• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে দিন বদলের বাজেট দিন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সুমন ‍ইসলাম
মোট লেখা:৮৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ডিজিটাল বাংলাদেশবাজেট, 
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে দিন বদলের বাজেট দিন
আগামী মাসেই আসছে ২০০৯-২০১০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। সেখানে সরকার ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার জন্য বরাদ্দ কী থাকছে এবং কী থাকা উচিত, তা নিয়ে কমপিউটার জগৎ আয়োজন করে এক গোলটেবিল বৈঠক। বৈঠকে আইসিটি শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনরা দিয়েছেন নানা পরামর্শ। করেছেন সুপারিশ। জানিয়েছেন দাবি। পাশাপাশি কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন বেসিস, বিসিএস এবং আইএসপিএবির নেতারা। এই বৈঠকের বিস্তারিত কমপিউটার জগৎ পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন সুমন ইসলাম।



দেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি তথা আইসিটি খাতের উন্নয়নে এখন থেকে সম্মিলিতভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। গত ২৮ এপ্রিল মাসিক কমপিউটার জগৎ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাজেটে আইসিটি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে দেশের আইসিটি খাতসংশ্লিষ্ট তিন শীর্ষ সংগঠনের নেতারা এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

নেতারা বলেন, আইসিটি নীতিমালায় বাজেটের যে ৫ শতাংশ আইসিটি খাতে বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছে তাই দিতে হবে। আমরা যদি ধরি ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার বাজেট আসছে, তাহলে সেই হিসেবে ৬ হাজার কোটি টাকা এই খাতে বরাদ্দ থাকতে হবে। গত মার্চে সংসদে পাস হওয়া এ সংক্রান্ত বিলে মোট বাজেটের ৫ শতাংশ আইসিটি খাতে বরাদ্দ দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। ফলে বরাদ্দ সেভাবেই দিতে হবে। এর ভিন্ন কিছু মেনে নেয়া হবে না। নেতারা বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী, আইসিটিমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রীর সাথে সম্মিলিতভাবে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

বেসিস সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন, সরকারকে আইটিবান্ধব বাজেট করতে হবে। আমরা বেসিসের পক্ষ থেকে কিছু দাবি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দিয়েছি। সফটওয়্যার উৎপাদনকারীরা ভ্যাট মওকুফের সুফল পাচ্ছে না। স্থানীয় সফটওয়্যার না কিনে কেনা হচ্ছে আমদানি করা সফটওয়্যার। তাই আমরা চাই আমদানি করা সফটওয়্যারে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হোক। যেহেতু আইসিটি পলিসিতে মোট বাজেটের ৫ শতাংশ আইসিটি খাতে বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছে, তাই ৬ হাজার কোটি টাকাই বরাদ্দ দিতে হবে। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা তিন অ্যাসোসিয়েশন মিলে আইসিটিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রীর সাথে কথা বলতে পারি, যাতে বিষয়টি তুলে ধরা যায়। যা কিছু করার আমাদের একসাথে করতে হবে।

বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জববার বলেন, প্রতিবছর আইসিটি খাতে সবচেয়ে কম বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে আরো কাটা হয়। এবারো হয়তো তাই করা হবে। মনে রাখা দরকার, যে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছে সে সরকারের এটা প্রথম বাজেট। তাই এবারের বাজেট হওয়া উচিত অত্যন্ত পরিকল্পিত। সরকার হচ্ছে সবচেয়ে বড় ক্রেতা। তাই আইসিটি পণ্য ও সেবা সরকার না কিনলে বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করা যায় না। বাজেটে এই দিকটায় ফোকাস দরকার। শুধু আইসিটি মন্ত্রণালয় নয়, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে আইসিটি বরাদ্দ থাকতে হবে। ডিজিটাল শিক্ষা এবং অবকাঠামোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা যখনই সরকারের সাথে কোনো আলোচনায় যাবো তখন কোনো একক সংগঠন নয়, বরং তিন সংগঠনের পক্ষেই কথা বলবো।

আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক এম. এ. হাকিম বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে আসলে কী বোঝাতে চায়, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমাদের বাজেট ১৫০ কোটি হোক বা ৬ হাজার কোটি হোক, কিছু বরাদ্দ থাকা উচিত অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের জন্য। মন্ত্রণালয় যদি মনে করে ১৫০ কোটি টাকা ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট, তাহলে তাদের কাছ থেকে আমরা বড় কিছু আশা করতে পারি না। আমাদের সবাইকে মিলে একত্রে কাজ করতে হবে। তাহলে সরকারের ওপর একটা চাপ তৈরি করা যাবে। একসেস নেটওয়ার্ক এবং অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

ফাইবার এট হোমের এমডি মইনুল হক সিদ্দীকি বলেন, আমাদের নিজেদের দুর্বলতার কারণে আমাদের এই আইসিটি শিল্পের এ অবস্থা। এখানে আমরা একজন অন্যজনকে দোষারোপ করছি। সরকারকে স্পষ্ট করে আমাদের অবস্থান বোঝাতে পারিনি। আমরা আসলে ঐক্যবদ্ধ নই। সমিতিগুলোর ভেতরে দুর্বলতা রয়েছে। বেসিস, বিসিএস এবং আইএসপিএবি ভেঙ্গে একটি সংগঠন করা দরকার। তাহলে সবার কথা তুলে ধরা সম্ভব হবে। ৬ হাজার কোটি টাকা কিভাবে ব্যয় হবে, তা ঠিক করা দরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ কিভাবে হবে তা দেখতে হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ভাগ করে দিতে হবে ৬ হাজার কোটি টাকা। ই-কমার্স ডেভেলপ করতে হবে। চালু করতে হবে অনলাইন ব্যাংকিং।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. রোকনুজ্জামান বলেন, প্রথমেই মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এক্ষেত্রে একাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে যে গ্যাপ রয়েছে, তার সমন্বয় ঘটাতে হবে। এতে ইন্ডাস্ট্রি অরিয়েন্টেড মানবসম্পদ তৈরি হবে। বাজেটে এই দিকটায় জোর দিতে হবে। নতুন কোম্পানি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সরকারকে তহবিল যোগান দিতে হবে। পণ্যের যে আইডিয়া তৈরি হবে তা বাস্তবায়নে ৫০ কোটি টাকা এবং মঞ্জুরি হিসেবে দিতে হবে ৫০ কোটি টাকা। সফটওয়্যার শিল্পের সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান করতে হবে। ইনকিউবেটর উদ্যোগকে দাঁড় করাতে হবে। এখান থেকে আইডিয়া আসবে। কোম্পানি তৈরি হবে। একাডেমিয়াদের সাথে লিঙ্ক করে ইন্ডাস্ট্রিকে কাজ করতে হবে।

রেডিও আমার-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক আবীর হাসান বলেন, হাইটেক পার্কের একটা জায়গা দেখিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে ধস নামিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো দেশী সফটওয়্যার না কিনে বিদেশী সফটওয়্যার কিনছে। এ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। এতে কাজ হয়েছে বলে দেখা যায়নি। এর কারণ আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমি খুবই দুর্বল একটি মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল থেকেছে। এটি হচ্ছে আইসিটি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ে যিনি দায়িত্বে আছেন সেই মন্ত্রী কতটা আইটিবান্ধব তা দেখতে হবে। গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে থাকা টেলিসেন্টারগুলোকে সমৃদ্ধ করতে হবে। ই-গভর্নেন্স, এডুকেশন এবং ইন্ডাস্ট্রিকে মনিটর করে যদি পেশাভিত্তিক বড় কাজ করা যায়, তাহলে সুফল পাওয়া যাবে এবং এজন্য বরাদ্দ কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হতে পারে।

বৈঠকে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ২০০৭ সালে আইসিটি উন্নয়ন খাতে ব্যয় হয়েছে ৮৪ হাজার কোটি ডলার। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো এই খাতে ব্যয় করেছে মোট দেশজ তথা উৎপাদনের জিডিপি’র ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। কম আয়ের দেশগুলোর মাথাপিছু আয় ৯৩৫ ডলারের নিচে। তাদেরও এই খাতে ব্যয় ৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ আইসিটি খাতে জনপ্রতি ব্যয় ৪৪ ডলার। ইন্দোনেশিয়া এই খাতে ৩৪ কোটি, থাইল্যান্ড ৩০ কোটি এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩ কোটি ডলার ব্যয় করছে। এই অর্থ মোট সরকারি বাজেটের প্রায় দশমিক ৫ শতাংশ এবং জিডিপির দশমিক শূন্য শতাংশেরও কম। ভারত সরকার আইসিটি খাতে ব্যয় বহুগুণ বাড়িয়েছে। তারা এ খাতে ব্যয় করছে বাজেটের ২ থেকে ৩ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। তাই আমাদেরও এই খাতে উন্নয়ন করতে হলে বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

এখন সঞ্চালক আব্দুল্লাহ এইচ কাফির কাছ থেকে আমরা জেনে নেই গোলটেবিল বৈঠকের বিস্তারিত আলোচনা।



আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

বাজেট বলতেই আমাদের মনে হয় কিছু জিনিসের দাম বাড়বে, কিছু জিনিসের দাম কমবে। আসলে বাজেট যে অনেক বড় একটা কিছু, তা অনেক সময় আমরা বুঝি না। তাই বাজেটে অনেক কিছুর প্রতিফলন থাকে না। আমাদের মনে রাখতে হবে বাজেট দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাও হতে পারে।

আইসিটিবিষয়ক অ্যাসোসিয়েশনগুলো নিজেদের মতো করে বাজেট ভাবনা করে থাকে। তাই প্রথমেই আমি বেসিস সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিমের কাছ থেকে তাদের বাজেট-ভাবনা জানতে চাইবো।



হাবিবুল্লাহ এন করিম

বাজেট শুধু ট্যাক্স কমানো-বাড়ানোর ব্যাপার নয়। বাজেট হচ্ছে একটা প্রামাণ্য দলিল। আমরা সামনের দিকে কিভাবে যাচ্ছি, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কিভাবে পরিচালিত হবে সেটার একটা প্রামাণ্য দলিল এই বাজেট। তাই সরকারকে আইটি ফ্রেন্ডলি বাজেট করতে হবে। শুধু এই বছরই নয়, তাদেরকে আগামী ৫ বছর ধরেই আইটি ফ্রেন্ডলি বাজেট করতে হবে। মনে রাখতে হবে এই সরকার কিন্তু ২ বছর বা ৫ বছরের কোনো পরিকল্পনার স্বপ্ন দেখায়নি। তারা পরিকল্পনা করেছে ২০২১ সালকে সামনে রেখে।

এটা সত্য, রাতারাতি কোনো পরিবর্তন করা সম্ভবপর নয়। তাই আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে দেখতে হবে আজকে আমাদের কী করতে হবে। সেই কাজগুলো কিন্তু এখন থেকেই শুরু করতে হবে। আমরা বেসিসের পক্ষ থেকে নিজেরা বৈঠক করে বেশ কিছু দাবি ঠিক করেছি এবং তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

সফটওয়্যার এবং আইটি অ্যানাবলড সার্ভিসের ওপরে আমদানি পর্যায়ে এবং উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে অনেক আগে থেকে। কিন্তু দুঃখজনক হলো এটা একটা পর্যায়ে গিয়ে থাকে না। ফলে সফটওয়্যার উৎপাদনকারীরা এর বেনিফিট পাচ্ছেন না। তাই যতই বলা হোক উৎপাদনে ভ্যাট নেই, তাহলে আপনি ভ্যাট চাইছেন কেনো। তখন একটা বিভ্রামিত্ম তৈরি হয়। এই বিভ্রামিত্মর কারণেই পুরো বেনিফিট পাওয়া যায় না। আমরা এখন দাবি জানিয়েছি যে, পণ্যের চূড়ান্ত স্টেজেও যেনো ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়।

ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে আমাদের একটা চিন্তা আছে যে, দেশীয় সফটওয়্যারের প্রতি কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতা নেই বা সেই ধরনের প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে না, সরকারি ক্রয়েই হোক বা বেসরকারি ক্রয়েই হোক। দেশী সফটওয়্যারকে পাশ কাটাচ্ছে আমদানি করা সফটওয়্যার। সেটা করুক লোকাল সফটওয়্যারকে উৎসাহিত করার জন্য। এ নিয়ে গত ২/৩ বছর ধরেই আলোচনা হয়ে আসছে যদিও বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমদানি করা সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে হবে।

মহাখালীর যে সফটওয়্যার ভিলেজ বা কালিয়াকৈরের যে হাইটেক পার্ক, সেখানে নতুন কোনো সফটওয়্যার ভবন তৈরির জন্য সরকারের কাছে বরাদ্দ আমরা চাইছি। যদিও এটা বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাজ। কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি করতে তো অসুবিধা নেই। আমরা দাবি করতে পারি যাতে মন্ত্রণালয় তাদের দাবির মধ্যে এটা যুক্ত করতে পারে। সেজন্য আমরা বলেছি যে, এ কাজের জন্য যেনো ৩০০ কোটি টাকা রাখা হয় এবং আগামী ৩ বছরকে সামনে রেখে যেনো আরো ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। অর্থাৎ এটাকে যেনো বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় রাখা হয়। এটা আমরা পরামর্শ দেবো বলে চিন্তুা করেছি।

এই থোক বরাদ্দ থাকলে এখান থেকে অর্থ নিয়ে উন্নয়ন কাজ করা যাবে। সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে উন্নয়ন হতে পারে। আরেকটি বিষয়, যা আমাদের সফটওয়্যার এবং আইটি অ্যানাবল্ড সার্ভিসের জন্য খুবই জরুরি, কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দাবি জানিয়েও আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি, সেটি হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের ২ শতাংশ বরাদ্দ থাকার কথা আইসিটি খাতে। ২০০৮ সালে আইসিটি পলিসি যখন রিভিউ করা হয় তখন আমরা সবাই একমত হয়েছিলাম যে, ২ শতাংশ নয়, ওই বরাদ্দ হতে হবে ৫ শতাংশ। সেটা এখন আমরা আবার সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

আমাদের আইসিটি পলিসিতে বলা হয়েছে মোট বাজেটের ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে আইসিটি খাতে। এ বছর আমাদের মোট বাজেট হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর ৫ শতাংশ ৬ হাজার কোটি টাকা। তাই আমাদের দাবি করার দরকার নেই। এটা নীতির আওতাতেই দিতে হবে।

আমাদেরকে এখন মূলত তাগিদ দিতে হবে আইসিটি মন্ত্রণালয়কে। কারণ, তাদের মাধ্যমে আমাদেরকে এটি নিতে হবে। তাই আমার প্রস্তাব, আমরা ইন্ডাস্ট্রির তরফ থেকে তিন অ্যাসোসিয়েশন মিলে কথা বলি সংশ্লিষ্ট তিন মন্ত্রীর সাথে। এরা হলেন আইসিটিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রী। এটা আমরা যদি ৭ দিনের মধ্যে করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে পারবো। ৬ হাজার কোটি টাকা পেতে হলে এটা করতে হবে। আলাদা আলাদা ভাবে দেখা করে লাভ নেই। আমাদের সবাইকে একসাথে দাবি তুলে ধরতে হবে।

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

বেসিস সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিমের বক্তব্যে অনেক বিষয় এসেছে। সবাই আমরা এখানে বসেছি ভালো কিছু চিন্তা করে আশা করার জন্য। মজার ব্যাপার হলো, সরকার অনেক সময় অনেক কিছু বলে। আমি যেটা দেখেছি মানুষের একটা সহজাত অভ্যাস যে, যার কাছে পাওয়া যায় তার কাছেই তারা যায়। তার কাছেই চায়। এই সরকার যখন গত মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছিল তখন কিন্তু আমরা সুবিধা পেয়েছিলাম। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের জন্য, সফটওয়্যারসংশ্লিষ্ট অনেক কিছুরই কিছু সুবিধা আমরা তখন পেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, যে কারণেই হোক সেটা আমরা পরবর্তীতে অব্যাহত রাখতে পারিনি বা সেটার সুফল ধরে রাখতে পারিনি।

আমরা এখন আশা করি, সরকার তার নিজের কথাতেই দিনবদলের জন্যই হোক বা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্যই হোক- আমাদের দায়িত্ব হলো আমাদের আইডিয়াগুলো তাদের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরা। তারা যে সবকিছু জানবে এমন কোনো কথা নেই। আমরাও যে অনেক কিছু করতে পারবো সেটাও আমরা মনে করি না। তারপরও আমরা আমাদের দিক থেকে এগুলো বলে যাবো তাদের সুবিধার জন্য।

এবার আমরা শুনবো একাডেমিশিয়ানরা বিষয়টি নিয়ে ঠিক কিভাবে চিন্তা করছে। তাদের ভাবনাটা কী।



ড. রোকনুজ্জামান

প্রথমেই কতগুলো সমস্যা আমাদের সমাধান করতে হবে। এর মধ্যে একটা হচ্ছে মানবসম্পদ উন্নয়ন। এক্ষেত্রে একাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটা গ্যাপ লক্ষণীয়। তাই এদের মধ্যে একটি সমন্বয় থাকা দরকার, যাতে করে ইন্ডাস্ট্রি বুঝতে পারবে কী ধরনের মানবসম্পদ তাদের দরকার এবং একাডেমিয়া বুঝতে পারবে তাদের কী ধরনের মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। এর মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রি-অরিয়েন্টেড হিউম্যান রিসোর্স আসবে। ফলে ইন্ডাস্ট্রি যে ধরনের মানবসম্পদ চায় তার সাথে বাস্তবের ব্যবধান কমে আসবে। তাই বাজেটে শিক্ষার এই দিকটায় জোর দিতে হবে।

এই কাজগুলো যখন করতে যাওয়া হবে, তখন দেখা যাবে যে অনেক পণ্যের আইডিয়া বেরিয়ে আসবে। সেসব পণ্যের পরিপ্রেক্ষিতে একটা কোম্পানি দাঁড়িয়ে যেতে পারে। কিংবা একটা নতুন কোম্পানি গড়ে উঠতে পারে। তখন রিস্ক ক্যাপিটাল ফাইন্যান্সিংয়ের প্রশ্ন আসবে। সেখানে একটা ফান্ড রয়েছে, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে যে, সেটা আছে কি নেই। তাই কোম্পানিগুলোকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য সরকারকে ফান্ড দিতে হবে।

পণ্যের যে আইডিয়া তৈরি হবে তা বাস্তবায়নের জন্য ৫০ কোটি টাকার ফান্ড থাকতে হবে। আর ৫০ কোটি টাকা দিতে হবে মঞ্জুরি হিসেবে।

আমাদের সফটওয়্যার শিল্পে যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা সমাধানের জন্য একটা নিয়মতান্ত্রিক প্রচেষ্টা নেয়া দরকার। এটা হবে দীর্ঘমেয়াদী। যেমন বাজার সম্প্রসারণে সমস্যা রয়েছে। সরবরাহ ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। কোম্পানিগুলোর ভেতরেও ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্টের যে ব্যবস্থা থাকা দরকার সেখানে ঘাটতি রয়েছে। এই জায়গাগুলোতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সংগঠিতভাবে সাপোর্ট দেয়ার মতো ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি আমাদের নেই। আমাদের হাইপোথেটিক কিছু উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সেসবের কোনো সমন্বয় নেই। বিশেষ তহবিল নিতে হলে যে কস্ট ইভ্যালিউশন করা, মনিটরিং করা ইত্যাদির জন্য যে মেকানিজম থাকা দরকার তা নেই। এই সমন্বয়ের কাজটি করার জন্য সরকারের উচিত অর্থ বরাদ্দ দেয়া।

ইনকিউবেটর নামে আমাদের যে কিছু একটা শুরু হয়েছে এটা নিঃসন্দেহে ভালো সূচনা। এটাকে আমাদের দাঁড় করাতে হবে। এখান থেকে কিছু আইডিয়া আসবে। তৈরি হবে কোম্পানি। এদেরকে পরিচর্যা করতে হবে। এগুলো করতে হলে অর্থের প্রয়োজন হবে। ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস অ্যাড করতে হবে। একাডেমিশিয়ানদের সাথে লিঙ্ক করে কাজ করতে হবে। এটা কেবল পণ্যের ক্ষেত্রে নয়, সবকিছুর ক্ষেত্রেই।

হাইটেক পার্কের সংজ্ঞা নিয়েও বিভ্রামিত্ম সৃষ্টি হচ্ছে। কখনো আমরা হাইটেক পার্ক বলতে ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার বুঝছি, বিল্ডিং বুঝছি, নেটওয়ার্ক বুঝছি, পাওয়ার বুঝছি। কিন্তু ইনভেস্টমেন্ট ক্যাপিটাল, ম্যানেজমেন্ট ক্যাপিটাল এগুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে না।

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের ব্যাপারে বক্তব্যে গুরুত্ব দেয়া হয় এবং ইন্ডাস্ট্রির সাথে একাডেমিয়ার একটা সংযোগ স্থাপনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। এটা খুবই মজার ব্যাপার। এটা কিন্তু আমরা সবার কাছ থেকেও শুনছি যে, হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের ব্যাপারটি এখন দরকার হয়ে পড়েছে।

এবার আমি আবীর হাসানকে বলবো যে মিডিয়া থেকে তাদের ভাবনা কি? মিডিয়া সাধারণ মানুষকে রিফ্লেক্ট করে। জনগণের মতামতটা কিন্তু আসে মিডিয়ার মাধ্যমে।



আবীর হাসান

আমরা এতক্ষণ সফটওয়্যার শিল্প এবং একাডেমিয়ার লোকদের পরামর্শ শুনলাম। সামনে বাজেটকে রেখে তাদের দাবিগুলো তারা জানিয়ে আসছেন। আইটি ইন্ডাস্ট্রি, এডুকেশন সেক্টর, সফটওয়্যারের ব্যবহার, সার্ভিস এক্সপানশন সব মিলিয়েই কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রি। আমরা যদি সবগুলোকে একসাথে ধরি তাহলে কিন্তু ১৫ বছর আগে যে হারে এর সম্প্রসারণ ঘটছিল, সে জায়গাতে দেখতে পাবো না। গত কয়েক বছরে অনেক ক্ষেত্রে হতাশারও জন্ম হয়েছিল। বিশেষ করে গত ৩ বছরে আইটি ক্ষেত্রে আমাদের যে চাওয়াটা সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত ছিল এবং কতটা যুক্তিসঙ্গত মনে করেছেন যারা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন সে ব্যাপারে কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে। তারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন এবং করেননি সেই ধারাবাহিকতাটা অব্যাহত রয়েছে। যখন ইনকিউবেটর তৈরি হয়েছে তখনও দেখা গেছে যে ইনকিউবেটরের যারা অ্যালোকেশন পাচ্ছেন, যারা সাবসিডি পাচ্ছেন, আসলে সেটা সাবসিডি ছিল কি-না সে প্রশ্নগুলো কিন্তু উঠেছিল।

তারপর আমরা আরেকটা ধাক্কা খেয়েছি হাইটেক পার্ক নিয়ে। যেখানে ইন্ডাস্ট্রি এক্সপানশন হতে পারতো। এই হাইটেক পার্কের একটা জায়গা দেখিয়ে, কয়েকজনকে স্বপ্ন দেখিয়ে ধস নামিয়ে দেয়া হয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে।

আমরা মিডিয়ার দিক থেকে বিষয়টাকে এইভাবে দেখছি যে, বাংলাদেশ ব্যাংক সফটওয়্যার কিনেছে, অন্য ব্যাংক কিনেছে, কিন্তু দেশী যারা সফটওয়্যার তৈরি করছেন তাদের কাছ থেকে কেনেনি। অন্য জায়গায় যেমন প্রতিযোগিতার একটা ব্যাপার থাকে, সেই প্রতিযোগিতার ব্যাপারটিও আসেনি এখানে। আমরা এসব নিয়ে প্রচুর লেখালেখি করেছি। কিন্তু এতে কাজ হয়েছিল বলে সরকারগুলোর আচরণে দেখা যায়নি এবং তারা কোনো প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেনি। কারণ হলো আমাদের ইন্ডাস্ট্রি হোক, একাডেমি হোক সব সময় এমন একটি মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল থেকেছে যেটা খুবই দুর্বল। সবচেয়ে দুর্বল মন্ত্রণালয়ই হচ্ছে আইসিটি মন্ত্রণালয়। বিএনপি আমলে সবচেয়ে কম বরাদ্দ থাকতো এই খাতে এবং বরাদ্দ দিয়ে আবার কমিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পরের দু’বছরে এই মন্ত্রণালয়কে কোনো কাজই করতে দেয়া হয়নি।

যা হোক পুরনো হতাশার কথা বাদ দিয়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করছি দীর্ঘদিন ধরে। বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জববার এটাকে একটা কাঠামো দিয়েছেন এবং সেই কাঠামোটা সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই গ্রহণ করেছে। সেই সরকার দিচ্ছে বাজেট। এখন সেই বাজেটে আমরা কতটা বাস্তবমুখী ব্যাপার চাইতে পারি তাদের কাছে, কিভাবে চাইবো, এর ধরনগুলো ঠিক করতে হবে। ভাবতে হবে কতটা চাওয়া যেতে পারে, কতটা পাওয়া যেতে পারে। শুল্ক হারের যে বিষয়টা, প্রটেকশনের যে বিষয়টা আলোচনায় উঠে এসেছে সেগুলো খুব বাস্তবসম্মত মনে হয়েছে। কিন্তু মূল যেটা দরকার তা হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি এক্সপানশন, সার্ভিস এক্সপানশন, একাডেমি ইন্ট্রিগ্রিটি- এই জিনিসগুলো আসা এবং প্রচুর মানুষকে এর ব্যবহারের আওতায় নিয়ে আসা।

এক্ষেত্রে আপনারা নববই দশকের শেষের দিকটা আর চলতি দশকের শেষের দিকটা তুলনা করুন। আপনারা সে সময় জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন, আইটি নিয়ে কথা বলেছেন। ’৯৬ সালের পরে যে সরকার আসে আমরা তখন তাদের কাছ থেকে কিছু আদায় করতে পেরেছিলাম এই জিনিসগুলো দেখিয়ে যে আমরা আমাদের প্রচেষ্টায় এটা করছি। এর সাথে মিডিয়াও যুক্ত ছিল। অনেক সময় মিডিয়ার প্রাচীনপন্থীরা বিষয়টা বুঝতেন না। আমরা যখন তরুণ ছিলাম তখন সেগুলো নিয়ে এসে লিখে দিতাম। সেগুলোর যে ফিডব্যাক আসতো সেটাতে তারা খুব উৎসাহিত হতেন।

কিন্তু এখনকার অবস্থায় আমরা কোথায় আছি, মিডিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রি কোথায় আছে। সার্ভিস যারা দিচ্ছেন তাদের ফিল্ড অনেক এক্সপানশন হয়েছে। ইন্টারনেটের ব্যবহার কিন্তু সে সময়ের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু কতটা আউটপুট আমরা পাচ্ছি। তারা কতটা ভূমিকা রাখছে এটার কিন্তু সমালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

আইসিটি মন্ত্রণালয়ের যিনি দায়িত্বে আছেন সেই মন্ত্রী কতটা আইটি ফ্রেন্ডলি সেগুলো কিন্তু দেখার ব্যাপার আছে। এখন আমাদের চাপটা দিতে হবে আসলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। কারণ এখন সব মন্ত্রণালয়েই কিন্তু সে জিনিসটা করতে হবে সেটা হচ্ছে গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা টেলিসেন্টারগুলোকে সমৃদ্ধ করা। আমরা কতগুলো পাইলট প্রজেক্ট করতে পারি এবং সেগুলোর সাথে আইসিটি মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা যায় কেবল পাইলট প্রজেক্টের জন্য। কিন্তু আপনি যখন ম্যাসিভ স্কেলে ঢাকার বাইরে যাবেন তখন কিন্তু আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে কিছু পাওয়া যাবে না।

আমরা বাজেটের সময় একটা বরাদ্দ চাইতে পারি যে, এই এক্সপানশনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় যাতে এটাকে মনিটর করে। এটা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের হাতে দিয়ে দিলে কোনো কাজে আসবে না। কারণ সেখানে একটি কাগুজে পলিসি আছে মাত্র। এটা যে কাজে আসবে না তা বোঝা যায়।

নববই দশকের শেষের দিকের তুলনায় এখন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের সংখ্যা বেড়েছে, এদের অ্যাসোসিয়েশন ছিল না, এখন দেখতে পাচ্ছি নতুন নতুন জিনিস আসছে, ওয়াইম্যাক্স আসছে। এই বিষয়গুলোর ডিজিটাইজেশন দরকার।

এই দরকারের জন্য আমরা একটা বরাদ্দ চাইতে পারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে। একটা মন্ত্রণালয় ই-গভর্নেন্সকেও মনিটর করবে, একই সাথে এডুকেশনকে মনিটর করবে, ইন্ডাস্ট্রিকে মনিটর করবে। এই তিনটা জিনিসকে মনিটর করে যদি পেশাভিত্তিক বড় কাজ করা যায় এবং সেখানে আমার মনে হয় বরাদ্দ আরো বাড়ানো দরকার। এতে কমপক্ষে হাজার তিনেক কোটি টাকার প্রয়োজন হতে হবে।

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

আবীর হাসানের বক্তব্য শুনলাম। অনেক বিষয় উঠে এসেছে তার বক্তব্য থেকে। বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জববারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপটি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই গ্রহণ করেছিল। পরবর্তীতে আমরা নিজেরাও একটু কনফিউজড যে তিনি কি সরকারের প্রতিনিধি, নাকি বাংলাদেশের আইটি ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি। আমার মনে হয় মোস্তাফা জববার যখন এখানে আছেন এবং তিনি বিসিএসের সভাপতি ও বেসিসের সক্রিয় সদস্য তার ধারণা কী আমাদের শোনা দরকার। কারণ আগেই বলেছি তিনি আমাদের সরকারেরও প্রতিনিধিত্ব করেন কোনো কোনো ক্ষেত্রে। তার অনেক আইডিয়াই সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার আগে গ্রহণ করেছিল। ক্ষমতায় যাওয়ার পরে নিশ্চয় তারা তার কথা শুনবে। আমি জানি বিসিএস থেকে একটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।



মোস্তাফা জববার

বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি সফটওয়্যারের প্রটেকশনের বিষয়ে বেশ আগে থেকেই বলে আসছে। আমরা লিখিতভাবেও প্রস্তাব দিয়েছিলাম এবং বেসিস দেয়ার ফলে আমাদের অবস্থানটা আরো শক্তিশালী হয়েছে। বাজেটে রাজস্ব বোর্ডের সাথে যেটা করা দরকার সেটা আমরা করেছি এবং তা লিখিতভাবে দেবো। আমরা এর মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি যাতে অর্থমন্ত্রীর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলা যায়। এখানে একটি বিষয় ইতিবাচক, আর তা হচ্ছে অর্থমন্ত্রী নিজে আইটি ফ্রেন্ডলি। আইটির যেকোনো অনুষ্ঠানে তার ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।

প্রতিবছরই বাজেট পেশ করা হয় এবং আইসিটির জন্য সবচেয়ে কম বরাদ্দ করা হয়। গত বাজেটে তাই করা হয়েছে। সাপ্লিমেন্টারি বাজেটে গিয়ে সেটা আরো কাটা হয়। প্রথম যেটা কাটা হয় সেটা হচ্ছে আইসিটি। আমি ধারণা করছি এবারো সাপ্লিমেন্টারি বাজেটে গিয়ে প্রথমেই খড়গটা আইসিটির উপরে পড়বে এবং আমার ধারণা অতি সামান্য অর্থই আসলে আইসিটি খাতে ব্যয় করা হবে।

আমি যতদূর তথ্য পেয়েছি তাতে মনে হচ্ছে আইসিটিতে এবার বরাদ্দের পরিমাণ সম্ভবত ১৪৬ কোটি টাকা। এই তথ্য পাওয়ার পর আমি অর্থমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। আমি প্রথমেই তাকে বলেছি যে, ১৪৬ কোটি টাকায় ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা জনগণকে বলে আমার মনে হয় না আপনারা খুব ভালো কাজ করছেন। অর্থমন্ত্রী একথা শুনে বলেছেন, ‘আমার কাছে এর চেয়ে বেশি টাকা চাওয়া হয়নি।’ তিনি বলেছেন, মন্ত্রণালয় তার কাছে যত চেয়েছে তার থেকে এক টাকাও কাটা হয়নি।

আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অবস্থাটাই এমন। কোনো আমলেই এই মন্ত্রণালয়ের বড় অংকের কিছু চাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় এটাই যে, দাবি করার মতো লোকজনও আমরা ঠিকমতো পাইনি।

এই বাজেট হচ্ছে, যে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছে সে সরকারের প্রথম বাজেট। আমরা যখন আইসিটি পলিসি করি তখন আমরা ১০ বছরের হিসেব করেছিলাম। এখন দেখছি তাদের হিসেবটা ১২ বছরের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়টা আওয়ামী লীগের ইশতেহারের একটা বাক্য ছিল। নির্বাচনী ইশতেহারে একটি বাক্যই যথেষ্ট। মূল ইশতেহারের ভেতরে এ বিষয়ে একটা প্যারা ছিল। কিন্তু সরকার যখন গঠিত হয়েছে তখন এক বাক্য আর এক প্যারায় কোনো ধারণাকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া যায় না। আমি মনে করি, সময় কম তার পরও সরকারের এরই মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট অথরিটি তৈরি করা উচিত ছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ কে ওন করছে? কার কাছে গিয়ে বলবো, কে বাস্তবায়ন করছে। আমরা এর আগে জানতাম আইসিটি টাস্কফোর্সের কথা। এই আইসিটি টাস্কফোর্স এখন অ্যাকটিভ নয়। আগের সরকার দুইটি মিটিং করেছিল। এই সরকার করছে না। টাস্কফোর্স যদি না থাকে, আইসিটি পলিসিতে টাস্কফোর্সের কথা বলা হয়েছিল যে তারা ওন করবে, পলিসি যেটা অনুমোদন করা হয়েছে সে অনুমোদনে বলা হয়েছে টাস্কফোর্স ওন করবে না, মন্ত্রণালয় করবে। যদি তাই হয় তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশ করার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। এর জন্য পরিকল্পনা খুবই জরুরি এবং পরিকল্পনার প্রথম বাজেট হওয়া উচিত এটি। আমি মনে করি ১২ বছরের পরিকল্পনার ১টি প্রথম বছরের জন্য করা। আমরা চাই সরকারের পদ্ধতিতে পরিবর্তন, অর্থাৎ সরকার সে পদ্ধতিতে কাজ করে সে কাজ করার পদ্ধতি বদলাতে হবে।

এই ডিজিটাল গভর্মেন্ট করার জন্য কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে অর্থমন্ত্রীও তা বলতে পারেননি। হয়তো কিছু ওয়েবপেজ তৈরি হবে, ইউএনডিপি অথবা পিএম অফিসে কিছু কাজ করা হবে। আমি মনে করি এই ফোকাসটার অভাব রয়েছে। এখন পর্যন্ত বাজেটে এই ফোকাসটা নেই। কাউকে কিছু দেয়ার প্রশ্ন তো পরে, সরকার তার নিজের পরিবর্তনের জন্য কী করবে, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য কী করবে, তা স্পষ্ট নয়।

পৃথিবীর সব দেশের সরকার হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী, সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ইন্ডাস্ট্রির পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বলবো, সরকার না কিনলে বেসিক্যালি প্রাইভেট সেক্টরের ওপর নির্ভর করা যায় না। সুতরাং বাজেটের এই জায়গাটায় ফোকাস দরকার।

ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন বলা হয়েছে এবং সরকার এগ্রি করেছে সেখানে দ্বিতীয় অগ্রাধিকার হলো শিক্ষাকে ডিজিটালাইজেশন করা। এক্ষেত্রে আমার ধারণা এখনো পর্যন্ত আমরা কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন পর্যন্ত সীমিত থাকার চেষ্টা করছি। এই কমিশন ৭০-এর দশকের জন্য নিশ্চয়ই চমৎকার ছিল। আজকের দিনে যখন আমি ডিজিটাল সিস্টেম শিক্ষার কথা বলবো তখন আমাকে অবশ্যই সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে যে, কবে নাগাদ আমি ক্লাসরুমে টেকনোলজিটাকে নিয়ে যাবো।

ইন্ডাস্ট্রির দিক থেকে যে জিনিসগুলো আছে আমরা সবাই জানি ইএফ ফান্ড নিয়ে কী হয়, সেটা সবারই জানা আছে। গত ৩ বছরে এক টাকাও ব্যবহার করা যায়নি। সুতরাং বরাদ্দ থাকলেও যে কাজে লাগে না এটা তারই উদাহরণ। ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে, কিন্তু ৩ কোটি টাকা বা ৩ টাকাও আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।

আমি মনে করি মন্ত্রণালয় প্রজেক্ট খুঁজে পায় না। অথচ আমরা বিসিসি ভবনকে বড় করে এর মধ্যে ইনকিউবেটর করার প্রস্তাব দিয়েছি আরো ৫/৭ বছর আগে।

এখন পর্যন্ত বাজেটের মধ্যে আমি ডিজিটাল বাংলাদেশের কোনো খাত খুঁজে পাচ্ছি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে যে, সরকারকে এটা বোঝাতে হবে তারা জনগণের কাছে যে অঙ্গীকার করেছে সে অঙ্গীকারের প্রেক্ষিতে সরকারের অন্যান্য এজেন্ডা থাকা দরকার। বিদ্যুৎ, কৃষি অগ্রাধিকার হতে পারে এগুলো আমরা অস্বীকার করছি না। কিন্তু আইসিটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

যে বিষয়টা আমি মনে করি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি খাতে বরাদ্দ করা। শুধু আইসিটি মন্ত্রণালয় নয়, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে আইসিটি খাতে বরাদ্দ থাকতে হবে। আমার কাছে যেটা মনে হয়, আমরা যে ৫ শতাংশ এগ্রি করেছিলাম সেটা আইসিটি খাতে ব্যয় করা হবে। এক্সক্লুডিং দ্য এক্সপেন্ডিচার বাই দ্য মিনিস্ট্রি। তারা নিজের জন্য যদি কমপিউটার কেনে এটাকে কিন্তু আমরা ৫ শতাংশের মধ্যে ধরার কথা চিন্তা করিনি।

বাস্তব অবস্থা হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানই খুব সুস্থভাবে কাজ করে না। বিসিসিতে গিয়ে দেখবেন সেটা পঙ্গু প্রতিষ্ঠানের মতো কাজ করে। এর সাথে ইপিবিতে দেখবেন তারা মাঝখানে কয়েক বছর মেলা বাদই দিয়ে দিয়েছে। গালিগালাজ করে যদি মেলায় অংশগ্রহণ করাতে হয় তাহলে সরকারের আচরণ যে ইতিবাচক নয় তা বুঝতে কোনো কষ্ট হয় না।

রাজস্ব সংক্রান্ত যেসব বিষয় রয়েছে সেদিক থেকে আমি বলবো যে, তুলনামূলকভাবে আইসিটি খাত ফেবারেবল অবস্থাতেই আছে। অন্যদের মতো তত চাপে নেই। কিন্তু যেসব ছোট ছোট সঙ্কট আছে সেগুলো কাভারআপ করা দরকার। আমরা ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমাদেরকে টাকা দেয়ার দরকার নেই। দরকার যেটা সেটা হচ্ছে সরকারের উন্নয়নমূলক বরাদ্দ থাকবে। এটাই মনে হয় প্রধান ফোকাস হওয়া দরকার।

অগ্রাধিকার খাতগুলোর মধ্যে দুটিকে সবার আগে ধরতে হবে। একটি হলো ডিজিটাল শিক্ষা এবং অপরটি অবকাঠামো। আমি আইসিটির ট্যাক্সের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দেবো অবকাঠামোকে। এটি তৈরি করা না গেলে প্রবৃদ্ধি বলে কিছু থাকবে না, উন্নয়ন বলে কিছু থাকবে না। অতএব অবকাঠামো তৈরি করে দিয়ে পরিবর্তনের জন্য জনগণকে বলে দেয়া হোক, জনগণ তার কাজ করে নেবে। কিন্তু বেসিক বা মৌলিক অবকাঠামোটা তৈরির জন্য এই বাজেটে বরাদ্দ থাকতে হবে।

আমরা যখনই সরকারের সাথে কোনো আলোচনায় যাবো তখন কোনো একক সংগঠনের নয় বরং তিন সংগঠনের পক্ষেই কথা বলবো বলে আশ্বাস দিতে পারি। কখনো কেউ বলতে পারবেন না, আমাদের জন্য সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ পায়নি।

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

যেহেতু তিনটি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিই এখানে রয়েছেন, তাদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ থাকবে যে, আপনারা সবার কথা একসাথে বলেন। আমরা চাই সব অ্যাসোসিয়েশনের দাবিদাওয়া নিয়ে একটা কাগজ তৈরি হোক, যেখানে ইন্ডাস্ট্রির এবং দেশের প্রতিফলন ঘটবে। সেই কাগজ সরকারকে দিয়ে আমাদের বলতে হবে- দেশের জন্য, দিনবদলের জন্য, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য এটা করতে হবে। এতে দেশের উন্নয়ন হবে, আমাদের উন্নয়ন হবে।

বাংলাদেশের আইসিটি খাতে যতটা উন্নয়ন হয়েছে, সরকারের কাছ থেকে কিছু আনার জন্য আমরা যতটুকু করেছি সবাই একসাথে আছি বলেই পেরেছি। নইলে আমরা পারতাম না। এখনো বলবো একসাথে থাকলে আমরা সেই ৬ হাজার কোটি টাকা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বাইরে থেকেও চাইলে আনতে পারি।

আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক এম. এ. হাকিমের কাছ থেকে আমি জানতে চাইবো বিশেষ করে তার নিজ এলাকার বাজেট-ভাবনা সম্পর্কে।



এম. এ. হাকিম

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে আসলে কি বোঝাতে চায় তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। বিজিপ্রেস থেকে আমি একটা কোয়ারি পেয়েছি যাতে বলা হয়েছে- আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিএফআইডি থেকে একটা বাজেট পাচ্ছি। ৬টা কমপিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগের জন্য কত টাকা লাগবে? এটা হলো সরকারের বিজিপ্রেসের ডিজিটাল বাংলাদেশের সংজ্ঞা। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে- তাদের অন্য খাতের কিছু বাজেট আইসিটি খাতে বরাদ্দ করতে পারে। তাদের চাওয়া ছিল তাদের ৫টা কমপিউটার আছে সেগুলোকে ওয়াইম্যাক্স করে দিতে হবে। এটা হচ্ছে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমার কাছে মনে হয়, আমাদের বাজেট ১৫০ কোটি হোক বা ৬ হাজার কোটি হোক কিছু বরাদ্দ আমাদের প্রাইভেট সেক্টরের জন্য হওয়া উচিত অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের জন্য। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে কী বুঝেন, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কী, মন্ত্রণালয় কী হওয়া উচিত, দুই বছর আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়কে কিভাবে দেখতে চাই বিষয়গুলো নির্ধারণ করা জরুরি। এখন তাদের প্রোগ্রাম থাকে যদি ১৫০ কোটি টাকার এবং তারা যদি মনে করে এটা যথেষ্ট তাহলে বাংলাদেশে ডিজিটাল বাংলাদেশ কিংবা আইসিটি নিয়ে, মন্ত্রণালয় নিয়ে আসলে কথা বলাটা সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু নয়। মন্ত্রণালয় থেকে তারা যদি মনে করে ১৫০ কোটি টাকা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য সেক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে বড় কিছু আমরা আশা করতে পারি না।

সরকার কিন্তু সব সময় আমাদের ওপর মোটামুটি চাপ সৃষ্টি করে যে, আমরা যেনো চার্জ কমিয়ে নিয়ে আসি। অথচ আমাদেরকে কোনো ইনসেনটিভ সরকার দিচ্ছে না। কোনো এক্সেস নেটওয়ার্ক নেই। মইনুল ভাইরা কেবল আসলেন এক্সেস নেটওয়ার্কের জন্য। আমি খুবই অবাক যে এক্সেস নেটওয়ার্ক প্রাইভেট সেক্টর থেকে তৈরি হবে সে জন্য ৩ কোটি টাকা লাইসেন্স ফি দিতে হয়েছে। এটা ৩ হাজার টাকা হওয়া উচিত। সরকারের যে অবকাঠামো তৈরি করে দেয়ার কথা, সে পারছে না বলে সেটা অন্যকে করতে হচ্ছে।

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

যে ট্যাক্স দেবে, তার তো বেনিফিটও পেতে হবে। তা না পেলে সে ট্যাক্স দেবে কেনো। অনেকে ট্যাক্স না দিয়ে যে বেনিফিট পায়, কেউ ট্যাক্স দিয়েও যদি সেই বেনিফিট পায় তাহলে সে ট্যাক্স দেবে কেনো।

আমি এখন ফাইবার এট হোমের এমডি মইনুল হক সিদ্দীকির কাছে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানতে চাইছি। আপনি নেটওয়ার্ক তৈরির যে কাজটি করতে যাচ্ছেন তা করার কথা ছিল সরকারের। দুর্ভাগ্যজনক, এই অবকাঠামো তৈরির কাজটি হয়নি। আপনার ধারণা কি বাজেট সম্পর্কে।



মইনুল হক সিদ্দীকি

আইটি ইন্ডাস্ট্রির সাথে আমি ১২-১৩ বছর ধরে আছি। বিভিন্নভাবে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্কের ৩টি এরিয়াতে, ৩টি সমিতির সাথেই আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই সুবাদে কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। বাজেটের বিষয়টা বলার আগে আমি বলতে চাই, আমার মনে হয়েছে সবসময় আমাদের নিজেদের দুর্বলতার কারণে আমাদের এই আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির এ অবস্থা। এখানে আমরা একজন আরেকজনকে দোষারোপ করছি এটা এখন নতুন নয়, ৫-৭ বছর আগে থেকে। সরকারের সাথে আমরা ঠিক আমাদের বোঝাপড়াগুলো স্পষ্ট করতে পারিনি। এটাকে আমি আমাদের নিজেদের দোষ দেবো।

এই যে আমরা ব্যবহার করছি আইসিটি খাত এটা কেনো? আমরা এক্ষেত্রে ‘খাত’ শব্দটি ব্যবহার কেনো করছি? এটা আমার কাছে মনোপূত নয়। ২৫-৩০ বছর আগে সরকার কিছু জায়গায় কিছু টাকাপয়সা দেয়ার জন্য খাত শব্দটা খুব ব্যবহার করেছে। আমাদের এটা একটা ইন্ডাস্ট্রি। আমাদের এটাকে একটা ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে ডেভেলপ করা উচিত ছিল এবং এটাকে সেভাবেই দেখা উচিত ছিল সবার। আমরা এভাবে দেখবো এবং এর পর আমাদেরকে অন্যরা এভাবে দেখবে অর্থাৎ একটা ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে। এই আইসিটিকে ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে আমরা নিজেরাই দেখতে পারিনি। আমরা আসলে ঐক্যবদ্ধ নই। এই ইন্ডাস্ট্রির সমিতিগুলোর ভেতরে দুর্বলতা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। আমরা ৩/৪টা সমিতি করেও ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। এখানে একটা বড় বিষয় দেখলাম আমি, আইসিটির একটা পার্ট রেগুলেটর দিয়ে রেগুলেটেড। ফলে সমস্যা রয়ে গেছে।

বেসিস, বিসিএস এবং আইএসপিএবি-কে ভেঙ্গে একটি সংগঠন করা দরকার। তাহলে সবার সমস্যা এবং অসুবিধাগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরা সম্ভব হবে। আইসিটিতে যে ৬ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক কিভাবে ব্যয় করা হবে তা আগে ঠিক করা দরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ কিভাবে করা যায় তা দেখতে হবে। এডিপির ৫ শতাংশ আইসিটিতে দেয়ার কথা নীতিমালাতেই রয়েছে। আমরা যদি এই একটা পয়েন্টের ওপর থাকি তাহলে ৬ হাজার কোটি টাকার বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। ওই নীতি সংসদে পাস হয়েছে। তাই এ খাতে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে।

এই পুরো টাকাটা কেবল একটা মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে তা নয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আইসিটি খাতে ব্যয় করার জন্য ভাগ ভাগ করে দেয়া যায়। যাতে করে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় তাদের কর্মীদের আইসিটিবিষয়ক প্রশিক্ষণ, পণ্য কেনা, অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে ওই অর্থ ব্যয় করতে পারে।

ই-কমার্স ডেভেলপ করতে হবে। উন্নয়ন ঘটাতে হবে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের। যদি ধরে নেই দেশে ৫০টি ব্যাংকের ৫০০ শাখা রয়েছে, তাহলে যদি অনলাইন ব্যাংকিং চালু করা যায় সেক্ষেত্রে গ্রাহকদেরকে আর ব্যাংকে গিয়ে লাইন ধরতে হবে না। ঘরে বা অফিসে বসেই তারা লেনদেন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে গ্রাহকের শ্রমঘণ্টার অপচয় এবং পরিবহন ব্যয় কমে যাবে, যা অর্থনীতির কাজে আসবে।

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি

আমরা আজকের এই বাজেট ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা থেকে একটা বিষয়ে সবাই একমত হতে পারলাম যে, আমাদেরকে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা সব অ্যাসোসিয়েশন যদি একসাথে চেষ্টা করি, সরকারকে আমাদের ন্যায্য দাবিদাওয়াগুলো বোঝাতে পারি, তাহলেই আমাদের অধিকার আদায় সম্ভব হবে। পৃথক পৃথকভাবে চেষ্টা করলে পুরোপুরি সুফল পাওয়া নাও যেতে পারে।

সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপ্টটা এখনো আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। এই স্লোগান দিয়ে সরকার আসলে ঠিক কী বোঝাতে চাইছে বা কী করতে চাইছে সেটা স্পষ্ট হওয়া জরুরি। নইলে এটি কেবল স্লোগানেই পড়ে থাকবে, বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।

এক্ষেত্রে আমরা সরকারকে বোঝাতে চেষ্টা করতে পারি যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সরকারকে এটা এটা করতে হবে। অ্যাসোসিয়েশনগুলো এ কাজটি করতে পারে। বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি ইতোমধ্যেই কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমি যেটা বলছি, ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নয়, সব সংগঠন একত্রে বসে ঠিক করা দরকার আমরা কি চাই। তারপর একটি কাগজ তৈরি হোক। সেটা দেয়া হোক সরকারের কাছে। যেখানে ইন্ডাস্ট্রির সবার কথার প্রতিফলন থাকবে। আমরা বিনা পয়সায় এ ব্যাপারে কনসালট্যান্সি করতে রাজি আছি। এই দেশ আমাদের, সরকার আমাদের। তারা যখনই আমাদের ডাকবে তখনই আমরা ছুটে যাবো এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবো। এজন্য একটি পয়সাও ব্যয় করতে হবে না।

মানবসম্পদ উন্নয়নের বিষয়টা এসেছে। এটা অবশ্যই জরুরি। মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। ফলে যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং যোগ্য শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে আর যা যা প্রয়োজন তার মতোই করতে হবে এবং এজন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখতে হবে। কেবল আইসিটি মন্ত্রণালয় নয়, সব মন্ত্রণালয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক খাতে বরাদ্দ রাখতে হবে। যাতে করে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সেই বরাদ্দ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য কেনা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ যাবতীয় কাজ করতে পারে। এজন্য তাদের যেনো অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে না হয়। অর্থাৎ আইসিটি খাতের বরাদ্দটা আমরা চাইছি না। সরকার নিজেই খরচ করুক।

এখন বিশ্বে যে মন্দা চলছে তা আমাদের জন্য ইতিবাচক হয়ে দেখা দিয়েছে। আইসিটির উন্নয়নের জন্য আমরা এই বিশ্ব মন্দার সুযোগটা নিতে পারি। আমাদের এখন তৈরি হওয়ার সময়। আমরা নিজেদেরকে যথাযথভাবে তৈরি করতে পারলে বিশ্ব মন্দার ঢেউ এদেশে লাগতে পারবে না। একই সাথে আমরা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবো।

পাশাপাশি স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, আমাদের অ্যাসোসিয়েশনগুলোর দুর্বলতার কারণে অন্যরা সুবিধা নিচ্ছে। অথচ আইসিটিবিষয়ক যত অ্যাসোসিয়েশন আছে তারা সবাই যদি অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসতো তাহলে তার সুফল এই ইন্ডাস্ট্রি পেতো, আমরা পেতাম। তাই এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে। সমন্বিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়টা জনগণের সামনে পরিষ্কার করতে হবে। আমাদের আজকের অঙ্গীকার হওয়া উচিত দেশের উন্নয়নের জন্য, আইসিটির উন্নয়নের জন্য ইন্ডাস্ট্রির সবাই একসাথে কাজ করবে, এটাই টিকে থাকার একমাত্র পথ।

বাজেট প্রশ্নে সরকারের কাছে আমাদের একটা মাত্র দাবি। আর তা হচ্ছে- সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া আইসিটি নীতিতে বাজেটের যে ৫ শতাংশ আইসিটি খাতে বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছে সেটাই দিতে হবে। আমাদের একটাই পয়েন্ট। সেটা হচ্ছে ৫ শতাংশ। এটা আমরা নতুন চাইছি না, সরকারই আইসিটি নীতিতে এ অঙ্গীকার করেছে। ফলে আইনগতভাবেই সরকারকে এই বরাদ্দ দিতে হবে। সেটা ৬ হাজার কোটি টাকা বা হোক অন্য কোনো সংখ্যা। ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেখতে চাই এই খাতে।

বাজেট নিয়ে এমন একটি প্রাণবন্ত বৈঠকের আয়োজন করায় কমপিউটার জগৎকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা কখনো কমপিউটার জগৎকে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বাইরের কিছু ভাবি না। আমাদের সাথে সব সময় আছে কমপিউটার জগৎ। বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
......................................................................................

বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে দেয়া বিসিএসের প্রস্তাবনা



০১. শুল্কমুক্ত কমপিউটার ও কমপিউটার সামগ্রী : কমপিউটার ও কমপিউটার এক্সেসরিজ ও পেরিফেরালস, যথা- মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক, কেসিং, সিডি/ডিভিডি ড্রাইভ (রিড ও রাইট), সাউন্ড/ভিজিএ কার্ড, প্রিন্টার ও মাল্টিফাংশন প্রিন্টার (প্রিন্টার, কপিয়ার ও ফ্যাক্স সমন্বিত), প্রিন্টারের কার্ট্রিজ, রিবন ও টোনার, ডাটা/ইউএসবি ক্যাবল, ডাটা কার্ট্রিজ, ব¬্যাঙ্ক সিডি ও ডিভিডি, মাল্টিমিডিয়া ও প্রজেক্টর, ডিজিটাল ক্যামেরা, ওয়েবক্যাম ইত্যাদি পণ্যের ওপর বর্তমানে বিদ্যমান কর ও ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।

০২. শুল্কমুক্ত নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ও ইন্ট্রানেটের জন্য ব্যবহৃত সামগ্রী : নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ও ইন্ট্রানেটের জন্য ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক কার্ড, হাব, সুইচ হাব, রাউটার, অ্যাডন কার্ড, ওয়াইম্যাক্স ও ওয়াই-ফাই যন্ত্রপাতি, ফাইবার অপটিকস ক্যাবল ইত্যাদির ওপর হতে কর ও ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।

০৩. আমদানি পর্যায়ে উৎসে অগ্রিম আয়কর আদায়ের ব্যবস্থা : উপরে প্রস্তাবিত কর ও ভ্যাটমুক্ত পণ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে আমদানি পর্যায়ে উৎসে অগ্রিম আয়কর আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

০৪. আমদানি পণ্যের ওপর যৌক্তিক হারে মোট আয় নির্ধারণ : আইসিটি খাতের আয়ের মার্জিন অন্যান্য খাতের তুলনায় প্রকৃতপক্ষে অনেক কম। তাই আইসিটি/কমপিউটার-সংশি¬ষ্ট আমদানি পণ্যসামগ্রীর ওপর যৌক্তিক হারে মোট আয় নির্ধারণ করতে হবে। এভাবে মোট আয় নির্ধারণের বিষয়টি পূর্ববর্তী বছরগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করার ব্যবস্থা করতে হবে।

০৫. বিদেশে উৎপাদিত সফটওয়্যার ও সেবা পণ্যের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ : বাংলাদেশে প্রস্ত্তত হয় না বা এদেশে প্রস্ত্তত করা সম্ভব নয় এমন সব সফটওয়্যার ও সেবা পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করার জন্য এসবের ওপর আমদানি পর্যায়ে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করতে হবে। এতে দেশীয় সফটওয়্যার ও আইটি এনাবলড সার্ভিস খাতের বিকাশ লাভে সহায়ক হবে।

০৬. সফটওয়্যার ও আইটি এনাবলড সার্ভিস ব্যবসায় আয়কর অব্যাহতির সময়সীমা বাড়ানো : দেশে উৎপাদিত কমপিউটারের সফটওয়্যার ও এ সংক্রান্ত দেশীয় সেবা খাতকে সরকার বাংলাদেশী এবং নিবাসী কোনো ব্যক্তির সফটওয়্যার ব্যবসায় থেকে অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় করকে ৩০ জুন ২০১১ পর্যন্ত অব্যাহতি দিয়েছে। দেশের সফটওয়্যার ও আইটি এনাবলড সার্ভিস খাত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এসব বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সফটওয়্যার ও আইটি এনাবলড সার্ভিস খাতকে ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত আয়কর অব্যাহতি দিতে হবে।

০৭. ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর খুচরা ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার : ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর খুচরা ভ্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করতে হবে। এতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বাড়বে, যা মূলত সামগ্রিক অর্থে দেশে কমপিউটার ব্যবহার এবং তথ্য ও যোগযোগপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ লাভ ও উন্নয়নে সহায়ক হবে।

০৮. কমপিউটার পণ্য ও সেবার ওপর ১০০ শতাংশ অবচয়নের প্রস্তাব : বিকাশমান তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিবিষয়ক যন্ত্রপাতি ও কলাকৌশল অতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। তাই কমপিউটার ও সংশি¬ষ্ট সব পণ্য এবং এ সংক্রান্ত সেবা পণ্যের ওপর বার্ষিক বর্তমানে ধার্য ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ১০০ শতাংশ হারে অবচয়ন নির্ধারণ করতে হবে। এতে করে করপোরেট পর্যায়ের ব্যবহারকারীরা নতুন পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারে উৎসাহিত হবেন এবং দেশে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও এ সংক্রান্ত জ্ঞানের বিকাশ ঘটবে।

......................................................................................

গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা

সঞ্চালক

আব্দুল্লাহ এইচ কাফি, সহ-সভাপতি,
এশিয়ান-ওশেনিয়ান কমপিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (এসোসিও)

আলোচক

মোস্তাফা জববার
সভাপতি, বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস)

হাবিবুল্লাহ এন করিম
সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)

মইনুল হক সিদ্দীকি
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ফাইবার এট হোম

আবীর হাসান
প্রধান বার্তা সম্পাদক, রেডিও আমার

ড. রোকনুজ্জামান
সহযোগী অধ্যাপক, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কমপিউটার সায়েন্স, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি

এম. এ. হাকিম
সাধারণ সম্পাদক, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)

সমন্বয়ক

এম. এ. হক অনু
সহকারী সম্পাদক, মাসিক কমপিউটার জগৎ

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : sumonislam7@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৯ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস