লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
গেমে মুক্তিযুদ্ধ
টুক-পলানটুক থেকে চোর-পুলিশ। এরপর যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা। এভাবে বেড়ে ওঠে শৈশব। প্রযুক্তির বদৌলতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়। কল অব ডিউটি, মেডেল অব অনার, ব্যাটল ফিল্ড, টম ক্লায়ান্স খেলে বেড়ে ওঠা নগর শিশু-তরুণেরা। আজ তারা পিসি কিংবা মুঠোফোনে আঙুলের স্পর্শে অনুভব করছে বইয়ের পাতার ভাঁজে চাপা পড়ে থাকা গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ। প্রযুক্তির দ্যুতিতে হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধ ধারণ করে বেড়ে উঠছে শিশু-কিশোর-তরুণেরা। বড়রা নয়, তরুণেরাই তৈরি করছে মুক্তিযুদ্ধের গেম। আর তা খেলছে দেশের সীমানার ওপারের শিশুরাও। ইতোমধ্যেই এমন তিনটি গেম প্রযুক্তি-দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় গাথা। বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গেম নিয়ে হাজির হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আরও দুটি দল। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গেম তৈরির এই মিশনটা শুরু হয় ২০০৪ সালে। মা-মাটির রক্তের টানে এক দশকের মাথায় ফের জেগে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রযুক্তিযোদ্ধারা। স্বেচ্ছাশ্রমে ৩০ সদস্যের টিম ৭১ ২০১৪ সালের ২৬ মার্চ অবমুক্ত করে ‘লিবারেশন ৭১’। একই পথ ধরে সরকারি অনুদানে তৈরি হয় ‘হিরোস অব ৭১’ ও ‘যুদ্ধ ৭১’ । আর এই বিজয়ের মাসে সম্প্রতি মুক্তি পায় ‘ব্যাটেল অব ৭১’। আসছে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা বীরশ্রেষ্ঠ আবদুর রউফ পর্ব প্রকাশ করতে যাচ্ছে টিম ৭১। সব ঠিক থাকলে বিজয়ের মাসেই আসছে নতুন গেম ‘ম্যাসিভ যুদ্ধ’। এভাবেই প্রতিবছর আসছে নতুন নতুন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গেম। এসব গেমে প্রযুক্তির উৎকর্ষে আমাদের প্রযুক্তিযোদ্ধাদের মুন্সিয়ানাকে যেভাবে জানান দিচ্ছে, তেমনি গড়পরতা গেম থেকে বেরিয়ে এসে ডিজিটাল জাতিসত্তার পতাকা উড়িয়ে চলছে বিশ্বময়।
অরুণোদয়ের অগ্নিশিখা
আজ থেকে এক যুগ আগে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রথম ভিডিও গেম ‘অরুণোদয়ের অগ্নিশিখা’ নিয়ে প্রযুক্তির আঙিনায় আলো ছড়ায় সোম কমপিউটার্স লিমিটেড। ত্রিমাত্রিক ইন্টারেক্টিভ ইঞ্জিনে তৈরি তিন ধাপের গেমটি প্রযোজনা করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা হক রিনা। আখাউড়া, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের তিনটি যুদ্ধ সংবলিত গেমটির নকশা তৈরি করেন রাজীব আহমেদ। এর প্রোগ্রামারের দায়িত্ব পালন করেন হাসিনুর রেজা তপু। অবশ্য বাজার না পাওয়ায় সময়ের স্রোতে মিলিয়ে যায় গেমটি। গেমটি নিয়ে আফরোজা হক জানালেন, আবেগ থেকে গেমটি প্রকাশ করা হয়। গেমের নিজস্ব ইঞ্জিন ত্রিমাত্রিক ইঞ্জিনটি তৈরি করে রাজশাহীর একটি প্রোগ্রামার গ্রম্নপ। শহীদ আজাদসহ সব মুক্তিযোদ্ধাকে নিবেদন করা হয় গেমটি। গেমটি তৈরিতে ৬ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। সিডিতে প্রকাশ করার পর দেশ-বিদেশে বেশ বিক্রি হয়। কিন্তু পাইরেসির কারণে পুরো ব্যবসায় ঝুঁকির মুখে পড়ে। পারিবারিকভাবে একটু চাপের মুখে পড়ে অবশেষে গেম ডেভেলপে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। বেশ কিছুদিন পর আবার গেমটিকে নতুনভাবে তৈরি করতে কিছু অনুদানের চেষ্টা করি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমিও কর্মজীবন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করি। এখন আমার ছেলে শমিক আশফাকুল হক ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গেম ডেভেলপ করছে। সুযোগ হলে ওকে নিয়ে হয়তো আবার শুরু করতে পারি।
লিবারেশন ৭১
শুরুটা ২০১৪ সালে। ওই বছর ২৬ মার্চ অবমুক্ত হয় ‘লিবারেশন ৭১’-এর একটি ডেমো। পূর্ণাঙ্গ গেম না হলেও এই ডেমোটির মাধ্যমে গেম শিল্পে মুক্তিযুদ্ধের গেম তৈরিতে প্রেরণা জোগায় আজকের তরুণ ডেভেলপারদের। মাইক্রোসফট উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মের জন্য এই ফাস্ট পারসন শুটার ভিডিও গেমটি তৈরি করে ‘টিম ৭১’। ২০১২ সালে ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী শুরু করে গেমটি নির্মাণের কাজ। এরা সবাই তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার চাপ আর আর্থিক অসচ্ছলতার বাধা পেরিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা (মিশন) নিয়ে সাজানো অপারেশন ৭১-এর ‘রাজারবাগ’ পর্ব প্রকাশের পর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয় টিম ৭১। রাজধানীর বনশ্রীতে পাঁচ বন্ধু মিলে দীর্ঘ পথ অতিক্রমের মিশনে নামে নতুন উদ্যমে। এই দলের হাত ধরেই ১৬ ডিসেম্বর আসছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ আবদুর রউফ পর্ব’। একই সাথে কাজ চলছে আকাশপথে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গেম ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান পর্ব’। টিম ৭১-এর প্রধান নির্বাহী ফারহাদ রাকিব বলেন, আর্থিক সীমাবদ্ধতা জয় করে ধারাবাহিকভাবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পিসি গেম তৈরিতে কাজ করছি আমরা। আমাদের গেমগুলো বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত আনরিয়েল গেম ইঞ্জিনে ডেভেলপ করা হচ্ছে। এগুলো থার্ড পারসন শুটার গেম। গেমটি খেলতে গিয়ে যোদ্ধার প্রয়োজন হবে না হেভি আরমর, অত্যাধুনিক গেজেড কিংবা হাই-ফাই অস্ত্রের। আর আধুনিক যুদ্ধ ট্রেনিংয়েরও দরকার নেই। প্রয়োজন হবে শুধু দেশের জন্য অসীম ভালোবাসা ও সাহসী অন্তর। লুঙ্গি পেঁচিয়ে আর শরীরে শুধু একটি সেন্ডো গেঞ্জি চড়িয়ে নেমে পড়তে হবে মুক্তিযুদ্ধে! আর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল আহমেদ জানালেন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গেম সবার কাছে সহজে পৌঁছে দিতে এবার আমরা ‘খেলো বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে গেম প্রকাশের সহযোগী করেছি।
হিরোস অব ৭১
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আবহে কাল্পনিক ঘটনার ওপর তৈরি প্রথম মোবাইল গেম ‘হিরোস অব ৭১’। অ্যান্ড্রয়িড প্ল্যাটফর্মে গেমটি তৈরি করে ফ্রিল্যান্সার গ্রম্নপ পোর্টব্লিস। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ থেকে অনুদানপ্রাপ্ত এই গেমটির ঘটনা বরিশাল বিভাগের শনিরচর গ্রাম হানাদারমুক্ত করার। গেমটির সময়কাল ১৯৭১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ২টা ১৫ মিনিটে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরে পাঁচজনের কমান্ডো দলের অপারেশন। দলের প্রত্যেকের মুখে কালো কালি মাখা। দুজনের হাতে লাইট মেশিনগান, একজনের হাতে একটি হেভি মেশিনগান, আর বাকি দুজনের কাছে স্ট্যান্ডার্ড ইস্যু রাইফেল। প্রত্যেকের বেল্টেই তিনটি করে গ্রেনেড। এই নিয়েই খেলোয়াড়কে সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার শামসুল আলম হয়ে সাধারণ শ্রমিক কবির মিয়া, মেডিক্যাল শিক্ষার্থী তাপস মৈত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল ওরফে মাহবুব চৌধুরী, ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী বদিউজ্জামান ওরফে বদিকে নিয়ে মধুমতীর পাশে শনিরচর গ্রামের একটা স্কুলে থাকা পাকিস্তানি আর্মির ক্যাম্প তাদের দখল করে নিতে হবে। গেম বিষয়ে গেমটির ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান পোর্টব্লিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশা মুস্তাকিম বলেন, অ্যান্ড্রয়িড ও উইন্ডোজ উভয় প্ল্যাটফর্মের জন্যই আমরা এই সিক্যুয়াল গেমটির দুটি পর্ব প্রকাশ করেছি। তবে তিন দফা আবেদন করেও অ্যাপল কর্তৃপক্ষক্ষর নীতির কারণে এর আইওএস সংস্করণ প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। সবশেষ চলতি বছর ২৬ মার্চ আমরা প্রকাশ করি গেমটির প্রতিশোধ পর্ব। এ জন্য আমরা উদ্ভাবনী প্রকল্প থেকে ২০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছি। আগামী বছরের মার্চে আমরা হাজির হতে চেষ্টা করছি মুক্তিযুদ্ধের আবহে তৈরি স্ট্র্যাটেজি গেম নিয়ে।
ব্যাটল অব ৭১
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর নির্মিত বাংলাদেশে তৈরি প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমপিউটার গেম ‘ব্যাটল অব ৭১’। সম্পূর্ণ দেশীয় পটভূমির উঁচু মানের গ্রাফিক্স, সাউন্ড ইফেক্ট ও ভিডিও কোয়ালিটি সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের এই গেমটি তৈরি করেছে ওয়াসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সম্প্রতি অবমুক্ত গেমটিতে বঙ্গবন্ধুর থ্রিডি অবয়ব ব্যবহার করা হয়েছে। এতে রয়েছে ১০ ধাপ। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা প্রবাহের ওপর নির্মিত এই গেমটির প্রতি পর্বেই শিশুদের জন্য ঘটনা প্রবাহগুলো লিখিত আকারে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানালেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফয়সাল করিম। তিনি জানালেন, গেমটিতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, সিলেটের টি গার্ডেন, কুষ্টিয়া রেজিমেন্ট, কুমিলস্না রেজিমেন্ট, রাঙামাটি, মানিকগঞ্জ, ঢাকার ক্র্যাক পস্নাটুন, চট্টগ্রামের অপারেশন জ্যাকপট, যশোরের গোয়ালহাট যুদ্ধ ও টাঙ্গাইলে মিত্র বাহিনীর এয়ার ড্রপ মিশনে অংশ নিতে হবে খেলোয়াড়কে। ব্যাটল অব ৭১-এর প্রধান প্রকল্প পরিচালক ফয়সাল করিম, প্রধান গেমস ডেভেলপার ফারহান মাহমুদ, প্রধান প্রোগ্রামার মাশরুর মাহমুদ (বয়স ১৪) ও প্রধান থ্রিডি মডেল নির্মাতা সবুজ আল মামুন। ৩০০ টাকার বিনিময়ে গেমটি সিডি প্যাকেটে সরবরাহ করা হচ্ছে।
যুদ্ধ ৭১ : প্রথম প্রতিরোধ
তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত বাংলাদেশে প্রথম ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) প্রযুক্তিতে ‘ যুদ্ধ ৭১ : প্রথম প্রতিরোধ’ (War 71 : The First Defence) নামের গেমটি ডেভেলপ করেছে ডিজিটালবি লিমিটেড কোম্পানি। গেমটিতে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে যে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে উঠেছিল, সেই কাহিনীই উঠে এসেছে। গেমটিতে মোট ৯টি ধাপ রয়েছে। গেমটি ওপেন ওয়ার্ল্ড। তাই গেম প্লেয়ার অস্ত্র, জিপ, গোলাবারুদ, ট্যাঙ্ক থেকে শুরু করে পাক হানাদার বাহিনীর সবকিছু ছিনিয়ে নিতে পারবে। গেমটি আরও ইন্টারেক্টিভ করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR), যার মাধ্যমে একজন গেম প্লেয়ারের অনুভূতি এমন হবে যেন তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নিজেই যুদ্ধ করছেন। গেমটি বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষায়ই থাকছে। খেলার সুবিধার জন্য গেমে একটি পূর্ণাঙ্গ ম্যাপও যুক্ত করা হয়েছে। গেমে থাকছে মোট ৬টি প্ল্যাটফর্ম। ১৬ ডিসেম্বর গেমটি প্রকাশ পাওয়ার কথা জানান ডিজিটালবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিবুল হাসান। তিনি জানান, পিসি ও মোবাইল উভয় সংস্করণের পাশাপাশি আইওএস প্ল্যাটফর্মেও চলবে ‘যুদ্ধ ৭১ : প্রথম প্রতিরোধ’ গেমটি। গেমে ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘটনা প্রবাহকে ধারণ করা হয়েছে। গেমটি অনেকটা জিটিএ ৫-এর আদলে তৈরি করা হয়েছে। ইউনিটি গেম ইঞ্জিনে তৈরি গেমটিতে ৩৬০ ডিগ্রি কোণের ছবি উপভোগ করবে খেলোয়াড়েরা। পিসিতে দেড় জিবি ও মুঠোফোনে ৫০ মেগাবাইট জায়গা নেবে ফার্স্ট ও থার্ড পারসন শুটারের এ গেমটি।
ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আগের, পরের ও মধ্যবর্তী সময়ের যুদ্ধ নিয়ে উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মে তৈরি হচ্ছে সমন্বিত গল্পনির্ভর গেম ‘ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১’। এই গেমে থাকছে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক থেকে শুরু করে ব্যক্তিযুদ্ধের ঘটনা প্রবাহ। শুরু হবে ১৯৪৭ থেকে। বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে গল্প সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই বলে এটি কোনো গোলাগুলির যুদ্ধ নয়। এ যেন অনুভবের খেলা। আজ থেকে আড়াই বছর আগে শুরু হয় গেমটির গবেষণা ও উপাদান সংগ্রহের কাজ। চলতি মাসেই প্রকাশ পেতে যাচ্ছে এই গেমের প্রথম খ-। এই খ-- থাকছে ৮টি ট্র্যাক। সেখানে থাকছে বীরবিক্রমদের কথা। আর মোট ২১ খ--র ৩০০ ট্রাকের নায়কেরা হবেন বীরশ্রেষ্ঠ, বীরাঙ্গনা ও শরণার্থীরা। গেমটি হবে আমাদের ইতিহাস পরিক্রমার ডিজিটাল সংস্করণ। আড়াই মাসের প্রচেষ্টায় সদ্যপ্রসূত গেমটির প্রথম পর্বেই চমকের মুখে পড়বে বিশ্ববাসী। ২০২১ সাল নাগাদ শেষ হবে গেমটি। তখন এটি হবে ইতিহাসভিত্তিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় গেম। গেমটি বিশ্বজুড়ে নাড়া দেবে। গেমটি নিয়ে গেমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাসিভস্টার স্টুডিওর প্রধান নির্বাহী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বলতে আমাদের ’৭১ সালের বাংলাদেশকে বুঝতে হবে। আমরা দেখলাম, মুক্তিযুদ্ধের উপাদান শুধু যুদ্ধে অংশ নেয়া মুক্তিযোদ্ধারা নন। সেই সময়ের অনেক যুদ্ধ জড়িত। যেমন- এর সাথে ভারত, রাশিয়া, চীন ও শ্রীলঙ্কার যুদ্ধ জড়িত। বাদ দেয়া যাবে না সোয়া কোটি শরণার্থীর মধ্যে থাকা ৭ লাখ শিশুকে। আমলে নিতে হয় অর্থনৈতিক যুদ্ধের কথাও। প্রথম পর্ব বিষয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কোনো খেলা হতে পারে না। এটি আমাদের জন্মকথা। তাই ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১-এর প্রথম পর্বে থাকছেন ৮ মুক্তিযোদ্ধা। এরা আমাদের বীরবিক্রম ও বীরপ্রতীক। এখানে খেলোয়াড়রা এই যোদ্ধাদের যুদ্ধ অনুভব করবে। জানা যায়, গেমটি বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে ভাষার দূরত্ব জয় করতে ইতোমধ্যেই ভারত, হংকং ও জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কথা পাকাপোক্ত করেছে ম্যাসিভস্টার। বর্তমানে ১০ জিবি আয়তনের এই গেমটি একক খেলোয়াড়ের জন্য নির্মিত হলেও এর তৃতীয় সংস্করণ থেকে মাল্টিপ্লেয়ার অপশনও যুক্ত হচ্ছে। আত্মপ্রকাশের পর বিনামূল্যে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে খেলা যাবে