের কাজে লাগাতে পারেন। শুরুতেই আমরা কিছু পরিচিত কিন্তু অজানা শব্দাবলীর সাথে পরিচিত হব এবং এরপর দেখে নেব এগুলোর ব্যবহার।

বিশিষ্ট শব্দাবলী : ওয়েব বিভ্রান্তিকর হতে পারে এমন কিছু শব্দের সাথে পরিচিত হওয়া দরকার। ভাইরাসগুলোর মতো বা আইপি ঠিকানাগুলো বা স্পাইওয়্যার। এ লেখায় কিছু সাধারণ প্রযুক্তিগত শব্দের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং যতটা সম্ভব সহজ ও সঠিকভাবে এগুলোর ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ব্রাউজার : আপনার কমপিউটারে এটি হওলো সেই প্রোগ্রাম, যা ওয়েবসাইটগুলো দেখতে ব্যবহার করেন। ক্রোম, ফায়ারফক্স, ইন্টারনেট এক্সপেস্নারার, ওপেরা ও সাফারি ইত্যাদি জনপ্রিয় ব্রাউজার।

ডিএনএস : যেহেতু ইন্টারনেটে প্রচুর ওয়েবসাইট এবং আইপি ঠিকানা রয়েছে, তাই আপনার ব্রাউজার স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানাতে পারে না এর প্রত্যেকটি কোথায় অবস্থিত। প্রত্যেকটি খুঁজে দেখতে হয়, যার ফলে ডিএনএস (ডোমেইন নেম সিস্টেম) দরকার। ডিএনএস হলো ওয়েবের জন্য একটি ফোন বুক। একটি ফোন নম্বরে জন ডোয়েকে অনুবাদ করার পরিবর্তে ডিএনএস একটি ইউআরএল www.google.com-কে আইপি ঠিকানাতে অনুবাদ করে এবং আপনাকে অভীষ্ট সাইটে নিয়ে যায়।

আইপি ঠিকানা : প্রত্যেক ওয়েব ঠিকানার (যেমন www.google.com) একটি নিজস্ব নম্বরযুক্ত ঠিকানা আছে, যাকে আইপি ঠিকানা বলে। একটি আইপি ঠিকানা এই ধরনের দেখতে : ৭৪.১২৫.১৯.১৪৭। একটি আইপি ঠিকানা হলো একটি নম্বরের সিরিজ, যা একটি নির্দিষ্ট কমপিউটার অথবা মোবাইল কোথায় থেকে ইন্টারনেট করছে তা নির্দিষ্ট করে। আইপি ঠিকানা আপনার কমপিউটারকে বলে দেবে কীভাবে ইন্টারনেটে অন্য কমপিউটারের সাথে যোগাযোগ করা যায়।
দূষিত : আপনার কমপিউটার অথবা মোবাইল ডিভাইসে নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষতি করার জন্য ডিজাইন করা সফটওয়্যার হলো ম্যালওয়ার। এটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে :

অ্যাডওয়্যার : সফটওয়্যার, যা একটি কমপিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্লে, প্রদর্শন বা বিজ্ঞাপনগুলো ডাউনলোড করে।

স্পাইওয়্যার : সফটওয়্যার, যা ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে অজ্ঞাতে ছোট ছোট তথ্য সংগ্রহ করে।

ট্রোজান হর্স : ধংসাত্মক সফটওয়্যার, যা একটি উপকারী অ্যাপ্লিকেশনের মতো আচরণ করে। সফটওয়্যারটি প্রাথমিকভাবে কিছু উপকার করে, কিন্তু তার পরিবর্তে আপনার কমপিউটার বা মোবাইল ডিভাইস থেকে তথ্য চুরি করে।

ভাইরাস : আপনার কমপিউটারের সফটওয়্যারের একটি অংশ, যা কমপিউটার এবং কমপিউটারের ফাইলগুলোকে আক্রান্ত করতে পারে।

ওয়ার্ম : আপনার কমপিউটারের সফটওয়্যারের একটি অংশ, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্য কমপিউটারগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
ফিশিং : ফিশিং হলো এক ধরনের অনলাইন জালিয়াতি, যেখানে কেউ অনলাইনে কৌশলে কোনো লোকের পাসওয়ার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যের মতো জরুরি তথ্য ভাগ করে। ফিশিং সাধারণত ই-মেইল, বিজ্ঞাপন বা তাৎক্ষণিক বার্তার মতো অন্য যোগাযোগের মধ্য দিয়ে করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ কোনো লোককে একটি ই-মেইল করতে চেষ্টা করতে পারে, যা তার কাছে তার ব্যাংকের মতো ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চায়।

এসএসএল এনক্রিপশন : এমন এক প্রযুক্তি, যা কমপিউটারের মধ্যে একটি নিরাপদ যোগাযোগ পথ স্থাপন করে। যদি একটি ওয়েবসাইট এসএসএল এনক্রিপশন সমর্থন করে, তাহলে ইন্টারনেটে ওই ওয়েবসাইট থেকে পাঠানো ডাটা আড়ি পাতাদের থেকে সুরক্ষিত থাকা উচিত।

স্প্যাম : অযাচিত বাল্ক বার্তা পাঠানোর জন্য ইলেকট্রনিক বার্তা পাঠানোর অপব্যবহার।
কার্যপরিচালক বা কার্যকলাপ মনিটর : আপনার কমপিউটারের একটি প্রোগ্রাম, যা আপনার কমপিউটারে বর্তমানে সফটওয়্যারের ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য দেয়। যদি আপনার ব্রাউজার অথবা একটি ওয়েবসাইট বন্ধ করতে না পারেন, তাহলে আপনার কার্যপরিচালক বা কার্যকলাপ মনিটর প্রক্রিয়া এবং প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করতে পারেন। এতে অ্যাক্সেস করতে আপনার কমপিউটারে কার্যকলাপ মনিটর বা কার্যপরিচালকের জন্য একটি অনুসন্ধান করার চেষ্টা করুন।
ইউআরএল : ইউআরএল হলো একটি ওয়েব ঠিকানা, যা আপনাকে কোনো ওয়েবসাইটে পৌঁছতে ব্রাউজারে টাইপ করতে হয়। প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটি ইউআরএল থাকে। উদাহরণস্বরূপ, www.google.com ইউআরএলটি আপনাকে গুগলের ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।

ডচঅ২ : এটি একটি সুরক্ষা প্রযুক্তি, যা আপনার নেটওয়ার্কে ট্রাফিক এনক্রিপ্ট করার মাধ্যমে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ককে রক্ষা করে। এ ছাড়া অননুমোদিত ব্যবহারকারীদের জন্য আপনার নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস আরও কঠিন করে দেয়।
ইন্টারনেট কী : ইন্টারনেট হলো কমপিউটারের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক, যেখানে একটি অপরটির সাথে যুক্ত থাকে। যখন আপনি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হন, তখন বিশ্বব্যাপী ওয়েবে অ্যাক্সেস পান, যা হলো এমন একটি লাইব্রেরি, যা তথ্যযুক্ত পৃষ্ঠাগুলো দিয়ে
পরিপূর্ণ।

ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত ও আইএসপির কাজ : ওয়েব অন্বেষণ করার আগে আপনাকে আইএসপিসহ একটি প্ল্যান সেটআপ করতে হবে। কোনো আইএসপি বা ইন্টারনেট পরিসেবা প্রদানকারী হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা আপনাকে ইন্টারনেট ও অন্যান্য ওয়েব পরিসেবায় অ্যাক্সেস করার অনুমতি দেয়। এরা সংযুক্ত হতে ডায়াল-আপ, ক্যাবল, ফাইবার অপটিক্স বা ওয়াই-ফাইয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের উপায় প্রদান করে। এই বিভিন্ন ধরনের সংযুক্তি আপনার ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের গতি নির্ধারণ করে।
মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ও ডেস্কটপ থেকে আলাদা : সাধারণত কোনো সেলফোনে ফোনকল করার জন্য যে তারবিহীন সিগন্যাল ব্যবহার হয় সেই একইভাবে ইন্টারনেটের সাথেও সংযুক্ত হয়। আপনার ফোন কোনো অঞ্চলের সেল টাওয়ারের সাথে সংযুক্ত হয়, যা পরে আপনাকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে। যেহেতু মোবাইল ডিভাইস এবং ইন্টারনেটের মধ্যে ডাটা স্থানান্তর ব্যয়সাপেক্ষ হতে পারে, তাই পরিসেবা দানকারীরা ডাটা প্ল্যানগুলোর হিসাবে চার্জ করে।

এছাড়া কিছু কিছু ডিভাইস, যেমন অ্যান্ড্রয়িড ব্যবহার করছে এমন মোবাইল ডিভাইস, যা ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমেও ইন্টারনেটে সংযুক্ত করতে পারে। ওয়াই-ফাই আপনার ফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপ কমপিউটারকে তারবিহীনভাবে এবং কোনো সেলুলার সিগন্যাল বা ডাটা প্ল্যান ছাড়াই ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হতে দেয়। সাধারণত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযুক্তি আপনার মোবাইল ফোনে আরও দ্রুত হয়, কিন্তু আপনাকে এমন অঞ্চলে থাকতে হবে যেখানে ওয়াই-ফাই কাভার করে। অনেক ক্যাফে, খুচরা অবস্থানগুলো এবং কখনও কখনও পুরো শহর নিঃশুল্ক ওয়াই-ফাই অফার করে।
ব্রাউজার কী : আপনি বই খুঁজতে কোনো পাঠাগারে যান, ঠিক তেমনি আপনি একটি ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করে পৃষ্ঠাগুলো খুঁজতে বা অন্বেষণ করতে পারেন। ব্রাউজার হলো আপনার কমপিউটারে এক ধরনের সফটওয়্যার, যা আপনাকে ইন্টারনেটে ঢুকতে দেয়। তথ্যসমৃদ্ধ নানা ধরনের ওয়েবসাইট আপনাকে প্রদর্শন করতে ব্রাউজার একটি উইন্ডো হিসেবে কাজ করে। শুধু ব্রাউজারে একটি ওয়েব ঠিকানা টাইপ করলে আপনাকে সেই মুহূর্তে সেই ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।
কীভাবে ব্রাউজারের পাঠ্যটিকে বড় বা ছোট করা যায় : কখনও কখনও স্ক্রিনের শব্দগুলো অনায়াসে পড়ার ক্ষেত্রে আপনার জন্য খুব বেশি বড় বা ছোট হতে পারে। ব্রাউজারের শব্দগুলোর আকার পরিবর্তন করতে কীবোর্ডে [control] বা [command] বোতাম টিপুন ও ধরে থাকুন এবং প্লাস [+] বা মাইনাস [-] কী-এর ওপর আলতো চাপুন। [+] নির্বাচন আপনার শব্দগুলোকে বড় করবে এবং [-] নির্বাচন আপনার শব্দগুলোকে ছোট করবে।

কীভাবে ট্যাবগুলোর সাহায্যে ওয়েবে ব্রাউজ করা যায় : যদি আপনি ব্রাউজারে কোনো একটি ওয়েবসাইটের অন্বেষণ করছেন এবং সেই মুহূর্তে অন্য একটি ওয়েবসাইটের ওপর নজর দিতে চান, তাহলে শুধু আপনাকে একটি ট্যাব তৈরি করতে হবে। আসলে ট্যাব হলো একই ব্রাউজারে অবস্থিত অন্য একটি উইন্ডো। একটি ট্যাব তৈরি করার মাধ্যমে আপনি সহজেই একটি থেকে অন্য ওয়েবসাইটে চলে যেতে পারেন। কীভাবে ট্যাব তৈরি করবেন তা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করছেন তার ওপর নির্ভর করে। অনেক ব্রাউজারে একটি ট্যাবে (ফাইল) গিয়ে এবং (নতুন ট্যাব) নির্বাচন করার মাধ্যমে তৈরি করতে পারেন।

কীভাবে ব্রাউজারের আপডেট করা যায় : ব্রাউজারের একটি নতুন সংস্করণ ব্যবহারের মানে আরও দ্রুত এবং সুরক্ষিত ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতা নেয়া। কীভাবে ব্রাউজারের আপডেট করবেন তা আপনি কী ধরনের ব্রাউজার ব্যবহার করছেন, তার ওপর নির্ভর করে। প্রতিটি ব্রাউজারের ধরন যেমন- ক্রোম, ফায়ারফক্স, ইন্টারনেট এক্সপেস্নারার, সাফারি এমন আরও কয়েকটি, এদের আলাদা আপডেটের প্রক্রিয়া রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ক্রোম ব্রাউজার- যখনই এটি শনাক্ত করে যে ব্রাউজারের একটি নতুন সংস্করণ উপলব্ধ হয়েছে, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়। আপডেটের প্রক্রিয়াটি পশ্চাৎপটে চলতে থাকে এবং আপনাকে এর জন্য কোনো কিছু করতে হয় না।

ফিডব্যাক : faisalb01@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস