তরুণদেরকেই ধরতে হবে সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকার তথ্যপ্রযুক্তি বাজার
বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা বলতে এর কর্মক্ষেত্র ও কর্মপরিধি বাড়ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সবখানে এখন তথ্যপ্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট কাজের প্রচুর চাহিদা। কিন্তু নেই ভালো কাজ জানা লোক, যারা চাহিদা পূরণ করতে পারে। এ আইসিটি কাজের চাহিদা পূরণে আমাদের প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা। উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশের আইসিটি খাতেও একই অবস্থা। এখানে কাজ আছে, কিন্তু নেই সে অনুপাতে চাহিদা পূরণ করার মতো দক্ষ জনশক্তি। কিভাবে এ দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব, তা নিয়েই এবারের এ প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।
বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে প্রযুক্তির এক নতুন দিক উন্মোচিত হয় কমপিউটারের বহুবিধ ব্যবহারের মাধ্যমে। শুধু বহুবিধ ব্যবহারের মাধ্যমে কমপিউটার সীমাবদ্ধ না থেকে পরিণত হয় এক অত্যাবশ্যকীয় প্রযুক্তিযন্ত্রে। অবশ্য এ অত্যাবশ্যকীয় প্রযুক্তিযন্ত্র হিসেবে কমপিউটার এমনি এমনি পরিণত হয়নি। নির্ভুল হিসেব গণনা করতে পারার পাশাপাশি একসাথে অনেক কাজ করার ক্ষমতা এবং দক্ষতা থাকায় মানুষ তার দৈনন্দিন কাজে কমপিউটার ব্যবহার শুরু করে। এর ফলে কমপিউটারকে কেন্দ্র করে আইসিটি শিল্প গড়ে ওঠে। রাতারাতি সবার কাছে এর গুরুত্ব বেড়ে যায়। এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকদের কদর বেড়ে যায়। ব্যাপকভাবে মানুষ এ খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও কমপিউটার জানা লোকদের চাহিদা বাড়ছে। প্রচুর কাজ আছে এখানেও। শুধু তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে ঠিক তা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ সংশ্লিষ্ট বিষয় তরুণ প্রজন্মের কাছে চাহিদা বাড়ছে। ঠিক কতটুকু বাড়ছে এবং কতটুকু বাড়া উচিত এবং সেই সাথে বৈশ্বিক অবস্থানটা কেমন, তা আমাদের জানা উচিত।
আইসিটিতে চাহিদা বাড়ছে
২০০৪ সালের পর থেকে আইসিটিবিষয়ক চাকরির অবস্থার রাতারাতি পরিবর্তন হতে থাকে। বাড়তে থাকে চাকরির বাজার। ফলে খুব দ্রুত শূন্য হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিট, আর তার চেয়ে দ্রুত চাহিদা বাড়তে থাকে এসব বিষয়ের পেশাজীবীদের। এ চাহিদা বেড়েই চলেছে, কিন্তু চাহিদার তুলনায় একই হারে যোগ্য আইসিটি পেশাজীবী বাড়ছে না। তাই ২০০৫ সালের পর থেকে বিশ্বব্যাপী আইসিটিতে সব দিক থেকে জ্যামিতিক হারে চাহিদা বেড়েই চলেছে। ইদানীং আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মূলত ২০০৫ সালের পর থেকেই ধীরে ধীরে আইসিটি ঘরানার লোকদের চাহিদা বাড়তে শুরু করে। এ সময়ে সব ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে প্রযুক্তি ডিজিটাইজ করার প্রবণতা পরিলক্ষিত হওয়ায় আইসিটিসংশ্লিষ্ট লোকদের চাহিদা বাড়ে। সে চাহিদা পূরণ তো হয়ইনি, বরং আরো বেড়ে যায়। এ সুযোগটা নিতে হবে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে।
যুক্তরাষ্ট্রে আইসিটি
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সমীক্ষা থেকে আইসিটিবিষয়ক তথ্য পর্যালোচনার জন্য এ খাতের চাকরিকে আট ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হচ্ছে- কমপিউটার আইএস ম্যানেজার, কমপিউটার সায়েন্টিস্ট সিস্টেম অ্যানালিস্ট, কমপিউটার প্রোগ্রামার, কমপিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কমপিউটার সাপোর্ট স্পেশালিস্ট, ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, নেটওয়ার্ক কমপিউটার সিস্টেমস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এবং নেটওয়ার্ক সিস্টেমস ডাটা কমিউনিকেশন অ্যানালিস্ট। এদের মধ্যে ২০০০ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে কমপিউটার আইএস ম্যানেজারের চাকরি ৬০% বেড়েছে। ২০০০ সালের প্রথমার্ধে যেখানে কমপিউটার আইএস ম্যানেজারের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ ১৪ হাজার, সেখানে চার বছর পর এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ লাখ ৪১ হাজার।
স্পষ্টতই বলা যায়, কমপিউটার আইএস ম্যানেজারের চাকরি বেড়েছে। একই অবস্থা কমপিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের ক্ষেত্রেও। কমপিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে আইসিটিবিষয়ক চাকরির সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র। ২০০০ সালে যেখানে কমপিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের জন্য পদ ছিল ৭ লাখ ৫৭ হাজার, সেখানে ২০০৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ লাখ ১৬ হাজার। এখানে ৪ বছরে বেড়েছে ৮%। একইভাবে এ সময়ের মধ্যে ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। নেটওয়ার্ক কমপিউটার সিস্টেমস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পদ বেড়েছে ৩৬%। সবচেয়ে কমসংখ্যক চাকরি বেড়েছে নেটওয়ার্ক সিস্টেমস ডাটা কমিউনিকেশন অ্যানালিস্টদের। তাদের চাকরি বেড়েছে ৬%।
থাইল্যান্ডের পরিস্থিতি
আমাদের পাশের দেশ থাইল্যান্ডের আইসিটিবিষয়ক এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০০৭ সাল থেকে সেখানে ক্রমেই এখাতে চাকরি বাড়ছে। সেই সাথে তাদের এ সমীক্ষার সাথে মিল রেখে ধারণা করা হয়, ২০০৯ সালেও এই বেড়ে চলা অব্যাহত থাকবে। শুধুই যে চাকরি বাড়ছে, তা নয়। আইসিটিবিষয়ক বিভিন্ন সার্ভিস এবং সার্ভিসসংক্রান্ত সুবিধাও অনেক বেড়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, থাইল্যান্ডে অন্যান্য দেশের মতো আইসিটির হার্ডওয়্যারের চাহিদার কোনো উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি না ঘটলেও চাকরি ও সার্ভিস বেড়েছে। তবে এটি যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব, সে ব্যাপারে কারো সন্দেহ নেই। সেই সাথে এটি সাময়িক ব্যাপার তাও বলে দেয়া যায়। হার্ডওয়্যারের চাহিদা অচিরেই বেড়ে যাবে, তা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
এক হিসেবে দেখা যায়, আইসিটির সামগ্রিক বাজার থেকে তথ্যপ্রযুক্তির বাজারের সম্প্রসারণ ঘটেছে বেশি পরিমাণে এবং তা প্রতিটি খাতে সম্প্রসারিত হয়েছে। শুধু হার্ডওয়্যারের বাজারের সম্প্রসারণ ২০০৮-২০০৯ সালে দেয়া হয়নি। পুরো পরিসংখ্যান হিসেব করা হয়েছে এখানে প্রতি মিলিয়ন থাই বাথে।
ওপেনসোর্সের চাকরি বাড়ছে
এখন লিনআক্স ও ওপেনসোর্সের চাকরি বেড়ে চলেছে। এর অন্যতম কারণ কর্পোরেট পর্যায়ে গুরুত্বের সাথে লিনআক্সের চাহিদা বেড়ে যাওয়া। বিশ্বব্যাপী লিনআক্স সার্ভারের সংখ্যা গত কয়েক বছরে অনেক বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, সোর্সকোডসহ সফটওয়্যার পাওয়া যায়। সার্ভারের পাশাপাশি এখন ডেস্কটপ এবং ওয়ার্কস্টেশনেও লিনআক্স ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে সব ধরনের মেশিনে লিনআক্স নিজেকে অত্যন্ত স্থিতিশীল করে তুলেছে। এর ফলে লিনআক্স পেশাজীবীদের চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে ওপেনসোর্সের মাধ্যমে এখন প্রচুর কাজ পাওয়া যাচ্ছে। এসবের মূলে আছে লিনআক্স এবং বিভিন্ন ওপেনসোর্সের সফটওয়্যার।
ওপেনসোর্সের চাকরির বাজার
লিনআক্সের চাকরি এখন বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। এখানেও একথা সত্য, লিনআক্স জানা লোকদের চাহিদা অনুপাতে যোগ্য ও দক্ষ জনশক্তি নেই। শুধু সার্ভারের চাহিদার কারণেই নয়, এখন বিশ্বব্যাপী ডেস্কটপ বা ওয়ার্কস্টেশনের জন্যও লিনআক্স ব্যবহারকারী বাড়তে থাকায় লিনআক্স পেশাজীবীদের কাজ বাড়ছে। সেই সাথে লিনআক্সের বড় ডিস্ট্রিবিউটর এখন লিনআক্সের জন্য বিকল্প সফটওয়্যার তৈরিতে ডেভেলপারদের নিয়মিত তাগিদ দিচ্ছে। শুধু অপারেটর বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নয়, পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ জানা লোকদের চাহিদা বেড়েছে সব থেকে বেশি। এর কারণ লিনআক্সের বেশিরভাগ প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়ে থাকে সি ল্যাঙ্গুয়েজভিত্তিক পাইথন ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে।
অভিবাসনের ক্ষেত্রে সুবিধা
আইসিটি জানা লোকদের এখন বিভিন্ন দেশে অভিবাসনের ক্ষেত্রে সুবিধা দেয়া হচ্ছে। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রের GP1 ভিসা দেয়া হচ্ছে। যার অর্থ এখন আইসিটি জানা লোক অভিবাসনের ক্ষেত্রেও এগিয়ে থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি অনেক উন্নত দেশও এ ধরনের আইসিটি অভিবাসন প্যাকেজ ঘোষণা করছে। জাপানও এখন এরকম কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইসিটি জানা লোকদের বিশেষ অভিবাসন সুবিধা দিচ্ছে।
ভারতের এগিয়ে যাবার হাতিয়ার
বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ভারত তাদের পিডিপির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য হারে তথ্যপ্রযুক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে। ভারত গত বছরে ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় করেছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে। এজন্য তারা নতুন করে প্রতিবছর ৩ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি জানা লোকদের নিয়োগ দিচ্ছে, যারা প্রতিবছর আরো ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করতে পারে। এজন্য এরা পাঁচসালা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যার বাস্তবায়ন শুরু হতে যাচ্ছে অচিরেই। যেখানে বাংলাদেশে প্রস্তাবিত ২ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি জানা লোকদের নিয়োগ দেবার সম্ভাবনা আছে। এরা সাড়ে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার তথা টাকার অঙ্কে সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকা আয় করে জাতীয় রাজস্বে ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের এ সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, এখন ঢাকা যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় ১০ বছর আগে ছিল হায়দ্রাবাদ। হায়দ্রাবাদ এখন ভারতের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি কাজে সমৃদ্ধ নগরী। সুতরাং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে এ তথ্যপ্রযুক্তি দিয়েই।
বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে যেখানে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বাজার ছিল আড়াই কোটি মার্কিন ডলার, সেখানে ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারে। উল্লেখ্য, ১ ডলার প্রায় ৭০ টাকা। তাইওয়ান যেখানে ইলেক্ট্রনিক্স শিল্প দিয়ে নিজেদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে এবং সৌদি আরব যেখানে নিজেদের খনিজ সম্পদের মাধ্যমে নিজের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে, সেখানে ভারত তথ্যপ্রযুক্তিকে নিজেদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কাজে লাগাচ্ছে। বাংলাদেশও এ একই পথ ধরে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
আইসিটি হবে এগিয়ে যাবার হাতিয়ার
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, আইসিটিই হতে যাচ্ছে আমাদের এগিয়ে যাবার হাতিয়ার। ছাত্ররা যত দ্রুত আইসিটিমুখী হবে ততই তাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আইসিটি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই, তা আমাদের কারো অজানা নয়। এজন্য সবার আগে আমাদের শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে হবে এবং তা পুরোপুরি আইসিটিমুখী করতে হবে, যাতে করে প্রতিবছর অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন আইসিটি ডিগ্রিধারী তৈরি হয় আমাদের দেশে। এরা ক্রমবর্ধমান এ শিল্পে বিশ্বের উন্নত দেশের আইসিটি ডিগ্রিধারীদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।
আইসিটি বিষয়ে দেশের উচ্চশিক্ষা
আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষিত জনবলের হার খুবই কম। এর অন্যতম কারণ, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। অবশ্য অনেকে এর কারণ হিসেবে আমাদের শিক্ষানীতিকে দায়ী করেন। এক দশক আগেও দেশের ধনী পরিবারের ছাত্ররা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমাত। এর ফলে দেশ থেকে চলে যেত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। এ অবস্থার পরিবর্তন এবং দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একচেটিয়া আধিপত্য কমানোর জন্য ১৯৯১ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন চালু করা হয়। পরিবর্তন আসে দেশের উচ্চশিক্ষার পাঠক্রমে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এখন শিক্ষায় এগিয়ে চলেছে। এত কিছুর পরেও আইসিটি বিষয়ে উচ্চশিক্ষায় দেশের ছাত্রদের সচেতনতার অভাব লক্ষ করা যায়। আশার কথা, সরকারি ও কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিবছর মানসম্পন্ন আইসিটি ডিগ্রিধারী তৈরি করছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন চালু করার পর এদেশে খুব অল্প সময়ে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় চালু হতে থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই ইতোমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে। কিছু কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক র্যা ঙ্কিংয়েও স্থান করে নিয়েছে। তাই দেখা যায়, অনেক ছাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হচ্ছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশের ফলে আধুনিক বিশ্বের সাথে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়নে আধুনিকায়ন ঘটছে। এর শুরুটা হয়েছিল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে। এটি এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ছে। অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন মান্ধাতার আমলের পাঠ্যসূচী বদলে আধুনিক পাঠ্যসূচী অনুসরণ করছে। তবে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, এত কিছুর পরও তাত্ত্বিক জ্ঞানের সাথে ব্যবহারিক জ্ঞানের পার্থক্য থেকেই যাচ্ছে। আমাদের দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ব্যবহারিকের প্রয়োগ কম। যে কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃতি শুধু সার্টিফিকেটসর্বস্ব। এর ফলে ছাত্র-অভিভাবক সবাই দ্বন্দ্বে পড়ে যান।
দেশের বিভিন্ন পাবলিক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ও পাঠক্রমসম্পর্কিত তথ্যের জন্য www.ugc.gov.bd সাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এখানে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটের লিঙ্ক দেয়া আছে।
বিদেশে পড়াশোনা
এক সময় বিদেশে পড়াশোনা নিরুৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের প্রবর্তন করা হয়। ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার চাহিদার কথা চিন্তা করলে তা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। তার পরও বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেয়ার জন্য গমনেচ্ছু ছাত্রসংখ্যার হার কিন্তু কম নয়। বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সেখানে উন্নতমানের শিক্ষার পাশাপাশি কাজ করার বা পাবার সুবিধা আছে, যা আমাদের দেশে সীমিত। তবে প্রথমদিকে ভাষা ও পরিবেশগত কিছু সমস্যা হতে পারে, যা কাটিয়ে ওঠা কোনো সমস্যা নয়। আর আইসিটিসহ নতুন প্রযুক্তি বা প্রকৌশল অনুষদে পড়াশোনার জন্য বা হালনাগাদ থাকার জন্য বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিকল্প নেই। অনেক সময় বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির টেকনিক্যাল বিভাগে কর্মরত পেশাদারদের নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা বা উচ্চতর ডিগ্রি নেবার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে থাকে। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে সবারই কিছুটা ধারণা থাকা দরকার।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কোনো নির্দিষ্ট পর্যায় বা সীমা নেই। অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান। আবার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শেষ করেও উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যান।
বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হবে কোন দেশে পড়াশোনার কী হাল। সেই সাথে অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাও খতিয়ে দেখতে হবে। তাই দেশ নির্বাচন খুবই জরুরি। মনে রাখতে হবে, সব দেশে পড়াশোনার সুবিধা এক নয়। বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এখনো ছাত্রদের প্রথম পছন্দ গ্রেট ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া। বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সেই দেশে ভাষার ব্যবহার কেমন। গ্রেট ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া পছন্দের দিক থেকে সবার উপরে আছে, কারণ ভাষাগত সুবিধা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ, জাপান, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে আইসিটি-বিষয়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয় ভাষাগত সমস্যা। এসব দেশে দৈনন্দিন ব্যবহার্য ভাষা হিসেবে আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি ব্যবহার করা হয় না। তাই কিছুটা সমস্যা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভিসা-কাগজপত্র ঠিক করে অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে চলে যান। কিন্তু ওখানকার পরিবেশ দেখে এবং ভাষার ব্যবহার দেখে কয়েকদিনের মধ্যেই ফিরে আসেন। তাই যাবার আগে সব ধরনের সুযোগসুবিধা জেনেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি
বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপে প্রস্তুতি নিতে হয়। প্রথমে দেশ নির্বাচন করে ঠিক করে নিতে হবে কী ধরনের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চান। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকেই ছোট বা মধ্যম সারির প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে ভিসা নিয়ে চলে যান এবং পরে সুবিধামতো সময়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে কাঙ্ক্ষিত ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন।
দেশ ও প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে জেনে নিতে হবে সেই প্রতিষ্ঠানের চাহিদা কী। সাধারণত IELTS, GRE, GMAT ইত্যাদি ধরনের কোর্সের নির্দিষ্ট স্কোর করলে আবেদন করা যায়। জেনে নিতে হবে সেই নির্ধারিত স্কোর কত। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। আগে ইন্টারনেটের সুবিধা যখন ছিল না, তখন খোঁজখবর নেবার জন্য বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সাহায্য নেয়া হতো। এখনো নেয়া যায়। তারপর কোর্সগুলোতে ভালো স্কোর করে আবেদন করতে হবে। প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মতি আসলে ভিসার জন্য দূতাবাসে আবেদন করতে হয়। এ পদ্ধতিতে সরাসরি ডিগ্রি নেয়া যায়।
বিদেশে পড়াশোনা করতে যাবার আগে জেনে নিন, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাচ্ছেন তাদের চাহিদা কী কী। বিদেশে পড়াশোনার জন্য শুধু বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক শিক্ষাই শেষ কথা নয়। এক্ষেত্রে যে বাড়তি যোগ্যতা দরকার তা হচ্ছে IELTS, TOEFL, SAT, GRE, GMAT ইত্যাদি কোর্সে প্রয়োজনীয় স্কোর থাকতে হবে। এগুলোর জন্য অনেক ক্ষেত্রেই একাধিক কোর্সের যোগ্যতা থাকা প্লাস পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার যোগ্যতা হিসেবে অ্যাকাডেমিক যোগ্যতার মতোই এসব বিষয়ে যোগ্যতা থাকা জরুরি।
আইইএলটিএস
এটি হচ্ছে ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা মাপার একটি আন্তর্জাতিক পরীক্ষা। IELTS-এর পুরো অর্থ হচ্ছে International English Language Testing System। এ পরীক্ষার যাবতীয় সব নিয়ন্ত্রিত হয় ইংল্যান্ড থেকে। এ পরীক্ষার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো।
IELTS পরীক্ষাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে লিসেনিং, রিডিং, রাইটিং ও স্পিকিং। লিসেনিংয়ের জন্য ৩০ মিনিট সময় রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১৫ মিনিট সময় ধরে শিক্ষার্থীকে অডিও শুনতে দেয়া হয় এবং পরে প্রশ্ন করা হয়। সবসহ ৪০টির মতো প্রশ্ন থাকে যার উত্তর সবগুলো লিখতে হয়। রিডিং অংশে ৬০ মিনিটের মধ্যে অনুর্ধ্ব ২,৫০০ শব্দের মধ্যে একটি রচনা পড়তে দেয়া হবে। এখানে তিনটি ভাগ থাকে যাতে প্রায় ৪০টির মতো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ পরীক্ষায় উত্তর দিতে হয় মাল্টিপল চয়েজ কোয়েশ্চেন (MCQ) হিসেবে। তবে এক্ষেত্রে রচনার বিষয়বস্তু নির্ধারিত কোনো কিছু থাকে না। এটি সাম্প্রতিক কোনো বিষয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো বিষয় থেকেও দেয়া হতে পারে।
রাইটিং অংশে সময় নির্ধারিত আছে ৬০ মিনিট। এই ৬০ মিনিটকে যথাক্রমে ২০ মিনিট এবং ৪০ মিনিটে ভাগ করা হয়েছে। এর প্রথমভাগে ২০ মিনিটে কোনো ছবি থেকে ১৫০ শব্দের মধ্যে একটি রচনা লিখতে হবে এবং বাকি ৪০ মিনিট সময়ের মধ্যে কোনো বক্তৃতা থেকে ২৫০ শব্দের একটি রচনা লিখতে হবে।
এরপরে বাকি থাকে ‘স্পিকিং’ অংশ। এ অংশে ৫টি ভাগ থাকে। প্রতিটি ভাগে ১৫-২০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। ইংরেজিতে দক্ষতা এ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। শুধু ইংরেজিতে পারদর্শিতাই নয়, উপস্থিত বুদ্ধিও কতটুকু তা এ পরীক্ষা করা হয়। IELTS পরীক্ষায় সবসহ ২ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ধরে নেয়া হবে। এ পরীক্ষায় কোনো পাস নম্বর নেই। আছে ১ থেকে ৯-এর মধ্যে স্কোর। প্রতিটি বিভাগ থেকে পাওয়া নম্বর গড় করে সামগ্রিক ফল প্রকাশ করা হয়।
এ পরীক্ষায় স্কোরলাইন যত বেশি হবে ততই ভালো। তবে সাধারণত ৬-৫ ভালো স্কোর হিসেবে ধরা যায়। আর ৫-৬ স্কোর অ্যাভারেজ হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে IELTS-এর কোচিং করানো হয়। তবে এ কোচিং করিয়েই কিন্তু সবখান থেকে মূল পরীক্ষায় অংশ নেয়া যায় না। বাংলাদেশে এখন ফুলার রোডের ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং ধানমন্ডিস্থ বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল সার্ভিসেস থেকে মূল পরীক্ষায় অংশ নেয়া যাবে। মাসে তিনবার এ পরীক্ষায় অংশ নেয়া যায়।
টোফেল
আইইএলটিএস-এর মতো টোফেল একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতার পরীক্ষা। টোফেলের পুরো অর্থ হচ্ছে Testing of English as a Foreign Language। আমেরিকা, কানাডা এবং ইউরোপের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পরীক্ষার ভালো স্কোর থাকতে হয়। এ পরীক্ষার ফল থেকে অনেক নামী বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজির ওপর দক্ষতা যাচাই করে নেয়। এ পরীক্ষাকেও একইভাবে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে listening, reading, writing এবং speaking।
আইইএলটিএস আর টোফেলের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে আইইএলটিএস নিয়ন্ত্রিত হয় ইংল্যান্ড থেকে, আর টোফেল নিয়ন্ত্রিত হয় আমেরিকা থেকে। আগে টোফেল পরীক্ষা হতো পেপারভিত্তিক নিয়মে। কিন্তু এখন হয় পুরোপুরি কমপিউটারভিত্তিক সিস্টেমে। আগে এ পরীক্ষা গণনা হতো ৬৬৭, কিন্তু এখন এ পরীক্ষা গণনা হয় ৩০০। এক্ষেত্রে এখন টোফেলে ২১৩ স্কোর বেশ ভালোই।
টোফেল পরীক্ষার নিয়মকানুন অনেকটা আইইএলটিএস পরীক্ষার মতোই। বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে টোফেলের কোচিং করানো হয়। তবে এ কোচিং করিয়েই কিন্তু সবখান থেকে মূল পরীক্ষায় অংশ নেয়া যায় না।
স্যাট
SAT একই ধরনের একটি স্ট্যান্ডার্ড। অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় স্যাট স্কোর চায়। এর পুরো নাম হচ্ছে- স্কলাস্টিক অ্যাসেসম্যান্ট টেস্ট। SAT দুই ধরনের হয় : স্যাট-১ এবং স্যাট-২। স্যাট নিয়ন্ত্রিত হয় এডুকেশনাল টেস্টিং সার্ভিসের মাধ্যমে। সংক্ষেপে যাকে ইটিএস বলা হয়। যে কারো ভার্বাল এবং কোয়ান্টেটিভ রিজনিং এবিলিটি মূল্যায়ন করার একটি ভালো মাধ্যম হলো এই স্যাট। স্যাট-১ এবং স্যাট-২-এর স্কোরও দুইটি হয়। একটি হচ্ছে ভার্বাল এবং ম্যাথ স্কোর। অপরটি হচ্ছে বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা। কোনো বিশেষ বিষয়ে শিক্ষার্থীর জ্ঞান এবং তা প্রয়োগ করার ক্ষমতা বের করার জন্য এ ধরনের পরীক্ষা বেশ কার্যকর। মূলত স্যাটে ১০০০+ স্কোর ভালো স্কোর হিসেবে বিবেচিত হয়।
জিম্যাট
বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে। অবশ্য শুধু বাংলাদেশে বললেই ভুল হবে। পুরো বিশ্বেই একই অবস্থা। তাই ব্যবসায়, প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ের চাহিদা দিনকে দিন বাড়ছে। এ ধরনের বিষয়গুলো উচ্চশিক্ষা অর্জনে GMAT ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্যতা নিরূপণের মাপকাঠি। অনেক ভালো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আগ্রহীদের এ কোর্স বাধ্যতামূলক। জিম্যাট-এর পুরো নাম- গ্র্যাজুয়েট ম্যানেজমেন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট। শুধু শিক্ষাজীবনেই নয়, মাঠপর্যায়েও এ কোর্স খুব কাজের। বাংলাদেশে এ কোর্সের মূল পরীক্ষা নেয়া হয় বনানীর আমেরিকান সেন্টারে।
জিআরই
GRE পুরো কথায় হচ্ছে- গ্র্যাজুয়েট রেকর্ড এক্সামিনেশন। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নেবার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই এ কোর্স চাওয়া হয়। সাধারণত এ কোর্সের স্কোর ১০০০+ থাকতে হয়। যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য কোর্সে কমপিউটার অ্যাডাপটিভ টেস্ট নেয়া হয়। মূলত আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স এবং টেকনোলজিতে ভর্তির জন্য এ কোর্সের চাহিদা আছে এবং বেশ ভালো স্কোর অর্জন করতে হয়। জিআরইতে মোট চারটি সেশন থাকে। এগুলো হচ্ছে ভার্বাল সেশন, কোয়ান্টেটিভ সেশন, অ্যানালাইটিক্যাল রাইটিং সেশন এবং একটি পরীক্ষক সেশন।
ক্রেডিট ট্রান্সফার
অন্যভাবেও বিদেশে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি নেয়া যায়। এর নাম হচ্ছে ক্রেডিট ট্রান্সফার। উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই এ ক্রেডিট ট্রান্সফার বেশ কাজের। এক্ষেত্রে গ্র্যাজুয়েশনের পরে আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএস-এর কিছুটা কোর্স করে বাকিটা বিদেশে ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজে কোর্স করা যায়। তবে লাভ হচ্ছে পুরো কোর্সের এ সার্টিফিকেট সেই পরে যোগ দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেয়া হবে। এ সিস্টেমে দেশে থেকেই দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্ধেক বা নির্দিষ্টসংখ্যক ক্রেডিট সম্পন্ন করে বাকি অংশ বাইরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করে পুরো ডিগ্রি অর্জন করা যায়। আমাদের দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা আছে। এক্ষেত্রে ভর্তি হবার আগে জেনে নিতে হবে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা কেমন।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিরবাজার: মোট ৩০ কোটি ডলার
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান বৃত্তি দিয়ে থাকে। বৃত্তি নিয়ে অনেকেই ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। তাছাড়া ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফ্রাঞ্চাইজ’ শিক্ষা কার্যক্রমে বিশ্বের বিখ্যাত আইসিটি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা যায়। এজন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
ওয়েবগাইড
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য একটি ভালো ওয়েবগাইড বা কিছু ওয়েবসাইটের সঙ্কলন আমাদের মাঝেমধ্যেই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। দেখা যায় খুব দরকারি কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না কোনো ওয়েবগাইড হাতের কাছে না থাকার কারণে। একটি ওয়েবগাইড এখানে উপস্থাপিত হলো যাতে করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে গমনেচ্ছুদের কাজে লাগে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত অনেকগুলো ওয়েবসাইটের ঠিকানা এবং পরিচিতি দেয়া হয়েছে যাতে নিজেকে আরো তথ্যসমৃদ্ধ করা যায়।
www.braintrack.com–এ সাইটে বিশ্বের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক তথ্য দেয়া আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য এখানে পাওয়া যাবে। এখানে একই ইনডেক্সে বর্ণনানুক্রমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য খুব সহজেই খুঁজে বের করা যায়।
www.education-world.com–এ সাইটে বিশ্বের সব মহাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটের পাশাপাশি নানারকম তথ্য দেয়া আছে। তাছাড়াও এখানে স্কলারশিপ, নানারকম টেস্ট এবং শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি তথ্য রয়েছে।
www.globaled.us–এ সাইটে বিশ্বমানচিত্রে চিহ্নিত বিভিন্ন দেশের উপরে মাউস দিয়ে ক্লিক করলেই স্ক্রিনে ভেসে আসবে ওই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য এবং উপাত্ত।
www.education.yahoo.com–এ সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক বা অনুষদভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম দেখা যাবে। এ নাম থেকে ক্লিক করে অন্যান্য আনুষঙ্গিক তথ্য পাওয়া যাবে।
www.wes.org–এ সাইটে বিশ্বের অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমেরিকা, কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির তথ্য, ফরম, ক্রেডিট ট্রান্সফার, আর্থিক সহায়তার তথ্য, ভর্তি পরীক্ষার এবং TOEFL, IELTS, SAT, GRE, GMAT সম্পর্কে জানা যায়। এসব ছাড়াও এখানে আমেরিকায় ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত সব তথ্য এবং চাকরির খবরাখবর পাওয়া যাবে এখানে।
www.einnews.com–এ সাইটে সাইপ্রাসের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এবং নিয়মকানুন পাওয়া যাবে।
www.cypruseducation.com–এ সাইটেও সাইপ্রাসের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং পড়াশোনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এবং নিয়মকানুন পাওয়া যাবে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্যান্য খবরাখবরও এখানে জানা যাবে।
www.dst.gov.edu–এ সাইটে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এবং নিয়এীতি পাওয়া যাবে।
www.educationusa.state.gov–এ সাইটে আমেরিকার ভিসা, শিক্ষামেলা সম্পর্কিত নানা তথ্য রয়েছে। এ সাইটে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবেদনের জন্য নানা তথ্যও পাওয়া যাবে। সেই সাথে ইকোনমিক অ্যাড এবং কোর্সগুলো সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যাবে।
www.exchanges.state.gov–এ সাইটেও আমেরিকার ভিসা, শিক্ষামেলা সম্পর্কিত নানা তথ্য পাওয়া যাবে। তবে এটি অনেক তথ্যবহুল একটি সাইট।
www.iic.org–এ সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক বা অনুষদভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম দেখা যাবে। মূলত এখান থেকে বিদেশে শিক্ষাবিষয়ক প্রচুর তথ্য পাওয়া যাবে। এটি একটি অলাভজনক সংস্থার ওয়েবসাইট। এখান থেকে অন্যান্য অনেক আনুষঙ্গিক তথ্য পাওয়া যাবে।
www.iefa.org–এ সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক বা অনুষদভিত্তিক বৃত্তি, ঋণ, পড়াশোনায় আর্থিক সহযোগিতা ছাড়াও উচ্চশিক্ষার অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে।
www.internationalstudent.com –এ সাইটে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক বা অনুষদভিত্তিক তথ্যসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক তথ্য পাওয়া যাবে।
www.financialofficer.com–এ ওয়েবসাইটে মূলত স্কলারশিপ ও আর্থিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত দেয়া আছে, যা উচ্চশিক্ষার স্কলারশিপ পেতে আগ্রহীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
www.f1study.com–বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই, আবেদন পাঠানো ও আর্থিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত দেয়া আছে এ ওয়েবসাইটে। এছাড়াও TOEFL, IELTS, SAT, GRE, GMAT সম্পর্কে এখানে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যাবে।
www.univsource.com–এ সাইটে বিশ্বের অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমেরিকা, কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির তথ্য, ফরম, ক্রেডিট ট্রান্সফার, আর্থিক সহায়তার তথ্য, ভর্তি পরীক্ষা ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যাবে।
www.studentreview.com–এ সাইটে বিশ্বের নামকরা কলেজগুলোর তথ্য সম্পর্কে জানা যাবে।
www.usaforstudent.com–এ সাইটে ধারাবাহিকভাবে ছাত্রছাত্রীদের জব, প্লেসমেন্ট, B1/F1 ভিসা প্রোগ্রাম নিয়ে তথ্যের পাশাপাশি গ্রিন কার্ড হোল্ডারদের জন্যও রয়েছে চাকরির তথ্য।
www.internatiol scholarships.com–এ সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক স্কলারশিপ, ঋণ, পড়াশোনায় আর্থিক সহযোগিতা ছাড়াও উচ্চশিক্ষার অন্যান্য তথ্য এখানে পাওয়া যাবে।
www.collegeconfi dencial.com–বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর সংবলিত এ সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন কলেজের ভর্তির তথ্য পাওয়া যাবে এখানে।
www.howstuffworks.com– বিশ্বের হাজারো কলেজের ভেতর আপনার কলেজ বাছাই করা একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার জন্য প্রয়োজনীয় কলেজ বাছাই করা সম্ভব হবে।
www.nacacnet.org–National association for college admission counseling নামের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এটি। এখানে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পড়াশোনা সংক্রান্ত তথ্যসহ উচ্চশিক্ষার অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে।
www.edupass.org–এ সাইটে আমেরিকার ভিসা, শিক্ষা সম্পর্কিত নানা তথ্য পাওয়া যাবে। এতে আমেরিকার কলেজগুলোয় আবেদনের জন্য নানা তথ্যও পাওয়া যাবে।
www.euroeducation.net–আমেরিকা, ইউরোপ এবং কানাডার বিভিন্ন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে এখানে তথ্য পাওয়া যাবে।
www.dmoz.org–ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে পছন্দসই বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করা কিছুটা কষ্টসাধ্য। এত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে পেতে এ ওয়েবসাইট বেশ কার্যকর। এখানে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের ঠিকানা এবং তাদের লিঙ্ক দেয়া আছে।
www.goabroad.com–এটি বেশ তথ্যবহুল এবং প্রচুর লিঙ্কবিশিষ্ট একটি ওয়েবসাইট। বিষয় এবং দেশ দুইভাবেই এখানে বিশ্ববিদ্যালয় সার্চ করা যায়। কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল, ইন্টার্নশিপ, স্কলারশিপ প্রভৃতি বিষয়ের জন্য এখানে প্রচুর লিঙ্ক পাওয়া যাবে।
www.language-learning.net–শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য জানলেই কিন্তু উচ্চশিক্ষা নেয়া হবে না। বিশ্বের অনেক দেশেই এখন ইংরেজি বাদ দিয়ে তাদের ভাষায় উচ্চশিক্ষা দেয়। এজন্য অনেককেই ইংরেজির পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশী ভাষা শিখতে দেখা যায়। বিদেশী বিভিন্ন ভাষা শেখার জন্য একটি কার্যকর লিঙ্ক হচ্ছে এ সাইটটি। এর ডাটাবেজে প্রায় ছয় হাজার ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সের তথ্য আছে।
www.studyabroad.com–বেশ তথ্যবহুল এবং প্রচুর লিঙ্কবিশিষ্ট একটি ওয়েবসাইট। এখানে ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল, ইন্টার্নশিপ, স্কলারশিপ প্রভৃতি বিষয়ের জন্য প্রচুর লিঙ্ক পাওয়া যাবে।
www.transitionsabroad.com –শিক্ষা, চাকরি, ভ্রমণ প্রভৃতি কারণে বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য প্রকাশিত transition abroad পত্রিকার ওয়েবসাইট এবং ডাটাবেজ এটি। শিক্ষা, কাজ, ইন্টার্নশিপ, ভাষা শিক্ষা, অভিবাসন প্রভৃতি বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে এখানে।
www.123world.com–শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্যে সমৃদ্ধ এ সাইটে বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক পাওয়া যাবে।
www.bulter.nl–এ সাইটে বিভিন্ন মহাদেশ ও অঞ্চলের দেশভিত্তিক চার্ট আছে। যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী সেই দেশ সম্পর্কে খুব সহজেই এখান থেকে জানা সম্ভব। মহাদেশভিত্তিক ভাগ করায় এখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানা খুব সহজ হবে।
বাংলাদেশের আইটি/আইটিইএস শিল্পে
সবলতা
আছে পর্যাপ্ত তরুণ ও প্রশিক্ষণযোগ্য কর্মী। ভারত, চীন ও পাকিস্তানের তুলনায় শ্রমের মুজুরি সবচেয়ে কম। সহায়ক সরকারের উপস্থিতি। শিল্প সমিতিগুলো সক্রিয়।
দুর্বলতা
পর্যাপ্তসংখ্যক মানবসম্পদ ও প্রাসঙ্গিক দক্ষ জনবলের অভাব। দুর্বল ও অসমন্বিত ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন। দেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি। আইটি/আইটিইস ডেস্টিনেশন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাব। সরকারের সমন্বয়হীন ও বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ। দুর্নীতির কারণে অস্পষ্ট ব্যবসায়িক পরিবেশ। অতি সাম্প্রতিকের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ। তরুণ ও নবীনদেরকে টেকসই জনবল গড়ে তোলায় পদক্ষেপহীনতা।
হুমকি
সম্পদের সঙ্কোচনের কারণ। জনবল চলে যাচ্ছে অন্যান্য ব্যবসায়িক খাতে। আইটি কোর্সে কমে যাচ্ছে ছাত্রভর্তি। আইটিইএস ধরতে সক্ষম অপর্যাপ্ত ইংরেজি জানা লোকের অভাব। অবকাঠামো, নীতি, নিয়ন্ত্রণ কাঠামো সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপের অভাব। ধর্মঘট, হরতালে উৎপাদনের ক্ষতি।
সুযোগ
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কোম্পানিগুলো বাইরে কাজ দিয়ে উৎপাদন খরচ কমাতে চাইছে। বাংলাদেশের জন্য এটি মোক্ষম সুযোগ। আইটি পার্ক ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনার সুযোগ
শেষ কথা
আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্রদের ক্যারিয়ার নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে দেখা যায়। শুধু সিদ্ধান্তহীনতার কারণে একদিকে যেমন ছাত্রদের সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হারিয়ে যাচ্ছে অনেক মেধাবী। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সামনে এসেছে নতুন সম্ভাবনা। কিন্তু শুধু সচেতনতা এবং সুযোগের সদ্ব্যবহারের অভাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে আমরা বিশ্বে শক্ত অবস্থান করে নিতে পারিনি। সরকারের পাশাপাশি আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারতো। আমরা অস্বীকার করতে পারি না, আমাদের অনেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র তথ্যপ্রযুক্তিতে আমাদের পরে যাত্রা শুরু করেও আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা অনেক সুযোগ হেলায় হারিয়েছি। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন করতে চাইলে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। যেহেতু তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের আগ্রহ বেশি, তাই নবীনদেরকেই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। আর আমরা যদি সঠিকভাবে এই খাতকে গুরুত্ব দিই তাহলে আমরা বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান করতে পারবো। এজন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য হারে পেশাজীবী তৈরি করা।
আমাদের দেশে সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে ঘটেছে মেধার অপচয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সঠিক দিকনির্দেশনা এবং ক্যারিয়ার কাউন্সিলিংয়ের অভাবে উচ্চশিক্ষায় ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোথায় এবং কিভাবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা যায়। সঠিক পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নেই সম্ভব সার্থক আইসিটি ক্যারিয়ার গঠন।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mortuzacsepm@yahoo.com