• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ডটা২ গেমে টেক-টাইগার ফারহানদের ভারত জয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আতিক রহমান
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
খেলা প্রকল্প
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ডটা২ গেমে টেক-টাইগার ফারহানদের ভারত জয়
পড়ালেখা আর চাকরি কিংবা ব্যবসায় নিয়ে বসে নেই তারা। মুভি দেখা আর ঘুরে বেড়িয়েই অবসর কাটয় না। খেলাধূলায়ও দারুণ পারদর্শী। অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও বৈশ্বিক ভূবনে উড়িয়ে চলছে লালা-সবুজের পতাকা। অনলাইনে ৪টি ব্যাটেলকাপসহ সম্প্রতি ইএসএল লীগে কমপিউটার গেমে পরাশক্তির দেশ ভারত জয় করেছে। বলছিলাম, দ্য ইলেকট্রনিক স্পোর্টস লিগ জয়ী ‘দি কাউন্সিল’ দলের ফারহানদের কথা। সাকিব-তামিমদের মতোই এই দলের সদস্যরা বিশ্বের কাছে সমাদৃত হতে শুরু করেছেন ‘টেক টাইগার’ নামে।
আমাদের টেক টাইগার
নাগরিক আয়োজনে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে খেলার মাঠ। বিনোদনের প্রাকৃতিক আয়োজন। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে অট্টালিকার ভিড়েও সীমানা ছাড়িয়ে হাত বাড়ালেই মুক্ত আকাশ, বিসত্মৃত মাঠ। এই মাঠটাতেও দারুণ খেলছেন আমাদের টাইগাররা। ফিফা, নিড ফর স্পিড, কাউন্টার স্টাইক গ্লোবাল অফেন্সিভ, কল অব ডিউটি, ডিফেন্স অব দ্য এনসেন্টন্স, লিগ অব লিজেন্ডসের মতো গেমস হয়ে উঠেছে তাদের অবসরের সঙ্গী। কেবল বিনোদন নয়, সৃজনশীলতা বাড়াতে বা সামাজিক যোগাযোগ বাড়াতে অনেকেই অনলাইন গেমসে ঝুঁকছে। শুধু বাসায় বসে একা নয়, রীতিমতো অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। গত ১৪ নভেম্বর ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হয় এমনই একটি প্রতিযোগিতা। জনপ্রিয় ভিডিও গেম টুর্নামেন্ট ইএসএলের (‘দ্য ইলেকট্রনিক স্পোর্টস লিগ’) ইন্ডিয়া পর্ব। সেখানে ‘ডটা২’ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের গেমিং দল ‘দি কাউন্সিল’।
দি কাউন্সিল
২০০৭ থেকে ‘দি কাউন্সিল’ দলের অধিনায়ক রাহিব রেজা বন্ধুদের সাথে শুরু করেন ‘ডটা২’ খেলা এবং নাম লেখাতে শুরু করেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। সব প্রতিযোগিতায় একা খেলা যায় না, কিছু গেম খেলতে হয় দলগতভাবে। এদিকে অনলাইনে গেম খেলতে গিয়ে পরিচয় হয় অন্য গেমারদের সাথে। জুতসই একটি দল তৈরির লক্ষ্যে মনে মনে বাছাই করতে থাকেন দক্ষ গেমারদের। ২০১৪ সালে এসে সফল হন। তৈরি করেন ‘দি কাউন্সিল’। এই দলের সদস্য পাঁচজন। দলের অন্যতম খেলোয়াড় ফারহান ইসলাম যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা শেষ করে ফ্লোরা লিমিটেড নামের আইটি কোম্পানিতে ডিরেক্টর হিসেবে আছেন। আইমান ইকবাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায় আছেন। জুন্নুন ইকবাল আগামী বছরের ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার্থী, মহিউদ্দিন রহমান সজল আউটসোর্সিং কাজের সাথে যুক্ত এবং অমিত রিচার্ড আছেন দলের ম্যানেজার হয়ে। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে অধ্যায়নরত রাহিব রেজা দলনেতা। এই দলনেতাকে পেছন থেকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছেন দেশের প্রযুক্তি অঙ্গনের অগ্রপথিক ফ্লোরা লিমিটেড প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মো: নুরুল ইসলাম (এমএন ইসলাম) এর নাতি ফারহান ইসলাম।
ইএসএল জয় নেপথ্যে
অনলাইনে বন্ধুত্ব। সেখানেই খেলতে খলতে দল গঠন। এরপর দেশে বিভিন্ন গেমিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিকভাবে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া। সেই লক্ষ্যে ইএসএলে নিবন্ধন করে দি কাউন্সিল। ইএসএল লিগটি অনেক পুরনো এবং বর্তমান বিশে^ অনেক বড় একটি ই-স্পোর্টস লিগ। তাদের প্রায় ৪০ লাখ নিবন্ধিত গেমার ও প্রায় ৭ লাখ নিবন্ধিত দল আছে বিশে^। এ বছর অনলাইনে বাছাই পর্বে নানা দেশ থেকে এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া ১২০০টির মতো দল। অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় গ্রম্নপ ভিত্তিক প্রতিযোগিতা। এই পর্বে জয়ী আট দলকে চূড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। অনলাইনে জয়ী হয়ে একমাত্র বাংলাদেশী দল হিসেবে চূড়ান্ত পর্ব খেলতে ভারতের বেঙ্গালুরুর টিকেট পায় দি কাউন্সিল। ‘ডটা২’ গেমভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দলটি ভারতের ‘ওরাম পো’ দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পায় ট্রফি ও দেড় লাখ রুপি পুরস্কার।
অবশ্য এর আগেই অনলাইনে চারটি ব্যাটেল কাপ জয়লাভ করে। দি কাউন্সিল এবং ইএসএল স্টার্টার কাপ-৪-এ তারা শীর্ষ চার-এ ছিল। আর বিজিডি২সিবিএল সিজন-২-এ প্রথম এবং বিজিডি২সিবিএল সিজন-৩-এ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে দলটি। এছাড়াও NSU Cybernauts 2016, Auroral Gaming Lounge Championship 2016, E-carnival presents, Shantinagar Tournament 2016, UT 7th ICT Fest 2015, Game fest 2014-15 সবগুলোতে তারা প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
মিশন টেক-টাইগার ও বিশ্বকাপ
ভারত বধের পর সিনায় যেন জোর আরও বেড়ে গেছে দি কাউন্সিল সদস্যদের। এবার প্রস্ত্ততি নিচ্ছেন বিশ্বকাপ জয়ের। তাই ইএসএলের পরবর্তী আসরে অংশ নেয়ার জন্য ডিসেম্বরে আবার ভারত যাচ্ছে দলটি। এবারের মিশনে ‘ওয়ার্ল্ড কাপ ডটা২’ জয়। স্বপ্নের ডানা ছুঁতে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টার অনুশীলন চলছে বলে জানালেন দলের জ্যেষ্ঠ গেমার ফারহান ইসলাম। জানালেন, স্বপ্ন পূরণে তারা এখন সমর্থন পাচ্ছেন পরিবার থেকেও। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, গেম খেললে সময় নষ্ট হয়, পড়াশোনার ক্ষতি হয়- এমনটা মোটেই ঠিক না। তাদের দলের সবাই পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়ম মেনে গেম খেলছেন। কারণ, গেম কখনও তাদের জন্য ‘নেশা’ হয়নি বরং ছিল বিনোদনের মাধ্যম। উত্তরাধিকার সূত্রে লালিত দেশপ্রেম বোধ থেকে বিদেশে থিতু না হয়ে, দেশে ফিরে পারিবারিক ব্যবসায় মনোনিবেশ করা ফারহান ইসলাম আমেরিকায় পড়াশুনা করার সময় ই-স্পোর্টস গেমের সাথে জড়িয়ে পরেন। অরোরা (Aurora) নামে গুলশানে একটি গেমিং ক্যাফে রয়েছে তার। এই ক্যাফে থেকেই ভবিষ্যতে সুপ্ত টেক টাইগারদের (ই-স্পোর্টস খেলোয়াড়) তুলে আনতে চান তিনি


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস