• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > টেলিকমিউনিকেশনের আইনী কাঠামো সহজ করার প্রয়োজন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: জাহিদুল হক খান
মোট লেখা:২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
টেলিযোগাযোগ
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
টেলিকমিউনিকেশনের আইনী কাঠামো সহজ করার প্রয়োজন
২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তা সঠিক পথেই চলছে। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামাদুন আই তুরে ২-৩ মার্চে ঢাকা সফরের সময় এ মন্তব্য করেন। তিনি এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাপত্র, সরকারের আইসিটিসংশ্লিষ্ট বিষয়সহ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।

কমপিউটার বিজ্ঞানী ও আইসিটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাপত্রের ওপর আলোকপাত করে বলেন, সারাদেশকে ই-গভর্নেন্স সিস্টেমের আওতায় আনতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি সেবা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার কাজ সমন্বয় করতে সরকার ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। খুব শিগগিরই এর সুফল পাবে দেশের জনগণ। রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ : জনগণকে সম্পৃক্তকরণ পরিকল্পনা বিষয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল ধারণাপত্রের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চালু, রাজধানীর সড়কগুলোতে ডিজিটাল সিগন্যাল পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ, কর আদায় কমপিউটারাইজড পদ্ধতিতে নিয়ে আসার পদক্ষেপগুলো হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রাথমিক লক্ষ্য।


ড: হামাদুন ‍আই তুরে

সজীব ওয়াজেদ জয় টেলিকমিউনিকেশনকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মেরুদন্ড হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। ভিশন-২০২১ সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার আহবান জানান তিনি। এক্ষেত্রে ই-গর্ভনেন্স, আইটি শিক্ষা, আইটি আউটসোর্সিং, অভ্যন্তরীণ আইটি শিল্প স্থাপন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নকে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, দেশে মোবাইল ফোনের কলচার্জ বিশ্বপ্রেক্ষাপটে কম হলেও ইন্টারনেটের খরচ তার উল্টো। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ৬১টি জেলার ২৯৬টি উপজেলায় ফাইবার অপটিক ক্যাবল সংযোগ রয়েছে। সমন্বিতভাবে কাজ করলে ইন্টারনেট খরচও কমে আসবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার গ্রামাঞ্চলে উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়কে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের আওতায় আনার ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে একশ’ ইউনিয়ন পরিষদ ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে আরো এক হাজার ইউনিয়ন পরিষদ এই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর রেডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ২ মার্চ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ : প্ল্যান অব কানেকটিং পিপল’ উদ্বোধন করার সময় একথা বলেন।


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাড়ে ৮ হাজার পোস্ট অফিসে ‘ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি’ স্থাপন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। গাজীপুরে হাইটেক পার্কের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি এবং সমগ্র দেশ ই-গভর্নেন্সের আওতায় আনতে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট স্থাপনে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লে¬খ করেন।

অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব ড. হামাদুন তুরে, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব সুনীল কান্তি বোস বক্তব্য রাখেন।

বিদেশী বিনিয়োগ পেতে টেলিযোগাযোগের আইনী কাঠামোর ভিত্তি অবশ্যই দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। স্পষ্টভাবে লিখিত ও অনুমোদিত হতে হবে, যেন বিনিয়োগকারীরা এদেশে এসে এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেতে পারেন। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামাদুন আই তুরে ৩ মার্চ হোটেল শেরাটনে মিট দ্য প্রেস এবং হোটেল রেডিসনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় এ কথা বলেন। মিট দ্য প্রেসে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি বোস, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। এর আগে দুপুরে আইটিইউ সেক্রেটারি জেনারেল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।

বিকেলে হোটেল রেডিসনে অনুষ্ঠিত ‘আইইসিটি অ্যান্ড টেলিকম সেক্টর ইন বাংলাদেশ : প্রোপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জস’ র্শীষক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামাদুন আই তুরে, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ, গ্রামীণফোনের ওডভার হেসজেডাল এবং ডি.নেটের ড. অনন্য রায়হানসহ আইইসিটির জাতীয় নেতৃবৃন্দ।

ড. হামাদুন বলেন, ১৮৬৫ সালে ২০টি দেশ মিলে আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাম ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করে; যা আজ জাতিসংঘের অধীনে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন নামে পরিচিত। এর সদস্য ৮০টি দেশ হলেও ৭০০ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে বিশ্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

ড. হামাদুন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রথমেই রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক গঠন করে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন, এ প্রক্রিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তর্ভুক্তি, সক্ষমতা সৃষ্টি, সরকারি সেবার উন্নয়ন, ই-গভর্নেন্স চালু, জন্মসনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স তথা বিভিন্ন লাইসেন্স প্রদানে অনলাইন সার্ভিস প্রবর্তন, যেকোনো সার্ভিসের নিরাপত্তা দেয়া, নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা, ফ্রি অব অ্যাক্সেস প্রভৃতি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশের নিজস্ব কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করা সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি অবশ্যই স্থাপন করা উচিত। কারণ, এর ফলে ১০-১৫ বছর নিশ্চিন্ত থাকা যায়। ঢাকা থেকে ফিরে এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে একটি নকশা প্রণয়নের ব্যাপারে তিনি সহযোগিতা করবেন বলে জানান।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করতে ভিশন ২০২১-এ বর্তমান সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ জন্য সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ বিশেষ করে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামাদুন আই তুরের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করেন। এর ফলে আইইসিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে রোল মডেল হবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : zhaquekhan@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস