• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > আইফি মোবি ওয়াইফাই মেমরি কার্ড
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কে এম আলী রেজা
মোট লেখা:১৫৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - নভেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
হার্ডওয়্যার
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
আইফি মোবি ওয়াইফাই মেমরি কার্ড
আপনি আগে যদি আইফি কার্ড ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে নিশ্চিয়ই মোবি ধারণার সাথে পরিচিত হয়েছেন। আইফির উজ্জ্বল কমলা নকশা ছাড়াও এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড এসডি মেমরি কার্ডের মতো দেখতে মনে হয় এবং এটি এসডি মেমরি কার্ডের মতো কাজ করে। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ফটো ধারণ করা ছাড়াও এটাতে বিল্টইন ওয়াইফাই সুবিধা রয়েছে। এটি একটি বিনামূল্যের অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে আপনার ক্যামেরা থেকে আইওএস, অ্যান্ড্রয়িড বা উইন্ডোজ ফোন ডিভাইসে ফটো হস্তান্তর করতে পারে।
আপনি যদি আইফি ক্লাউডের সেবার জন্য অর্থ ব্যয় করতে রাজি থাকেন, তাহলে এটা আপনার ফোন ও ট্যাবলেটের মধ্যে ফটো সিঙ্ক করবে। এটি ছবিগুলো ওয়েবে কপি করবে, যাতে আপনি সেগুলো একটি ব্রাউজারের সাহায্যে দেখতে পারেন। অন্যান্য আইফি কার্ড যেমন প্রো X2-এ Raw ফরম্যাটের ছবি স্থানান্তর এবং অন্যান্য উন্নত ফাংশন সমর্থন করে। কিন্তু সেগুলোকে স্থাপনের জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করতে হবে। আপনি যদি কার্ডের ফাংশন পরিবর্তন করতে চান, তাহলে কমপিউটারের সাহায্যে কার্ড পুনঃকনফিগার করতে হবে। মোবি আপনার ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ফটো ফোন ডিভাইসে হস্তান্তর করার বিষয়টি সত্যিকারেই সহজ করেছে।
আইফি মোবিতে কাজ শুরু করার জন্য আপনাকে আইওএস, অ্যান্ড্রয়িড বা উইন্ডোজ ফোন অ্যাপ স্টোর থেকে বিনামূল্যে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে হবে। আইফি কার্ডের সাথে আসা মুদ্রিত কোড এন্ট্রি দিলে আপনার ফোনের জন্য একটি নেটওয়ার্ক প্রোফাইল যোগ হবে। তবে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের জন্য কোনো পাসওয়ার্ড টাইপ করতে হবে না। আপনি পরিচিত নেটওয়ার্ক থেকে দূরে থাকলেও আপনার ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইফি কার্ডের সাথে যুক্ত হবে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন চালু করবে। কিন্তু যদি আপনি স্বাভাবিক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকেন, তাহলে আপনাকে সেটিংয়ে যেতে হবে এবং ছবি ডাউনলোড করার জন্য আইফি নেটওয়ার্কে সুইচ করতে হবে। ছবি ডাউনলোড হবে স্বয়ংক্রিয় এবং তা বেশ দ্রুতগতিতে কাজ করবে।
মোবি শুধু জেপিজি (JPG) ফরম্যাটের ফাইল স্থানান্তর করতে পারে, i (Raw) ফরম্যাটের ছবি সরাসরি স্থানান্তর করতে পারে না। কিন্তু যদি আপনি Raw+JPG ফরম্যাটে ছবি তোলেন, তাহলে JPGs ফরম্যাটের ছবি স্থানান্তর করতে কোনো সমস্যা হবে না। এক্ষেত্রে Raw ফরম্যাটের ছবি বা ইমেজ উপেক্ষা করবে। ফটো পূর্ণ রেজ্যুলেশনে ক্যামেরা থেকে মোবাইল ফোনে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া এ সিস্টেমে ভিডিও স্থানান্তর করা যেতে পারে। কিন্তু যদি ভিডিও ফরম্যাট আপনার ফোন সমর্থিত না হয়, তাহলে একটি ত্রুটির বার্তা পাবেন। যেমন- আপনার আইফোন ৫ সেট সনি D-SLRs ক্যামেরায় ব্যবহৃত AVCHD ফরম্যাটের ছবি প্রসেস করতে পারে না। কিন্তু একটি MP4 ফাইল খুব সহজেই ক্যামেরা থেকে আইফোন ৫-এ স্থানান্তর করা যাবে। এতে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে না। সুতরাং ছবি বা ইমেজ স্থানান্তর বা প্রসেস করার ক্ষেত্রে এর ফরম্যাট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।
আইফি ক্লাউড
মোবি কার্ডের সাথে আইফি ক্লাউড সেবা তিন মাসের জন্য ট্রায়াল হিসেবে বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। সেবাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েবে আপনার সব ফটো আপলোড করে। আপনি একটি ব্রাউজারের মাধ্যমে সেগুলো দেখতে পারেন। আপনি একাধিক হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস, সেলফোন বা ট্যাবলেট- যাই হোক না কেন, ব্যবহার করে থাকলে আইফি ক্লাউড স্বয়ংক্রিয়ভাবে এগুলোতে আপনার ফটো সিঙ্ক করবে।
একবার আপনি আইফি ক্লাউডে ফটো আপলোড করার পর সেগুলোর আকার বা সাইজ ছোট করে নিয়ে আসতে পারেন। এবার বদলি করা ছবিগুলো যে ফোন থেকে আনা হয়েছিল সেই ফোনে ফেরত পাঠানো হবে। আপনার প্রধান ডিভাইস বা ট্যাবলেটে সঞ্চিত ফটোর আকার একইভাবে কমিয়ে ডিভাইসের স্থান সংরক্ষণ করতে পারেন। পূর্ণ রেজ্যুলেশনের চিত্র সবসময় আইফি ক্লাউডে সংরক্ষিত থাকবে এবং তা কার্ডে সংরক্ষিত থাকবে যতক্ষণ না সেগুলো মুছে দেবেন। আপনি যদি সেলুলার ব্যান্ডউইডথ নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তাহলে ফাইল নির্দিষ্ট করে দিন। এই ফাইলগুলোই শুধু আপলোড হবে যখন ডিভাইস ওয়াইফাইয়ের সাথে সংযুক্ত হবে।
মোবি সেবা এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে এটি একাধিক কার্ডকে এক অ্যাকাউন্টে নিবন্ধন করার অনুমোদন দেয়। এমনকি সেবা ডিভাইস জুড়ে বিভক্ত হতে পারে। আপনার পরিবারের সদস্যরা যদি ছবি তুলতে পছন্দ করেন, তাহলে আপনার ফোনের সাথে একটি কার্ড রেজিস্টার করবেন এবং অন্য সদস্যের ফোনের সাথে একটি কার্ড নিবন্ধন করবেন। যতদিন আপনারা একই আইফি ক্লাউড অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন, আপনি যতগুলো ছবি তুলবেন তা আপনাদের ডিভাইসের মধ্যে সিঙ্ক হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। যদি আপনাদের ডিভাইসগুলো ভিন্ন ভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম যেমন অ্যান্ড্রয়িড ও আইওএস ব্যবহার করে, তাহলে এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে না। ক্লাউড সার্ভিস কোনো অসুবিধা ছাড়াই কাজগুলো সাবলীলভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।
আপনি যদি পুরনো আইফি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে একটি বড় পার্থক্য লক্ষ করবেন। মোবি অ্যাপ্লিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ফোনের ইমেজ লাইব্রেরিতে ইমেজ হিসেবে যোগ করে না। তবে আপনি টুইট, ই-মেইল করতে পারেন অথবা অ্যাপ্লিকেশন থেকে সরাসরি ফেসবুকে ফটো পোস্ট করতে পারেন। কিন্তু যদি আপনি ফটোশপ এক্সপ্রেসের মতো একটি অ্যাপ্লিকেশনে ফটো এডিট করতে চান বা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করতে চান, তাহলে প্রথমে ফটোকে আপনার ক্যামেরা রোলে সংরক্ষণ করতে হবে।
যে ইমেজ আপনার ফোন দিয়ে শুট করেছেন, যা একটি অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে এডিট করা হয়েছে তা যদি আইফি ক্লাউডে দেখতে চান, তাহলে সেটিংয়ে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। সেটিং এমনভাবে করতে হবে যাতে নতুন ইমেজ ক্যামেরা রোল থেকে মোবি অ্যাপে ইমপোর্ট হয়। যদি আপনি এটি চালু করেন, তাহলে এটা শুধু সামনের দিকের ইমেজ খুঁজবে, পেছনের দিকের ইমেজগুলো হস্তান্তর করা হবে না। আপনি নিজে ফটো অ্যালবামে ছবি যোগ করতে পারেন। অ্যালবাম সাজানোর সরঞ্জাম বা টুল সংক্ষিপ্ত পর্যায়ে এখানে রাখা হয়েছে। বর্তমানে ইমেজ রেকর্ড করার কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাই যে অনুক্রমে ছবি যোগ করা হয়েছে, সে বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
মোবি কার্ডের কর্মদক্ষতা
মোবির একমাত্র আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার গতি। তবে আপনি ডি-এসএলআর ক্যামেরায় বার্স্ট (burst) মোড পছন্দ করলে মোবির ইমেজ রাইট করার গতিতে হতাশ হতে পারেন। দেখা যায় মোবি ২৬.৬ সেকেন্ড সময় নেয় একটি 11-shot Raw+JPG বার্স্ট রেকর্ড করার জন্য, ২২.৩ সেকেন্ড সময় নেয় 12-shot Raw বার্স্টের জন্য এবং ১৬ সেকেন্ড সময় নেয় একটি 13-shot JPG বার্স্ট রেকর্ড করার জন্য।
তা সত্ত্বেও আইফি মোবি পছন্দ করার অনেক কারণ রয়েছে। এটা একটা এসডি কার্ড, যা প্রায় প্রতিটি ক্যামেরায় ওয়াইফাই সুবিধা যোগ করতে যাচ্ছে। যদি আইফি মোবির ৮ গিগাবাইট মেমরি যথেষ্ট স্টোরেজ হিসেবে মনে না হয়, সেখানে আপনি ১৬ গিগবাইট ও ৩২ গিগবাইটের সংস্করণ ব্যবহার করতে পারবেন। এটা সেটআপ করা সহজ এবং এতে কনফিগার করার জন্য অপ্রয়োজনীয় অপশনের আধিক্য নেই। ফলে খুব সহজেই কনফিগারেশনের কাজটি সম্পন্ন করা যায়। আপনার শুধু কার্ডটি এবং একটি স্মার্টফোনের প্রয়োজন হবে। এজন্য আপনার কমপিউটারে কোনো কিছু ইনস্টল করার কোনো প্রয়োজন নেই।
উপসংহার
যদি আপনি উচ্চ ফ্রেম রেটের ক্যামেরা নিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন, তাহলে মোবি আপনার জন্য খুব আকর্ষণীয় কিছু নয়। এটা বিশ্বের দ্রুততম মেমরি কার্ডও নয়। কিন্তু যদি আপনি সামাজিক নেটওয়ার্কে শেয়ার করা ফটোর মানের (যেগুলো ফোন ক্যামেরা দিয়ে তোলা) বিষয়ে সন্তুষ্ট না হোন এবং আপনি বিল্টইন ওয়াইফাই সম্পন্ন কোনো নতুন ক্যামেরা কিনতে না চান, এসব ক্ষেত্রে মোবি কার্ড আপনার জন্য একটি উত্তম পছন্দ হতে পারে। সর্বোপরি এটা সেটআপ করা সহজ এবং এটা বেশ সহজে ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ফটো আপনার ফোনে হস্তান্তর করতে পারে
ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - নভেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস