• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কমপিউটার মনিটরের হালচাল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মনিটর
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কমপিউটার মনিটরের হালচাল
আপনি কি নতুন মনিটর কিনবেন বা পুরনো মনিটর বদল করে কি কিনবেন তা ভাবছেন? মনিটর কেনার ব্যাপারে বেশ কিছু প্রশ্ন মাথায় আসছে যার উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না? মনিটরের নানারকম ফিচারের মাঝে কিছু বুঝছেন আর কিছু বুঝতে হিমশিম খাচ্ছেন? মনিটর কোনটি ভালো হবে তাই নিয়ে ভাবছেন? বাজারে সিআরটি মনিটরের জায়গা দখল করে নিয়েছে এলসিডি মনিটর। অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই এলসিডি মনিটর সম্পর্কে। তাই তা কেনার সময় তারা অনেক সমস্যায় পড়ে থাকেন। এ লেখায় সিআরটি, এলসিডি ও এলইডি মনিটর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এতে ক্রেতারা মনিটরের বিভিন্ন ফিচার, মনিটরের ধরনের পার্থক্য ও মান নির্ণয়ের ব্যাপারে জানতে পারবেন।

মনিটর সাধারণত দু-ধরনের হয়ে থাকে- CRT (Cathode Ray Tube) ও LCD (Liquid Cristal Display)। আগের দিনে সিআরটি মনিটরগুলোর চল ছিল বেশি, কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় এখন বাজার ছেয়ে গেছে এলসিডি মনিটরে। সিআরটি মনিটরে ব্যবহার করা হয় ভ্যাকুয়াম টিউব যার সাথে থাকে ইলেক্ট্রন গান। ইলেক্ট্রন গান থেকে ইলেক্ট্রন বিম পর্দার পেছনে ফেলা হয়। পর্দার ওপরে পড়া আলোকরশ্মি পর্দার ফসফর দানাগুলো আলোকিত করে তোলে এবং পর্দার ওপর থেকে নিচের দিকে টানা অনেকগুলো রেখা সন্নিবেশিত হয়ে পর্দার অপর পাশে ফুটে ওঠে ছবি।

এলসিডি মনিটরের ক্ষেত্রে লিকুইড ক্রিস্টালের ওপরে আলো ফেলে তা দিয়ে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয় ছবি। আলোর উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয় ফ্লুরোসেন্ট লাইট বা LED (Light Emitting Diode)। ব্যাকলিট বা পর্দার পেছনের আলোক উৎসের ভিত্তিতে এলসিডি মনিটরগুলো দু’রকমের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে সাধারণ এলসিডি মনিটর, যাতে ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প ব্যবহার করা হয় এবং অন্যটি হচ্ছে এলইডি এলসিডি মনিটর, যাতে ব্যাকলিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেকে এলইডি মনিটরগুলোকে নতুন ধরনের মনিটর ভেবে ভুল করেন। অনেকের ভুল ধারণা এলইডি মনিটরগুলো এলসিডি মনিটরের চেয়ে আলাদা। কিন্তু আসলে তা নয়। এলইডি মনিটরগুলো এলসিডি মনিটরের উন্নত রূপ বলা চলে। ব্যাকলিট লাইট হিসেবে এলইডি ব্যবহার করা ছাড়া এলইডি ও সাধারণ এলসিডির মাঝে তেমন কোনো পার্থক্য নেই।



এবার দেখে নেয়া যাক, সিআরটি ও এলসিডি মনিটরের সুবিধা-অসুবিধাগুলো কি?

সিআরটি মনিটরের সুবিধাসমূহ

০১.
কিছু ক্ষেত্রে সিআরটি মনিটরগুলো এলসিডি মনিটরের চেয়ে ভালোমানের কালার রিপ্রেজেন্ট করার ক্ষমতা রাখে। কালার ক্যালিব্রেশন টেকনোলজিসমৃদ্ধ মনিটরগুলোর পারফরমেন্স অনেক ভালো।

০২.
সিআরটি মনিটরগুলো অনেক ধরনের রেজ্যুলেশন ও রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে যা এলসিডি করে না।
০৩.
রেসপন্স টাইম কম হবার কারণে ঘোস্টিং (দ্রুত ইমেজ পরিবর্তনের সময় পর্দায় কালো ছোপ দেখা যাওয়া) বা ব্লারিং (ঘোলাটে ইমেজ দেখানো) সমস্যা তেমন একটা দেখা যায় না। এলসিডি মনিটরগুলোতে এ সমস্যা প্রকট ছিল, তবে নতুন মনিটরগুলোতে এ সমস্যা অনেকাংশে দূর করা সম্ভব হয়েছে।

০৪.
দামের দিক থেকে সিআরটি মনিটরগুলো বেশ সস্তা।

০৫.
সিআরটি মনিটরের ডায়নামিক রেঞ্জ বেশ উঁচুমানের এবং অনেক বেশি বাস্তবসম্মত রঙ প্রদর্শন করতে পারে।

০৬.
ইনপুট ল্যাগ (সিগন্যাল ইনপুটের পর তা পর্দায় প্রদর্শনের মধ্যবর্তী সময়কাল) সমস্যা থেকে মুক্ত।

০৭.
কালার স্যাচুরেশনের মাত্রা বেশ কম।

০৮.
কন্ট্রাস্ট ও ব্রাইটনেস ডিস্টরশন (বিকৃতি) তেমন একটা হয় না।

০৯.
বেশ ভালো ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল।

সিআরটি মনিটরের অসুবিধাসমূহ

০১.
আকারে বড় ও ভারি।

০২.
বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে।

০৩.
কম রিফ্রেশ রেট দেয়া থাকলে স্ক্রিন কাঁপে।

০৪.
ইলেক্ট্রন গানের নড়াচড়ার জন্য ছবিতে জ্যামিতিক বিকৃতি দেখা দেয়।

০৫.
পরিবেশবান্ধব নয়।

০৬.
বেশ গরম হয়ে যায়।

০৭.
পেছনে বাতাস চলাচলের জন্য থাকা ছিদ্রগুলো দিয়ে ধুলোবালি ঢুকে মনিটরের স্থায়িত্ব কমিয়ে দেয়।

এলসিডি মনিটরের সুবিধাসমূহ

০১.
আকারে ছোট এবং হালকা।

০২.
বেশ কম বিদ্যুৎ খরচ করে।

০৩.
জ্যামিতিক বিকৃতিমুক্ত।

০৪.
কম তাপ উৎপন্ন করে।

০৫.
স্ক্রিন কাঁপার ব্যাপারটি খুব কম ঘটে।

০৬.
এলসিডি মনিটরের ডিসপ্লে চোখের ওপরে চাপ ফেলে কম।

০৭.
কম কম্পাংকের ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ইমিশনের (তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ) কারণে তা ব্যবহারকারীর শরীরের জন্য কম ক্ষতিকর।

০৮.
এলসিডি মনিটর বানানোর উপাদানগুলো পরিবেশবান্ধব।

০৯.
এলসিডি মনিটর দেখতে বেশ স্টাইলিশ ও নজরকাড়া।

এলসিডি মনিটরের অসুবিধাসমূহ

০১.
কালার স্যাচুরেশন, কন্ট্রাস্ট ও ব্রাইটনেস কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে যায়।

০২.
ব্যাকলাইটিং সমানভাবে পর্দার সব জায়গায় না পড়ার কারণে মনিটরের ধারের দিকে ব্রাইটনেসের সমস্যা দেখা দেয়।

০৩.
বেশি রেসপন্স টাইমের কারণে গেমারদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। কম রেসপন্স টাইমের মনিটরগুলোর দাম কিছুটা বেশি।

০৪.
বিট ডেপথ নির্দিষ্ট করা থাকে, তাই কম মূল্যের এলসিডি মনিটরগুলোতে বাস্তবসম্মত রঙ ফুটে ওঠে না।

০৫.
সিআরটির তুলনায় কম রেজ্যুলেশন ও রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে।

০৬.
ইনপুট ল্যাগ সমস্যা দেখা দেয়।

০৭.
ডেড পিক্সেল দেখা দেয়। যদি একটি লিকুইড ক্রিস্টাল নষ্ট হয়ে যায় তবে তা ইমেজ বা পিক্সেল জেনারেট করার সময় সাহায্য করে না, তখন মনিটরে বিন্দুর মতো দাগ দেখা দেয়।


এলসিডি মনিটর

এলসিডি মনিটরের ফিচারসমূহ

নতুন মনিটরের সাথে যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন সব টেকনোলজি ও সুবিধা। কোন টেকনোলজি কি রকম সুবিধা দিয়ে থাকে তা না জানা থাকলে মনিটর কেনার সময় সমস্যায় পড়তে হয়। তাই মনিটরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :

স্ক্রিন সাইজ : মনিটরের স্ক্রিন আকার সাধারণত ১৫-২৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণ কাজের জন্য ব্যবহার করা হলে ১৫ ইঞ্চি আকারের মনিটরই যথেষ্ট। মুভি দেখা ও গ্রাফিক্সের কাজের জন্য ১৭-২২ ইঞ্চি আকারের মনিটর এবং গেমারদের জন্য ২২-২৮ ইঞ্চি আকারের মনিটর ভালো কাজে দেয়।

আসপেক্ট রেশিও : সিআরটি মনিটরের প্রস্থ ও উচ্চতার অনুপাত হতো ৪:৩ এবং এলসিডি মনিটরের ক্ষেত্রেও এ ধরনের অনুপাত দেখা যায়। তবে হাই ডেফিনিশন মুভি দেখার ধুম পড়ে যাবার কারণে বাজারে ১৬:৯ আসপেক্ট রেশিওর মনিটরের দেখা মিলছে বেশি। ১৬:৯ আসপেক্ট রেশিওযুক্ত মনিটরগুলোকে ওয়াইড স্ক্রিন মনিটর বলে। স্কয়ার বা ৪:৩ অনুপাতের মনিটরগুলোর দাম ওয়াইড স্ক্রিন মনিটরের চেয়ে বেশি এবং তা সহজলভ্য নয়।

রেজ্যুলেশন : এলসিডি মনিটরগুলোতে একটি নির্দিষ্ট নেটিভ রেজ্যুলেশন থাকে যাতে দেখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া যায়। ৪:৩ অনুপাতের মনিটরগুলোর নেটিভ রেজ্যুলেশন সাধারণত ১২৮০x১০২৪ হয়ে থাকে। ওয়াইড স্ক্রিন বা ১৬:৯ অনুপাতের মনিটরের নেটিভ রেজ্যুলেশন হয়ে থাকে ১১৪০x৯০০, ১৬৮০x১০৫০ বা ১৯২০x১২০০। নতুন বের হওয়া গেমগুলোতে আলাদা করে ওয়াইড স্ক্রিন সাপোর্ট দেয়া থাকে। হাই ডেফিনিশন মুভি দেখার জন্য ১৯২০x১২০০ রেজ্যুলেশন বা ফুল-এইচডি মনিটরগুলো বেশ কাজে দেয়, কারণ এতে পিক্সেলগুলো ঠিকমতো ফুটে ওঠে।

ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল : পুরনো এলসিডি সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল কম ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল। ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল উলম্ব বা সমান্তরাল উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল যত বেশি হবে মনিটরের পাশ দেখে পর্দায়ই ছবি দেখার সময় তার রঙ বদল বা ছবির তেমন কোনো পার্থক্য দেখা দেবে না। নতুন এলসিডি ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল ১৬০ থেকে ১৭৮.৫ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে। তাই যত বেশি ডিগ্রির ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল হবে তত ভালো।

ডট পিচ : ডট পিচ হচ্ছে দুটি পিক্সেলের মধ্যবর্তী দূরত্বের পরিমাণ। ডট পিচের পরিমাণ যত কম হবে মনিটরে ইমেজ প্রদর্শন তত সূক্ষ্ম ও নিখুঁত হবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের জন্য ০.২২ মি.মি. ডট পিচের মনিটর ও অন্যদের জন্য তা ০.২৬ থেকে ০.৩০ মিলিমিটার হলে ভালো হয়।

ইনপুট ইন্টারফেস : প্রথমদিকের এলসিডিগুলোতে ভিডিও সিগন্যাল ইনপুটের জন্য VGA (Video Graphics Accelaretor) পোর্ট ব্যবহার করা হতো, যা ডিজিটাল সিগন্যালকে এনালগে রূপান্তর করে তা আবার ডিজিটালে পরিণত করার পর ডিসপ্লেতে প্রদান করতো। কিন্তু নতুন সব এলসিডিতে ইনপুট ইন্টারফেস হিসেবে DVI (Digital Visual Interface) দেয়া থাকে, যা ডিজিটাল সিগন্যালকে কোনো রূপান্তর ছাড়াই এলসিডিতে প্রদর্শন করতে সক্ষম। HDCP (High-bandwidth Digital Content Protection) ইন্টারফেস আরো ভালো গতি ও উন্নতমানসমৃদ্ধ ভিডিও সিগন্যাল সরবরাহ করতে পারে। সবচেয়ে ভালো ইন্টারফেসটি হচ্ছে HDMI (High-Definaion Multimedia Interface) যা উচ্চক্ষমতার ভিডিও ও অডিও সিগন্যাল একসাথে সরবরাহ করতে সক্ষম। তাই মনিটরে ডিভিআই পোর্টের পাশাপাশি এইচডিএমআই পোর্ট থাকাটা একটি বিশাল সুবিধা।

রেসপন্স টাইম : মনিটরে একটি ইমেজ প্রদর্শনের পর আরেকটি দেখানোর মাঝের সময়কে রেসপন্স টাইম বলা হয়। রেসপন্স টাইম বেশি হলে নতুন জেনারেট হওয়া ছবিতে আগের ছবির একটা আবছা ছায়া (ঘোস্টিং) বা ঘোলাটে ভাব (ব্লারিং) দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে গেম খেলার সময় গেমাররা এ ধরনের সমস্যায় বেশি পড়ে থাকেন। প্রথমদিকের এলসিডিগুলোর চেয়ে সিআরটি মনিটরগুলোর রেসপন্স টাইম বেশি ছিল। কিন্তু এখন এলসিডিতে সেই সমস্যা কাটিয়ে তোলা হয়েছে। এলসিডির ক্ষেত্রে রেসপন্স টাইম ১ থেকে ১৬ মিলিসেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে। গেমারদের জন্য ১-২ মিলিসেকেন্ডের রেসপন্স টাইমের মনিটর হলে ভালো হয়। রেসপন্স টাইম যত কম হয় তত ভালো।

রিফ্রেশ রেট : প্রতি সেকেন্ডে ডিসপ্লেটিকে কতবার আলোকিত করা হয় তার পরিমাণ হচ্ছে রিফ্রেশ রেট। যেমন, একটি প্রজেক্টর সেকেন্ডে ২৪টি ফ্রেম দেখাতে পারে। প্রতিটি ফ্রেম প্রদর্শনের আগে তা দুই থেকে তিনবার আলোকিত করা হয় ল্যাম্প ও পর্দার মধ্যে অবস্থিত শাটারের মাধ্যমে। দুইবার আলোকিত করা হলে ৪৮ এবং তিনবার হলে ৭২ হার্টজ রিফ্রেশ রেট হবে। মনিটরের রিফ্রেশ রেট বেশি হলে তা চোখের ওপরে চাপ ফেলে কম, তাই বেশিক্ষণ কাজ করা যায়। তবে সিস্টেম সাপোর্টের চেয়ে বেশি রিফ্রেশ রেট প্রয়োগ করা হলে মনিটরের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

কন্ট্রাস্ট রেশিও : কন্ট্রাস্ট রেশিও হচ্ছে সবচেয়ে উজ্জ্বল রঙ (সাদা) ও সবচেয়ে গাঢ় রঙের (কালো) লুমিনেন্সের অনুপাত। সাদা ও কালোর মাঝে সামঞ্জস্য করে অনেক বেশি শেড দিতে সক্ষম বেশি কন্ট্রাস্ট রেশিওসমৃদ্ধ মনিটরগুলো।

পাওয়ার কনজাম্পশন : সিআরটির সাথে তুলনা করলে এলসিডিগুলো এক-তৃতীয়াংশ কম বিদ্যুৎ খরচ করে। বেশ কিছু নতুন টেকনোলজি যোগ করায় মনিটরগুলো আরো বেশি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়ে উঠছে।

ব্যাকলিট লাইটিং : আগেই বলা হয়েছে ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্পের পরিবর্তে এলইডি (LED) ব্যাকলিট ব্যবহার করা হলে তাকে LED Backlit LCD মনিটর বলে। এখন দেখা যাক LED Backlit থাকার সুবিধাগুলো কি কি?

০১. এলইডি মনিটরের কন্ট্রাস্ট ও ব্লাক লেভেল প্রোডাকশন ক্ষমতা বেশি।
০২. লাইট ইমিটিং ডায়োড ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্পের চেয়ে বেশি টেকসই।
০৩. এলইডি এলসিডি মনিটর সাধারণ এলসিডির চেয়ে হালকা।
০৪. এলইডি ৪০% কম বিদ্যুৎ খরচ করে ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্পের তুলনায়।
০৫. এলইডি কালার প্রোডাকশন করার ক্ষমতা বেশ ভালো।
০৬. এলইডি টেকনোলজিতে মার্কারি ব্যবহার করা হয় না বলে তা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।
এত সুবিধা থাকার কারণে সাধারণ এলসিডির তুলনায় এলইডি মনিটরের দাম কিছুটা বেশি হওয়াই স্বাভাবিক।

নতুন ল্যাপটপগুলোর ডিসপ্লেতে LED Backlit-এর প্রয়োগ বেশ লক্ষণীয়।

প্যানেল : এলসিডি মনিটরে বেশ কয়েক ধরনের প্যানেলের ব্যবহার দেখা যায়, এগুলোর মধ্য জনপ্রিয় কয়েকটি হচ্ছে :

০১. TN (Twisted Nematic);
০২. VA (Vertical Alignment);
০৩. IPS (In Plane Switching)।

টিএন প্যানেলের মনিটরগুলো দামে সস্তা এবং এগুলোর রেসপন্স টাইম ভালো। কিন্তু এ প্যানেল কালার রিপ্রোডাকশন, কন্ট্রাস্ট রেশিও এবং ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলের দিক থেকে বেশ দুর্বল। ভিএ প্যানেলের মনিটরগুলোকে মাঝারি পর্যায়ে ফেলা যায়, কারণ তা টিএন প্যানেলের চেয়ে বেশি এবং আইপিএস প্যানেলের চেয়ে কম সুবিধা দেয়। ভিএ প্যানেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা ভালো মানের কন্ট্রাস্ট রেশিও এবং সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে খারাপ রেসপন্স টাইম। মাঝারি দামের এ প্যানেলযুক্ত মনিটরগুলোতে ইনপুট ল্যাগ ও কালার শিফটিং সমস্যাও দেখা দেয়। ভিএ প্যানেলের কিছু রকমভেদ রয়েছে। যেমন- PVA, S-PVA, MVA ইত্যাদি। আইপিএস প্যানেল হচ্ছে সব প্যানেলের মাঝে সেরা। সূক্ষ্ম ও নিখুঁত ছবি, প্রাণবন্ত ভিডিও, সর্বোচ্চ ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল এবং সেরা মান দেবার জন্য এ প্যানেলযুক্ত মনিটরের দাম কিছুটা বেশি। এছাড়াও S-IPS, A-IPS, H-IPS, E-IPS, P-IPS ইত্যাদি আরো বেশ কিছু ধরনের আইপিএস প্যানেলের মনিটর পাওয়া যায়। এছাড়া AFFS (Advanced Fringe Field Switching) ও ASV (Advanced Super View) প্যানেলের দেখাও মিলতে পারে। তবে আমাদের দেশে টিএন প্যানেলের ব্যবহার দেখা যায় বেশি। আইপিএস প্যানেলের মনিটরের দেখা তেমন একটা মেলে না আমাদের বাজারে।

শেষ কথা

মনিটর কেনার সময় বেশ কয়েকটি মডেল বেছে নিয়ে সেগুলোর মাঝে তুলনা করে দেখতে হবে। সম্ভব হলে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে মনিটরগুলোর রিভিউ পড়ে দেখলে কোন মনিটরে কি বিশেষ সুবিধা ও কি সমস্যা আছে তা ভালোভাবে জানা যাবে। নিজের প্রয়োজন ও পছন্দমতো বাছাই করে মনিটর কিনতে হবে, তা না হলে পরে এ নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
পাঠকের মন্তব্য
২১ নভেম্বর ২০১০, ৩:১১ AM
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস