লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
প্রযুক্তি ভাবনা
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি ও সমাজ
নাসার আগামীর প্রকল্প
ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসা পৃথিবীর অন্যতম মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ১৯৫৮ সালের ২৮ জুলাই প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থার সদর দফতর ওয়াশিংটন ডিসিতে। আগের নাকা (ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি ফর অ্যারোনটিক্স) অবলুপ্ত হয়ে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাক্ট অনুসারে নাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। মার্কিন মহাকাশ যাত্রায় এ প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অ্যাপোলো চন্দ্রযাত্রা, স্কাইল্যাব মহাকাশ স্টেশন ও স্পেস শাটল প্রভৃতিতে লক্ষ করা যায়। নাসা আমত্মর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন প্রকল্পের সাথে যুক্ত পাঁচটি সংস্থার একটি।
সংস্থাটি ইতোমধ্যে সফলতার ৫৫ বছর অতিক্রম করেছে। মহাকাশে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, চাঁদে মানুষ পাঠানো, দ্য হাবল স্পেস টেলিস্কোপের মতো অনেক কল্পনাই বাস্তব হয়েছে এ নাসার মাধ্যমেই। এমনকি নাসা পৃথিবীর সবচেয়ে সংবেদনশীল (সেনসিটিভ) টেলিস্কোপ ‘দ্য চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি’ উন্মোচন করে, যা দৃশ্যমান আলোর পরিবর্তে এক্স-রের মাধ্যমে ছবি তৈরি করে এবং বিশ্বভ্রমা-- কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করে। এমনকি বস্নকহোলের মতো বিষয়গুলো এটি ধরতে পেরেছে। নাসার এগিয়ে চলার এ দীর্ঘ সময়ে আমাদের মাঝে শুধু বিশ্বভ্রমার জ্ঞানই বাড়ায়নি, বরং আমাদের প্রাপ্তির পালস্নাটাও ভারি করেছে। এ ছাড়া এলিয়েন গ্রহে পরিমাপের জন্য মনুষ্য তৈরি যন্ত্রও পাঠিয়েছে, শুকতারার ছবি তুলেছে, ছায়াপথের সংঘর্ষ বা ঘূর্ণি ইত্যাদি আবিষ্কার করেছে ও আবার ব্যবহারোপযোগী শাটল তৈরি করেছে, যা একাধিক মিশন পরিচালনায় কাজ করে। এটা ভুললে চলবে না, নাসা আমত্মর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে মহাকাশে বিভিন্ন কম্পোনেন্ট পরিবহনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এতসব সফলতার ভিড়ে নাসার আরও অনেক প্রোগ্রাম রয়েছে, যা আগামী দুই দশক বা তারও বেশি সময়ে আরও সফলতা আসবে। আর এসবের মাধ্যমে আমাদের চারপাশের সত্তাকে আরও ভালোভাবে জানার সুযোগ হবে। আর সবার পড়তে ভালো লাগার জন্য এমনই কিছু বিস্ময়কর বিষয় তুলে ধরা হলো এ লেখায়।
লুনার অ্যাটমোসফিয়ার অ্যান্ড ডাস্ট এনভায়রনমেন্ট এক্সপেস্নারার : চাঁদের বায়ুম-ল পর্যবেক্ষণে গত ৭ সেপ্টেম্বর নাসা মনুষ্যবিহীন নভোযান লুনার অ্যাটমোসফিয়ার অ্যান্ড ডাস্ট এনভায়রনমেন্ট এক্সপেস্নারার (এলএডিইই) উৎক্ষেপণ করে। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের প্রকৃতি অনুসন্ধানের লক্ষ্যে নাসা গত পাঁচ বছরে এ নিয়ে তিনটি মহাকাশযান পাঠিয়েছে। নভোযানটি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে স্থানীয় সময় রাত ১১টা ২৭ মিনিটে সফলভাবে যাত্রা শুরু করে। উৎক্ষেপণের পর এলএডিইই নিরাপদে সঠিক পথে এগিয়ে চলেছে। ৮ ফুট দীর্ঘ ও ৫ ফুট প্রস্থের এলএডিইই নির্মাণে খরচ পড়ে ২৮ কোটি মার্কিন ডলার। এতে জ্বালানির উৎস হিসেবে ব্যবহার হয় সৌরশক্তি ও তড়িৎকোষ (লিথিয়াম ব্যাটারি)। নাসা জানায়, গত ৬ অক্টোবর চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছায় এলএডিইই। পরবর্তী ৪০ দিন এটি চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে ১৫৫ মাইল উচ্চতায় আবর্তন করে এবং চাঁদের পৃষ্ঠের আরও কাছাকাছি গিয়ে স্থানীয় বায়ুম-লের ওপর কয়েকটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাচ্ছে। আর ১০০ দিনের অভিযান শেষে চন্দ্রপৃষ্ঠেই নভোযানটির সমাধি হবে। এলএডিইই মহাকাশযানটিতে রয়েছে আর্থ-টু-মুন লেজার রশ্মি ও নিরপেক্ষ ভর বর্ণালিমাপক প্রযুক্তি, যার সাহায্যে চাঁদের বায়ুম-লের রাসায়নিক বৈচিত্র্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। আর অন্যান্য প্রযুক্তির সাহায্যে সেখানকার গ্যাস ও ধূলিকণা পরীক্ষা করা হবে। এতে সংশ্লিষ্ট কিছু রহস্যের সমাধান পাওয়া যেতে পারে বলে আশা বিজ্ঞানীদের। নাসার বিশেষজ্ঞ জন লগসডন বলেন, চাঁদের ধূলিকণা পৃথিবীর সৈকতের ধূলির চেয়ে অনেক সূক্ষ্ম। নভোচারীরা চার দশক আগে প্রথমবারের মতো চাঁদে গিয়ে সেখানকার ধূলিকণার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো-১১ নভোযানে চড়ে মানুষ প্রথম চাঁদে অবতরণ করেন। অ্যাপোলোর অভিযাত্রীরা সর্বশেষ চাঁদে গিয়েছিলেন ১৯৭২ সালে।
জল-হাওয়ার রহস্য উদঘাটনে মঙ্গলে মাভেন : লাল গ্রহে দারুণভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন ‘মিস কৌতূহল’ কিউরোসিটি রোভার, সফল হলো ভারতের মঙ্গলযান উৎক্ষেপণ, আর এর দু’সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই গত ১৮ নভেম্বর মঙ্গলে পাড়ি দেয় নাসারই কৃত্রিম উপগ্রহ মাভেন (মার্স অ্যাটমোসফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল ইভ্যালুয়েশন)। অ্যাটলাস-৫-এ চেপে মঙ্গলে পাড়ি দেয় মাভেন। ‘মিশন মাভেন’-এর পুরোভাগে রয়েছেন কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোবায়োলজির অধ্যাপক ব্রম্নস জ্যাকোস্কি। তিনি জানান, মঙ্গল গ্রহকে ঘিরে রয়েছে বাতাসের একটা পাতলা পর্দা। এক সময় মঙ্গলেও পৃথিবীর মতোই বায়ুম-ল ছিল। ওই হালকা বায়ুসত্মরই তার ইঙ্গিত দেয়। কীভাবে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে লাল গ্রহের বায়ুম-ল, ফেলে গেছে একটা পাতলা হাওয়ার চাদর- সেই রহস্য উদঘাটন করতেই মাভেনের মঙ্গলে পাড়ি। আর তার সাথে সে খতিয়ে দেখবে গ্রহের হারিয়ে যাওয়া পানিসত্মরের রহস্যও। যদিও বায়ুম-ল কি পানিস্তরের অস্তিত্ব, রহস্যের বীজ লুকিয়ে রয়েছে এক জায়গাতেই? কিউরোসিটির মতো মঙ্গলের মাটিতে পা ফেলবে না মাভেন। বরং কক্ষপথ থেকেই নজর রাখবে। ঠিক যেমনটা করবে ইসরোর মঙ্গলযান। ব্রুসের মঙ্গলযজ্ঞ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে সেই ২০০৮ সালে। ব্রুসের পরিকল্পনার কথা জানাতে সে বছরই সবুজ সঙ্কেত দেখায় নাসা। ৪৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয়ে তৈরি করা হয় মাভেন মহাকাশযান। এটির ১০ মাস লাগবে মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছতে। আর তারপরই শুরু হবে গবেষণা। নাসা কিউরোসিটি রোভার পাঠিয়েছে মঙ্গলে। লাল গ্রহের কক্ষপথে ঘুরে নজর রাখছে নাসারই ‘মার্স ওডিসি’ ও ‘মার্স রিকনিস্যান্স’। প্রথমটি পাঠানো হয়েছিল ২০০১ সালে, দ্বিতীয়টি ২০০৫-এ। ইসরোও মঙ্গলযান পাঠাল। ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইএসএ) মার্স এক্সপ্রেসও ঘুরছে মঙ্গলের কক্ষপথে, সেই ২০০৭ সাল থেকে। তাহলে আবার মাভেন-অভিযান কেনো? কেনোইবা মঙ্গলের চারপাশে এত কড়া পাহারা? সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন নাসার মঙ্গল অভিযান দলের অন্যতম শীর্ষবিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ। কিউরোসিটির পর এবার তিনি মাভেন অভিযানেও রয়েছেন। তিনি জানান, নাসার প্রত্যেকটি মহাকাশযানের কাজ আলাদা আলাদা। তা ছাড়া বাকিরাও একে অপরকে সাহায্য করছে সব সময়। উদাহরণস্বরূপ, মঙ্গলের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার। ইএসএ’র মার্স এক্সপ্রেস যখন ঘুরতে ঘুরতে মঙ্গলের কাছাকাছি চলে আসবে, তখন সে ভালো করে নজর রাখবে গ্রহের গতিবিধির ওপর। আবার মাভেন যখন কাছে আসবে, তখন দায়িত্ব তার। মাভেনের কাজ সম্পর্কে তিনি আরও খোলাসা করে জানালেন। বললেন, এতদিন লাল গ্রহ সম্পর্কে যা যা তথ্য হাতে এসেছে, তাতে এটা স্পষ্ট, যে মঙ্গলে একসময় প্রভূত পরিমাণ জল ছিল। মঙ্গলের মাটিতে শূন্য নদী খাতের ছবিই তার প্রমাণ দেয়। এ জলরাশিকে বাঁচিয়ে রাখতে দরকার ছিল বায়ুম-ল। কারণ বায়ুসত্মরই বজায় রাখত গ্রহের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা। কিন্তু কোটি কোটি বছর আগে কোনো এক রহস্যময় কারণে হারিয়ে গেছে বায়ুম-ল। মঙ্গলে এখনও যে বায়ুসত্মর রয়েছে, তাতেও কিন্তু ক্ষয় থেমে নেই। এখনকার বায়ুসত্মর পৃথিবীর বায়ুম-লের ১০০ ভাগের ১ ভাগ। গবেষকেরা এমন ধারণা পোষণ করেন, ৪০০ কোটি বছর আগে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে লাল গ্রহের চৌম্বকক্ষেত্র হঠাৎ তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল। ফলে মঙ্গলের টান হারিয়ে মহাকাশে হারিয়ে গিয়েছিল হাওয়ার চাদর। বিষয়টিকে পরমাণু সত্মরে খতিয়ে দেখতে সাহায্য করবে মাভেনের ‘আল্ট্রা ভায়োলেট স্পেকট্রোগ্রাফ’ নামের যন্ত্রটি। মঙ্গলের বায়ুম-লে রয়েছে প্রভূত পরিমাণ ডয়টেরিয়াম (ভারি হাইড্রোজেন)। হালকা হাইড্রোজেন পরমাণুর মতো গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা এর নেই। গ্রহের পাথরে হাইড্রোজেন ও ডয়টেরিয়ামের অনুপাতের সাথে বাতাসে এদের উপস্থিতি তুলনা করেও বায়ুম-লের ক্ষয়ের কারণ খুঁজে দেখা হবে। কিউরোসিটির পাঠানো ছবিতেই ধরা পড়েছে মঙ্গলে ধুলোর ঝড়। তা ছাড়াও রোভার অপরচুনিটিও প্রমাণটা দিয়েছিল। অপরচুনিটিতে সৌর প্যানেল আছে। পৃথিবীর বায়ুম-ল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এর সৌর প্যানেলে ধুলোর আসত্মরণ পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলে পৌঁছানোর পরে দেখা যায় সেই ধুলোর সত্মর আর নেই। একমাত্র হাওয়া থাকলেই এটা হওয়া সম্ভব। মাভেনের পর নাসার পরবর্তী যান রওনা দেবে ২০২০ সালে। নাসা জানিয়েছে, তাদের মাভেন ছাড়া বাকি যানগুলো অকেজো হয়ে গেলে কিউরোসিটিকে সাহায্য করা থেকে নাসার মিশন কন্ট্রোল রম্নমে খবর পাঠানো একমাত্র ভরসা মাভেনই।
ম্যাগনেটোসফেরিক মাল্টিস্কেল মিশন : দ্য ম্যাগনেটোসফেরিক মাল্টিস্কেল মিশন (এমএমএস) হলো নাসার একটি সোলার টেরিস্ট্রিয়াল প্রোবস মিশন। সূর্য ও পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মধ্যে সম্পর্ক এবং তাদের বিভিন্ন পারমাণবিক প্রভাব জানতে এ মিশন নেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে এ মিশন বাসত্মবায়ন করা হবে।
নিউ হরিজন : ২০০৬ সালে পস্নুটোতে নভোযান পাঠানোর মাধ্যমে দ্য নিউ হরিজন মিশনের শুরম্ন হয়। পস্নুটোর আচরণবিধি জানার জন্য এ মিশন শুরম্ন হয়। এ নভোযানটি বর্তমানে জুপিটারের চাঁদকে অতিক্রম করেছে। এটি হবে সূর্য থেকে দূরের কোনো গ্রহে নেয়া পঞ্চম কোনো পদক্ষেপ। দ্য নিউ হরিজন আমাদের সোলার সিস্টেমের নানা পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে। ২০১৫ সালে এ নভোযানটি প্লটোয় নামবে।
জুনো : সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। এতটাই বড় যে, অনেকে বলেন এক বৃহস্পতির মধ্যে এক হাজার পৃথিবী অনায়াসে ভরে রাখা যাবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্যের জন্মের পরপরই গ্রহদের আবির্ভাব এবং সেটা ৪৬৫ কোটি বছর আগে। আর গ্রহদের মধ্যে সবার আগে জন্ম বৃহস্পতি। এর অর্থ, একদিকে সবচেয়ে বড় আর অন্যদিকে সবার আগে তৈরি হওয়া গ্রহ হলো বৃহস্পতি। ফলে বিজ্ঞানীদের আগ্রহও এ গ্রহকে নিয়ে। কারণ, এরা মনে করছেন যেহেতু সবার আগে এসেছে বৃহস্পতি, তাই এটাকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেই গ্রহগুলো কীভাবে তৈরি হলো সে সম্পর্কে জানা যাবে। এছাড়া বৃহস্পতির পরিবেশ সম্বন্ধে জানতে পারলে অন্য গ্রহ সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এ কারণেই ২০১১ সালের ৫ আগস্ট বৃহস্পতির উদ্দেশে রওনা হয় মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান ‘জুনো’। রোমান পুরাণের প্রধান দেবতা জুপিটার, যেটা বৃহস্পতিরও ইংরেজি নাম, তার স্ত্রী ছিলেন জুনো। জুপিটার শব্দের অর্থ ‘আকাশের পিতা’। যুক্তরাষ্ট্রের কেপ কার্নিভাল থেকে যাত্রা শুরু হয় জুনোর। ‘অ্যাটলাস ৫’ রকেটে করে রওনা দেয়ার ৫৩ মিনিট পর রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের দিকে যাওয়া শুরু করে জুনো। এ দৃশ্য দেখতে প্রায় ১০ হাজার দর্শক জড়ো হয়েছিলেন। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বৃহস্পতিতে গিয়ে পৌঁছবে জুনো। এ সময় পাড়ি দিতে হবে ৭১৬ মিলিয়ন কিলোমিটার পথ। এ দীর্ঘ পথ চলতে ব্যবহার হচ্ছে শুধু সৌরশক্তি। যদিও ২০০৩ সালে যখন প্রথমবারের মতো জুনোর কথা বলা হয়েছিল, তখন জ্বালানি হিসেবে কিছু পরমাণু শক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। সৌরশক্তি ধরার জন্য জুনোর তিন ডানায় ১৮ হাজার সৌর কোষ লাগানো হয়। গ্যালিলিওর চেয়ে বৃহস্পতির আরও কাছাকাছি যাওয়ার কথা রয়েছে জুনোর। ফলে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহটি সম্পর্কে এবার আরও বিসত্মারিত তথ্য আশা করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতি সম্পর্কে দুটো প্রধান বিষয় জানার চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা। এক. সেখানে কী পরিমাণ পানি আছে, দুই. সেখানে শক্ত কোনো কিছু আছে কি না, নাকি শুধুই গ্যাস আর গ্যাস। বৃহস্পতির ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা চৌম্বকীয় ক্ষেত্র সম্পর্কেও ধারণা পাওয়ার আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। জটিল সব যন্ত্রপাতি ছাড়াও জুনোতে কিছু খেলনা দিয়ে দেয়া হয়েছে। অঙ্ক আর বিজ্ঞান সম্পর্কে তরুণদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোই এর উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে। পুরো প্রকল্প বাসত্মবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ডলার। এবার দেখা যাক, এত টাকা খরচ করে কী আবিষ্কার করা যায়।
ইনসাইট স্পেসক্রাফট : মঙ্গল গ্রহ থেকে ক্ষণে ক্ষণেই ছবি পাঠাচ্ছে কিউরোসিটি মার্স রোভার। এর মধ্যেই সেখানে আবার আরেকটি নতুন রোবট পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে নাসা। নাসা জানায়, মঙ্গল গ্রহে ২০১৬ সালের মধ্যে ‘ইনসাইট স্পেসক্রাফট’ নামের নতুন একটি রোবট পাঠাবে তারা। মঙ্গলে কিউরোসিটি মার্স রোভার সফলভাবে অবতরণের ঠিক দুই সপ্তাহ পরই নাসার বিজ্ঞানীরা এ ঘোষণা দেন। এ অভিযান থেকে মঙ্গল গ্রহের গঠনের আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। ইনসাইট রোবটটি আরও গভীরভাবে মঙ্গলে অনুসন্ধান কাজ চালাবে। এতে গ্রহটির গঠন ও কীভাবে এর তাপ সঞ্চালিত হয়েছে, সে বিষয়েও তথ্য জানা যাবে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলেন, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পাসাডেনায় অবস্থিত জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) থেকে ইনসাইট স্পেসক্রাফট পরিচালনা করা হবে। এতে দুটি ক্যামেরা ও একটি রোবটিক হাত থাকবে
ফিডব্যাক : bmtuhin@gmail.com