জেমস ক্যামেরুন মুভির জগতের এক অবিস্মরণীয় নাম। তার উপহার দেয়া অসাধারণ কিছু মুভির মাঝে রয়েছে টারমিনেটর, এলিয়েনস, র্যা ম্বো, টাইটানিক ইত্যাদি। তার কাজই হচ্ছে নতুন চমক সৃষ্টি করে দর্শকের মন জয় করে নেয়া। রুপালি পর্দার দুনিয়ায় তার নতুন সংযোজনের নামটি হচ্ছে অ্যাভাটার। মুভিটির পেছনে দীর্ঘদিনের অকান্ত পরিশ্রম ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার মুভিটিকে এনে দিয়েছে চরম সাফল্য। মুভির সাথে সাথে বের হয়েছে অ্যাভাটার- দ্য গেম নামের গেম। গেমটি ডেভেলপ ও পাবলিশ করেছে ইউবিসফট।
অ্যাভাটারের মূল কাহিনী হচ্ছে প্যানডোরা নামের এক গ্রহকে কেন্দ্র করে। ২১৫৪ সালের পটভূমিতে মানবজাতি মূল্যবান খনিজসম্পদ ইউনোবটানিয়াম আহরণের জন্য প্যানডোরা নামের গ্রহে অভিযান চালাবে। আরডিএ করপোরেশন হচ্ছে মহাশূন্যের নানান গ্রহ থেকে মূল্যবান খনিজ পদার্থ সংগ্রহকারী একটি সংস্থা। তারা সেই গ্রহের নাবি নামের জাতির সাথে চুক্তি করবে যে তারা খনিজ পদার্থের বিনিময়ে তাদের শিক্ষা, সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দেবে। গ্রহের নানান স্থান থেকে এ খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করার পাশাপাশি তারা অ্যাভাটার নামের এক প্রোগ্রামের বিকাশ ঘটাবে। এ প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নাবি জাতির আদলে ক্লোন বানিয়ে তাদেরকে মানুষের চিন্তাশক্তি দিয়ে জীবন্ত করে তোলা। মানুষের চিন্তাশক্তি দিয়ে চালিত এসব নাবি ক্লোন মানুষের পক্ষে থেকে প্যানডোরার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গুপ্তচর হিসেবে কাজ করবে। বিজ্ঞানী ডা. গ্রেস অগাস্টিন জানতে পারবেন নাবিদের পুরো জাতি তাদের প্রকৃতির সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। তারা এইওয়া নামের এক দেবীর পূজা করে যা প্যানডোরার প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার কাজে নিয়োজিত।
প্যারাপ্লেজিক রোগে আক্রান্ত জেক স্যালি তার জমজ ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার স্থানে অ্যাভাটার প্রোগ্রামে নাবি ক্লোন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। বাস্তবে পঙ্গু জেক তার নাবি ক্লোনের সাহায্যে প্যানডোরা বিচরণ করে খুঁজে পায় এক দারুণ অনুভূতি। ঘটনাক্রমে সে নাবিদের ওমাটিকায়া গোত্রের সর্দারের মেয়ে নেয়তিরির প্রেমে পড়ে যায়। ওদিকে আরডিএ করপোরেসনের পরিচালক পারকার সেলফ্রিজ দেখতে পায় প্যানডোরার হোম ট্রি নামের বিশাল এক গাছের নিচে প্রচুর পরিমাণ ইউনোবটানিয়াম মজুদ রয়েছে। তাই সে গাছ উপড়ে তা আহরণের সিদ্ধান্ত নেয়। অগাস্টিন ও জেক তাকে সাবধান করে যে তা করলে প্যানডোরার প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। কিন্তু তার বাধা উপেক্ষা করে কর্নেল মাইলসের নেতৃত্বে হোম ট্রি ধ্বংস করে দেয়। তাদের এহেন অমানবিক আচরণে জেক ও তার অন্যান্য কিছু সাথী মিলে কর্নেল মাইলসের সৈন্যদের বিপক্ষে চলে যায়। জেক নাবিদের জীবনধারা ও তাদের সংস্কৃতির সাথে একাত্ম হয়ে যায় তাই সে নাবিদের পক্ষ হয়ে মানুষের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। অত্যাধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে শুধু সাহস ও অন্যায় প্রতিরোধের লক্ষ্য থাকার কারণে জেক ও নাবির দল জয়ী হয়।
পঙ্গু বলে জেককে নিয়ে খেলা সম্ভব নয় বলে গেমে তার পরিবর্তে দেয়া হয়েছে আলাদা ৬টি নারী ও ৬টি পুরুষ চরিত্র। গেমারকে যেকোনো একজনকে বেছে নিয়ে খেলা শুরু করতে হবে। প্রথমে মানুষ ও নাবি ক্লোন হিসেবে প্যানডোরার ক্ষতিকর জীবজন্তু নির্মূল করার কাজ করতে হবে। বিদ্রোহের পরে নাবি ক্লোন হয়ে প্যানডোরায় মানুষের বানানো ঘাঁটি, গোলাবারুদের মজুদ, জায়গায় জায়গায় মোতায়েন করা সৈন্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্যানডোরার বিরুদ্ধে মানুষের বানানো চক্রান্ত অবসান করার কাজ করতে হবে। গেমে রয়েছে অনেক ধরনের অস্ত্র, যার মধ্যে রয়েছে নানারকম আগ্নেয়াস্ত্র, তীর ধনুক, ডুয়াল ব্লেড, কুড়াল, গদা, ফাইটিং স্টাফ (লাঠি) ইত্যাদি। গেম ক্যারেক্টারের কিছু বিশেষ ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে- সোয়ার্ম’স রেথ, টাইটান’স বাস, প্যানডোরা’স প্রোটেকশন, কাইনেটিক ড্যাশ, বিস্ট’স এগিস, উইর্ল অব ফুরি, এইওয়া’স ব্রেথ ও প্যানডোরা’স ইউনিয়ন। গেমটি খেলার জন্য লাগবে পেন্টিয়াম ৪, ২. ৬৬ গিগাহার্টজের প্রসেসর, ১ গিগাবাইট র্যািম (ভিসতা ও সেভেনের জন্য ২ গিগাবাইট), পিক্সেল শ্রেডার ৩.০ সাপোর্টেড ২৫৬ মেগাবাইটের গ্রাফিক্স কার্ড ও ৪ গিগাবাইট ফাঁকাস্থান
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com