লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
গেমের জগৎ
ফোরজা হরাইজন ৩
দুর্গম বনের মধ্য দিয়ে দুর্ধর্ষ গতিতে ছুটে চলেছে ঝকঝকে পোরশে, পেছনে পেছনে ভয়াল-দর্শন পুলিশের গাড়ি। এই ভয়ঙ্কর সুন্দর কার চেসিং সিনারিও চিন্তা করতে গেলে একটা গেমের কথাই মাথায় আসবে- ফোরজা হরাইজন ৩। আর বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় রেসিং গেম সিরিজ ফোরজা হরাইজন এবার নিয়ে এসেছে ফোরজা হরাইজন ৩। হঠাৎ করে সার্চলাইট আর প্রচ- বাতাস- সবকিছু ওলট-পালট করে হেলিকপ্টার, চেসিং সিনে এসে পড়লেই বুঝা যাবে আসলে গ্রাফিক্স ও সাউন্ড ফিকশন যুগের সাথে সাথে কতখানি এগিয়ে গেছে। এবারের গেমটির ডেভেলপার ক্ল্যাসিক চেসার-রেসার ডায়নামিকের সাথে যোগ করেছে মোস্ট ওয়ান্টেডের ফ্রি ওয়ার্ল্ড রোমিং, যা সিরিজের এই গেমটিকে অন্যগুলোর চেয়ে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
ফোরজা হরাইজন ৩ রাইভালসের কাহিনি শুরু হয় কাউন্টি থেকে, যেখানে দেখানো হয়েছে এখন পর্যন্ত গেমিং জগতের সবচেয়ে বিচিত্র জিওগ্রাফি। স্বপ্ন থেকে বাস্তব সবকিছুকে মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এই শহর। আছে নিত্য-নতুন প্রণোদনা, উন্মাদনা আর রেসিং। ফোরজা হরাইজন ৩ এবার নিয়ে এসেছে ফটো-রিয়ালিস্টিক গ্রাফিক্স, যা গেমারকে এখন পর্যন্ত বাস্তবের সবচেয়ে কাছের স্বাদ এনে দেবে। দেখা যাবে বাস্তবের কাছাকাছি বৃষ্টি, রোদ্দুর, তুষার- যা গেমিংয়ের ওপর বাস্তবের কাছাকাছি প্রভাব ফেলবে। আছে বজ্র, কুয়াশা, চনমনে রাত আর সব ধরনের রেসিং কারস। আর ভালো কথা, এবার আইনের কোন পাশে গেমার থাকতে চান তা গেমার নিজেই ঠিক করে নিতে পারবেন। খেলা যাবে যেকোনো রেসারের চরিত্রে, আর যেই চরিত্রই থাকুক না কেন, সবসময়ই চারপাশে থাকবে রাইভালস, যারা প্রতিটি মুহূর্ত উন্মাদনাময় করে নিতে ভুলবে না।
কাউন্টি পূর্ববর্তী সব ম্যাপ থেকে আকারে বিশাল বড়। সুতরাং শুধু ঘুরে কাটালেও মন্দ লাগবে না। রেসিংয়ের মাঝে মাঝে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়াটা অবশ্য এর মন্দ দিকের মধ্যে একটা। অ্যাস্টন মারটিন থেকে ফেরারি পর্যন্ত সব ধরনের গাড়ি, সাথে স্ট্রিপস অ্যান্ড মাইন, শকওয়েভ, টার্বো বুস্ট সবকিছু মিলিয়ে রমরমা অবস্থা একেবারে। রেসিংয়ের সাথে সাথে আনলক হবে নিত্যনতুন আপগ্রেড। আর মাল্টিপ্লেয়ার খেলতে গেলে কপ হয়ে বন্ধুদের সাথে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া করতেও আনন্দ কম হবে না। সব মিলিয়ে ফোরজা হরাইজন ৩ সম্পূর্ণ সিরিজের এক নতুন অধ্যায়কে সম্পূর্ণ করে তোলে, রেসার জীবনের দুটি দিককেই প্রত্যক্ষ করার এক অনন্য সুযোগ। সবকিছু মিলিয়ে অনেকের কাছেই প্রথম অনেকখানি খেলে ফেলার পর গেমটিকে অতখানি অপ্রত্যাশিত মনে হবে না। তবুও পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজের নতুন ধারায় জুটি হতে দোষ কী! এ ছাড়া ফোরজা হরাইজন ৩-এর মধ্যে এমন কিছু আছে, যা গেমারের মধ্যে এনে দেবে আচমকা অ্যাড্রেনালিন রাশ, চনমনে উত্তেজনা- যা জীবনকে জাগিয়ে তুলবে এক অদ্ভুত দৃঢ়তায়। তাই রেসারদের উচিত এক মুহূর্ত দেরি না করে রাইভালসদের জগতে ঢুকে পড়া।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : ৭/৮/১০, সিপিইউ : কোরআই৫/এএমডি সমমানের, র্যা ম : ১৬ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি, ভিডিও কার্ড : ১ গিগাবাইট, হার্ডডিস্ক : ৩০ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।
রাইভ
রাইভে পিসি গেমারেরা পাবেন কোর প্ল্যাটফর্ম গেমিংয়ের অভিজ্ঞতা, যা সহজেই কিবোর্ড দিয়ে খেলা যাবে, তবে সবচেয়ে ভালো হয় সাথে একটি গেমিং কন্ট্রোলার থাকলে। এখানে আছে সম্পূর্ণ কাস্টমাইজেবল ক্যারাক্টার ট্রেইটের সুবিধা। সবচেয়ে অদ্ভুত মজাদার এর রেট্রো হিরো। হালকা লাইন কোড জানা থাকলে নিজ থেকে পুরোটা তৈরি করেও নেয়া যাবে। ডিজিটাল বিপ্লবের অনেক সুবিধার মধ্যে একটি হচ্ছে- এখন ছোট ছোট ডেভেলপারও তাদের নিজস্ব প্রয়াসে অল্প খরচে দুর্দান্ত কিছু গেম গেমারদেরকে উপহার দিতে পারে। ঠিক তেমনই একটি গেম এই রাইভ। রাইভ হচ্ছে ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাকশন জনরার গেম, যারা ক্যাসলভেনিয়ার মতো গেম খেলে অভ্যস্ত তারা তো বটেই, সব ঘরানার গেম প্লেয়ার ছোটবেলার উচ্ছলতায় ফিরে যাবেন গেমটির সাথে।
গেমের কেন্দ্রীয় চরিত্র শুরুতেই তার আন্ডারলিঙ্কে সুপারপাওয়ার প্রদান করে। পরে এই পুনঃজীবিত ফ্লেম ফেস নাম ধারণ করে। আর তার সাথেই শুরু হয় গেমারের যাত্রা। গেমটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে গেমটির অনিন্দ্যসুন্দর মন ভালো করে দেয়া গ্রাফিকস। ফ্লুইড ক্যারাক্টার অ্যানিমেশন, তার সাথে শক্তিশালী পরিবেশ আর পেছনে চলতে থাকা হালকা চনমনে মেক্সিকান ধাঁচের সাউন্ডট্র্যাক যে কারও মন খারাপের দিনকে ঘুচিয়ে দেবে। গেমটির টেরিয়ান টেক্সচার নিখুঁত ও রঙিন, যা গেমটিতে এনে দিয়েছে রুমিনিসেন্সের স্বাদ।
গেমটিতে আছে ননলিনিয়ার ম্যাপিং, যা এর মজাদার বৈশিষ্ট্যগুলোকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। এতে আছে ব্যাকড্র্যাফটিং, ওপেন এন্ডেড নেচার, শেষ না হওয়া স্কিল সেটশ, নিত্যনতুন জায়গা। শুরুতে ডিপ কমব্যাট সিস্টেমটাকে ঠিকমতো ঠাহর করা যাবে না, আসেত্ম আসেত্ম যখন বেসিক পাঞ্চ আর কিক বাদেও নতুন কমপ্লিমেন্টারি স্কিলগুলো অর্জন করতে থাকবে তখন জ্যাব, আপারকাট, হাই জাম্প ট্যাক্টিক্স থেকে শুরু করে কিছুক্ষণের জন্য মুরগিতে বদলে যাওয়া সবকিছুই ডিপ কমব্যাটে গেমারকে সাহায্য করবে।
রাইভ অ্যাকশন প্যাকড কমব্যাট ছাড়াও আরপিজি লাইট জনরার কিছু কিছু জিনিসও নিয়ে এসেছে। যেমন- পুরো গেম জুড়ে তিন ধরনের ট্রেজার প্যাক পাওয়া যাবে, কয়েন বক্স যা দিয়ে নতুন স্কিলস যোগ করা যাবে, স্পেশাল মিটার বক্স আর হেলথ বক্স। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে ‘লিভিং অ্যান্ড ডেড’। পোলারিটি পুরো গেম শেষ করতে মোটামুটি ছয় ঘণ্টার মতো লাগবে আর গেমারের পুরো গেম শেষে একমাত্র অভিযোগ হবে গেমটা আর একটু বড় হলো না কেন! আর সব মিলিয়ে রংবেরংয়ের রাইভ ট্যুর খুব একটা মন্দ হবে না। তাই বাসায় যদি একগাদা পিচ্চি এসে হুলেস্নাড় শুরু করে দেয়, তাহলে তাদের নিয়ে বসে পড়ুন রাইভ নিয়ে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : ৭ বা তদুর্ধ, সিপিইউ : কোরআই৩/এএমডি সমমানের, র্যা ম : ৪ গিগাবাইট, ভিডিও কার্ড : ১ গিগাবাইট, হার্ডডিস্ক : ৮ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।
কসাক্স ৩
কসাক্স ৩ করা হয়েছে এই বিশাল পৃথিবীর সভ্যতাগুলো নিয়ে। সভ্যতাগুলো তৈরি করা হয়েছে সিড মিয়ারসের মাস্টার পিসগুলোর চেয়েও আকর্ষণীয় করে, সিমুলেটেড নিমেশ দিয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে। ব্যাটল সমন্বয় টেক্স থেকে শুরু করে অতিরিক্ত ১২ জন খেলোয়াড় যোগ করা পর্যন্ত সবকিছুই করা যাবে গেমটিতে। আছে সম্ভাব্য অদ্ভুতুড়ে সব স্ট্র্যাটেজিক কৌশল, যা যেকাউকে গেমটির ফ্যান হতে বাধ্য করবে। গেমে গেমারকে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোম্যানেজমেন্ট করতে হবে, করতে হবে সব ধরনের নির্মাণকাজ ও সাম্রাজ্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গেমারকে নিতে হবে। জয় করতে হবে ছায়াপথের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি তার ভরবেগ পরিচালনা করার ক্ষমতা। খেলার শুরুতে কিছু একটি মৌলিক কৌশল মেনে চলতে হবে। জোগাড় করতে হবে যথেষ্ট সম্পদ। সাথে সাথে সাম্রাজ্যের আর সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব নিতে হবে। শুরু করতে হবে বিজ্ঞান গবেষণা, টেক ল্যাবস আপগ্রেড, বাড়াতে হবে নৌসীমা।
জিরো জি জনরার এই গেমটিতে সবকিছু আরও ট্যাক্টিকাল ও স্ট্র্যাটেজিকাল। বলা যায়, এই ঘরানার অন্যান্য সাম্প্রতিক গেমগুলো থেকে চারগুণ। ঠিক চারগুণ কেন, সেটা আমি বলব না, গেমারেরা নিজেরাই অনুভব করতে পারবেন। ফলে এনচ্যানট্রেসের এই ডেব্যুটির নাম লিজেন্ডারি হিরোস। ফলে বুঝতেই পারছেন এই গেমটির সবচেয়ে অনন্য মাত্রা গেমটির অসাধারণ হিস্ট্রোরিকাল ইন্সিডেন্টস ঘিরে তৈরি হয়েছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন উন্নত ব্যাটল স্টাইল, বিশালাকার স্ট্র্যাটেজিকাল ম্যাপস ও নিত্যনতুন ফ্যান্টাসি।
স্টোরিলাইন গেমিং বেজড পুরো ব্যাটল স্কিম কখনই গেমারকে একঘেয়ে প্যাটার্ন গেমিংয়ে ফেলবে না। যুদ্ধ আরও জমজমাট হয়ে ওঠে যখন খুব শক্তিশালী কোনো হিরোর সাথে বিশাল ব্যাটেলিয়নের ব্যাটল শুরু হয় কিংবা যখন বিশাল এক সিজ উইপনারি-মিক্সড আর্মির সামনে পরে কাবু হয়ে ওঠে। সাথে আছে ক্যাম্পেইন মোডের বিশাল ম্যাপস কালেকশন, যা দিয়ে সহজেই পুরো দুদিন চালিয়ে দেয়া যাবে। অদ্ভুত সুন্দর টেক্সচার, টেরিয়ান, রিসোর্স সবকিছুই গেমারকে মুগ্ধ করবে। সাথে তৈরি করা প্রতিটি সিটিতে থাকছে নির্দিষ্ট রেসিয়াল ইনহ্যাবিটাট। তাই সেগুলো দেখাশোনা করাটাও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হবে। সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশ ছাড়াও গেমারকে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ওপরও কিছুটা নির্ভর করতে হবে। কারণ, গেমটির এআই যথেষ্টই ভালো প্রতিপক্ষ। সবকিছু মিলিয়ে কসাক্স ৩ গেমারকে যুগের অন্যতম সফল ও উত্তেজনাপূর্ণ স্ট্র্যাটেজি গেমিংয়ের অভিজ্ঞতা দেবে। তাই দেরি না করে এখনই কৌশলী স্ট্র্যাটেজিস্ট হয়ে উঠুন কসাক্স ৩-এর সাথে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : ৭ বা তদুর্ধ, সিপিইউ : কোরআই৩/এএমডি সমমানের, র্যা ম : ৪ গিগাবাইট, ভিডিও কার্ড : ১ গিগাবাইট,
হার্ডডিস্ক : ৮ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস