• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ঢাকায় ক্যানন ক্যামেরার বিশ্বমানের সার্ভিস সেন্টার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সোহেল রানা
মোট লেখা:৪০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ক্যামেরা
তথ্যসূত্র:
আলাপচারিতা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ঢাকায় ক্যানন ক্যামেরার বিশ্বমানের সার্ভিস সেন্টার
৮১ বছর ধরে ক্যামেরা তৈরি করে আসছে বিশ্বের অন্যতম বড় প্রযুক্তি কোম্পানি জাপানের ক্যানন। বাংলাদেশে ক্যানন ক্যামেরার পরিবেশক হিসেবে ২০০৮ সাল থেকে কাজ করছে জেএএন অ্যাসোসিয়েটস। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ক্যাননের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় গড়ে তুলেছে বিশ্বমানের ক্যামেরা সার্ভিস সেন্টার। ফলে দেশের ক্যানন ক্যামেরা ব্যবহারকারীরা নিশ্চিমেত্ম ফটোগ্রাফি করছেন।
ঢাকায় ক্যানন ক্যামেরা সার্ভিস সেন্টারের আইসিপি (ইমেজ কমিউনিকেশন প্রোডাক্ট) বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার স ম আহসান হাবীব বলেন, ক্যানন চায় ক্যামেরা বিক্রির আগে মানসম্পন্ন সার্ভিস সেন্টার তৈরির নিশ্চয়তা। এই বিবেচনায় ২০০৮ সালে ক্যাননের পরিবেশক হিসেবে কাজ শুরু করার সময় থেকেই ক্যাননের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে সার্ভিস ল্যাব তৈরি করা হয়। কমপিউটার সায়েন্সে পড়াশোনার শুরু থেকে আমি এই সার্ভিস সেন্টারে আছি। ক্যানন সিঙ্গাপুরে আমিসহ আমাদের অন্য ইঞ্জিনিয়ারেরা দীর্ঘমেয়াদে ক্যামেরার বেসিক ট্রেনিং, ফটোগ্রাফিক ট্রেনিং ও অন জব ট্রেনিং করে এসে এখানে কাজ শুরু করি। বছরে দুইবার নতুন পণ্য বাজারে আনার সময় সিঙ্গাপুরে আমাদের ট্রেনিং করানো হয়। বর্তমানে আমরা ক্যাননের সব ধরনের ডিজিটাল ক্যামেরা সার্ভিস করি। সার্ভিসিংয়ে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে অন্যান্য দেশের মতো এখানেও ক্যানন নিয়মিত অডিট, ল্যাব পরিদর্শন ও মনিটরিং করে রিপোর্ট দেয়। এতে অন্যান্য দেশের চেয়ে আমাদের সার্ভিস কোয়ালিটি নিয়ে ক্যানন অনেক বেশি সন্তুষ্ট। আমরা দ্রুততার সাথে সেবা দিই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিনে দিনে সেবা দিয়ে থাকি। এখানে ক্যামেরার প্রায় ৬০ শতাংশ অপটিক্যাল ইউনিটের সমস্যাই আমরা বেশি পাই। এর অন্যতম কারণ সচেতনতার অভাবে ক্যামেরা হাত থেকে পড়ে যাওয়া। এজন্য রিস্ট বেল্ট হাতে বেঁধে রাখা উচিত। এছাড়া তরল পদার্থ, সমুদ্রের নোনা পানি থেকে ক্যামেরা দূরে রাখা বা সাবধানে ব্যবহার করা উচিত।
ক্যানন ক্যামেরা সার্ভিস সেন্টারের আইসিপি বিভাগের সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার শিউলি আক্তার বলেন, আমি ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করে ক্যানন ক্যামেরা সার্ভিস সেন্টারে কাজ শুরু করি। এখানে যোগদান করে ক্যানন সিঙ্গাপুরে ট্রেনিং নিয়ে এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছি। এই সেক্টরে মেয়েদের কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। জেএএন অ্যাসোসিয়েটসে কাজের পরিবেশ অনেক ভালো। আমরা যেকোনো ক্যামেরা হাতে পাওয়ার পর দ্রুত সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করে কাস্টোমারকে ফেরত দিই। ক্যামেরার সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আমাদের আছে বিশ্বমানের ল্যাব সুবিধা। অন্যান্য খাতের চেয়ে ক্যামেরা সার্ভিসিংয়ে সামনে অনেক সুযোগ তৈরি হবে। এ ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা আমাদের তরুণ প্রজন্ম কাজে লাগাতে পারে
ক্যামেরা কেনার আগে বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন
আবদুলস্নাহ আল সাফী
মহাব্যবস্থাপক, জেএএন অ্যাসোসিয়েটস
জেএএন অ্যাসোসিয়েটসের মহাব্যবস্থাপক আবদুলস্নাহ আল সাফী বলেন, জেএএন অ্যাসোসিয়েটস প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রায় ২৫ বছর ধরে দেশের বাজারে ব্যবসায় করছে। এর মধ্যে ২০ বছর প্রতিষ্ঠানটি ক্যাননের প্রিন্টার, স্ক্যানারসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে কাজ করে। ২০০৮ সাল থেকে দেশে ক্যানন ক্যামেরার পরিবেশক হিসেবে সুনামের সাথে কাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা ক্যামেরা বিক্রির পাশাপাশি ক্যামেরা সার্ভিসিং সেবা দিয়ে আসছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের দর্শন হচ্ছে- যে পণ্যই বিক্রি করি না কেন, ক্রেতাদের মানসম্পন্ন সেবা দ্রুততার সাথে দেয়া। ক্যানন ক্যামেরা সার্ভিস সেন্টারে বর্তমানে আমরা কম্প্যাক্ট ও এসএলআর ক্যামেরার ক্ষেত্রে প্রায় শতভাগ বিক্রয়-পরবর্তী সেবা দিচ্ছি। এখানে ৬ জন ফুলটাইম ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসিংয়ের কাজ করছেন। এদের মধ্যে একজন মহিলা শুরু থেকেই আছেন, তবে আগে মহিলার সংখ্যা বেশি ছিল। সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে ক্যাননের আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মানের সেবা আমরা দিচ্ছি। ক্যাননের প্রতিনিধিরা প্রতিনিয়তই আমাদের সার্ভিস সেন্টার পরিদর্শন করে মান নিশ্চিত করেন। আমাদের সেবা নিয়ে ক্রেতারা সন্তুষ্ট। আমরা ক্যামেরা সার্ভিসিংয়ের জন্য আলাদা বিজ্ঞাপন করি না। ক্যানন ক্যামেরা ব্যবহারকারীরাই আমাদের অ্যাম্বাসাডর।
বলা যায়, ক্যামেরা সার্ভিসিংয়ে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। খুব উঁচুমানের কিছু লেন্সের সমস্যা ছাড়া সব ধরনের সেবা দিতে আমরা সক্ষম। এই ধরনের লেন্স দেশে হাতেগোনা। ওই মানের লেন্সের সার্ভিস সার্কসহ এই অঞ্চলের মধ্যে শুধু সিঙ্গাপুরে আছে। আমরা ক্যানন সিঙ্গাপুরের অধীনে কাজ করি। আমরা শুধু ক্যাননের ডিজিটাল ক্যামেরা সার্ভিস করি। আমাদের সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারেরা ক্যানন সিঙ্গাপুর থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ক্যামেরার সমস্যা নিয়ে এলে আমরা দিনের মধ্যে তা সমাধান করে ক্রেতাদের ফেরত দিই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়তো দুইদিনও লাগে, কিন্তু এর বেশি নয়। এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টির পরও আমরা সার্ভিস সেবা দিই। তবে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়। এক বছর ওয়ারেন্টিকালীন ক্রেতা যতবার খুশি ততবার আমাদের কাছে এসে ফ্রি সার্ভিস নিতে পারেন। আমরা পরামর্শ দিই ফটোগ্রাফার প্রতিবার আউটিং শেষে আমাদের কাছে এসে যেন সার্ভিস করিয়ে নেন। এতে ক্যামেরা ভালো থাকে দীর্ঘদিন। দেশে এখন ফটোগ্রাফি দ্রুত প্রসার লাভ করছে। বর্তমানে কম্প্যাক্ট ক্যামেরার বিক্রি কমেছে আর এসএলআর ক্যামেরার বিক্রি বেড়েছে। এখন কম্প্যাক্ট ক্যামেরার জায়গা দখল করছে স্মার্টফোন। মজার ব্যাপার- স্মার্টফোন যারা ব্যবহার করছেন, তারা প্রচুর ছবি তুলছেন, ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করছেন। একটা সময় তারা ছবির কোয়ালিটিসহ ফটোগ্রাফির নানা বিষয়ে জানার পর মানসম্পন্ন ছবি তোলার জন্য এসএলআর কিনছেন। আগে দেশে ক্যামেরা বিক্রির প্রায় ৭০ শতাংশ ছিল কম্প্যাক্ট ক্যামেরা আর বাকিটা ছিল এসএলআর। এখন এসএলআর দখল করেছে কম্প্যাক্ট ক্যামেরার জায়গা। দেশে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে এসএলআর বিক্রি। দেশে অদূর ভবিষ্যতে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর একটি বড় অংশ এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার করবে। দেশের বিপুলসংখ্যক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর বিবেচনায় ক্যামেরার বাজারও অনেক প্রসারিত হচ্ছে দ্রুত। এত বিপুল পরিমাণ ক্যামেরা সার্ভিস করাতে প্রচুর দক্ষ জনশক্তির দরকার হবে। আমরা কমপিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যালে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের ক্যামেরা সার্ভিসিংয়ে ইন্টার্ন করার সুযোগ দেয়ে থাকি। এদের মধ্য থেকে কেউ কেউ কাজের সুযোগও পায়। আমি মনে করি, প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ে ফটোগ্রাফি বিষয়ে একটি অধ্যায় সংযোজন করা উচিত। ফটোগ্রাফি দেখার চোখ খুলে দেয়। অনেক বিখ্যাত ফটোগ্রাফার বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে ফটোগ্রাফির মক্কা। এই খাতে কাজের অনেক সুযোগ আছে।
নতুন যারা ক্যামেরা কিনতে চান, তাদের কাছে আমর পরামর্শ- যে প্রতিষ্ঠান থেকেই ক্যামেরা কেনেন না কেন, কেনার সময় বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে জেনে নিন। বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সার্ভিস ল্যাব, দক্ষ জনবল নিজে দেখে নিশ্চিত হোন। ক্যামেরা লিগ্যাল চ্যানেলে অবশ্যই অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকে কিনবেন। এতে বিক্রয়োত্তর সেবা ভালোভাবে পাবেন। নিশ্চিত হয়ে নিন, ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি সম্পর্কে। অনেকেই মনে করেন, ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পাওয়া যায়। ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিজের দেশের বাইরে দুই বা ততোধিক দেশেই শুধু এ সেবাটি পাওয়া যায়। তবে যেকোনো দেশ থেকে ক্যানন ক্যামেরা কিনে ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি নিয়ে আমাদের কাছে এলে আমরা তা ফি নিয়ে সার্ভিস করে থাকি।
পানি ও তরলজাতীয় পদার্থ বিশেষ করে সমুদ্রের নোনা পানি থেকে ক্যামেরা দূরে রাখতে হবে। কেননা সমুদ্রের পানিতে ক্যামেরা পড়ে গেলে সেটি ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ক্যামেরা ব্যবহার করার সময় রিস্ট বেল্ট হাতে বা কাঁধের সাথে আটকে রাখুন। এতে ক্যামেরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক কম থাকে। ক্যামেরা কেনার সময় ব্যাগ বা ক্যামেরা রাখার খাপ কিনে নিন ক্যামেরা বহন করার জন্য। প্রয়োজন হলে ওয়াটার প্রম্নফ খাপ ব্যবহার করতে পারেন। ঘন কুয়াশার মধ্যে ক্যামেরা ব্যবহার না করা ভালো। এতে কুয়াশার জলকণা ঢুকে ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ক্যামেরা ভালো রাখার জন্য সিলিকন বা সিলিকা জেল ব্যবহার করতে পারেন। ক্যামেরা ব্যবহার করার পর ব্যাটারি খুলে রাখা উচিত। ভ্রমণের সময় ক্যামেরার ব্যাটারি খুলে রাখাই ভালো। ক্যামেরায় ব্যাটারি লাগানো থাকলে যেকোনো সময় ক্যামেরা চালু হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্যামেরা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বর্তমানে বাজারে কমবেশি সব স্টিল ক্যামেরায় ভিডিওচিত্র ধারণের সুবিধা আছে। স্টিল ক্যামেরায় একনাগাড়ে বেশি সময়ের ভিডিও ধারণ করা উচিত নয়। স্টিল ক্যামেরায় একনাগাড়ে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে দশ মিনিট রেকর্ড করা ভালো। এর চেয়ে বেশি রেকর্ড করলে ক্যামেরার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভিডিও রেকর্ড করলে দ্রুত চার্জ ফুরিয়ে যায় ও ব্যাটারির স্থায়িত্ব অনেক কমে যায়

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - এপ্রিল সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস