• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গেম: টম ক্লান্সির অ্যান্ড ওয়ার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: অনিমেষ ‍আহমেদ
মোট লেখা:১৬
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
কমপিউটার গেমগেম, গেমস, 
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গেম: টম ক্লান্সির অ্যান্ড ওয়ার

গেমিংয়ের শুরুটা আজ বিস্মৃত। গেমিং শুরু হলো কিভাবে তা আজ প্রায় অজানা। তবে যতদূর জানা যায় যুদ্ধে আমেরিকান সেনা সদস্যদের জন্য কর্তৃপক্ষ এমন কোনো ব্যবস্থা করতে চাইছিল যাতে একদিকে সৈন্যদের বিনোদনের ব্যবস্থা হয়, অন্যদিকে তারা মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকে। তারা এটাও চাইছিল যে, এমন কিছু উপায় বের করতে হবে যাতে বিনোদন তো হবেই, সেই সাথে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব থাকবে। কর্তাব্যক্তিরা ভাবতে লাগলেন কি করা যায়। এখান থেকেই গেমিংয়ের উৎপত্তি। আমাদের দেশে ভিডিও গেমের প্রচলন শুরু হয় আশির দশকের শেষ দিকে। সে সময় তরুণ প্রজন্মের ভেতর গেম নিয়ে নতুন উন্মাদনা শুরু হয়। বাংলাদেশে গেমিংয়ের শুরুটা সেখানেই। শুরুতে পাড়ায় পাড়ায় গড়ে ওঠা গেমের দোকান ছিল সকলের গেম খেলার একমাত্র জায়গা। ধীরে ধীরে বাসাবাড়িতে কন্সোল গেমিং জায়গা করে নেয়। পিসি গেমের আবির্ভাব আরো পরে। আজ সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। গেমিং আজ শুধু বিনোদনই নয়। এটি এখন প্রায় এক হাজার কোটি ডলারের শিল্প। গেমিং থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান আয় করছে কোটি কোটি ডলার।



টম ক্লান্সি। নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে রোল প্লেয়িং কোনো গেম বা অসাধারণ স্ট্র্যাটেজিক কোনো গেম। পৃথিবীতে যে কয়জন অসাধারণ স্ট্র্যাটেজিক লেখক আছেন তার মধ্যে টম ক্লান্সি অন্যতম। তার বই থেকে অনেক গেম তৈরি হয়েছে। এই অ্যান্ড ওয়ার তার একটি নভেল। এই নভেল অনুসরণে তৈরি করা হয়েছে এই গেমটি। এর আগে কমপিউটার জগৎ পত্রিকায় টম ক্লান্সির এমন আরো গেম নিয়ে রিভিউ দেয়া হয়েছিল। সেটি ছিল রেইনবো সিক্স : ভেগাস, স্প্লিন্টার সেল ইত্যাদি।

গেমিং মানেই যে যুদ্ধ কথাটা শুধুই অ্যাকশন গেমগুলোর ক্ষেত্রে খাটে। স্ট্র্যাটেজিক গেম এমন এক গেমিং এর মাধ্যম যার মাধ্যমে যতটা না যুদ্ধ করতে হয় তার চেয়ে বেশি যুদ্ধের কৌশল খাটাতে হয়। এতে করে যুদ্ধের জ্ঞান অর্জন করা যায় এবং যুদ্ধের কৌশল ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটানো যায়। এই গেমটি হচ্ছে একটি রিয়েল টাইম ট্যাকটিকস ধরনের গেম। রিয়েল টাইম ট্যাকটিকস এক ধরনের রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজিক গেম। রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজিক গেমের আসল কাজ হচ্ছে কনস্ট্রাকশন তৈরি করার মাধ্যমে প্রতিপক্ষের চেয়ে শক্তিশালী একটি সৈন্যবাহিনী তৈরি করে নির্দিষ্ট মিশনে জয়লাভ করা। কিন্তু রিয়েল টাইম ট্যাকটিকস ধরনের গেমে কোনো কনস্ট্রাকশন তৈরি করতে হয় না। আগে থেকেই তা তৈরি করা থাকে। এখানে শুধু দিয়ে দেয়া কনস্ট্রাকশন বা সৈন্যবাহিনী দিয়ে মিশন সম্পন্ন করতে হয়। শুধু যুদ্ধ-কৌশল নিজেকেই নির্ধারণ করতে হয়।



গেমের পটভূমি হিসেবে নিকট ভবিষ্যতের সময়কে বেছে নেয়া হয়েছে। সেই সময়টা হচ্ছে ২০১৬ সাল। মধ্যপ্রাচ্যে একটি পারমাণবিক বোমা ফেলার কারণে ৬ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। সেই সাথে বিশ্বে জ্বালানি তেলের প্রচন্ড অভাব দিয়ে শুরু হয় নতুন এক যুদ্ধের। বিশ্বের সব দেশ এই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শুরু কল্পিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের।

গেমে মোট সাত ধরনের ইউনিট বা ট্রুপ পাওয়া যাবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রাইফেলম্যান, ইঞ্জিনিয়ার, ট্যাঙ্ক, ট্রান্সপোর্ট, গানশিপ, আর্টিলারি, কমান্ড ভেহিকল ইত্যাদি। এগুলো দিয়েই যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হতে হবে।

গেমে তিনটি দল নিয়ে খেলা যাবে। এগুলো হচ্ছে রাশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকা। মূলত পুরো বিশ্বের জ্বালানি শক্তির ভাগ বসাতে এই যুদ্ধের শুরু- এমনটাই দেখানো হয়েছে এই গেমে।

রিলিজ পাবার পর এই গেমটি নিয়ে গেমারদের বেশ হতাশ হতে হয়েছে। তার কারণ এই গেমটি সিরিজের অন্যান্য গেমের উত্তেজনা আনতে পারেনি। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এই সিরিজের সেরা গেম এটি গ্রাফিক্স এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের দিক থেকে। নতুন নতুন ইভেন্ট হঠাৎ করে যুক্ত করার ফলে এই গেমের সাথে গেমারদের মানিয়ে নিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাই বলে এটা বলা যাবে না, এই গেম বাজে বা সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এই গেম খেলতে অনেক গেমারেরই কিছুটা সমস্যা হবে তার কারণ হচ্ছে এর হাই সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস। এই গেমটি খেলতে উঁচুমানের গ্রাফিক্স কার্ড এবং শক্তিশালী র্যা মের দরকার হবে।

এবার গেমটির গ্রাফিক্সের কথায় আসা যাক। এর গ্রাফিক্সের মান এককথায় অতুলনীয়। তাই খেলতে গেলে একটু বেশি মেমরি দরকার হবে। UBI Soft সাধারণত অত্যন্ত কম রিকোয়ারমেন্টসেও চমৎকার গ্রাফিক্স দেয়। এ গেমটিতেও কম ভিডিও মেমরিতে অত্যন্ত চমৎকার গ্রাফিক্স পাওয়া যায় না। যত বেশি সিস্টেম শক্তিশালী হবে তত বেশি এবং ভালো মানসম্পন্ন গ্রাফিক্স পাওয়া যাবে এতে। এর 3D গ্রাফিক্স কোয়ালিটি কোমল এবং মনোরম। গেমের অডিও এবং ভিজ্যুয়াল কোয়ালিটি এককথায় অসাধারণ। বিশেষ করে এর ভিজ্যুয়াল কোয়ালিটি এতটাই অসাধারণ যে আপনার খেলার সময় মনেই হবে না। আপনি গেম খেলছেন। এর ভিজ্যুয়াল কোয়ালিটি পুরোপুরি হলিউডি মুভি মানের। আর যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি নিমেষেই দূর করে দেবে এই গেম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই দেরি না করে ঝাঁপিয়ে পড়ুন অত্যাধুনিক যুগের গেমে।

এই গেমটি একইসাথে পিসি, এক্সবক্স, প্লেস্টেশন, নিনটেন্ডো, পিএসপি প্রভৃতি প্লাটফর্মে ছাড়া হয়েছে। এগুলো থেকে যে কোনোটিতে খেলা যাবে এই গেম।

যা যা প্রয়োজন :
প্রসেসর : পেন্টিয়াম ৪ বা তদুর্ধ, এএমডি অ্যাথলন বা তদুর্ধ। গ্রাফিক্স কার্ড : ২৫৬ মেগাবাইট বা তদুর্ধ। র‌্যাম : ১ গিগাবাইট বা তার বেশি।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mortuza_ahmad@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৯ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস