• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > নতুন পিসির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ফ্রি সফটওয়্যার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তানভীর মাহমুদ
মোট লেখা:১৬
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সফটওয়্যার
তথ্যসূত্র:
ব্যবহারকারীর পাতা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
নতুন পিসির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ফ্রি সফটওয়্যার
আপনার কেনা নতুন পিসিতে সাধারণত বিভিন্ন কম্পোনেন্টের উপযোগী প্রয়োজনীয় ড্রাইভারসহ খুব পরিচিত কিছু সফটওয়্যার ইনস্টল করা থাকে। নতুন পিসির সফটওয়্যারগুলো হতে পারে আপনার পারিবারিক কাজের সহায়ক টুল থেকে শুরু করে অসংখ্য কাজের উপযোগী সহায়ক ও ভারসাম্যপূর্ণ। এ ধরনের একান্ত ব্যক্তিগত কাজের উপযোগী সহায়ক সফটওয়্যার পিসিতে ইনস্টল করা বেশ ঝামেলার ও সময়সাপেক্ষ কাজ। আপনার সংগ্রহ করা এসব সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম হবে খুব সহজ-সরল ও উপকারী।
এ লেখায় ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু সফটওয়্যারের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো কমপিউটার ব্যবহারকারীদের জানা থাকা দরকার। এগুলো পিসিতে ইনস্টল করা উচিত।

ব্রাউজার : নতুন পিসিতে অপারেটিং সিস্টেমের পর বিভিন্ন সফটওয়্যার ইনস্টল করার আগে প্রয়োজন ইন্টারনেট সুবিধা থাকলে একটি উপযুক্ত ব্রাউজার ইনস্টল করা। উইন্ডোজের ডিফল্ট ব্রাউজার হলো ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ছাড়াও কিছু ব্রাউজার রয়েছে, যা ব্যাকপভাবে ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের পরিচিত বিভিন্ন ব্রাউজারের মধ্যে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ১১, ফায়ারফক্স ও ক্রোম অন্যতম। ফায়ারফক্স ও ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ১১ চমৎকার কাজ করে। ক্রোমও তাই। গত বছর বিভিন্ন জরিপে ক্রোম সেরা ব্রাউজার হিসেবে স্বীকৃত হয়।

নিনাইট : নিহাইট একটি সার্ভিস। এটি ব্যবহারকারীদেরকে অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনস্টল করার সুযোগ দেয়। এজন্য নিনাইট ওয়েবসাইটে গিয়ে পিসিতে যে প্রোগ্রাম ইনস্টল করতে চান, তা সিলেক্ট করুন। এখানে ডজনখানেক অপশন পাবেন। এজন্য Get Installer-এ ক্লিক করুন এটি পাওয়ার জন্য। custom.exe ফাইল ধারণ করে প্রোগ্রামের জন্য ইনস্টলার। এক্সিকিউটেবল ফাইল রান করলে নিনাইট ইনস্টল করে সেগুলো।

এভিজি অ্যান্টিভাইরাস ফ্রি : ধরে নিচ্ছি, আপনি পিসিতে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে চাচ্ছেন এবং বিভিন্ন তথ্য দেয়া-নেয়ার জন্য ইউএসবি ব্যবহার করেন। এমন অবস্থায় আপনার দরকার অ্যান্টিম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ইনস্টল করা। উইন্ডোজ ৮-এর সাথে সমন্বিত রয়েছে উইন্ডোজ ডিফেন্ডার নামে একটি টুল, যা পিসিতে ইনস্টল করাসহ বাইডিফল্ট সক্রিয় থাকে। যদি আপনার পিসি প্রস্ত্ততকারক আগে থেকে প্রিমিয়াম অ্যান্টিভাইরাস ট্রায়ালওয়্যার ইনস্টল করে না থাকে, তবে তা আপনাকে ইনস্টল করতে হবে। পিসিতে কোনো অ্যান্টিভাইরাস না থাকার চেয়ে এই টুল থাকা অনেক ভালো। তবে মনে রাখতে হবে, উইন্ডোজ ডিফেন্ডার ভাইরাস প্রতিরোধে তেমন কার্যকর নয়, যেমনটি থার্ডপার্টি অপশন।

ম্যালওয়্যারবাইট অ্যান্টিম্যালওয়্যার ফ্রি : এভিজি। অন্যতম এক প্রোগ্রাম। এটি বেশিরভাগ কমপিউটার ব্যবহারকারীর পছন্দ। এটি ব্যবহার হয় কমপিউটারের তথ্য নিরাপদ ও সুরক্ষার জন্য। কোনো একক অ্যান্টিভাইরাস ইউটিলিটি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে পারে না, বিশেষ করে আজকের দিনের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক হুমকি থেকে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে ম্যালওয়্যাররাইট অ্যান্টিম্যালওয়্যার ফ্রি ইউটিলিটি। এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে এমন ধরনের ‘কাটিং এজ জিরো ডে’ হুমকি থেকে ডাটার নিরাপত্তা দিতে পারে আমাদের পরিচিত অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলোকে। এই টুলের মাধ্যমে আপনি সিডিউল স্ক্যান করতে পারবেন না। রেগুলার অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামের মতো ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে এই টুলের গুরুত্ব অপরিসীম, বিশেষ করে যখন বিপত্তি ঘটে প্রাইমারি অ্যান্টিভাইরাস ইউটিলিটির ব্যর্থতার ফলে।

পিসি ডিক্র্যাফায়ার : অনধিকার প্রবেশ বা বহিরাক্রমণ থেকে পিসি রক্ষার করার জন্য ইনস্টল করা হয় সিকিউরিটি সফটওয়্যার। তবে প্রত্যেক ব্যবহারকারীকে এক সময় পিসিতে প্রিইনস্টল হওয়া জাঙ্কগুলো পরিষ্কার করতে হয়। বেশিরভাগ সময় বক্স পিসির সাথে সমন্বিত থাকে বস্নটওয়্যারপূর্ণ অর্থাৎ অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামপূর্ণ, যেগুলোর রয়েছে ব্যবহারকারীর জন্য অপ্রয়োজনীয় ফিচার, যা প্রচুর পরিমাণে মেমরি ও র্যা্ম ব্যবহার করে এবং সিস্টেমের পারফরম্যান্সে বাধা সৃষ্টি করে।

এমন অবস্থায় পিসি ডিক্র্যাফায়ার নামের টুলটি বেশ সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। ছোট আকারের এই প্রোগ্রামটি বিস্ময়করভাবে পিসি স্ক্যান করে, মেশিনে ইনস্টল হওয়া বস্নটওয়্যারের চেক লিস্ট করে এবং সেগুলোকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারে। যদি আপনি সেগুলো দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করতে চান, তাহলে সেকেন্ডারি স্ক্রিন লিস্টে পাবেন সব প্রোগ্রাম। এটি এড়িয়ে চলুন অথবা কোনো কিছু মোছার বিষয়টি এড়িয়ে চলুন।

বেঞ্চমার্কিং তথা স্ট্রেস টেস্টিং সফটওয়্যার : যদি আপনি নিজেই নিজের পিসি একটু একটু করে তৈরি করেন নেন, তাহলে বস্নটওয়্যারে ভারাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে ঝকঝকে নতুন কম্পোনেন্টের ব্যাপারে কিছুটা হলেও আপনি উদ্বিগ্ন থাকবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার দামি নতুন গ্রাফিক্স কার্ড অস্থিতিশীল বা আনস্ট্যাবল হয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঠিক সফটওয়্যারই আপনার পিসিকে সঠিকভাবে রান করানোর ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারে। আপনার দরকারী প্রোগ্রামের তালিকা অনেক দীর্ঘ হতে পারে। এ থেকে বাঁচার জন্য অনুসরণ করুন কমপিউটার স্ট্রেস টেস্টিং অ্যান্ড বেঞ্চমার্কিং।

আনলকার : উইন্ডোজ যদি কোনো সফটওয়্যার আনইনস্টল করতে ব্যর্থ হয় এবং ভীতিকর মেসেজ ‘Program is in use’ আবির্ভূত হয়, তাহলে কেমন হবে? বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এমন অবস্থায় ভীত হবেন না।

Unlocker নামে খুব কার্যকর এক টুল নিষ্ক্রিয় করতে পারে বিরক্তিকর সেইসব সক্রিয় প্রসেসকে যেসব প্রোগ্রামকে ওপেন রাখলে ব্যাপকভাবে রিসোর্স ব্যবহার করে। এজন্য আপনার কাঙিক্ষত প্রোগ্রামে ডান ক্লিক করুন যেটি আনইনস্টল করতে চান। এবার কনটেক্সট মেনু থেকে আনলকার সিলেক্ট করুন। এরপর সেগুলো আনলক করুন বা নিষ্ক্রিয় করুন। ইনস্টলেশন প্রসেসের সময় মনে রাখবেন, আনলকার চেষ্টা করে পিসিতে বিপুলসংখ্যক বস্নটওয়্যার ইনস্টল করতে।

রিকিউভা : ধরুন, দুর্ঘটনাক্রমে একটি প্রোগ্রাম বা একটি ফাইল মুছে ফেলেছেন। আবার তা ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এমন হলে কী করবেন? এ ক্ষেত্রে বিচলিত হবেন না। কেননা, রিকিউভা নামের টুলটি ডিলিট হয়ে যাওয়া ফাইল বা প্রোগ্রামকে দক্ষতার সাথে উদ্ধার করে মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। পিরিফরমের রিকিউভা অন্যতম এক প্রোগ্রাম, যা ইতোপূর্বে হয়তো কখনও ব্যবহার করেননি। এটি মুছে যাওয়া ডাটা বা প্রোগ্রাম পুনরুদ্ধারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

সিক্লিনার : পিরিফরম তৈরি করেছে আরেকটি অত্যাবশ্যকীয় সিস্টেম টুল। এর নাম সিক্লিনার। পিসিকে খুব টিপটপ অবস্থায় রান করাতে প্রয়োজনীয় সব কাজ করে থাকে। যেমন অনাকাঙিক্ষত কুকিজ পরিষ্কার করা, ব্রাউজিং হিস্ট্রি মুছে ফেলা, অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলাসহ উইন্ডোজ রেজিস্ট্রি পরিষ্কার করে সিস্টেমের পারফরম্যান্স স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে।

সেকিউনিয়া পিএসআই : যেসব প্রোগ্রাম আপ-টু-ডেট নয়, সেসব প্রোগ্রামে থেকে যায় সিকিউরিটি হোল এবং সাম্প্রতিক কিছু ফিচারের অনুপস্থিতি। সেকিউনিয়া প্রোগ্রামের পার্সোনাল সফটওয়্যার ইনস্পেক্টার টুল নীরবে পেছন থেকে কাজ করতে থাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। সফটওয়্যার প্যাচ রাখে অথবা যদি কোনো কারণে কোনো অ্যাপ আপডেট করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আপনাকে নোটিফাই করে জানাবে- কখন আপডেট পাওয়া যাবে। সেকিউনিয়া পিএসআই পিসিকে আপডেট রাখার জন্য সব ধরনের ঝামেলা দূর করে।

মডার্ন মিক্স : উইন্ডোজ ৮-এর স্থানীয় অনেক প্রোগ্রাম, যেমন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের মেইল থেকে মিউজিক পর্যন্ত হলো আধুনিক স্টাইলের অ্যাপ, যা মূলত আপনাকে মাঝেমধ্যে বাধ্য করাবে স্টার্ট স্ক্রিন থেকে স্থানান্তরের। যদি না আপনি স্টারডক্সের স্টেলার মডার্ন মিক্স নামের ইউটিলিটি ব্যবহার করছেন। এই ইউটিলিটির পেইড ভার্সনের দাম মাত্র ৫ ডলার, যা ডেস্কটপে আধুনিক অ্যাপ ওপেন করে।

ভিএলসি মিডিয়া প্লেয়ার : উইন্ডোজ ৮-এর আরেকটি সমস্যা রয়েছে, যা উইন্ডোজ ৭-এর মতো নয়। এটি বক্সের বাইরে ডিভিডি প্লেয়ার প্লে করাতে পারে না। আপনার পিসিতে ডিভিডি প্লে করার প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকতে পারে, যদি আপনি একটি বক্স সিস্টেম কিনে নেন। যদি তা না হয়ে থাকে, তাহলে বিস্ময়করভাবে ভিএলসি মিডিয়া প্লেয়ার প্লে করতে পারবেন, যেমন মিউজিক, পডকাস্ট ইত্যাদি। এটি ব্লুরে ডিস্কও প্লে করতে পারবে।

পেইন্ট ডট নেট : পেইন্ট ডট নেট অনন্যসাধারণ এক টুল। এর ওপর পেইন্টিং জাতীয় কাজের জন্য নির্ভর করা যায়। এই টুলের গভীরে রয়েছে বাড়তি বেশ কিছু ফিচার। এর শুরুতে রয়েছে paint.net। পেইন্ট ডট নেটের এই ইমেজ এডিটের জন্য চমৎকার এক ফিচার, যা ফটোশপের মতো এতটা চমৎকার ফিচারসমৃদ্ধ নয়। তবে সম্পূর্ণ ফিচারে প্যাকেজের জন্য ক্রেতাকে কিছু টাকা খরচ করতে হবে। যদি আপনি গ্রাফিক্সের পেশাদার ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং ফটোশপ সফটওয়্যার কেনার মতো তেমন অর্থকড়ি হাতে না থাকে, তাহলে GiMP চেক করে দেখতে পারেন, যা পেইন্ট ডট নেটের চেয়ে বেশি সুবিধা অফার করে।

সুমাত্রা পিডিএফ : অ্যাডোবি রিডার এখন পিডিএফ রিডার। তবে এটি অবিরতভাবে আপডেট হতে থাকে ও সচরাচর ম্যালওয়্যার হামলার শিকার হয়। যদি শুধু প্রাথমিক ফাংশনালিটি আপনার দরকার হয়, তাহলে বিকল্প হিসেবে সুমাত্রা পিডিএফ ব্যবহার করতে পারেন। সুমাত্রা পিডিএফে বাড়তি ফেন্সি ফিচার পাওয়া যায় না, তবে সম্পূর্ণ ফিচার সমৃদ্ধ পিডিএফ রিডার দেখা যায়। পোর্টেবল ডকুমেন্ট ফরম্যাট ফাইল রিডিংয়ের জন্য সুমাত্রা পিডিএফ খুব দ্রুতগতিসম্পন্ন ও সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে পড়া যায়। অ্যাডোবি পিডিএফ রিডারের তুলনায় সুমাত্রা পিডিএফ কম সর্বব্যাপী হওয়ায় এটি হ্যাকারদের টার্গেটে তেমনভাবে পরিণত হয়নি।

কিউটপিডিএফ : কোনো ডকুমেন্ট বা ওয়েবসাইট বা একটি ইমেজ অথবা অন্য যেকোনো জিনিস পিডিএফে রূপান্তর করতে চান, তাহলে তা কিউটপিডিএফ নামে ফাইলে রূপান্তর করুন। এটি একটি ফ্রিবি, যা একটি প্রিন্টার ড্রাইভার হিসেবে ইনস্টল হয় এবং কোনো কিছুকে পিডিএফে রূপান্তর করতে সহায়তা করে ভায়া স্ট্যান্ডার্ড FilePrint ইন্টারফেসের মাধ্যমে। এই টুল চমৎকার ও অবিশ্বাস্যভাবে এ কাজটি করে থাকে

ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৪ - জুন সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস