লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - সেপ্টেম্বর
গেমের জগৎ
এজ অব ওয়ান্ডারস ৩
ট্যাক্টিক্যাল ব্যাটল আর ওয়ার্ল্ড ম্যাপ একই গেমের মধ্যে থাকাটা বেশ ঝামেলার ও ঝুঁকিপূর্ণ । দুটি অংশের একটিও যদি অপরটির চেয়ে হালকা-কম চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়, তাহলেই এক অংশের তুলনায় গেমের অন্য অংশকে দুর্বল মনে করে দেখার সম্ভাবনা থেকে যায়। তবে যখন কোনো গেম সত্যিকার অর্থেই যদি দুটি অংশকেই অনন্য সাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে, তাহলে তা থেকে দূরে থাকা যেকোনো স্ট্র্যাটেজি গেমারের পক্ষে অসম্ভব। অর্কস, ড্যর্ভস, ড্রাকনিয়ানসদের নিয়ে যুদ্ধ করে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে হবে। ম্যাপ স্টাইল সিভিলাইজেশনের মতোই। জয় করতে হবে অজানাকে, ডাঞ্জনস, প্যালেস আর রাইভাল হিরোদেরকে। সাথে আছে শক্তিশালী কাস্টমাইজেশন সেকশন, যেখানে হিরো কাস্টমাইজেশন করা যাবে। আছে ফ্যান্টাসি সেটিংস দিয়ে ইউনিট ক্র্যাফটিং, যা নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো সেনাবাহিনীকে তৈরি করা যাবে।
পুরো এজ অব ওয়ান্ডারস ৩-এর ব্যাটল স্কিম অসম্ভব দ্রুত। তাই দক্ষ গেমারদের জন্য এটি পারফেক্ট স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যাটফর্ম হলেও রুকিদের চিমিত্মত হওয়ার কিছু নেই। গেমটির অসাধারণ গেমপ্লে গেমারকে দেবে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা, যদিও টার্নভিত্তিক। তারপরও পুরো ব্যাটল স্কিম কখনই গেমারকে একঘেয়েমিতে ফেলবে না। যুদ্ধ আরও জমজমাট হয়ে ওঠে, যখন খুব শক্তিশালী কোনো হিরোর সাথে ডিমনদের ব্যাটল শুরু হয় কিংবা যখন বিশাল এক সিজ উইপনারি-মিক্সড আর্মির সামনে পরে কাবু হয়ে ওঠে।
সাথে আছে ক্যাম্পেইন মুডের বিশাল ম্যাপস কালেকশন, যা দিয়ে সহজেই পুরো দু’দিন চালিয়ে দেয়া যাবে। অদ্ভুত সুন্দর টেক্সচার, টেরিয়ান, রিসোর্স সবকিছুই গেমারকে মুগ্ধ করবে। সাথে তৈরি করা প্রতিটি সিটিতে থাকছে নির্দিষ্ট রেসিয়াল ইনহ্যাবিটেট, তাই সেগুলো দেখাশোনা করাটাও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হবে। সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশ ছাড়াও গেমারকে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ওপরও কিছুটা নির্ভর করতে হবে। কারণ, গেমটির এআই যথেষ্ট ভালো প্রতিপক্ষ। সবকিছু মিলিয়ে এজ অব ওয়ান্ডারস ৩ গেমারকে যুগের অন্যতম সফল ও উত্তেজনাপূর্ণ টার্নভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি অভিজ্ঞতা দেবে। তাই দেরি না করে এখনই কৌশলী স্ট্র্যাটেজিস্ট হয়ে উঠুন এজ অব ওয়ান্ডারস ৩-এর সাথে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭, সিপিইউ : কোর টু ডুয়ো/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/২ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিসতা/৭, ভিডিও কার্ড : ৫১২ মেগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস
ইউরোপা ইউনিভার্সালস ৪
জনপ্রিয় গেমিং ফ্র্যাঞ্চাইজ ইউরোপা ইউনিভার্সালসের চতুর্থ গেম ইউরোপা ইউনিভার্সালস ৪ এবার গেমিং জগতে ছোটখাটো একটা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ফেলেছে। কারণ, এবারের ইউরোপা ইউনিভার্সালসে আছে দুর্দান্ত গতিময়তা, জয় করার মতো অনেক দেশ আছে, মোটামুটি একশ’রও বেশি। আছে ইচ্ছেমতো কান্ট্রি কাস্টমাইজেশন আর এন্ডলেস গেমপ্লের সুবিধা। ডিপ স্ট্র্যাটেজিক গেমপ্লে গেমারকে দেবে অতিইন্দ্রিয় সচেতনতার আমেজ, যা সম্পূর্ণ টার্নভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি গেমিংকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যারা সত্যিকার অর্থেই ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী, তাদের জন্য এর চেয়ে দুর্দান্ত সেশন আর কিছুই হতে পারে না। কারণ, ইউরোপা ইউনিভার্সালস ৪-এ আছে কলোনিয়াল যুগের ইতিহাস, যা ৪০০ বছরের পরবর্তী ঘটনাবলি পর্যন্ত কভার করে, যা সম্পূর্ণ গেমিংকে অন্য সবকিছু থেকে আলাদা করে। যেহেতু গেমার এখানে একমাত্র অধিপতি, তাই তার কথাই আইন। তাই যেকোনো রাষ্ট্রের ছোটখাটো সব ধরনের সিদ্ধান্ত গেমারকে নিজেই নিতে হবে।
থাকবে সব ধরনের কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, সম্পদ বিবরণ, বিপস্নব, বাসস্থান, খাদ্য ব্যবস্থা, অর্থনীতি- সব গেমারকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নেয়া যাবে যোগ্য সেনাপতি, জ্ঞানী উপদেষ্টা, দক্ষ বিজ্ঞানীদেরকে। আছে ধর্মগুরু, গোয়েন্দা, শিক্ষক। আছে নিত্যনতুন আইডিয়া, টেক, মিলিটারি আপগ্রেডস। বাণিজ্য আর যুদ্ধনীতি দুটোকেই জিইয়ে রাখতে হবে সমানতালে। যুজতে হবে অজানা কলোনিস্টদের সাথে। তাদেরকে নিজের আয়ত্তে আনতে হবে। শত্রুদের নির্মমভাবে ধ্বংস করতে হবে। এখানে নেই কোনো অতিপ্রাকৃত শক্তি। নেই কোনো বানোয়াট সম্ভাবনা। তাই যারা সত্যসন্ধানী, তারা বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করতে পারবেন গেমটি।
ইউরোপা ইউনিভার্সালস ৪-এ ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক ক্রুসেডারস কিং ২-এর গ্রাফিক্স ইঞ্জিন, যা গেমিংয়ে আনবে উচ্ছল তারল্য। গেমটির থিম বেসিস হচ্ছে- ঞযরহশ এষড়নধষষু, অপঃ খড়পধষষু। যারা সম্পূর্ণ রোমান সাম্রাজ্যকে নিজের মতো করে সাজাতে চান এবং ইতিহাসকে লিখতে চান নিজের মতো করে, তাদের জন্য ইউরোপা ইউনিভার্সালস ৪-এর কোনো বিকল্প নেই। যারা একটুখানি ক্লাসিক, তাদের থেকে শুরু করে যারা রাফ অ্যান্ড টাফ গেমিং ভালোবাসেন, তাদের সবার পছন্দের সাথেই গেমটি বেশ মানানসই হয়ে উঠবে। উপদেশ শুধু একটাই- অনেকগুলো দেশের সাথে একসাথে যুদ্ধে না জড়িয়ে পড়াটাই ভালো। তাতে নিজের রাষ্ট্রকেও সুগঠিত রাখা সহজ হয়। সাথে সহস্র বছরের উপনিবেশবাদের ইতিহাস, শোষণ, অত্যাচারের গল্প মুছে নতুন আরম্ভতে বসে পড়ুন ইউরোপা ইউনিভার্সালস ৪ নিয়ে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭, সিপিইউ : কোর টু ডুয়ো/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/২ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিসতা/৭, ভিডিও কার্ড : ১ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।
ব্যাটলফিল্ড ৩
পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষের এক জায়গাতে বেশ মিল আছে। তারা প্রত্যেকেই অবাঞ্ছিত বিপদ এড়িয়ে চলতে চায়। তবুও তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা দুয়েকটা নয়, পাকাপাকি ৬৪ ধরনের বিপদ নিয়ে খেলা করতে পছন্দ করবে। আরও সোজা করে বলতে ব্যাটলফিল্ড ৩ খেলতে পছন্দ করবে। ব্যাটলফিল্ড ৪-এর অসম্ভব জনপ্রিয়তার পর গেমাররা গেমটির প্রি-সিক্যুয়ালগুলো নিয়ে বসতেই পারেন। বিপজ্জনক এক খেলাঘরে নিয়ে যাবে গেমারকে ব্যাটলফিল্ড ৩। আর এটা নতুন করে বলার কিছু নেই, এখন পর্যন্ত ব্যাটলফিল্ড ডাইসের ফার্স্ট পারসন শুটিং কিংবদমিত্ম, যাতে পাওয়া যাবে ২০১৪-এর বাস্তব আমেজ। সাথে আরও আছে ব্যাটলফিল্ড ২-এর কমান্ডিং ট্যাকটিক্স, বাস্তববাদ, শ্রেণিবিন্যাস আর ব্যাটলফিল্ড ৩-এর অসম্ভব সুন্দর গ্রাফিক্স। ব্যাটলফিল্ড সিরিজের যুদ্ধক্ষেত্র হচ্ছে আজ পর্যন্ত তৈরি হওয়া গেমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অজানা আর বাস্তবসম্মত যুদ্ধক্ষেত্র; যাকে গেমাররা ওয়াকথ্রু দিয়ে বর্ণনা করেও পুরোপুরি বুঝাতে ব্যর্থ হবেন। আর এতকিছুর পরও যে সমস্যা হয়েছে, তা হলো ডাইস নিজের পায়ে হয়তো নিজেই কুড়াল মেরে বসেছে।
ব্যাটলফিল্ড ৩-এর সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো এর যুদ্ধক্ষেত্র অদ্ভুতভাবে আকস্মিক, যেকোনো ধরনের ধারাবাহিকতাবিহীন। গেমটি শুরু হয় বেশ বড় ধরনের ৩২ জন যোদ্ধার দল নিয়ে। শুরু হয় বিশাল এর বাঁধের বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে। ঘটনাস্থল ইরাক-ইরান, আর সময়কাল দীর্ঘ নয় মাস। ঘটনা চলতে থাকবে আজারবাইজান সীমান্ত থেকে শুরু করে প্যারিস-নিউইয়র্ক পর্যন্ত। বেশিরভাগই স্টাফ সার্জেন্ট হেনরি ব্যাকবার্ন ফ্ল্যাশব্যাক থেকে। আছে লুকানো এক্সপেস্নাসিভস, যা যোদ্ধাদের বাধ্য করে তাদের বুদ্ধিমত্তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে এবং তাদেরকে ওই ভয়ঙ্কর বিভীষিকাময় পরিবেশে বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে। প্রাথমিক ধাক্কা শেষ হয়ে যাওয়ার পর আবার এই ভেবে বসে থাকলে চলবে না যে তখন বিশ্রামের সময়। কারণ, চারদিকে যুদ্ধের দামামা বাজছে। ছোটখাটো সমস্যা শেষ হয়ে এলে বিশাল বিশাল ট্যাঙ্ক আর বিভিন্ন সাঁজোয়া যান ঝাঁকে ঝাঁকে মহড়া দিতে হাজির হয়ে যাবে আর গেমারদের শুরু করতে হবে ব্যাটলফিল্ড ৩-এর যুদ্ধযাত্রা। আর এর মাঝে থেকেই যোদ্ধাদের ঘুরে বেড়াতে হবে শত্রুদের এলাকায়। সাথে সাথে লক্ষ রাখতে হবে যাতে কোনোভাবেই শত্রুদের হাতে না পড়ে। বেঁচে থাকার সাথে সাথে মুছে ফেলতে হবে বেঁচে থাকার সবরকম চিহ্ন। আর প্রত্যেক সময় গেমার নিত্যনতুন স্ট্র্যাটেজি গেমারকে এনে দেবে নতুন লেভেল আর এসব স্ট্র্যাটেজি গেমারকে তৈরি করতে হবে সূক্ষ্মতম মস্তিষ্কের সাহায্যে, যার কয়েকটি করতে হবে মুহূর্তের ভেতরে। কোনো কোনোটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ সময়। প্রত্যেকটি লেভেলের সাথে সাথে আরমরি আর আর্সেনালের আয়তনও বাড়বে।
এখানে গেমারের জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী পরিবেশ এবং সবচেয়ে বড় বন্ধুও তাই। গেমারকে ব্যাটলফিল্ডের সচরাচর যুদ্ধের পাশাপাশি খুঁজতে হবে লুকানোর জন্য, বেঁচে থাকার জন্য, বাঁচিয়ে রাখার জন্য এলাকা। আর মৌলিক ব্যাটলফিল্ড গেমিংয়ের মতো যেকোনো স্ট্রাকচার ব্যবহারযোগ্য ও ধ্বংসযোগ্য। গেমাররা সচরাচর গেরিলা আক্রমণ এবং প্ল্যান করা চোরাগোপ্তা হামলার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আছে সম্পূর্ণ নতুন হাতাহাতি যুদ্ধের অস্ত্রভান্ডার, যেগুলো দিয়ে গেমাররা নিজেদের মতো করে সিগনেচার কিলিং মুভ তৈরি করতে পারবেন। ব্যাটলফিল্ড ৩ খেলার সময় গেমারকে প্রতিটি মুহূর্তে মাথায় রাখতে হবে, যেকোনো মুহূর্তের সুযোগই সবচেয়ে বড় যুদ্ধ জিতিয়ে দিতে পারে। আক্রমণই সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা- এই তত্ত্ব সবসময় কাজ নাও করতে পারে। তাই মাঝে মাঝে খুব ভালোভাবে গা-ঢাকা দেয়ার পর প্রতিআক্রমণই হতে পারে সবচেয়ে ভালো পন্থা। সুতরাং, গেমারদের উচিত দেরি না করে বিশ্বযুদ্ধের সত্যিকারের শিহরণ উপভোগ করা।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭, সিপিইউ : কোর টু ডুয়ো/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ১ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/২ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিসতা/৭, ভিডিও কার্ড : ৫১২ মেগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।
ফিডব্যাক : alyousufhridoy@yahoo.com