উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেমে বেশ কতগুলো নতুন নেটওয়ার্কিং ফিচার পাওয়া যাবে, যা ভিসতা বা এক্সপিতে অনুপস্থিত। এ লেখায় লাইব্রেরিজ, শেয়ারিং রিভিশন, ভ্যান বা ভিউ এভেইলেবল নেটওয়ার্ক ও ভার্চুয়াল অ্যানহ্যান্সমেন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। উইন্ডোজ ৭-এ লাইব্রেরিজ নামের একটি নতুন এবং অত্যন্ত কার্যকর নেটওয়ার্কিং ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। লাইব্রেরি’র কাজ হচ্ছে একাধিক উৎস থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তা একটি ফোল্ডারে সামগ্রিকভাবে উপস্থাপন করা। একে ভার্চুয়াল ফোল্ডারও বলতে পারেন। অন্য কথায় এটি একাধিক ডাটা সোর্সের একটি ইনডেক্সড ভিউ।
নতুন লাইব্রেরি ফাংশনের কারণে উইন্ডোজ ৭-এর ব্যাপকভাবে ব্যবহার হওয়া ইউজার ফোল্ডারগুলোর আবার নাম দেয়া হয়েছে। যেমন- উইন্ডোজ ভিসতাতে Documents, Downloads, Photos, Videos, Music ইত্যাদি ফোল্ডার ছিল। উইন্ডোজ ৭-এ নতুন করে নাম করনের পর এগুলোকে এখন বলা হচ্ছে Personal Documents, Personal Downloads, Personal Photos, Personal Videos, এবং Personal Music ফোল্ডার। অর্থাৎ এ ফোল্ডারগুলোর সাথে Personal কথাটি যুক্ত হয়েছে।
এ ধরনের পরিবর্তনের জন্য কিছু কারণও রয়েছে। প্রতিটি ফোল্ডারের সাথে Personal কথাটি যুক্ত হওয়ার ফলে পাবলিক এবং পার্সোনাল (প্রাইভেট) ডকুমেন্টকে সহজেই পার্থক্য করা যাবে। এসব পার্সোনাল ডকুমেন্ট ফোল্ডার ছাড়াও উইন্ডোজ ৭ কমপিউটারে থাকছে পাবলিক ফোল্ডার, যেমন Public Documents। সুতরাং দেখা যাচ্ছে Libraries ফিচারের উদ্দেশ্য হচ্ছে উপরে বর্ণিত পার্সোনাল এবং পাবলিক ডকুমেন্টগুলোকে একত্রিত করে তা একটি একক ডকুমেন্ট ডিরেক্টরির আওতায় নিয়ে আসা।
উইন্ডোজ ৭-এর ডিফল্ট লাইব্রেরিগুলো :
ডকুমেন্টস : এটি পার্সোনাল ও পাবলিক ডকুমেন্টের সমন্বয়ে গঠিত।
ডাউনলোডস : এ ডিরেক্টরিটি পার্সোনাল ও পাবলিক ডাউনলোড নিয়ে গঠিত।
মিউজিকস : পার্সোনাল এবং পাবলিক মিউজিক নিয়ে তৈরি।
ভিডিওস : পার্সোনাল ও পাবলিক ভিডিও’র সমন্বয়ে এটি সংগঠিত।
এ ছাড়াও আপনি প্রয়োজনে উইন্ডোজ ৭-এ নিজের মতো করে লাইব্রেরি তৈরি করতে পারেন, এ কাজটি সহজে করার জন্য প্রথমে যেতে হবে explorer view-এ। এখন মাউসে ডান ক্লিক করে explorer view-এ আবার ক্লিক করুন (চিত্র-১) ।
চিত্র-১
এখান থেকে নতুন লাইব্রেরিটি লাইব্রেরিজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে, যা Explorer view-এর নেভিগেশন প্যানে দেখতে পাবেন (চিত্র-২)।
চিত্র-২
লাইব্রেরি তৈরির পর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে লাইব্রেরিতে কোন কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করবেন। এর জন্য নতুন সৃষ্ট লাইব্রেরি ফোল্ডারের ওপর ডান ক্লিক করে Properties বাটনে ক্লিক করুন। Library ট্যাব বাটনের Add কমান্ডে ক্লিক করুন। এবার যে ফাইল বা ফোল্ডরাটি নতুন সৃষ্ট লাইব্রেরি ফোল্ডারে অন্তর্ভুক্ত করতে চান সেটি সিলেক্ট করে Include in Library-এ ক্লিক করুন। এভাবে লাইব্রেরির মধ্যে যত খুশি ফোল্ডার অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
চিত্র-৩
একটি বিষয় এখানে মনে রাখতে হবে আপনার নিজের সৃষ্ট লাইব্রেরিতে ফোল্ডার অন্তর্ভুক্ত না করা পর্যন্ত এটি ওই লাইব্রেরির আওতায় ভিউ বা প্রদর্শন করা যাবে না।
নেটওয়ার্ক এবং শেয়ারিং রিভিশন
উইন্ডোজ ভিসতার Network and Sharing Center ফিচারটি প্রশংসিত হলেও এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর অনেক চমকপ্রদ ফিচার ও অপশন থাকলেও অনেকে মনে করেন এগুলো সাবলীলভাবে ব্যবহার করা যায় না। অনেক সময় ব্যবহারকারীর কাছে এগুলো বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে। আশার কথা, উইন্ডোজ ৭-এ নেটওয়ার্ক অ্যান্ড শেয়ারিং ফিচারটি অনেক সহজ করে আনা হয়েছে। চিত্র-৪-এ উইন্ডোজ ৭-এর নেটওয়ার্ক অ্যান্ড শেয়ারিং ফিচারটি তুলে ধরা হলো :
চিত্র-৪
উইন্ডোজ ৭-এ নেটওয়ার্ক অ্যান্ড শেয়ারিং অপশনটি Choose homegroup and sharing options উইন্ডোতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া বামদিকের নেভিগেশন অপশনটি অন্য মেনু উইন্ডোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে view your active networks সেকশনটি সহজেই ব্যবহারকারীরা বুঝতে ও কাজে লাগাতে পারবেন।
ভিউ অ্যাভেইলেবল নেটওয়ার্ক
ভিউ অ্যাভেইলেবল নেটওয়ার্ক বা ভ্যান উইন্ডোজ ৭-এর অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। এর মাধ্যমে খুব সহজেই দেখে নিতে পারেন আপনার নেটওয়ার্কে কোন কোন ইউজার বা কমপিউটার সংযুক্ত রয়েছে। ভিউয়ে বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সংযোগকে তাদের ক্যাটাগরি অনুযায়ী আলাদাভাবে উপস্থাপন করা হয়। এ ধরনের একটি ভিউ চিত্র-৪-এ তুলে ধরা হয়েছে:
এছাড়াও ভ্যান উইন্ডো থেকে পছন্দমতো সংযোগ নির্বাচন করতে পারবেন এবং তার সাথে প্রয়োজনমতো সংযুক্ত বা বিচ্ছিন্ন হতে পারেন।
ভার্চুয়াল অ্যানহ্যান্সমেন্ট
উইন্ডোজ ৭-এর ভার্চুয়ালাইজেশন অ্যানহ্যান্সমেন্ট ফিচারের কারণে যখন উইন্ডোজ ৭ একটি ভার্চুয়াল ডেস্কটপ ইন্টারফেসে (ভিডিআই) রান করবেন, তখন অ্যান্ড ইউজার অধিকতর সুবিধা সিস্টেম থেকে নিতে পারবেন। ধরুন, আপনার একটি হাইপার-ভি (Hyper-V) সার্ভার রয়েছে এবং এ সার্ভারে গেস্ট ভার্চুয়াল মেশিন হিসেবে উইন্ডোজ ৭ রান করছেন। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সুবিধাগুলো পাবেন যা উইন্ডোজ ভিসতাতে পাওয়া যায় না : উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার ১১-এ ভিডিও দেখার সুবিধা; একাধিক মনিটর ব্যবহারের সুবিধা; ভিওআইপি ব্যবহারের জন্য মাইক্রোফোন সংযোগ সুবিধা; “Easy Print”, ফিচারের ব্যবহার অর্থাৎ প্রিন্টার ড্রাইভার ইনস্টল করা ছাড়াই লোকাল প্রিন্টার ব্যবহারের সুবিধা। এবং আইটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর কর্তৃক ভার্চুয়াল ডেস্কটপ ইমেজ ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ টুল ব্যবহারের সুবিধা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উইন্ডোজ ৭-এর নেটওয়ার্কিং ফিচারগুলো এর পূর্বসূরি ভিসতা এবং এক্সপি’র তুলনায় আরো বেশি সমৃদ্ধ। এছাড়া উইন্ডোজ ৭-এর নেটওয়ার্কিং ফিচারগুলো সাধারণ ইউজাররা খুব সহজে ও সাবলীলভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com