লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
কোয়ালকমের মধ্যমপাল্লার মোবাইল চিপের নতুন চমক ৬৩০ ও ৬৬০ সক
গতিময়তা ও নান্দনিকতা। মানুষের এ দুটো চাহিদাকে পুঁজি করে প্রসেসর নির্মাতারা তাদের পণ্যের ক্রমাগত উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটিয়ে চলেছে অবিরামভাবে। সেটা ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, এমবেডেড বা মোবাইল প্রসেসর- যেটাই হোক না কেন। ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ অঙ্গনে ইন্টেল ও এএমডি নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে একে অপরকে টেক্কা দেয়ার জন্য। হালে এএমডি রাইজেন প্রসেসর অবমুক্ত করে ইন্টেলের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। তবে মজার ব্যাপার, মোবাইল অঙ্গনে ইন্টেল ও এএমডির কারোরই তেমন প্রভাব নেই। এখানে রাজত্ব করছে আর্ম হোল্ডিং নকশা করা আর্ম করটেক্স প্রসেসর। এ নকশাকে তারা বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করছে। যেমন- অ্যাপল, স্যামসাং, কোয়ালকম, এনভিডিয়া ইত্যাদি। এ কোম্পানিগুলো আর্ম প্রসেসরের নকশা তথা ডিজাইন কিনে বিশেষায়িত করে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের জন্য চিপ তৈরি করে। মোবাইলের চিপকে প্রসেসর নয়, বরং বলা হয়ে থাকে ‘সিস্টেম অন চিপ’ (সক)। এতে শুধু প্রসেসর বা গ্রাফিক্স নয়, বরং একটি সিস্টেমের যাবতীয় উপাদান সংযোজন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ- ইমেজ সিগন্যাল প্রসেসর, মডেম, ক্যুইক চার্জ ইত্যাদি। অর্থাৎ এ চিপটি (সক) একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কমপিউটার ক্ষুদ্র বলয়।
এ আলোচনায় আমরা সার্ভার প্রসেসরকে এড়িয়ে গেছি, যা শুধু ‘গতিময়তা’কে প্রাধান্য দেয়, ‘নান্দনিকতা’কে নয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আর্ম প্রসেসর ইতোমধ্যে মোবাইল রাজত্বে তাদের অবস্থান সুসংহত করে নিয়েছে। এ ব্যাপারে সবচেয়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে কোয়ালকম ও এনভিডিয়া নামের দুটো চিপ নির্মাতা কোম্পানি। তারা আর্ম প্রসেসরকে সকে (সিস্টেম অন চিপ) পরিণত করে সাফল্যজনকভাবে বাজার দখল করতে সমর্থ হয়েছে। আপনি অ্যাপল বা স্যামসাং অথবা যেকোনো অ্যান্ড্রয়িড মোবাইল সেট ব্যবহার করেন না কেন, এতে কোয়ালকম, সণ্যাপড্রাগন বা এনভিডিয়ার টেগ্রা ‘সক’ পাবেন, যদিও স্যামসাং ক্ষেত্রবিশেষে তাদের আর্মভিত্তিক ‘সক’ এক্সিনস ব্যবহার করছে। ফলে শুধু আর্মের প্রকৌশলীরা ডিজাইন তথা নকশা করেই শেষ নয় বরং কোয়ালকম, এনভিডিয়া বা অন্যান্য চিপ নির্মাতাদের শত শত প্রকৌশলী বাড়তি ডিজাইন স্তরে কাজ করে যাচ্ছেন। অর্থাৎ দুই স্তরে ডিজাইন/নকশা উন্নয়ন ঘটে চলেছে, যা ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, অ্যামবেডেড থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
কোয়ালকমের সাম্প্রতিক উপহার
সম্প্রতি অগ্রণী মোবাইল চিপ নির্মাতা কোয়ালকম মধ্যমপাল্লার জন্য সণ্যাপড্রাগন ৬০০ সিরিজের দুটো ‘সক’ (সিস্টেম অন চিপ) বাজারে ছেড়েছে। মাঝারি মানের ক্রেতাদেরকে লক্ষ রেখে তারা এ কাজটি করেছে। যদিও এ সক দুটো মধ্যমপাল্লার, তবে পারফরম্যান্সে ও অগ্রবর্তী ফিচারের ক্ষেত্রে বেশ অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাজির হয়েছে। এ দুটো সক হচ্ছে সণ্যাপড্রাগন ৬৩০ ও ৬৬০, যাতে গ্রাফিক্স চিপ হিসেবে রয়েছে অ্যান্ড্রেনো ৫০৮ ও অ্যাড্রেনো ৫১২ জিপিইউ। উভয় ‘সক’ই ১৪ ন্যানোমিটার ফিনফেটে নির্মিত হয়েছে। এদের পূর্ববর্তী সক চিপ ৬৫০, ৬৫২ ও ৬৫৩-এর তুলনায় অনেক বেশি উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে বর্তমান চিপে। যেমন- এক্স১২ এলটিই মডেম সংযুক্ত করা হয়েছে, ফলে গ্রাহকেরা সর্বোচ্চ ৬০০ মেগাবাইট/সেকেন্ড ডাউনস্ট্রিম ও ১৫০ মেগাবাইট/সেকেন্ড আপস্ট্রিম গতির সংযোগ পেতে সক্ষম হবেন। আরও থাকছে ক্যামেরার জন্য স্পেক্ট্রা ১৬০ ইমেজ সিগনাল প্রসেসর, যা ফোরকে (৪-কে) ভিডিও সমর্থন ছাড়াও একক ক্যামেরায় ২৮ মেগাপিক্সেল ও দ্বৈত ক্যামেরায় ১৬/১৩ মেগাপিক্সেল প্রদান করবে। ওয়াইফাইয়ের ক্ষেত্রে ৮০২.১১ এসি দ্বৈত ব্যান্ড সমর্থনের পাশাপাশি সর্বাধুনিক বস্নুটুথ ৫.০ সমর্থনে র সক্ষমতাও এ চিপে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এ ছাড়া উভয়ই চিপই সর্বোচ্চ ৮ গিগাবাইট মেমরি নিয়ে কাজ করতে সক্ষম হবে এবং এদের ইউএসবি ৩.১ প্রযুক্তি উচ্চগতির সংযোগ দিতে সমর্থ হবে।
কোয়ালকমে দেখা যাচ্ছে, উচ্চতর মধ্যমপাল্লার ৬৬০ সক চিপে দুটো চার কোরের সর্বাধুনিক ক্রায়ো ২৬০ স্থাপত্য ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে সণ্যাপড্রাগন ৬৩০ সক চিপে দুটো চার কোরের করটেক্স এ৫৩ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, উচ্চ বাজেটের গ্রাহকদের জন্য কোয়ালকমের ৮০০ সিরিজের সক চিপ ইতোমধ্যে বাজারে রয়েছে। মজার কথা, ৮০০ সিরিজের অনেক ফিচার ৬৬০ চিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে অধিকতর স্বল্প বাজেটে ভোক্তারা উচ্চপ্রযুক্তির অনেক সুবিধাই পেয়ে যাবেন। অপরদিকে যারা গ্রহণযোগ্য পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্ব নিয়ে চিস্তাভাবনা করেন, তাদের জন্য ৬৩০ সুফল বয়ে আনবে। এ চিপ তাদেরকে স্বস্তি দেবে বলে কোয়ালকমের দাবি। পূর্ববর্তী এ জাতীয় চিপের তুলনায় ৬৩০ বেশ অগ্রসর, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এর পারফরম্যান্সেরও তুলনামূলকভাবে উন্নত করা হয়েছে।
এদিকে উচ্চতর ৬৬০ সক চিপে কোয়ালকমের নিজস্ব ক্রায়ো স্থাপত্য সংযোজন করার ফলে দক্ষতার আলোকে এটি বেশ উচ্চমাত্রায় অবস্থান করছে। সামগ্রিক মেমরি ব্যান্ডউইডথ ২৯.৯ গিগাবাইট/সেকেন্ড হওয়ার ফলে এটি পূর্ববর্তী চিপ ৬৫০, ৬৫২ ও ৬৫৩ থেকে দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়েছে বলা যায়।
কোয়ালকমের ক্রায়ো ও ক্রেট স্থাপত্য
কোয়ালকমের ক্রায়ো স্থাপত্য নির্মিত হয়েছে আর্মের অজগঠ৮-অ ৬৪ বিট ইনস্ট্রাকশনের প্রযুক্তি স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি করে। এটি কোয়ালকমের ৩২ বিট ক্রেট স্থাপত্যের উত্তরসূরি হিসেবে নির্মিত হয়েছে।
ক্রায়ো প্রথম ঘোষণা দেয়া হয় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে এবং এটি বাজারে আসে সণ্যাপড্রাগন ৮২০ সক চিপে। এই সক চিপ স্যামস্যাংয়ের ১৪ ন্যানোমিটার ফিনফেট প্রসেসে তৈরি হয়েছিল। ক্রায়ো কোরসমূহকে বিগ ডট লিটল কনফিগারেশনে উভয় অংশে (বিগ বা লিটল) ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে দুটো ক্লাস্টারকে পরিচালনা করা হয়। এতে সর্বোচ্চ ক্লকস্পিড ১.৩৬ থেকে ২.৪৫ গিগাহার্টজ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। ক্রায়োর নতুন এক সংস্করণ ‘ক্রায়ো ২৮০’ ২০১৬ সালের নভেম্বরে সণ্যাপড্রাগন ৮৩৫ সক চিপে বাজারে আবির্ভূত হয়েছে। মজার ব্যাপার, এটি মূল ক্রায়োর আলোকে নয় বরং করটেক্স এ৭৩-এর আলোকে নির্মিত হয়েছে, যাতে এর ক্লকপ্রতি ইন্টেজার ইনস্ট্রাকশন গতি বাড়ানো হয়েছে, তবে ফ্লোটিং পয়েন্ট দক্ষতাকে বাড়ানো হয়নি।
এদিকে ক্রেট স্থাপত্যের ঘোষণা এসেছে ২০১২ সালে এবং এটিকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে সণ্যাপড্রাগন এস৪ ও ৪০০/৬০০/৮০/৮০১/৮০৫ সক চিপে যথাক্রমে ক্রেট ২০০/৩০০/৪০০/৪৫০ দিয়ে। এটি করটেক্স-এ১৫-এর আলোকে নয়, বরং নিজস্বভাবে তৈরি করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে ক্রেটের পূর্বসূরি হিসেবে ‘স্করপিয়ন’ স্থাপত্য কোর বাজারে ছেড়েছিল। যদিও এ সক চিপ আর্মের করটেক্স-এ৮/এ৯-এর আদলে তৈরি হয়েছিল, তবে নিজস্ব প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে কোয়ালকম এটি তৈরি করেছিল।
এবার দৃষ্টি ফেরানো যাক ক্রায়ো সক চিপের মূল উপাদান আর্ম ভি৮এ ৬৪/৩২ কোর স্থাপত্যের দিকে, যেটি উচ্চতর মধ্যমপাল্লা ৬৩০ সকে ব্যবহার হয়েছে। পূর্বেকার আর্ম প্রসেসরের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন স্থাপত্য আর্ম ভি৮ ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে অবমুক্ত করা হয়। এতে ৩২ বিটের পাশাপাশি ৬৪ বিট ইনস্ট্রাকশন সেট যোগ করা হয়, যার নাম দেয়া হয়েছে আর্ক৬৪। অন্যদিকে আর্ম ভি৭এ-তে ৩২ বিটে ‘আর্ক৩২’ (বর্তমানে এ৩২) স্থাপত্য ব্যবহার হয়েছিল। আর্ম ভি৮এ-এর সিপিইউতে ৬৪ বিট ওএসে (অপারেটিং সিস্টেম যেমন অ্যান্ড্রয়িড) ৩২ বিট অ্যাপ্লিকেশন চালানো সম্ভব। নতুন এ স্থাপত্য (আর্ম ভি৮এ) নিয়ে প্রথম প্রসেসর তৈরি করেছিল অ্যাপল (এ৭), যা আইফোন ৫এস-এ ব্যবহার হয়েছিল। তবে সক চিপ হিসেবে প্রথম বাজারে এনেছে স্যামসাং তাদের এক্সিনস ৫৪৩৩-এর মাধ্যমে, যা গ্যালাক্সি নোট ৪-এ ব্যবহার হয়েছিল, তবে পরিপূর্ণ বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়নি, যেমন এতে আর্ক৬৪-এর পরিবর্তে আর্ক৩২ মোড ব্যবহার হয়েছিল।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে আর্ম ভি৮.১এ বাজারে আসে, যা মূলত ভি৮.০এ-এর আপগ্রেড। নতুন এ সংস্করণে দুটো শ্রেণীতে পরিবর্তন আনা হয়। এর একটি ইনস্ট্রাকশন সেটের পরিবর্তন এবং অপরটি এক্সেপশন মডেল ও মেমরি ট্রান্সলেশনের পরিবর্তন। এদিকে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আর্ম ভি৮.২এ-এর ঘোষণা দেয়া হয়, যাতে কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটানো হয়। এর মধ্যে মেমরি মডেলের উন্নয়ন এবং পরিসংখ্যানগত প্রোফাইলিংয়ের সন্নিবেশ অন্যতম। মজার ব্যাপার হলো, সম্প্রতি আর্ম এটির আরও একটি সংস্করণ বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে, যার পরিচিতি হচ্ছে আর্ম ভি৮.৩এ। এতে ছয়টি খাতে উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, প্রসেসরের উন্নতি ঘটছে বেশ লাফিয়েই, যদিও ভোক্তাপণ্যে এর উপস্থিতি পেতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।
আর্মের নতুন মঞ্চ ‘ডায়নামিক’
হালে (মার্চ ২০১৭) আর্ম তাদের প্রচলিত নকশা ও মঞ্চের বদলে সম্পূর্ণ নতুন আদলে তাদের প্রসেসরের স্থাপত্য ও মঞ্চকে ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দিয়েছে। নতুন ডিজাইন/নকশা দিয়ে তৈরি এ মঞ্চের নাম দেয়া হয়েছে ‘ডায়নামিক’। এটি প্রচলিত পণ্যের তুলনায় বেশ আকর্ষণীয় গতি ও দক্ষতা প্রদান করবে বলে তারা জানিয়েছে। ডায়নামিক মঞ্চভিত্তিক নতুন দুটো প্রসেসর যথাক্রমে করটেক্স-এ৭৫ ও করটেক্স-এ৫৫ ইতোমধ্যে বাজারে এসেছে। শুধু তাই নয়, গ্রাফিক্স চিপ মালি জি৭২ চিপও এ নকশা বা মঞ্চ দিয়ে তৈরি করা হবে।
আর্মের দৃষ্টি শুধু স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট নয়, বরং ইন্টারনেট অব থিংসের প্রতি তারা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফলে নকশা বা মঞ্চের উন্নয়নকে তারা যুগোপযোগী করে সাজাচ্ছে। করটেক্সএ৫৫ বর্তমানে প্রচলিত প্রসেসরের তুলনায় আড়াই গুণ দক্ষতা প্রদানে সক্ষম হবে। করটেক্স-এ৫৫ ও এ৭৫-এ ডায়নামিকের নতুন বিগ ডট লিটল কনফিগারেশন ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনের নিরিখে প্রসেসর কোরসমূহের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সুইচ করা যায়। এ ছাড়া নতুন নিরাপত্তার সাবসিস্টেম ক্রিপ্টোসেল-৭১২-এ মঞ্চে যোগ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নতুন ডিসপ্লে স্ট্যান্ডার্ড এইচডিআর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ক্যুইক চার্জ ৪.০
এবার আসা যাক, কোয়ালকমের সণ্যাপড্রাগন সক চিপ ৬৩০ ও ৬৬০ প্রসঙ্গে, যেখানে ক্যুইক চার্জ ৪.০ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যাটারির স্থায়িত্ব একটি পীড়াদায়ক সমস্যা হিসেবে বিরাজ করছে স্মার্টফোন অঙ্গনে। এর পাশাপাশি দ্রুত চার্জকরণ। উপরিউক্ত দুটো সক চিপে কোয়ালকম উদ্ভাবিত ক্যুইক চার্জ ৪.০ সন্নিবেশ করা হয়েছে, যেটি পূর্ববর্ত ক্যুইক চার্জ ৩.০-এর তুলনায় ৩০ শতাংশ দক্ষ। নতুন সংস্করণে ‘ব্যাটারি সেভার’ ফিচার ব্যাটারির স্থায়িত্বকে বাড়িয়ে দেবে। এ ছাড়া এটি ইউএসবি-সি ও ইউএসবি-পিডি (পাওয়ার ডেলিভারি) সম্মত বলে ‘ফিউচার প্রম্নফ’ হয়েছে। কারণ ইতোমধ্যে গুগল নন-স্ট্যান্ডার্ড ইউএসবি-সি-কে পরিবহার করে ইউএসবি-পিডি ব্যবহারের জন্য নির্মাতাদের নির্দেশ দিয়েছে। বলাবাহুল্য, গুগলের অ্যান্ড্রয়িড দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ স্মার্টফোন পরিচালিত হচ্ছে। কোয়ালকমের এ প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দক্ষ চার্জিং প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
উপসংহার
আমরা এখনও জানি না, কোয়ালকমের এ দুটো সণ্যাপড্রাগন সক চিপের সাহায্যে ইতোমধ্যে কোনো নির্মাতা বাজারে স্মার্টফোন ছেড়েছে কি না। তবে নিঃসন্দেহে বলা যায়, অচিরেই অ্যান্ড্রয়িড স্মার্টফোন নির্মাতারা এ পণ্যের ব্যাপারে বেশ আগ্রহী হবে এবং আমরা শিগগিরই পণ্য বাজারে দেখতে পাব। বিশেস্নষকদের ধারণা, উচ্চমূল্যের ফ্ল্যাগশিপ পণ্যের সাথে ফিচারের (গতিময়তা ও নান্দনিকতা) আলোকে খুব বেশি তারতম্য হবে না মধ্যমপাল্লার সক চিপ দিয়ে তৈরি পণ্যের। ফলে মধ্যম বাজেটের ক্রেতারা বেশ স্বস্তি অনুভব করবেন বলে আশা করা যায়
এক নজরে স্ন্যাপড্রাগন ৬৩০ ও ৬৬০ চিপ (সক)
স্ন্যাপড্রাগন ৬৩০
* আট কোর প্রসেসর (চার কোর করটেক্স এ৫৩-২.২ গিগাহার্টজ ও চার কোর করটেক্স এ৫৩-১.৮ গিগাহার্টজ সিপিইউ)।
* অ্যাড্রেনো ৫০৮ জিপিইউ।
* ৮ গিগাবাইট মেমরি, ১৩৩৩ মেগাহার্টজ গতি।
* সমন্বিত এক্স১২ এলটিই ওয়াইফাই ৮০২.১১ এসি মডেম।
* পূর্ণ এইচডি (১৯২০ বাই ১২০০) সমর্থন।
* ক্যাট ১২/১৩ গতি ৬০০ মে.বি./সে. ডাউনস্ট্রিম ও ১৫০ মে.বি./সে. আপস্ট্রিম।
* একক ক্যামেরায় ২৪ মেগাপিক্সেল ও দ্বৈত ক্যামেরায় ১৩ মেগাপিক্সেল।
* ক্যুইক চার্জ ৪.০ প্রযুক্তি।
* বস্নুটুথ ৫.০।
* কোয়ালকম মোবাইল সিকিউরিটি।
স্ন্যাপড্রাগন ৬৬০
* আট কোর প্রসেসর (চার কোর ক্রায়ো ২৬০-২.২ গিগাহার্টজ ও চার কোর ক্রায়ো ২৬০-১.৮ গিগাহার্টজ সিপিইউ)।
* অ্যাড্রেনো ৫১২ জিপিইউ।
* ১৮৬৬ মেগাহার্টজ, ৮ গিগাবাইট মেমরি (আরএএম) সমর্থন।
* সমন্বিত এক্স১২ এলটিই ওয়াইফাই মডেম।
* টুকে (২৫৬০ বাই ১৬০০) ডিসপ্লে।
* ক্যাটাগরি ১২/১৩, ৬০০ মে.বি./সে. ডাউন এবং ১৫০ মে.বি./সে. আপ।
* একক ক্যামেরায় ২৪ মেগাপিক্সেল/দ্বৈত ক্যামেরায় ১৬ মেগাপিক্সেল।
* ক্যুইক চার্জ ৪.০ প্রযুক্তি।
* ফোরকে ক্যাপচার ভিডিও ৩০ এফপিএস।
* ডুয়াল ব্যান্ড ৮০২.১১ এসি/বস্নুটুথ ৫.০।
* ফোয়ালকম মোবাইল সিকিউরিটি।
সূত্র : ইন্টারনেট
ফিডব্যাক : itajul@hotmail.com