• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গেমের জগৎ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ
মোট লেখা:১০৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গেমের জগৎ
স্পেস হাল্ক

এবছর বোধহয় গরমটা একটু বেশিই পড়েছে। হঠাৎ হঠাৎ করে মনে হয় যেনো সব গরম কোনো রকম চিন্তাভাবনা মাথায় না এনে কিছুর উপর ঝেড়ে ফেলতে পারলে বেশ শান্তি পাওয়া যেত। ঠিক সেরকম সময়ের জন্যই যেনো বানানো হয়েছে স্পেস হাল্ক। ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ওয়ারহ্যামার আর হাল্কের সাথে নানা গ্রহের এলিয়েনদের সাথে যুদ্ধ লাগা শুরু করে। শুরু হয় বাড অ্যাঞ্জেলদের সাথে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। প্রথমদিকে বাড অ্যাঞ্জেলদের মাথাটা একটু মোটা থাকে, তাদের প্রথমদিকের সেনাবাহিনীর সদস্যদের আকার যেমন মোটাসোটা তেমনি ব্যাটল ট্যাকটিকহীন। তাই সব ধরনের গরম ঝেড়ে ফেলতে কোনো সমস্যাই হবে না। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে ধুন্ধুমার অ্যাকশন প্যাকড গেমিং। আর এতেই শুরু হয় সবচেয়ে মজাদার ব্যাপার। প্রথমদিকের বাড অ্যাঞ্জেলরা এতই বিশালাকায় যে তাদের কেউ কাউকে পেরিয়ে গুলি ছুড়তে পাওে না। তাই খুব সহজেই শত্রু সেনাদের এক এক করে শেষ করে ফেলা যায়। তবে বাড অ্যাঞ্জেলদের সাথে বিশাল এক সমস্যা হচ্ছে তাদের প্রচন্ড শক্তিশালী ফায়ার পাওয়ার। তাই কিছুটা হলেও সাবধানতা বজায় রাখতে হবে। স্পেস হাল্ক একটি টার্নভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি গেম। স্পেস ম্যারিন আর জিন্সটিলারদের আক্রমণ পদ্ধতি আর টার্ন স্ট্র্যাটেজি একটু কষ্ট করে একবার বের করে ফেলতে পারলেই গেমিং অনেকখানি সহজ এবং আনন্দপূর্ণ হয়ে উঠবে। সরু প্যাসেজগুলো ভর্তি থাকবে নানা ধরনের ফাঁদ আর বুবি ট্র্যাপ দিয়ে। সবচেয়ে ভালো হয় একটু ধৈর্য নিয়ে শত্রুপক্ষের এগিয়ে আসার অপেক্ষা করলে। মোটাগুলো একবার প্যাসেজ ধওে ঢুকে পড়লেই আর কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। এরপরের গেমিং একটু কঠিনই হয়ে যাবে, কারণ মিস্টার জিন্সটিলারের ব্যাটল ট্যাকটিক দিনে দিনে পাজল সলভিং জনরার কাছাকাছি চলে যাবে। যখন ধীরে ধীরে গেমের প্রতিটি ট্যাকটিক গেমারের আয়ত্তে এসে পড়বে, তখন সত্যি বলতে বেশি কিছু করার থাকবে না। কারণ একটু হিসেব করলেই তখন দেখা যাবে গেমটি খেলার মাত্র দুটি পথ আছে- একটি সঠিক, অপরটি ভুল। আর যথেষ্ট অভিজ্ঞ হয়ে গেলে ভুলভাবে খেলে চেষ্টা করাটাকে রীতিমতো হাস্যকর মনে হবে। কিন্তু সেই সঠিক পথটা খুঁজে বের করে ফেলার আগ পর্যন্ত গেমপে গেমারকে দেবে সর্বোচ্চ আনন্দ। সুপারহিরো নিয়ে টার্নভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি গেম বোধহয় এটিই সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছে। তাই স্ট্র্যাটেজিস্ট আর একই সাথে কমিকপ্রেমীদের জন্য এরচেয়ে ভালো পছন্দ আর হতেই পারে না। তাই গেমার আর দেরি না করে নিজের গরম ঝেড়ে ফেলতে ঠান্ডা কিছু নিয়ে বসে পড়ুন স্পেস হাল্ক খেলতে। আর উপভোগ করুন আপনার গ্রীষ্ম।

গেম রিকোয়ারমেন্ট

উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিস্তা/৭, সিপিইউ : কোর টু ডুয়ো/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিস্তা/৭, ভিডিও কার্ড : ৫১২ মেগাবাইট, হার্ড ডিস্ক : ২ গিগাবাইট সাউন্ড কার্ড কীবোর্ড।


পেপার প্লিস

একবার চিন্তা করে দেখুন কর্মস্থলে আপনার একমাত্র কাজ হচ্ছে পাসপোর্টের উপরে একটা একটা করে সিল দেয়া। বিশেষ করে যারা সত্যিই এ ধরনের কাজ করতে করতে জীবনের প্রতি বিরক্তি এনে ফেলেছেন, তাদের জন্য পেপার প্লিস এক অনন্য অধ্যায় হয়ে উঠতে পারে, তাদের এনে দিতে পারে কাজের প্রতি এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। উন্মোচন করতে পারে দেশাত্মবোধের এক নতুন স্পৃহা। গেমটা কাজের মতোই বিভিন্ন মানুষের পাসপোর্টের কাগজ, ভিসা এবং অন্যান্য কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে মানুষটি বাইরে যাওয়ার যোগ্য কি না। নিতে হতে পারে নৈতিক বা হৃদয়বিদারক কিছু সিদ্ধান্ত। প্রত্যেকটি মানুষের জীবনবৃত্তান্ত সামনেই থাকবে, দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কার জীবন কোন দেশে কীভাবে পরিবর্তিত হবে। কোনো স্পয়লার না দিয়ে গেমটির রিভিউ লেখা বেশ ঝামেলার, তবে চেষ্টা করে দেখা যাক।

স্টোরি মোড শুরু করলে দেখা হবে বহু মানুষের কাগজের সাথে, জানা যাবে বহু জীবনের গতিধারা, যা আমরা সহজেই কাজের ভিড়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। বিদেশী, পাগল, আসামী, ফেরারি, ব্যবসায়ী, টুরিস্ট থেকে শুরু করে গৃহবধূ, ছাত্র, চাকরিজীবী সবার জীবনের পরিবর্তন আসতে পারে আপনার ছোট্ট একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। গেমারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ছোট বাচ্চাকে রেখে মা বিদেশে যাবেন কি না, তাকে দেখতে হবে কোন মানুষকে বাইরে যেতে দিলে সে ওই দেশে গিয়ে নিজের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে কি না। আরও ভাবতে হবে কোন মানুষের সত্যিকারের প্রতিভা দেশে অপচয় হচ্ছে, নাকি সেটা দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া লাগবে বাইরের দেশে কোনো ছাত্র যাবে কি না, আবার সে ক্ষেত্রে প্রতিভা পাচার হচ্ছে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, সবসময় আপনার ছোট্ট অল্পসময়ের একটি সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে একজন মানুষের জীবন, তার পরিবারের ভবিষ্যৎ, সমাজের চেতনা এবং জাতির প্রগতি। ন্যূনতম কোনো কাজকেই যে হেলাফেলা হিসেবে নিতে নেই, সেটিই এই গেমটির সবচেয়ে বড় শিক্ষা।

গেমটি ডিজাইন করা হয়েছে বিশেষ করে চাকররীজীবীদের কথা মাথায় রেখে, তাদের কর্মব্যস্ত একঘেয়ে জীবনে কিছুটা বৈচিত্র্য নিয়ে আসার জন্য। তাদের অনুভব করানোর জন্য যে কত মানুষের জীবন, কত অজানা ভবিষ্যৎ তাদের নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তাই যারা এখন ব্যস্ত আছেন তারা সারাদিনের কাজ থেকে হাল্কা একটু ছুটি নিয়ে বসে পড়ুন জীবনকে নতুন করে দেখতে পেপার পিস্নসের সাথে।

গেম রিকোয়ারমেন্ট

উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিস্তা/৭, সিপিইউ : কোর টু ডুয়ো/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিস্তা/৭, ভিডিও কার্ড : ২৫৬ মেগাবাইট, হার্ডডিস্ক : ১ গিগাবাইট সাউন্ড কার্ড

ম্যাস ইফেক্ট ৩

মহাবিশ্বে এতদিন ধরে চলে আসা বহু গ্যালাক্টিক যুদ্ধের একটি; সেরবারাস স্পেস ফ্লিট ধ্বংস করে চলেছে একের পর এক অ্যালায়েন্স যুদ্ধজাহাজ। এই ছিল ম্যাস ইফেক্টের শুরু। এরপর ম্যাস ইফেক্ট ২-এ শেপার্ড আর তার বন্ধু তথা সহযোদ্ধারা খুঁজে পায় পৃথিবী তথা মহাবিশ্বের প্রধান শত্রুদের- রিপারদের। আর রিপারদের ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকে ম্যাস ইফেক্ট ২-এর শেষ পর্যন্ত, এক না বলা সমঝোতায় আসে সেরবারাস আর অ্যালায়েন্স। আর রিপারেরা চালিয়ে যেতে থাকে তাদের ভয়ঙ্কর নীলনকশা। তাদের বিভীষিকা এবার এসে সরাসরি আঘাত করে পৃথিবীতে। এবার শেপার্ডের দায়িত্ব সারা মহাবিশ্বের সব জাতিকে এক করা যাতে, যার যা কিছু আছে সবকিছু নিয়ে রিপারদের শেষবারের মতো ধ্বংস করা যায় আর পৃথিবীর মানুষগুলোকে রক্ষা করা যায়।

এরপর কী হল না হল তার খবর এখানে উপস্থাপন করা হয়নি। আসলে করার উপায়ও নেই, কারণ এই থার্ড পারসন ফুল অ্যাকশন স্ট্র্যাটেজি গেমে এরপর কোন ঘটনার মোড় কোনদিকে যাবে, তার সম্পূর্ণটাই গেমারের গেমিং স্ট্র্যাটেজি, অন্যান্য মানুষ- না শুধু মানুষ নয়, মহাবিশ্বের বহু গ্যালাক্সি থেকে আসা বহু গ্রহের বহু ধরনের এলিয়েনদের সাথে গেমার কী ধরনের আচরণ করে, কীভাবে তাদের বিশ্বাস জয় করে- সবকিছুর উপরই পরবর্তী সময়ে পুরো মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এভাবে গেমারেরা গেমিং বিশ্বে সবার আগে নিয়ে এসেছিল ম্যাস ইফেক্ট, তারপর ম্যাস ইফেক্ট ২, এরপর সেই বিখ্যাত গেমের পরবর্তী সিক্যুয়াল ম্যাস ইফেক্ট ৩-এ গেমিংকে নতুন একটি পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

প্রথমেই বলে নেয়া ভালো, মহাবিশ্বকে সামলানোর গুরুদায়িত্ব শুধু শেপার্ডের একার নয়। রিপার নামের ভয়াবহ এলিয়েনদের কাছ থেকে নিজেদের জাতিকে বাঁচানোর দায় প্রত্যেক বৈশ্বিক জাতিরই। শেপার্ডকে যা করতে হবে তা হলো প্রত্যেক জাতি থেকে তাদের তীক্ষ্ণ, সুদক্ষ, চৌকস যোদ্ধাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদেরকে নিজের দলে টানতে হবে। তাদের সাথে যুদ্ধ করে প্রতিমুহূর্তে নিজেকে এবং তাদেরকেও গড়ে তুলতে হবে আরও চৌকস করে। গেমটিতে গেমার খেলবে শেপার্ডের চরিত্রে আর যুদ্ধের সময় তার সাথে থাকবে তার দল থেকে নেয়া ইচ্ছেমতো আরও দুইজন সহযোগী। যাদের জীবন-মৃত্যুও গেমারের কমব্যাট স্টাইল, শেপার্ডের প্রতি তাদের বিশ্বস্ততার ওপর নির্ভর করছে। আর সেই বিশ্বাস জয় করে নিতে হবে শেপার্ডের নিজেকেই।

শেপার্ডের নিজের বিভিন্ন স্টাইল, অরিজিন ইত্যাদি গেমার গেমের শুরুতেই সিলেক্ট করে নিতে পারবে। গেমারের নির্দিষ্ট আর্সেনাল এগুলোর ওপর ভিত্তি করেই হবে। আর প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব বায়োটেক পাওয়ার, যেগুলো ইচ্ছেমতো আপগ্রেড এবং ব্যবহার করা যাবে। স্পেসশিপ নিয়ে সারাবিশ্ব ঘুরতে হবে, ফুয়েল জোগাড় করতে হবে, বিভিন্ন ধরনের খনিজ খুঁজে বের করতে হবে, সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন অস্ত্র, বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন রসদ কিনতে হবে, নিজের জাহাজকে আরও উন্নত করতে হবে। আর খুব বড় আকর্ষণ হিসেবে এবার আছে বিশাল আর্সেনাল আর তাদের উইপন সিস্টেম, যা ইচ্ছেমতো আপগ্রেড করা যাবে। মোটকথা গেমারের স্বপ্নে একটি থার্ড পারসন অ্যাকশন শুটিং গেমে যা যা থাকা কিংবা করা সম্ভব, তার চেয়ে অনেক বেশিই আছে ম্যাস ইফেক্ট ৩-এ। আর এই সিরিজের সবগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে ম্যাস ইফেক্ট ৩, কারণ এর আছে এক অনন্য স্টোরিলাইন, যাতে পুরনো-নতুন সম্পর্কগুলো আর তাদের বন্ধন- সবকিছু মিলিয়ে গেমারকে আটকে রাখবে মন্ত্রমুগ্ধের মতো। অতএব গেমারদের উচিত হবে দেরি না করে ম্যাস ইফেক্ট ২ শেষ করে এর সিক্যুয়াল খেলা শুরু করে দিতে। আর হ্যাঁ, আগের গেমটি শেষ করে ম্যাস ইফেক্ট ৩ শুরু করলে বরাবরের মতোই গেমটি আগের কাহিনীর সূত্র ধরেই এগোতে থাকে। মহাবিশ্বের অবস্থা তেমনই থাকে, যেমনটা গেমার প্রিক্যুয়ালে রেখে যাওয়া হয়েছিল। সুতরাং যেকোনো আকস্মিকতার জন্য প্রস্ত্তত থাকাটাই ভালো।

গেম রিকোয়ারমেন্ট

উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিস্তা/৭, সিপিইউ : কোর টু ডুয়ো/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিস্তা/৭, ভিডিও কার্ড : ১ গিগাবাইট, হার্ডডিস্ক : ১০ গিগাবাইট সাউন্ড কার্ড, কীবোর্ড ও মাউস

ফিডব্যাক : alyousufhridoy@yahoo.com
আল ইউসুফ
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৪ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস