• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > যেভাবে পরখ করবেন ওয়্যারলেস রাউটার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কে এম আলী রেজা
মোট লেখা:১৫৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
রাউটার
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
যেভাবে পরখ করবেন ওয়্যারলেস রাউটার
একঝাঁক সংযুক্ত হোমপণ্য যেমন- স্মার্টফোন, স্মার্টটিভি ও অন্যান্য মোবাইল ডিভাইসের জন্য একটি বেতার বা ওয়্যারলেস রাউটার আপনার বাড়িতে বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি নতুন রাউটার নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আপনার নেটওয়ার্ক পরিধির মাপ ও ক্লায়েন্টের সংখ্যা, সেই সাথে ডিভাইস ধরনের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত। একটি সঠিক রাউটার স্থাপন ওয়্যারলেস ডিভাইস কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
ওয়্যারলেস প্রটোকল
প্রটোকল রাউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ওয়্যারলেস ইথারনেট নেটওয়ার্ক ৮০২.১১ প্রটোকল ব্যবহার করে তথ্য পাঠানো ও সংগ্রহের কাজে। যেসব ডিভাইস পুরনো ৮০২.১১বি ও ৮০২.১১জি মানের প্রটোকল ব্যবহার করে সেগুলো যথাক্রমে ১১ এমবিপিএস ও ৫৪ এমবিপিএস ডাটারেট গতিতে সীমাবদ্ধ। এগুলো শুধু ২.৪ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের কাজ করে। বহুল ব্যবহৃত ওয়াইফাই প্রটোকল ৮০২.১১এন সর্বোচ্চ ৬০০ এমবিপিএস পর্যন্ত ডাটারেট ব্যবহার করতে পারে এবং ২.৪ ও ৫ গিগাহার্টজ উভয় ব্যান্ডে কাজ করে। এটা একাধিক ইনপুট ও আউটপুট (এমআইএমও) প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা বিভিন্ন অ্যান্টেনা ব্যবহার করে চার স্থানিক (Spatial) স্ট্রিম পর্যন্ত ডাটা পাঠায় ও গ্রহণ করে। এর ফলে ডিভাইস থেকে উন্নত কর্মক্ষমতা পাওয়া যায়।
ওয়াইফাই রাউটারের ক্ষেত্রে নবীনতম প্রযুক্তি হচ্ছে ৮০২.১১ এসি, যা আগের প্রটোকলের চেয়ে উন্নত করা হয়েছে। এতে রয়েছে বৃহত্তর চ্যানেল ব্যান্ডউইডথ (১৬০ হার্টজ পর্যন্ত, ৪০ হার্টজের তুলনায়)। আরও রয়েছে এমআইএমও স্থানিক স্ট্রিম ও বিমফর্মিং, যা এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ওয়াইফাই সঙ্কেত সরাসরি ক্লায়েন্ট ডিভাইসে পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে সবদিকে সিগন্যাল সম্প্রচারের প্রয়োজন হয় না।
মিমো টেস্টিং
২০০৭ সালে যখন ৮০২.১১এন ওয়াইফাই ডিভাইস বাজারে আসে, তখন একক ব্যবহারকারী একাধিক ইনপুট-আউটপুট (SU-MIMO) প্রযুক্তির যাত্রা শুরু হয়। এ প্রযুক্তিতে একটি রাউটার একাধিক তথ্য প্রবাহের ক্রমানুসারে (একটি সময়ে এক ডিভাইস) পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারে। এ প্রযুক্তি অপেক্ষাকৃত নতুন ৮০২.১১এসি মাল্টি ব্যবহারকারী (MIMO) ছাড়া আজকের প্রায় সব রাউটারে ব্যবহার করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, মিমো প্রযুক্তির প্রচলন এখন ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। মিমো প্রযুক্তির রাউটার একাধিক ডিভাইসে একই সাথে ব্যান্ডউইডথ অবনতি ছাড়াই ডাটা স্ট্রিম প্রেরণ ও গ্রহণ করতে পারে। এগুলোকে একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে বিশেষ পদ্ধতিতে পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টকে মিমো প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
সিঙ্গেল ইউজার মিমো রাউটার পরীক্ষা করার জন্য আপনি JPerf-এর মতো একটি ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক-কর্মক্ষমতা ইউটিলিটি সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে পারেন। এটা সার্ভার ও ক্লায়েন্টের মধ্যে থ্রুপুট পরীক্ষা ও প্রতি সেকেন্ডে (এমবিপিএস) মেগাবিটস ফলাফল রেকর্ড করতে পারে। প্রতিটি JPerf পরীক্ষা ৬০ সেকেন্ডের জন্য রান করা হয়, এটা ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল ব্যবহার করে এবং চারটি সমান্তরাল ডাটা স্ট্রিম ডিভাইসে সরবরাহ করে।
আপনি একটি বন্ধ রুমে নৈকট্য পরীক্ষা দিয়ে শুরু করতে পারেন, যেখানে ক্লায়েন্ট ও রাউটার একই রুমে থাকবে। ক্লায়েন্ট ও রাউটারের মধ্যে দূরত্ব থাকবে পাঁচ ফুট। আপনি JPerf পরীক্ষা তিনটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে চালাতে পারেন এবং চূড়ান্ত স্কোর হিসেবে গড় থ্রুপুট গতি ব্যবহার করতে পারেন। এরপর অন্য রুমে ক্লায়েন্ট সরিয়ে নেবেন এবং একটি অবস্থান রাখবেন, যেখান থেকে রাউটারের দূরত্ব হবে ৩০ ফুট। ক্লায়েন্ট ও রাউটার উভয়কে আবার বুট করার পরে আপনি অভিন্ন তিনটি JPerf পরীক্ষা রান করবেন এবং চূড়ান্ত স্কোর হিসেবে গড় ডাটাকে ব্যবহার করবেন। ডুয়াল ব্যান্ড রাউটারের জন্য আমরা এইসব পরীক্ষার ৫ গিগাহার্টজের ব্যান্ডের সাথে সংযুক্তির ক্ষেত্রে একবার এবং ২.৪ গিগাহার্টজের সাথে সংযুক্তির ক্ষেত্রে আবার আরেকবার চালাব।
মাল্টি ইউজার মিমো টেস্টিং
আমরা একই সিঙ্গল ইউজার পরীক্ষা মাল্টি ইউজার মিমো রাউটারের ক্ষেত্রে রান করব। এই পরীক্ষাটি ইতোপূর্বে আমরা সিঙ্গেল-মিমো রাউটারের ক্ষেত্রে রান করেছি। একটি মাল্টি ইউজার মিমো রাউটারের একযোগে একাধিক ক্লায়েন্টের কাছে ডাটা পাঠাতে এবং একাধিক ডাটা স্ট্রিম গ্রহণ করার ক্ষমতা পরিমাপ করার জন্য অতিরিক্ত টেস্ট রান করব। এজন্য আমরা তিনটি অভিন্ন ৮০২.১১এসি নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার ব্যবস্থাসহ ল্যাপটপকে ক্লায়েন্ট ও সার্ভার হিসাবে ইন্টেল কোর৭ ডেস্কটপ পিসি ব্যবহার করব।
বন্ধ নৈকট্য পরীক্ষার জন্য প্রতিটি ক্লায়েন্টকে একটি ত্রিকোণ কনফিগারেশনে রাউটার থেকে ৫ ফুট স্থাপন করা হয়। মাল্টি ইউজার মিমো সক্রিয় করা হয় রাউটারের সেটিংস মেনু থেকে। আমরা JPerf পরীক্ষা তিনবার চালাব, যাতে প্রতিটি ক্লায়েন্ট একই সময়ে ৫ গিগাহার্টজ ব্যান্ড অ্যাক্সেস করে এবং সর্বোচ্চ গড় স্কোর রিপোর্ট করে। এ ছাড়া এটি তিনটি ক্লায়েন্টের মোট গড় স্কোরও রিপোর্ট করবে। এরপর আমরা একটি অনুরূপ ত্রিদলীয় কনফিগারেশনে ৩০ ফুট দূরত্বে ক্লায়েন্ট সরিয়ে নেব এবং একই পরীক্ষা রান করব। সিঙ্গেল ও মাল্টি ইউজার মিমো রাউটারের থ্রুপুট তুলনা করার জন্য তিনটি ক্লায়েন্ট একই সময়ে ৫ গিগাহার্টজ ব্যান্ড অ্যাক্সেস করবে এবং এ সময় আমরা রাউটারের সেটিংয়ে গিয়ে মাল্টি ইউজার মিমো অপশন নিষ্ক্রিয় করে রাখব।
যেসব মডেলে একটি ইউএসবি পোর্ট আছে ও এক্সটারনাল স্টোরেজ সংযোগ সমর্থন করে, সে ক্ষেত্রে আমরা রিড/রাইট স্পিড পরীক্ষা রান করব এবং এর মাধ্যমে কীভাবে একটি রাউটার বড় ফাইল স্থানান্তর করে, তা পরিমাপ করব। আমরা একটি ইউএসবি ৩.০ হার্ডড্রাইভ সংযুক্ত করব ও পরিমাপ করব এটা ডেস্কটপ ও ইউএসবি ড্রাইভের মধ্যে ভিডিও, সঙ্গীত, ফটো এবং ডকুমেন্ট ফাইলের মিশ্রণ ধারণকারী একটি ১.৫ গিগাবাইট ফোল্ডার স্থানান্তর করতে কত সময় লাগে। আমরা তারপর অতিবাহিত সময় সেকেন্ডের হিসেবে পরিমাপ করব এবং ১৫৩৬-কে (১.৫ গিগাবাইট) ওই সংখ্যা দিয়ে ভাগ করব। এর থেকে প্রতি সেকেন্ডে (এমবিপিএস) মেগাবাইটে লেখা ট্রান্সফার স্পিড পেয়ে যাব। রিডের গতি ডেস্কটপে ড্রাইভ থেকে ফাইল ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয় এবং একইভাবে তা গণনা করা হয়।
সেটআপ ও ফিচার
পারফরম্যান্স পরীক্ষা রাউটার মূল্যায়নের জন্য একটি চমৎকার টুল, কিন্তু এখানে অন্য আরও কিছু বিষয় রয়েছে তা আমাদের সাহায্য করে রাউটারের একটি সামগ্রিক রেটিং নির্ধারণ করার জন্য। আমরা রাউটারের ইনস্টলেশন ও সেটআপ পদ্ধতির দিকে লক্ষ করব এবং পরিমাপ করার চেষ্টা করব এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু স্বাচ্ছন্দ্য হতে পারবেন। একই সাথে আমরা রাউটার সম্পর্কিত সব লেখা এবং অনলাইন ডকুমেন্টেশনও পরীক্ষা করে দেখব। আমরা মৌলিক ও উন্নত সেটিংসের ব্যাখ্যাসহ সেটআপ উইজার্ড এবং সাহায্যের জন্য অন-স্ক্রিন হেল্প কতটুকু কার্যকর তা ভালো করে পরখ করব।
আমরা রাউটারের ফিচার যেমন- আকার ও ফর্ম ফ্যাক্টর, তারযুক্ত ইথারনেট পোর্ট ও অ্যান্টিনার মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় আনব। এ ছাড়া রাউটারের ব্যবস্থাপনা ইন্টারফেস ব্যবহারকারী জন্য সহজবোধ্য কি না সে বিষয়ের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব। আমরা নির্দিষ্ট কিছু ম্যানেজমেন্ট বৈশিষ্ট্য যেমন- পিতৃ-মাতৃগত নিয়ন্ত্রণসমূহ, সাইট ফিল্টারিং, অতিথি নেটওয়ার্ক, নিরাপত্তা অপশন, ফায়ারওয়াল সেটিং, সেবার মান (QoS) সেটিংস ইত্যাদি বিষয় রাউটার নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। এ বিষয়গুলো মেনে চললে নিশ্চয় আপনি একটি উপযুক্ত রাউটার নির্বাচন করতে সক্ষম হবেন

রাউটার পরীক্ষা করা
বিভিন্ন কারণে রাউটার সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে এবং তা পুরো নেটওয়ার্ককে অচল করে দিতে পারে। এ কারণে রাউটারকে সমস্যামুক্ত রাখা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, রাউটার হচ্ছে সব নেটওয়ার্কের প্রাণ। এ কারণে সঠিক রাউটারও বেছে নিতে হবে। যথোপযুক্ত রাউটারটি বেছে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে পরীক্ষা চালানো যেতে পারে। এ ধরনের কিছু পরীক্ষা পদ্ধতি ও বৈশিষ্ট্য এখানে বর্ণনা করা হলো।
এখানে আমাদের কাজ হচ্ছে প্রতিটি পণ্যের জন্য নির্ভুল ও কার্যকর পরীক্ষার ফলাফল প্রদান করা। আমরা সেই ফলাফল ব্যবহার করব বিভিন্ন ধরনের মানদ- নির্ধারণ করার কাজে। অন্যান্য মানদ--র মধ্যে থাকবে ডিভাইসটি কত সহজভাবে ব্যবহার করা যায়। ওয়্যারলেস রাউটারের জন্য আমরা তথ্য-থ্রুপুট হার এবং ফাইল স্থানান্তরের গতির মতো বিষয়গুলোর পরিমাপ করার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করব। পরে আমরা এই ফলাফলগুলো সঠিক রাউটার নির্বাচনের জন্য কাজে লাগাব।
পরীক্ষার জন্য রাউটার প্রস্ত্তত করার জন্য আমরা আশপাশের অন্য সব রাউটার নিষ্ক্রিয় করে রাখব। এটা ন্যূনতম হস্তক্ষেপসম্পন্ন অপেক্ষাকৃত একটি পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি করে। সাম্প্রতিক সংস্করণে রাউটারের ফার্মওয়্যার আপগ্রেড (প্রয়োজন হলে) দিয়ে আমরা শুরু করব এবং নির্মাতার নির্দেশ অনুযায়ী ডিভাইস ইনস্টল করব। আমরা সব নিরাপত্তা অপশন নিষ্ক্রিয় করে একটি বদ্ধ নেটওয়ার্ক পরিবেশে প্রতিটি রাউটার পরীক্ষা করব। এ ক্ষেত্রে সব কর্মক্ষমতা বাড়ানোর বৈশিষ্ট্য যেমন- বিমফর্মিং ও ব্যান্ড স্টিয়ারিং সক্রিয় করা হয়ে থাকে।
ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস