• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কমপিউটারের আয়ু দীর্ঘ করুন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তাসনীম মাহ্‌মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ব্যবহার
তথ্যসূত্র:
ব্যবহারকারীর পাতা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কমপিউটারের আয়ু দীর্ঘ করুন

প্রতিটি বস্ত্ত স্বাভাবিক নিয়মে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। পিসির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হতে দেখা যায় না। বরং বলা যায় পিসির স্বাভাবিক মাধুর্য বা সৌষ্ঠব তেমন শোভনীয়ভাবে না কমে অতি দ্রুতগতিতে কমে। এর ফলে খুব কম সময়ের মধ্যে উইন্ডোজ এক্সপি বা উইন্ডোজ ভিসতা স্টার্ট হতে অনেক সময় নেয়। বছরখানেকের মধ্যে সমস্যা এত প্রকট আকার ধারণ করে যে পিসি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। আপনার এই পিসিটি স্টার্ট হতে দীর্ঘ সময় নিতে পারে এবং তারপর তাৎক্ষণিকভাবে থেমে যেতে পারে কিংবা প্রয়োজনীয় কোনো কাজের প্রসেসে এত দীর্ঘ সময় নিতে পারে যে আপনার ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে। যদি এমনটি সব সময় ঘটতে থাকে, তাহলে হতাশ হবার কিছুই নেই, কেননা এমন ধীরগতিসম্পন্ন পিসির সমস্যা সমাধানের অর্থাৎ ফিক্স করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে যার জন্য বাড়তি কোনো অর্থ গুনতে হয় না। কখনো কখনো পারফরমেন্স এত চমৎকারভাবে উন্নীত হয় যে আপনি এই পিসি আগামী আরো দু’এক বছর অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে যেসব ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে তা নিম্নরূপ :

কেন সমস্যা সৃষ্টি হয়

যদি কোনো নতুন পিসি প্রথমবারের মতো চালানোর সৌভাগ্য আপনার হয়ে থাকে। তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন এ পিসিটি কেমন দ্রুতগতিতে চলে। শুধু তাই নয়, এই পিসির কার্যক্ষমতা ও গতি দেখে অভিভূত হবেন, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কিন্তু আপনার আনন্দ খুব শিগগির হতাশায় পরিণত হবে। কেননা পিসি যত বেশি ব্যবহার করবেন ধীরে ধীরে তার কার্যকর ক্ষমতা তথা স্পিড কমতে থাকবে স্বাভাবিক নিয়মে। আপনার সর্বোত্তম দক্ষতা ও প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও উইন্ডোজ ক্রমান্বয়ে ধীর থেকে ধীরগতিসম্পন্ন হতে থাকবে।

পিসি বিভিন্ন কারণে ধীরগতিসম্পস্ন হয়ে যেতে পারে। পিসি অন করার পর উইন্ডোজ লগঅন স্ক্রিন বা ডেস্কটপ স্ক্রিন আবির্ভূত হতে দীর্ঘ সময় নিতে পারে। কোনো প্রোগ্রাম ওপেন হতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হতে পারে। ওয়েব ব্রাউজিং এক বিরক্তিকর কাজে পরিণত হতে পারে। শুধু তাই নয়, পিসি ঘন ঘন ক্র্যাশ বা ফ্রিজ হয়ে যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের সময়। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাপারগুলো কেন ঘটে এবং এর সমাধান কি হতে পারে তা-ই ব্যবহারকারীর পাতার এ সংখ্যায় উপস্থাপন করা হয়েছে। ইতোপূর্বেও ব্যবহারকারীর পাতায় এ ধরনের বিষয় উপস্থাপন করা হলেও এ সংখ্যাটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপট ও বিষয়ের আলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এ লেখায় উইন্ডোজ পিসি কেন প্রায় ধীরগতিসম্পস্ন হয়ে পড়ে সেসব টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে খুব বেশি আলোকপাত করা হয়নি। উইন্ডোজ পিসির সমস্যার এক বিরাট অংশই হচ্ছে স্ব-আরোপিত যা আমরা সহজে বুঝতে পারি না। আবার কিছু কিছু সমস্যার জন্য দায়ী পিসিতে ব্যবহার হওয়া বিভিন্ন প্রোগ্রাম, যেসব প্রোগ্রাম দুর্বলভাবে বা ত্রুটিপূর্ণভাবে লেখা হয়েছে।

উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম রান করানোর জন্য বেসিক কিছু কম্পোনেন্ট দরকার হয় যেগুলো ইনস্টল করতে হয় এবং এসব কম্পোনেন্ট উইন্ডোজের কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। আর এ কারণে নতুন পিসিতে তেমন কোনো সমস্যা অনুভূত হয় না। তবে যখন থেকে পিসিতে বিভিন্ন প্রোগ্রাম ইনস্টল আর আনইনস্টল করা শুরু হয়, তখন থেকে সমস্যার সূত্রপাত ঘটতে থাকে।

প্রত্যেক ব্যবহারকারীরই মনে রাখা উচিত, যখনই কোনো নতুন প্রোগ্রাম পিসিতে ইনস্টল করা হয়, তখন সেই প্রোগ্রাম পিসির কিছু রিসোর্স ব্যবহার করে, যেমন মেমরি, হার্ডডিস্ক স্পেস, প্রসেসিং পাওয়ার ইত্যাদি। কিছু কিছু প্রোগ্রাম অন্যান্য প্রোগ্রামের চেয়ে অনেক বেশি রিসোর্স ব্যবহার করে। তাছাড়া কিছু কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে যেগুলো অন্যদের সাথে ভালোভাবে শেয়ার করে না। এভাবে যখন অনেক প্রোগ্রাম কমপিউটারের রিসোর্সের জন্য ফাইট করে তখন স্বাভাবিকভাবে কেউই ভালোভাবে কাজ করতে পারে না।

যা করতে হবে

পিসি ক্লিনআপ করার আগে প্রয়োজনীয় ডাটা ব্যাকআপ করে নিন যাতে কোনোভাবে ডাটা হারিয়ে না যায়। এজন্য পরিপূর্ণ ব্যাকআপ নেয়া উচিত। প্রয়োজন এ সম্পর্কে ওয়েবসাইট থেকে বা অভিজ্ঞ কারোর সহায়তা নিন।

যেকোনো কাজ শুরু করার আগে আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিস্পাইওয়্যার রান করুন। ক্ষতিকর সফটওয়্যারের কারণে পিসির গতি কমে যাওয়ার লক্ষণ সাধারণত বুঝা যায় না। অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিস্পাইওয়্যার রান করিয়ে পারফরমেন্সের উন্নতির লক্ষণ বুঝার চেষ্টা করে দেখুন। হার্ডডিস্কে কোনো এরর নেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় নিচে বর্ণিত ধাপগুলো অনুসরণ করে।

০১.
ফাইল ও ডিরেক্টরি করাপ্ট করতে পারে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, উইন্ডোজ ক্র্যাশ অথবা পিসির মূল সুইচ অফ করার কারণে। সুতরাং ড্রাইভ ডিফ্র্যাগমেন্ট করার আগে এ বিষয়গুলো চেক করে দেখা উচিত অথবা পিসি ঘন ঘন ফ্রিজ বা ক্র্যাশ করছে কি না তা খেয়াল করে দেখুন।

এজন্য এক্সপিতে My Computer অথবা ভিসতা কমপিউটার ওপেন করে ডিস্ক ড্রাইভ খুঁজে দেখুন যা C: দিয়ে লেবেল করা আছে। এতে উইন্ডোজ ফোল্ডার থাকে।

০২.
C: ড্রাইভে ডান ক্লিক করে সিলেক্ট করুন এবং Properties Tools ট্যাবে ক্লিক করে Check now-এ চাপুন। এরপর যে বক্স আবির্ভূত হবে তার Automatically fix system errors লেবেল করা বক্সে টিক দিন। তবে নিশ্চিত হয়ে নিন, যে এর নিচের অপশনটি আনটিক থাকে। এবার Start-এ ক্লিক করলে উইন্ডোজ জিজ্ঞেস করবে আপনি পরবর্তী সময়ের চেক করার জন্য সিডিউল সেট করবেন কি না পিসি স্টার্টের সময়। এক্সপিতে Yes আর ভিসতার Schedule disk check-এ ক্লিক করুন।

০৩.
উইন্ডোজ শাটডাউন করে পিসি রিস্টার্ট করুন। এক্সপিতে উইন্ডোজ স্টার্ট হবার আগে একটি স্ক্রিন দেখতে পাবেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রান করে ডিস্ক চেক। আর ভিসতায় এটি থাকে সাদা টেক্সট সম্বলিত কোনো স্ক্রিনে, এটি আপনার পিসির ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে কিছু সময় নিতে পারে। যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে পিসি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিস্টার্ট হবে এবং উইন্ডোজের স্বাভাবিক লগইন স্ক্রিনে যাবে।

যদি উইন্ডোজ লগইন স্ক্রিন আবির্ভূত হতে কয়েক মিনিটের বেশি সময় নেয়, তাহলে ধরে নিতে পারেন সমস্যাটি ড্রাইভারসংশ্লিষ্ট। এ সমস্যা ফিক্স করা কঠিন এবং এজন্য সাধারণত দরকার হয় উইন্ডোজ রি-ইনস্টল করা।

যদি পিসি উইন্ডোজ লগইন স্ক্রিনে বুট হতে যৌক্তিকভাবে সময় নেয় তবে লগইন ডিটেইল টাইপ করার পর ডেস্কটপ লোড হতে দীর্ঘ সময় নেয়। এক্ষেত্রে মূল অপরাধী হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে ইনস্টল করা প্রোগ্রামসমূহকে। ডান দিকের Windows Taskbar-এ খেয়াল করুন। এরপর ডিসপ্লে খেয়াল করুন। এখানে একাধিক আইকন থাকলে সেটিই হবে সমস্যার কারণ।

টাস্কবারের এই অংশের প্রতিটি আইকন এক একটি প্রোগ্রাম বা ইউটিলিটি যা পিসির মেমরিতে লোড হয় এবং ব্যাপকভাবে কমপিউটারের রিসোর্স ব্যবহার করে। কিছু কিছু প্রয়োজনীয় হতে পারে যেমন ক্লক ও ভলিউম কন্ট্রোল। তবে বাকিগুলো তেমন কোনো কাজ না করলেও পিসিকে ধীরগতিসম্পন্ন করে দেয়। এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে উইন্ডোজের বিল্ট-ইন টুল ডিস্ক ক্লিনআপ। এ টুলটি পেতে চাইলে ক্লিক করুন। StartAll ProgramsAccessories System Tools এবং Disk Cleanup-এ।

যদিও এ টুল ব্যবহার করা বেশ নিরাপদ, তারপর এর তিনটি আইটেম রয়েছে, যা Disk Cleanup টুল দিয়ে রিমুভ করার আগে ভাবতে হবে একাধিকবার। প্রথম হচ্ছে Office Setup Files, যদি এটি লিস্টেড হয়। এ ফাইল রিমুভ করলে মাইক্রোসফট অফিসের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে অরিজিনাল অফিস ডিস্ক ঢুকাতে বলবে। আপনার কাছে ডিস্ক থাকলে বক্সে টিক দিন। যদি না থাকে তাহলে এড়িয়ে যায়।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : swapan52002@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস