• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > টেলস অব টাইম
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৮ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
খেলা প্রকল্প
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
টেলস অব টাইম
টেলস অব টাইম

টেলস অব টাইম গেমটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ফ্রিডম অব ক্রিয়েশন, ফ্রিডম অব এরিয়া, ফ্রিডম অব মুভমেন্ট। গেমার তার বিশাল এলাকা জুড়ে যেভাবে খুশি, যা দিয়ে ইচ্ছে করে তার টাইম ডিস্টিঙ্কট, প্যারালাল এবং নিজস্ব ফ্যান্টাসি রাজ্য গড়ে তুলতে পারবেন। গেমটির শুরু হয় স্বপ্ন দিয়ে, হিরোর টাইম রিমুভড রাজ্যে। আর একবার শুরু করলে একেকটি প্লে থ্রু দুই থেকে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, যার পুরোটা সময়েই গেমার টেলস অব টাইমের সাথে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকবে। টেলস অব টাইম তার পূর্ববর্তী একই জনরার গেমগুলো থেকে আরও উন্নত এবং কুশলী গ্রাফিক্স ও সাউন্ড কোয়ালিটিসমৃদ্ধ, যা সত্যিকার অর্থেই গেমটিকে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বহুদূর যেতে সাহায্য করেছে। গেমে যুক্ত হয়েছে নতুন ইমোশনাল ডিফিকাল্টি, যা বিভিন্ন মিথোলজিক্যাল ফ্যান্টাসির অ্যাপিয়ারেন্স আর হিরোর পাওয়ার রেঞ্জ।
টাইম বেজড পাওয়ার আপ যেমন গেমারকে নতুন সুরক্ষা দেবে, তেমনি পাজলের জন্যও বিভিন্ন টাইম কনস্ট্রেইন্টস অনেক সময় শাপে বর হয়ে উঠতে পারে। আছে গ্রিম রিপার, উইচারস, স্পেল কাস্টার। আরও নানা ধরনের টুইস্টার আছে, যাদের নিয়ে পরবর্তী সময়ে নিজস্ব টাইম ইনভেন্ট্রি গঠন করা যাবে। জলপথ, আকাশপথ এবং স্থলপথ সব মিলিয়ে বেশ বিশাল আকারের বৈচিত্র্য পাওয়া যাবে মুভমেন্ট ফ্রিডম জোন গঠন করার সময়। সেই বিচিত্র সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করতে হবে তার চেয়েও বিচিত্র শত্রুদের সাথে।

আগের চেয়ে অন্যান্য মাইন ক্র্যাফট অ্যানিমেটেড গেমগুলোর গ্রাফিক পাওয়ার আর টেলস অব টাইমের পার্থক্য অনেকখানি বেশি। তাই হিরোদের জন্য অপেক্ষা না করে গেমারকে নিজ থেকেই গড়ে তুলতে হবে প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ টাইম স্কিলস। আর হিরোর শক্তিমত্তার ওপরই নির্ধারিত হবে গেমারের সা¤্রাজ্যের ভাগ্য। আছে সম্পূর্ণ আরপিজি ঘরানার ট্যালেন্ট আর স্কিলস ট্রি, যা দিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো পাওয়ার বণ্টন করা যাবে। গেমারের সাথে দেখা হয়ে যাবে অন্য একদল ডিফেন্ডারের সাথে, যারা গেমারের মতোই আটকা পড়ে আছে টাইমলেস জগতের মধ্যে। আছে জটিল সব গোলকধাঁধা, যেগুলোতে একবার ঢুকে পড়লে বের হওয়া বেশ কষ্টসাধ্যই বটে। আছে অসম্ভব সুন্দর রিক্রুটমেন্ট সিস্টেম, যা দিয়ে খুব সহজেই করা যাবে টাইম ট্র্যাভেলিং ফুয়েল আর পাজল ট্রেঞ্চ।

পুরো গেমটির পাজল স্কিম অসম্ভব দ্রুত। তাই দক্ষ গেমারদের জন্য এটি পারফেক্ট স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যাটফর্ম হলেও রুকিদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। গেমটির অসাধারণ গেমপ্লে গেমারকে দেবে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা, যদিও টার্ন বেজড নয় এবং গ্রাফিক বর্তমানের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মতো উন্নত নয়। তারপরও পুরো পাজল ট্রেঞ্চ স্কিম কখনোই গেমারকে একঘেয়েমিতে ফেলবে না। যুদ্ধ আরও জমজমাট হয়ে ওঠে যখন খুব জটিল কোনো পাজলের সাথে হিরোর টাইম ব্যাটল শুরু হয় কিংবা যখন বিশাল এক মেজ-মিক্সড ট্রেঞ্চের সামনে পরে কাবু হয়ে ওঠে। গেমটিতে আছে বেশ বড় হিস্ট্রিক্যাল টাইম ট্রি, যা নিজের গেম প্ল্যান থেকে হিসাব করে বের করতে করতেই অনেকখানি আনন্দ উপভোগ করা যাবে।

সাথে আছে স্টোরি মুডের বিশাল ম্যাপস কালেকশন, যা দিয়ে সহজেই অনেক দিন চালিয়ে দেয়া যাবে। অদ্ভুত সুন্দর টেক্সচার, টেরিয়ান, রিসোর্স সবকিছুই গেমারকে মুগ্ধ করবে। সাথে তৈরি করা প্রতিটি ডিফেন্ডার সিটিতে থাকছে নির্দিষ্ট রেসিয়াল ইনহ্যাবিটেট, তাই সেগুলো দেখাশোনা করাটাও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হবে। সূ² হিসাব-নিকাশ ছাড়াও গেমারকে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ওপরও কিছুটা নির্ভর করতে হবে। কারণ, গেমটির এআই যথেষ্ট ভালো প্রতিপক্ষ। সবকিছু মিলিয়ে টেলস অব টাইম গেমারকে এক সফল এবং উত্তেজনাপূর্ণ রোল প্লেয়িং পাজলের অভিজ্ঞতা দেবে। তাই আর দেরি না করে এখনই রোল প্লেয়ার হয়ে উঠুন আর নিজেকে তৈরি করে ফেলুন দক্ষ পাজল ব্রেকার হিসেবে।

গেমার প্রতিমুহূর্তেই অনুভব করবেন নিজের জীবনকে সর্বেসর্বা ভেবে এগিয়ে দেয়ার উদ্দীপনা। ক্ষণে ক্ষণে বদলে যাওয়া আবহ আর স্ট্র্যাটেজি গেমারকে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে। আর মাইক্রোসফট অ্যানিমেটেডের মাঝে অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক গ্রাফিক্সের কথা ভুললেও চলবে না। তাই স্ট্র্যাটেজিস্টরা আর দেরি না করে এখনই লম্বা একটা সময় পার করতে প্রস্তুত হয়ে যান টেলস অব টাইমের সাথে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : ৭/৮/১০, সিপিইউ : ইন্টেল কোর টু কোয়াড বা তার সমতুল্য, র‌্যাম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ ৭/১০, ভিডিও কার্ড : এনভিডিয়া এফএক্স সিরিজ/এএমডি রাডেওন (সমতুল্য) ও হার্ডডিস্ক : ১.৫ গিগাবাইট।
অ্যাঞ্জেল স্টোন

প্রথম দেখাতে অ্যাঞ্জেল স্টোন এমন মনে হবে আর যেকোনো হাই ডেফিনিশন হ্যাক এন্ড ক্র্যাশ গেমের মতোই, যেখানে গেমারকে একের পর এক শত্রুদের নানারকম ফরমেশন ভেদ করে এগিয়ে যেতে হবে, আর যতদূর এগোনো যাবে শত্রুরাও তত আগ্রাসী হয়ে উঠবে। মনে হবে যেন টিপিক্যাল অ্যান্ড্রয়েড ফ্যান্টাসি হ্যাক এন্ড ¯ক্র্যাশ গেমিং ছাড়া নতুনত্ব কিছু নেই গেমটিতে। অল্প কিছু অস্ত্র নিয়ে আরমরি আর তেমনি নতুনত্বহীন শত্রু।

সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে গেমটিতে খুব একটা স্টোরি টুইস্ট বা কার্ভ বলও নেই। তবে অরিজিনাল গেম ইঞ্জিনের অসামান্যতা গেমটিকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। একটা কথা বলে নেয়া ভালো, সারাক্ষণ নিভে যেতে থাকা বাতি, বাইরে বাড়তে থাকা ঝড়-বিজলী, ভয়ঙ্কর ব্যাকগ্রাউন্ড থিম সব মিলিয়ে ভূতের দেশ মনে হলেও অ্যাঞ্জেল স্টোন মোটেও কোনো হরর জনরার গেম নয়। এটি ফ্যান্টাসি ডায়নামিক থার্ড পারসন হ্যাক এন্ড ক্র্যাশ, যা এ যুগের ট্রেন্ড অনুযায়ী নারী প্রটাগনিস্টকে নিয়ে গড়ে উঠেছে। ঘটনা হচ্ছে যুগটা ফ্রি গেমিং আর র‌্যাডিক্যাল মুভমেন্টপূর্ণ; আর অ্যাঞ্জেল স্টোনের মতো নিও ক্ল্যাসিক্যাল গেমে ক্লাসিক্যাল আমেজের সাথে নতুন ফিসিকগুলোও বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করা যাবে। গেম স্ক্রিনে যেকোনো জায়গাতে মুভমেন্টের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে অন্য যেকোনো গেম এবং তাদের ফিসিক থেকে অ্যাঞ্জেল স্টোনকে আলাদা করেছে। চারদিক থেকে ছুটে আসা প্রজেক্টাইলগুলোকে কাটিয়ে বিস্ফোরণের হাত থেকে বাঁচতে গেমারকে তার নিজের অস্তিত্বের জানান গেমের বাইরে কন্ট্রোলার কিংবা কিবোর্ডে বসে নয় বরং গেমের ভেতরেও দিতে হবে। উই, প্লে স্টেশন ৪, এক্স বক্স ১-এর দুনিয়া জয় করে আসার পর পিসি গেমিং প্ল্যাটফর্মে গেমটির আরেকটু হলেও গেমিংকে আবার প্রাণবন্ত আর মজাদার কওে তুলেছে।
পঞ্চাশটি ক্যাম্পেইন মিশন, অদ্ভুত স্ট্রাকচার, কালার কোডেড আর নিউমেরিক্যাল পাজলস, কাস্টম চেক পয়েন্ট সব মিলিয়ে গেমটির মধ্যে কোনো কিছুর অভাব থাকলেও সেটা বুঝে ওঠা কষ্ট হবে।

সবচেয়ে মজাদার হচ্ছে সারভাইভাল কম্বো এবং ভারসেটাইল কিলা লা কিল মুড সেটিং। প্রতিটি লেভেলে সবগুলো অস্ত্র জোগাড় করা, প্রতি ওয়েভের সবগুলো শত্রু দমন করা। গেমের স্পিড যতখানি বাড়বে তার সাথে সাথে আরও বাড়বে উত্তেজনা। আস্তে আস্তে যাচাই হবে গেমারের দক্ষতা। আর তার সাথে সাথে যখন পাজলগুলোও জটিল হতে শুরু করবে, তখন দেখা যাবে বুদ্ধির দৌড় কতটুকু, যাতে গেমারকে দক্ষতার শেষ মাত্রার পরীক্ষা দিতে হবে। তাই গেমারেরা নিজেদের গেমিং স্কিলগুলো সহজ আর আনন্দময় ভ্রমণের সাথে সাথে দ্রুত ঝালাই করে নিতে অ্যাঞ্জেল স্টোন নিয়ে বসে পড়ুন এখুনি।

গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : ৭/৮.১/১০, সিপিইউ : কোরআই৩ ৩.২ গিগাহার্টজ/এএমডি অ্যাথলন, র‌্যাম : ৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ ৭/৮.১/১০, ভিডিও কার্ড : জি ফোর্স ৭০০০ সিরিজ জিটিএস/রাডেওন (সমতুল্য) ২ গিগাবাইট উইথ এক্সপ্রেস টেকনোলজি ও হার্ডডিস্ক : ১৩ গিগাবাইট।
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৮ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস