• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ওরাকল ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: ইফতেখারুল ইসলাম
মোট লেখা:৫
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ওরাকল
তথ্যসূত্র:
ডাটাবেজ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ওরাকল ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন

সম্প্রতি কমপিউটারবিষয়ক যে কতগুলো বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে, সেগুলোর মধ্যে ডাটাবেজ বা এ সম্পর্কিত ব্যাপারগুলো নিয়ে কৌতূহল লক্ষ করা যাচ্ছে। ধীরে ধীরে বাড়ছে ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর তথা ডিবিএ-র প্রতি আগ্রহী মানুষের সংখ্যা। এ বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছে থাকলেও তেমন কোনো অ্যাকাডেমিক টেক্সট বুক না থাকায় আগ্রহী ব্যক্তিদের আগ্রহে পানি ঢেলে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। বাজারে কিছু বই পাওয়া গেলেও তা পাঠকদের চাহিদা মেটাতে পারছে না। বাংলায় এ সম্পর্কিত একটি বইও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ডাটা শব্দটির বাংলা অর্থ উপাত্ত। সাধারণত ডাটা বলতে বুঝায় কোনো তথ্য বা উপাত্ত। যেমন সময় অবস্থান, পরিমাণ, মূল্য। আরো স্পষ্ট করে বললে কোনো ভোটার তালিকায় উল্লিখিত কোনো ভোটারের নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা ইত্যাদির কথা বলা যায়। আর ডাটাবেজ হচ্ছে পরস্পর সম্পর্কিত কতগুলো ফাইলের সমাবেশ। আমরা দৈনন্দিন জীবনে ডাটাবেজের অনেক উদাহরণ দেখতে পাই। যেমন- আমাদের অফিসের ব্যক্তিগত ফাইলের রেকর্ডসমূহ, ব্যাংকের কেন্দ্রীয় হিসাবসমূহ অথবা কোনো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ইনভেনটরি।

মূলত ষাটের দশক থেকে কমপিউটারে ডাটাবেজ ফাইলে ডাটা সংরক্ষণের এ ধারণার সূচনা হয়। তখন শুধু একটি ডাটা টেবিলের সমন্বয়ে ডাটাবেজ গঠিত হতো। তবে ধীরে ধীরে এ ধারার পরিবর্তন এসেছে। এখন কোনো ডাটাবেজের আওতায় এক বা একাধিক ডাটা টেবিল ভিউ, ইনডেক্স, রিপোর্ট এমনি বিভিন্ন ধরনের অবজেক্টের সমন্বয় থাকতে পারে। অর্থাৎ ডাটাবেজ হচ্ছে তথ্যসমৃদ্ধ এক বা একাধিক অবজেক্টের সমষ্টি। এই ডাটাবেজকে যে বা যারা কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদেরকে বলা হয় ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর তথা ডিবিএ। ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর একটি ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন।

বর্তমানে বেশ কিছু জনপ্রিয় ডাটাবেজ রয়েছে। যেমন- ওরাকল, ডিবি২, এসকিউএল সার্ভার, মাইএসকিউএল ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে ওরাকলের রয়েছে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান, বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া ডাটাবেজ সফটওয়্যার। আইবিএমের ডিবি২ ছাড়া ওরাকলের প্রতিদ্বন্দ্বী হবার সক্ষমতা অন্য কোনো ডাটাবেজ অর্জন করেনি। বাজারে এসকিউএল সার্ভার এবং মাইএসকিউএল বেশ দাপটের সাথে তাদের ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিচালনা করলেও বড় ডাটাবেজ আছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান এসব ডাটাবেজের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। সাহস করে না ওরাকল ছাড়া অন্য কোনো কিছু ব্যবহার করার। কারণ ওরাকলের রয়েছে বড় ডাটাবেজ হ্যান্ডেল করার ক্ষমতা এবং এর শক্তিশালী ইন্টার্নাল সিকিউরিটি। বিশ্বের বড় বড় ব্যাংক, টেলিফোন কোম্পানি, কর্পোরেট হাউস ওরাকল কর্পোরেশনের ওপর আস্থা রেখে চলেছে গত কয়েক দশক ধরে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউটগুলো অবস্থান করছে বেশ শক্ত ভিত্তির ওপর। তাছাড়া রয়েছে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বেশ কিছু পিএসটিএন (ল্যান্ড ফোন) কোম্পানি। তাই ওরাকলের ব্যবহারও বাড়ছে পুনঃপুনিক হারে। তবে সে হারে বাড়ছে না ওরাকল ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি। তৈরি হচ্ছে না ওরাকল সার্টিফাইড প্রফেশনাল (ওসিপি)। যে হারে এর ব্যবহার বাড়ছে তাতে এ সেক্টরে দিনকে দিন ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হচ্ছে। আমাদের এ ধারাবাহিক লেখার প্রধান লক্ষ্য থাকবে ওরাকল ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা এবং এর খুঁটিনাটি দিক পাঠকের সামনে তুলে ধরা।

একজন দক্ষ ডিবিএ হতে হলে প্রথমে ওরাকলের বেসিক আর্কিটেকচার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এছাড়া জানতে হবে ব্যাকআপ পলিসি এবং যেটা নিয়মিত একজন ডিবিএ-কে করতে হয়, তা হলো পারফরমেন্স টিউনিং। ধীরে ধীরে প্রতিটি বিষয়ের ওপরে আলোকপাত করা হয়েছে। ওরাকলের ভার্সনের মধ্যে বর্তমানে 9i, 10g এবং 11g বাজারে ব্যাপক প্রচলিত। আমাদের আলোচনা 9i-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে। পাঠকের সুবিধার্থে টেকনিক্যাল টার্মগুলো হুবহু ইংরেজিতে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে পরে প্রয়োজনমতো 10g এবং 11g-এর কিছু নতুন ফিচার আমরা তুলে ধরব।


চিত্র-১


চিত্র-২

ওরাকল আর্কিটেকচার কয়েকটি প্রাইমারি কম্পোনেন্টের সমন্বয়ে গঠিত। যাকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করতে পারি : ওরাকল সার্ভার এবং কিছু সংশ্লিষ্ট প্রসেস (চিত্র-১ ও ২)।

ওরাকল :

তথ্য ব্যবস্থাপনার প্রধান প্রদায়ক। এটা আসলে লজিক্যাল এবং ফিজিক্যাল মেমরির সমন্বয়। যাদেরকে বলা হয় ইনস্ট্যান্স এবং ডাটাবেজ। এছাড়া থাকে বেশ কিছু প্রসেস এবং ফাইল। এদের সবাইকে এসকিউএল স্টেটমেন্ট প্রসেস করার সময় ব্যবহার করা হয় না। অনেককে ব্যবহার করা হয় পারফরমেন্স বাড়ানো এবং কোনো হার্ডওয়্যার অথবা সফটওয়্যারজনিত সমস্যা থেকে রিকভার করার জন্য। সার্ভারের বেসিক কম্পোনেন্ট নিয়ে আলোচনা করলে পাঠকের কাছে ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে।

ওরাকল সার্ভারের উপাদানসমূহ

ওরাকল ইনস্ট্যান্স :
এটি কতগুলো ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস এবং লজিক্যাল মেমরি স্ট্রাকচারের সমন্বয় (চিত্র-৩)।


চিত্র-৩

এই লজিক্যাল মেমরি স্ট্রাকচারকে বলা হয় সিস্টেম গ্লোবাল এরিয়া সংক্ষেপে এসজিএ। যতবার এই ইনস্ট্যান্স স্টার্ট হয় ততবারই এসজিএ মেমরিতে (র্যাংম) স্থান করে নেয় এবং পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসগুলো চালু হয়। ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস ইনপুট/আউটপুট (আই/ও) কার্যকর করে এবং অন্যান্য ওরাকল প্রসেসকে মনিটর করে, যাতে প্যারালালিজমের উন্নতি সাধন হয় এবং পারফরমেন্স বৃদ্ধি ঘটে।

ওরাকল ইনস্ট্যান্স যেসব কম্পোনেন্টের সমন্বয়ে তৈরি তাকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। সিস্টেম গ্লোবাল এরিয়া এবং ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস। সিস্টেম গ্লোবাল এরিয়া ৫ ধরনের মেমরি অ্যালোকেশন ফাইল নিয়ে গঠিত। যথা : শেয়ারড পুল, ডাটাবেজ বাফার ক্যাস, রিডুল লগ বাফার, লার্জ পুল এবং জাভা পুল।

ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস প্রধানত ৫টি বিশেষ ধরনের প্রসেস, যা সিস্টেমকে মনিটর করে এর পারফরমেন্স বাড়ায়। ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসগুলো নিম্নরূপ : ডাটাবেজ রাইটার (DBWn), লগ রাইটার (LGWR), সিস্টেম মনিটর (SMON), প্রসেস মনিটর (PMON) এবং চেক পয়েন্ট (CKPT)। পরে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ওরাকল ডাটাবেজ :
এটা আসলে সব ডাটার সমষ্টি, যা একটা একক ইউনিট হিসেবে কাজ করে। এর প্রধান কাজ তথ্য স্টোর এবং রিট্রাইভ করা। লজিক্যাল এবং ফিজিক্যাল উভয় ধরনের কাঠামোর সমন্বয় রয়েছে ডাটাবেজ। ফিজিক্যাল স্ট্রাকচার হলো কতগুলো অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) ফাইলের সেট। এখানে তিন ধরনের ফাইল দেখা যায়।

ডাটা ফাইল :
এখানে আসলে প্রকৃত ডাটা সংরক্ষিত অবস্থায় থাকে।

অনলাইন রিডু লগ ফাইল :
শুধু পরিবর্তিত হয়েছে, এমন ডাটা এই ফাইলে থাকে। মূলত কোনো কারণে পুরনো ডাটা রিকভারি প্রয়োজন হলে এই ফাইল হতে তা করা হয়।

কন্ট্রোল ফাইল :
ডাটাবেজ মেইনটেনেন্স এবং ইন্টিগ্রিটির জন্য যেসব তথ্য ওরাকল ধারণ করে তা এই কন্ট্রোল ফাইলে থাকে।

এছাড়া ডাটাবেজ আরো বেশ কিছু ফাইল নিয়ে কাজ করে

প্যারামিটার ফাইল :
ওরাকল ইনস্ট্যান্সের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা থাকে এ ফাইলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এসজিএ-র বিভিন্ন মেমরি স্ট্রাকচারের সাইজ কত হবে, তা এখানে বলা হয়ে থাকে। প্যারামিটার ফাইল দুই ধরনের এসপি ফাইল এবং পি ফাইল।

পাসওয়ার্ড ফাইল :
ইউজারকে কী ধরনের প্রিভিলেজ বরাদ্দ করা হবে তার বর্ণনা থাকে এ ফাইলে। এছাড়া ওরাকল ইনস্ট্যান্সের স্টার্ট এবং শাটডাউনের কাজ করে থাকে।

আর্কাইভ রিডু লগ ফাইল :
এটা অনলাইন ইনস্ট্যান্স রিডু লগ ফাইলের অফলাইন কপি। মিডিয়া ফেইলুর কারণে কোনো রিকভারির প্রয়োজন হলে এখান হতে করা হয়ে থাকে।

ওরাকল সার্ভারের সাথে ইউজারের সংযোগ স্থাপন এবং সেশন তৈরি

যখন কোনো ইউজার এসকিউএল * প্লাস (ওরাকলের সরবরাহ করা টুলস) অথবা অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার টুলসের সাহায্যে ওরাকল সার্ভারে সাবমিট করে তখন অবশ্যই প্রথমে ওরাকল ইনস্ট্যান্সের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। এ ক্ষেত্রে ফর্ম বা এসকিউএল * প্লাস ইউজার প্রসেস হিসেবে কাজ করে।



যখন কোনো ইউজার ওরাকল সার্ভারের সাথে লগঅন করে তখন আরেকটি প্রসেস তৈরি হয়। এর নাম সার্ভাস প্রসেস। ক্লায়েন্ট প্রান্তে চলমান ইউজার প্রসেসকে সার্ভার প্রসেস ওরাকল ইনস্ট্যান্সের সাথে সংযোগ স্থাপন করায় এবং ওই সার্ভার প্রসেস ওই ইউজারের প্রয়োজন মতে এসকিউএল স্টেটমেন্ট রান করায়।

কানেকশন :
ওরাকল সার্ভার ও ইউজার প্রসেসের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী পথকেই আমরা কানেকশন বলি। সাধারণত ইউজার ৩ উপায়ে সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে থাকে।

০১.
ইউজার সরাসরি ওএস-এ চলমান ইনস্ট্যান্সে লগঅন করে অ্যাপ্লিকেশন অথবা কোনো টুলসের মাধ্যমে ডাটাবেজ একসেস করবে। এক্ষেত্রে OS তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সংযোগ তৈরি করে।

০২.
ইউজার তার লোকাল কমপিউটারে বসে অ্যাপ্লিকেশন অথবা টুলসের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে স্থাপিত কোনো সার্ভারে চলমান ইনস্ট্যান্সে সংযোগ স্থাপন করে। একে বলা হয় ক্লায়েন্ট সার্ভার কানেকশন। এখানে নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার ব্যবহার হয় ইউজার ও সার্ভারের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য।



০৩.
এ পদ্ধটিতে ইউজার সরাসরি সার্ভারের সাথে স্থাপন করে না বরং এদের মাঝামাঝি অবস্থিত অন্য কোনো অ্যাপ্লিকেশন সার্ভারে সংযোগ স্থাপন করে। অ্যাপ্লিকেশন সার্ভার ইউজারের চাহিদামতো তথ্য ডাটাবেজ সার্ভার থেকে বিনিময় করে। একে থ্রি টায়ার কানেকশন বলা হয়।

সেশন :
এটি আসলে সার্ভার ও ইউজারের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সংযোগ ছাড়া কিছুই নয়। যখন কোনো ইউজার সার্ভারের লগঅন করে শুধু তখনই একটি সেশন তৈরি হয় এবং তা লগআউট হওয়ার আগ পর্যন্ত বহাল থাকে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : ifthekhar@infobizsol.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস