• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ‘সবাই মিলে দিবো কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ স্লোগান নিয়ে শেষ হলো - আয়কর মেলা ২০১০
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ রিপোর্টার
মোট লেখা:৩৭৯
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ট্যাক্সে
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
‘সবাই মিলে দিবো কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ স্লোগান নিয়ে শেষ হলো - আয়কর মেলা ২০১০
কমপিউটার জগৎ প্রতিনিধি -

করদাতাদের উদ্বুদ্ধ করা ও নতুন করদাতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘সবাই মিলে দিবো কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ শিরোনামে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রথম আয়কর মেলার আয়োজন করে। এতে ৫২ হাজারের বেশি করদাতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের আয়কর বিবরণী জমা দেন। আর এ থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকার বেশি।

ভীতি ও সমস্যা কাটিয়ে যাতে সাধারণ করদাতারা সহজে আয়কর দিতে আগ্রহী হন, সে লক্ষ্যেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশে প্রথমবারের মতো আয়কর মেলার আয়োজন করে। ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে শুরু হয় ৫ দিনব্যাপী এ মেলা এবং চলে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, মেলার কারণে নতুন রিটার্ন ফরম দাখিলের ক্ষেত্রে হয়রানির মাত্রা অনেকাংশে কমে যাবে ও নতুন করদাতারা কর দিতে উৎসাহিত হবেন।

এনবিআরের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দীন আহমেদ জানান, ‘জনগণকে কর দিতে উৎসাহিত করতেই পরীক্ষামূলকভাবে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। কর বিভাগ সম্পর্কে জনমনের ভীতি দূর করার পাশাপাশি যাতে একজন করদাতা কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় কর দিতে পারেন, সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই এ আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়।

শেষদিন আয়কর মেলা পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ও এটুআই-এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম খান। তিনি আয়করদাতাদের ব্যাপক আগ্রহ ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এ মেলায় আয়করদাতারা সহজে আয়কর দিতে পেরেছেন। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে এবং সে আয় বিনিয়োগ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নকে আরো ত্বরান্বিত করবে। মেলাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারকে তিনি ডিজিটাল এনবিআর তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ইতিবাচক ও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেন এবং মেলার টেকনিক্যাল কমিটিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।




ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন বা আয়কর বিবরণী জমা নেয়ার জন্য মেলা প্রাঙ্গণে সোনালী ও জনতা ব্যাংকের দুটি বুথ সর্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়। এছাড়া নতুন করদাতারা যেন টিআইএন সনদ নিতে পারেন, সেজন্য আয়কর বিবরণী ফরম, ফরম পূরণের নির্দেশিকা, আয়কর সম্পর্কে তথ্যকণিকা প্রভৃতি সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি তাদের আয়কর বিবরণীবিষয়ক এসআরওসম্বলিত পোস্টার প্রদর্শন করা হয় যাতে করদাতারা আয়করবিষয়ক সরকারের দেয়া বিশেষ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারেন। তাছাড়া তথ্যবিবরণী পূরণে যেকোনো অসুবিধা দূর করার জন্য ছিল আয়কর কর্মকর্তা পরিচালিত সাহায্যকেন্দ্র বা হেলপ ডেস্ক। এমনকি মেলার প্রাঙ্গণ থেকে এনবিআরের ওয়েবসাইটের আয়কর ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে সহজে নিজের করের হিসেব বের করার সুযোগও ছিল। এনবিআরের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ট্যাক্স ক্যালকুলেটর ও রিটার্ন প্রিপারেশন সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও করদাতাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। হাতের মুঠোয় এসব সেবা দিতে ছিল বিনামূল্যে ইন্টারনেট, কমপিউটার প্রিন্টার, ফটোকপিয়ারের ব্যবস্থা। মহিলা করদাতা, প্রতিবন্ধী ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য পৃথক কাউন্টারের সুযোগ ছিল।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর পরিদর্শন পরিদফতরের মহাপরিচালক ও ই-গভর্নেন্স ফোকাল পয়েন্ট অফিসার, এনবিআরের ডিজিটাল কোর কমিটি এবং মেলার টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য কানন কুমার রায় মেলায় ব্যবহৃত প্রযুক্তির পাশাপাশি আয়কর হিসেব যন্ত্র তথা ট্যাক্স ক্যালকুলেটর, অনলাইন আয়কর রিটার্ন প্রস্ত্ততকারী সফটওয়্যার প্রভৃতির সুযোগসুবিধা তুলে ধরার পাশাপাশি সেগুলো ব্যবহার করে করদাতারা যেসব সুবিধা পাচ্ছেন তা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ করবিমুখ নন, তারা কর দিতে আগ্রহী। তিনি আরো বলেন, এদেশের মানুষ যেনো দেশে সর্বাধিক ব্যবহৃত প্রযুক্তি মোবাইলের সাহায্যে আয়কর পরিশোধ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে।



জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর বিভাগের মহাপরিচালক, এনবিআরের ডিজিটাল বাংলাদেশ কোর কমিটির সদস্য, ডাটা এন্ট্রি কমিটির চেয়ারম্যান, তথ্যপ্রযুক্তি ট্রেনিং কমিটি ও মেলার টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য মো: মেফতাহ্ উদ্দিন খান জানান, এনবিআরের বিভিন্ন কর সার্কেল অফিসে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম অব ট্যাক্সেশন বা এমআইএসটি সফটওয়্যারের সাহায্যে করদাতাদের সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং এটি পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ মেলায় এমআইএসটি ফেয়ার নামে একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে করদাতাদের সব ধরনের তথ্য বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়। এর মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় সহজে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তিনি আরো জানান, খুব শিগগির জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পর্যাপ্তসংখ্যক কলসেন্টার চালু করা হবে, এর ফলে নির্ধারিত নম্বরে ফোন করে আয়করবিষয়ক সব ধরনের তথ্য জানা যাবে।

আয়কর মেলা ২০১০ আয়োজনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পুরো কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়। মেলায় ব্যবহার হওয়া সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছে টেকনোভিস্তা। নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট দিয়ে সহায়তা করেছে অপটিম্যাক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড। এতে এনবিআরের ওয়েবসাইটে থাকা ট্যাক্স ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে আয়করদাতারা সহজে তাদের করের পরিমাণ হিসেব করতে পারেন। অত্যাধুনিক কমপিউটার কন্ট্রোলড কিউ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসের সাহায্যে বিপুলসংখ্যক করদাতা সুশৃঙ্খলভাবে নির্দিষ্ট বুথে আয়কর বিবরণী জমা দিতে পেরেছেন। মেলায় সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে করদাতাদের সার্বিক সন্তুষ্টি সবার কাছে ছিল আলোচিত বিষয়।

কমপিউটার জগৎ-এর ওয়েবসাইট উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানসহ ৫ দিনব্যাপী আয়কর মেলা সরাসরি সম্প্রচার করে। comjagat.com ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটসহ বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল ও ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্লগ বিরতিহীনভাবে সম্প্রচার করে। সবধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশে প্রথম যে আয়কর মেলার আয়োজন করে তা সীমিত পরিসরেএবং খুব কম সময়ব্যাপী হলেও বলা যায় এটা একটা সফল প্রচেষ্টা। । এতে করদাতাদের অংশগ্রহণ এক ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এবং আগামীতে আরো করদাতা কর দিতে উৎসাহিত হবেন।

কজ ওয়েব
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস