• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে জরিপ ও তার ফলাফল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: জাকারিয়া চৌধুরী
মোট লেখা:৩৫
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ফ্রিল্যান্স
তথ্যসূত্র:
ঘরে বসে ‍আয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে জরিপ ও তার ফলাফল
আমাদের দেশে কতজন ফ্রিল্যান্সার আউটসোর্সিং কাজের সাথে জড়িত তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত কারো কাছে নেই। ইন্টারনেটে কে কোথা থেকে কাজ পাচ্ছেন তা জানা দুরূহ কাজ। মার্কেটপ্লেসগুলোতে অনেকে নিজেদের প্রোফাইল প্রাইভেট করে রাখেন, যা শুধু একজন ক্লায়েন্টই দেখতে পারেন। অনেকে আবার ক্লায়েন্টদের সাথে সরাসরি কাজও করে থাকেন। ফ্রিল্যান্সাররা স্বেচ্ছায় কোনো জরিপে অংশগ্রহণ না করলে বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে জানা কখনও সম্ভব নয়। বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা কে কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন, কে কোন পদ্ধতিতে দেশে টাকা নিয়ে আসছেন, কে কত ডলার আয় করছেন ইত্যাদি তথ্য জানতে ‘কমপিউটার জগৎ’-এর পক্ষ থেকে একটি জরিপের আয়োজন করা হয়েছিল। বিভিন্ন বাংলা ব্লগ এবং ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপে এই জরিপে অংশগ্রহণ করার জন্য ফ্রিল্যান্সারদের আহবান জানানো হয়েছিল। এতে সাড়া দিয়ে গত এক বছরে মোট ১৭৫ ফ্রিল্যান্সার জরিপে অংশগ্রহণ করেন। দেশে কয়েক হাজার ফ্রিল্যান্সারের তুলনায় সংখ্যাটি নিতান্তই নগণ্য। তা ছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীদের একটি বড় অংশ এখনও কোনো কাজই পাননি। তার পরও এ থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতির একটি আংশিক ধারণা পাওয়া যাবে।

আপনার পেশা?

ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার ----৪২-------২৪%
চাকরিজীবী-------------৩৯------২২%
ব্যবসায়ী------------------৯-------৫%
শিক্ষার্থী-----------------৮৩-----৪৭%
গৃহিণী---------------------১------১%

ফ্রিল্যান্সারদের একটি বড় অংশ হচ্ছেন শিক্ষার্থী। অনেকে পড়ালেখা শেষ করে সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন এবং একে মূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করছেন। চাকরিজীবীদের মধ্যে অতিরিক্ত আয়ের লক্ষ্যে ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা ইদানীং লক্ষ করা যায়। তাদের মধ্যে যারা ভালো করছেন তারা অনেকেই পরে চাকরি ছেড়ে পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন। যদিও এই জরিপে কতজন মহিলা ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন তা যাচাই করা হয়নি, কিন্তু বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস পর্যবেক্ষণ করে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়- নারীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আউটসোর্সিং কাজে জড়িত রয়েছেন এবং ভালো আয় করছেন।

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে প্রথম কিভাবে জানতে পেরেছিলেন?

কমপিউটার জগৎ ম্যাগাজিন থেকে ----৫১----২৯%
সংবাদপত্র থেকে-----------------------১৫------৯%
ইন্টারনেট থেকে-----------------------৪১----২৩%
বন্ধুর মাধ্যমে-------------------------৩৮---- ২২%
সেমিনারে অংশগ্রহণ করে--------------২-------১%
freelancerstory.blogspot.com
সাইট থেকে---------------------------৭--------৪%
অন্যান্য------------------------------২১-------১২%

দেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রসারে কমপিউটার জগৎ ম্যাগাজিনের উল্লেখযোগ্য অবদান এই জরিপ থেকে সহজেই প্রতীয়মান হয়। পাশাপাশি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বাংলা সাইটও নতুন ফ্রিল্যান্সার তৈরিতে সহায়তা করছে। গত দুই বছর ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে এক ধরনের সেমিনার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেমিনারে অংশগ্রহণ করে যে রাতারাতি ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায় না তা সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। কাজ করতে হলে আগে সে কাজ ভালোভাবে জানতে হবে।

আপনি কোন সাল থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাথে জড়িত?

২০১১ ---------- ১৩------ --৭%
২০১০---------- -৭৩------৪২%
২০০৯----------৬৩------৩৬%
২০০৮----------২১-------১২%
২০০৭-----------৩---------২%
২০০৬-----------২---------১%
২০০৫-----------০---------০%

গত পাঁচ বছর ধরে দেশে ক্রমবর্ধমান হারে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বাড়ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আশা করা যায়, এ বছরই নতুন ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা আগের সব বছর ছাড়িয়ে যাবে।

আপনি কোন ধরনের কাজগুলো করে থাকেন?**

ওয়েবসাইট তৈরি-----------------৫৫--------৩১%
ওয়েবসাইট টেম্পলেট ডিজাইন---৪০--------২৩%
গ্রাফিক্স ডিজাইন-----------------৬৭---------৩৮%
প্রোগ্রামিং------------------------২৭----------১৫%
ডাটা এন্ট্রি----------------------১০৭----------৬১%
এনিমেশন তৈরি------------------১১-----------৬%
গেমস তৈরি-----------------------৩ -----------২%
অন্যান্য---------------------------৮৪---------৪৮%
সিইও----------------------------২৮----------১৬%
সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং------------১২------------৭%

জরিপ থেকে দেখা যায়, ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ডাটা এন্ট্রির কাজ করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তার পরের স্থানে রয়েছে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েবসাইট তৈরি এবং প্রোগ্রামিং। অনেকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) কাজও করছেন। যদিও জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস ওডেস্ক (www.oDesk.com)-এ বর্তমানে ওয়েব প্রোগ্রামিং এবং ওয়েব ডিজাইনের কাজ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তার পরের স্থানে রয়েছে সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, লেখালেখি এবং গ্রাফিক্স/মাল্টিমিডিয়ার কাজ।

আপনি কোন কোন মার্কেটপ্লেসে নিয়মিত কাজ করে থাকেন?**

ওডেস্ক----------------৯-------- ৫১%
ফ্রিল্যান্সার-----------৩৬--------২১%
ভি-ওয়ার্কার ---------১৫----------৯%
গেট-এ-কোডার--------৯----------৫%
স্ক্রিপ্টল্যান্স-----------১১----------৬%
মাইক্রোওয়ার্কস-------৪৮--------২৭%
থিমফরেস্ট (এনভাটো)-৮----------৫%
জুমল্যান্সার্স-------------৬---------৩%
সরাসরি ক্লায়েন্ট থেকে -২৭--------১৫%
অন্যান্য----------------৬৬-------৩৮%

জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্ধেকেরও বেশি ফ্রিল্যান্সার ওডেস্কে কাজ করছেন। ঘণ্টা হিসেবে কাজের জন্য ওডেস্ক বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস। এটি একজন ফ্রিল্যান্সারের ন্যায্যমূল্য পরিশোধ করে। অন্যান্য মার্কেটপ্লেসে প্রজেক্টভিত্তিক কাজে অনেক সময় দেখা যায়। ক্লায়েন্টরা মূল চাহিদার বাইরেও অতিরিক্ত কাজ দিয়ে থাকে, যাতে একজন ফ্রিল্যান্সারের সময় এবং অর্থের অপচয় হয়। একসময় ভিওয়ার্কার (রেন্ট-এ-কোডার) ও স্ক্রিপ্টল্যান্স সাইটের প্রচুর সুনাম ছিল। পরে ফ্রিল্যান্সার ডটকম সাইট সবাইকে আকৃষ্ট করে। সব ছাপিয়ে ওডেস্ক এখন হয়ে উঠেছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তবে সব সাইটেই প্রথম কাজ পাওয়াটা সময়সাপেক্ষ। তাই অনেকে হতাশ হয়ে মাইক্রোওয়ার্কার্স সাইটে খুব অল্প পারিশ্রমিকে কাজ শুরু করেন।

মার্কেটপ্লেস থেকে এ পর্যন্ত আপনি কতটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন?

একটিও নয়------------------------৬৯------------৩৯%
১-৩টি------------------------------২৫------------১৪%
৪-১০টি-----------------------------৩০------------১৭%
১১-৫০টি----------------------------২২-----------১৩%
৫১-১০০টি----------------------------৯------------৫%
১০১টি বা তার থেকে অধিক ---------১০-----------৬%

আমাদের দেশে অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা এখনও নতুন ফ্রিল্যান্সারদের তুলনায় অত্যন্ত কম। এ জরিপে দেখা যাচ্ছে একটিও কাজ পাননি এরকম ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা হচ্ছে ৩৯%। তবে বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ওডেস্কে রেজিস্ট্রেশন করা ২০,৬৬৫ বাংলাদেশীর মধ্যে ৯০.৭% এখনও কোনো কাজ পাননি। এ থেকে অনেক বিষয় অনুমান করা যায়- কাজের জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব, সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব, ইংরেজিতে অদক্ষতা ইত্যাদি।

প্রথম কাজ পেতে আপনার কত সময় লেগেছিল?

এখনও কোনো কাজ পাইনি ----------------৭১---------৪১%
১ সপ্তাহ থেকে কম-------------------------২৬--------১৫%
১ থেকে ২ সপ্তাহ----------------------------১৩---------৭%
১ মাসের মধ্যে------------------------------২৪--------১৪%
২ থেকে ৩ মাস-----------------------------২০--------১১%
৩ থেকে ৬ মাস------------------------------৬---------৩%
৬ মাসের থেকে বেশি সময় ------------------১১---------৬%

প্রথম কাজ পাওয়াটা কারো কারো ক্ষেত্রে এক সপ্তাহেই হয়ে যায়, আবার কারো কারো ক্ষেত্রে ৬ মাসের বেশি সময়ও লাগতে পারে। তবে কাজে দক্ষতা থাকলে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারই এক মাসের মধ্যে কাজ পেয়ে যান। পরিপূর্ণ প্রস্ত্তত না হয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলে হতাশাই দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে এ পর্যন্ত আনুমানিক মোট কত ডলার আয় করেছেন?

এ প্রশ্নের উত্তর মাত্র ৮৫ ফ্রিল্যান্সার দিয়েছেন। এদের মধ্যে সর্বনিম্ন মোট আয় হচ্ছে ১০ ডলার এবং সর্বোচ্চ ৩৬,০০০ ডলার। এদের আয়ের মোট যোগফল দাঁড়ায় ১৮১,৮০০ ডলার।

ন্যূনতম ১০০ ডলার ----------- -১৮ জন
১০০-১,০০০ ডলার-------------৩৭ জন
১,০০০-৫,০০০ ডলার-----------২২ জন
৫,০০০ ডলারের অধিক----------৬ জন

অর্থ উত্তোলনের জন্য আপনি কোন কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন?

পেওনার মাস্টারকার্ড-----------৬৬---------৪৩%
মানিবুকার্স---------------------৭০----------৪৬%
পেপাল-------------------------৩২----------২১%
ব্যাংকওয়্যার ট্রান্সফার----------১৯----------১৩%
চেকের মাধ্যমে-----------------১৬----------১১%
ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন--------------১১-----------৭%
অ্যালার্টপে----------------------৩২----------২১%
অন্যান্য-------------------------৩২----------২১%

বর্তমানে মার্কেটপ্লেসগুলোতেই পেপালের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন পদ্ধতি চালু রয়েছে। বিশেষ করে পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড এবং মানিবুকার্সের সাহায্যে প্রায় সব জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা দেশে আনা যায়। তবে যারা সরাসরি ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কাজ পান, তাদের ক্ষেত্রে পেপাল না থাকা একটি বড় ধরনের অসুবিধা। যদিও আমাদের দেশে পেপালের সার্ভিস নেই, তথাপি জরিপে দেখা যায় ২১% ফ্রিল্যান্সার পেপাল ব্যবহার করছেন। এক্ষেত্রে তারা বিদেশে অবস্থিত তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সাহায্যে পেপালের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন। অনেকে আবার ভিন্ন কোনো দেশের ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে পেপালে অ্যাকাউন্ট তৈরি করছেন এবং তা পেওনার মাস্টারকার্ড দিয়ে ভেরিফাই করিয়ে নিচ্ছেন। তবে একসময় পেপাল বিষয়টি ধরে ফেলে এবং সাথে সাথে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে ফেলে।

উল্লেখ্য, ** চিহ্নিত প্রশ্নগুলোতে একাধিক উত্তর নির্বাচন করার সুযোগ ছিল। ফলে মোট শতাংশ ১০০%-এর বেশি হতে পারে।

ওডেস্কে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের বর্তমান অবস্থা

জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ওডেস্ক। ওডেস্কে অন্তত একটি কাজ করেছেন এরকম বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে কে কোন ধরনের কাজ করছেন এবং কে কতটুকু ভালো করছেন তা নিচের চার্ট থেকে বোঝা যায়-

কাজের ধরন------------------- রেটিং------------কাজের অভিজ্ঞতা
Web Development------৯৫৭---৪.৫ - ৫.০-----১,৩৮৯------১ ঘণ্টা বা ১ ডলার আয় ১,৯১৫
Software Development--৩৬৩-৪.০ - ৪.৫-------২৭৬------১০০+ ঘণ্টা ৮৮৫
Networking &
Information Systems-----১৯৬-৩.০- ৩.৯-------২১৭-----১০০০+ ঘণ্টা ১৩০
Writing & Translation ----৭৪৮-২.০- ২.৯--------৭৯
Administrative Support---১,৩৩১----১.০ -------১.৯--------৯০
Design & Multimedia -------৮১৪
Customer Service-------------৩৩৫
Sales & Marketing----------১,১৬৯
Business Services-----------৩০৩

ওডেস্কে প্রাপ্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, কম খরচে যেসব দেশ আউটসোর্সিং কাজ করে থাকে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের গড় রেট প্রতিঘণ্টায় ৬.৫৩ ডলার। এক্ষেত্রে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ফিলিপিন্স, যাদের গড় রেট ৫.৯৬/ঘণ্টা। অন্যদিকে রেটিং বা কাজের মানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে রয়েছে। গড় রেটিং ৪.১১ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৮তম, যেখানে প্রথম অবস্থানকারী লাটভিয়ার গড় রেটিং ৪.৮২। বাংলাদেশের ঠিক আগের অবস্থান অর্থাৎ ৪৭তম স্থানে রয়েছে আমাদের পাশের দেশ ভারত।

ওডেস্কে বাংলাদেশী টিম বা এজেন্সিগুলো বেশ ভালো করছে। গত এক মাসে গড় রেটিং ন্যূনতম ৪.০ এবং ৪০০ ঘণ্টার ওপর কাজ করেছে, এরকম একটি তালিকায় শীর্ষ ৫০-এ ৬টি বাংলাদেশী এজেন্সি রয়েছে। তন্মধ্যে Creative Innovation নামে ঢাকা থেকে পরিচালিত একটি টিম ৮ম স্থানে রয়েছে। আর ‘কমপিউটার জগৎ’ ম্যাগাজিনে গত বছর ফিচার করা টিম ‘আলফা ডিজিটাল’-এর অবস্থান ৫১তম।

বাংলাদেশীদের মধ্যে ওডেস্কে সবচেয়ে বেশি ঘণ্টা কাজ করেছেন ‘মিনহাজ পারভেজ’ নামে এক ফ্রিল্যান্সার। তিনি মূলত ডাটা এন্ট্রি, আর্টিকেল সাবমিশন এবং এসইও-এর কাজ করে থাকেন। ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি ৩৩টি প্রজেক্টে মোট ৯ হাজার ঘণ্টার ওপর কাজ করেছেন। তার গড় রেটিং ৪.৯৯। তিনি গত তিন বছরে ওডেস্ক থেকে ৩০ হাজারের অধিক ডলার আয় করেছেন। বর্তমানে ওডেস্কের সব ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে মিনহাজ পারভেজের অবস্থান ১৭তম। তবে শীর্ষ ৫০-এ আর মাত্র এক বাংলাদেশীকে খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি হচ্ছেন ‘দেলওয়ার হোসেন’ নামে আরেকজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। তিনি মোট ৮ হাজার ঘণ্টা কাজ করে শীর্ষ ২৮তম স্থানে অবস্থান করছেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতামত

জরিপে অংশগ্রহণকারীরা ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং বিষয়ে তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন সমস্যা এবং নানা ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মতামত প্রকাশ করা হলো।

রুবায়েত হোসেন
উত্তর কাফরুল, মিরপুর, ঢাকা

ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে একটি অসাধারণ প্লাটফর্ম, যেখানে একজন ফ্রিল্যান্সার তার সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারেন। এটি অতিরিক্ত আয়ের একটি ভালো উৎস। ছাত্রছাত্রীরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের পড়ালেখার খরচ নিজেরাই চালিয়ে নিতে পারেন। আমি কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র এবং একজন ফ্রিল্যান্সার। আমি প্রধানত ওডেস্কে কাজ করি। প্রথম কাজ পাওয়াটা কঠিন, তবে নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে গেলে আমি আশা করি সফলতা আসবে।
..................................................................................

শামিমা আক্তার
নাজিমুদ্দিন রোড, ঢাকা
ফ্রিল্যান্সিংয়ের একটি সামাজিক পরিচিতি থাকা উচিত। ফ্রিল্যান্সারদের একত্রিত করা এবং তাদের উৎসাহ দেয়ার জন্য একটি অ্যাসোসিয়েশন থাকা প্রয়োজন। অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারকে একটি আইডি কার্ড এবং তাদের কাজের কিছু নিয়মনীতি ঠিক করে দিতে পারে।
..................................................................................

মহসিনুল আলম
কাফুরিয়া, নাটোর

প্রথম প্রথম একা একা কাজ করতাম। কিন্তু অনেক ক্লায়েন্ট একটি কাজের জন্য একসাথে অনেক ফ্রিল্যান্সার চায়। এ সমস্যা থেকে একটি টিম করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। টিমে যোগদান বা ফ্রিল্যান্স করার জন্য সবসময় পেশাদার মানসিকতার প্রয়োজন। তাই আমি আমার টিম মেম্বারদের সর্বপ্রথমে যে বিষয়গুলো বোঝাই, তা হলো সবার আগে প্রয়োজন সঠিকভাবে ইংরেজিতে যোগাযোগ করা। আপনি যা, তা সঠিকভাবে আপনার প্রোফাইলে উপস্থাপন করা। Cover Letter-এ বায়ারকে বোঝানো যে, আপনি কাজটি জানেন এবং সঠিকভাবে করতে পারবেন। অনেকে দুয়েক লাইনে Cover Letter লেখেন, তা ঠিক নয়। সব সময় পরিপূর্ণ বিষয় তুলে ধরতে হবে। কখনও বায়ারের কাছে কাজের জন্য রিকোয়েস্ট বা একেবারে কম মূল্যে কাজের অফার করা উচিত নয়, তাহলে বায়ার বুঝবে আপনি কাজটি করার যোগ্য নন। প্রজেক্ট সম্পর্কে আপনার বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করুন। কোনো প্রশ্ন থাকলে বায়ারকে করুন, প্রশ্নে বায়ার খুশি হয়।

আইটি জগতে জাকারিয়া ভাইকে আমি তার গ্রাফিক্সসংক্রান্ত একটি সাইট থেকে জানি। তিনি ফ্রিল্যান্স জগতে বাংলাদেশকে উন্মোচিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি তার প্রচেষ্টাকে আন্তরিকভাবে সমর্থন করি এবং ভালোবাসি।
..................................................................................

আবু সাঈদ মো: সায়েম
রাজপাড়া, রাজশাহী

আমি মনে করি, এখন আমাদের সময় হয়েছে ফ্রিল্যান্সকে একটি আলাদা শিল্প হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার। আমি নিজেই যখন শুরু করেছিলাম, তখন একা ছিলাম আর এখন আমি একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশের পথে রয়েছি। আশা করি খুব শিগগির আমি আমার এই লক্ষ্যে সফল হব। এখন আমাদের যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটা হলো হাইস্পিড ইন্টারনেট এবং দেশে টাকা আনার সহজ ও দ্রুত মাধ্যম। সেই সাথে আর একটা বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আমরা যারা ফ্রিলান্সিং করি তারা যেন একে অন্যের সাথে সহযোগিতার মনোভাব রাখি আর নতুনদের সহযোগিতা করি। কারণ, আমি অনেককেই দেখেছি একটু অভিজ্ঞ হয়ে গেলে নতুনদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা যদি পরস্পর সহযোগিতা ও দক্ষতারভিত্তিতে কাজ করতে পারি, তবে সেদিন আর বেশি দূরে নেই যেদিন আমাদের বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে পার্শ্ববর্তী দেশকেও ছাড়িয়ে যাবে। আমি নতুনদের শুধু একটা কথা বলতে চাই, আপনারা যারা একদম নতুন তারা প্রায়ই যেটা করেন সেটা হলো ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্স কাজ সম্পর্কে অনেক কিছু না জেনেই কাজের জন্য ওডেস্ক বা এই ধরনের ওয়েবসাইটের রেজিস্ট্রেশন করেন এবং পরে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে পিছিয়ে পড়েন বা মানসিক চাপে ভুগতে থাকেন। তাই এমনটি না করে আপনারা যখনই ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্স বিষয়ে জানবেন তখন আরও ভালোভাবে জানুন, তার পর ঠিক করুন আপনি কি ধরনের কাজের উপযোগী হিসেবে নিজেকে মনে করছেন। এর পর সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিন। আর এরপর কাজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে আপনার ফ্রিল্যান্সার ক্যারিয়ার শুরু করুন। আর ভালো কাজ মার্কেট থেকে পেতে হলে আপনাকে আরও একটা কাজ করতে হবে- অবশ্যই মার্কেটপ্লেসের আপনার বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত পরীক্ষাগুলো দিয়ে পাস করতে হবে। আমাদের বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সের কাজের ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাক- সে প্রত্যাশাই করছি।
..................................................................................

তারেক
মিরপুর, ঢাকা

আমাদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা বাংলাদেশে পেপাল ব্যবহার করতে পারি না। আমরা যদি পেপাল ব্যবহার করতে পারতাম, তাহলে তা ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতো। উদাহরণস্বরূপ, পেপাল না থাকার কারণে আমার নিজের অন্তত ১০০০ ডলারের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেছে। বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট পেপালের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে চায়। আমরা বাংলাদেশীরা এক্ষেত্রে খুব বেশি হতভাগা।
..................................................................................

শেখ আরিফ হোসেন
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা

আমি ব্যথিত হই যখন দেখি অনেক বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্টের কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা নেয়ার জন্য অসৎ উপায় অবলম্বন করছে। এটি ক্লায়েন্টদের কাছে নিজেদের পাশাপাশি দেশেরও খারাপ মনোভাব ফেলছে। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বলছি, একজনকে নিজের দক্ষতার ওপর দৃঢ় থাকতে হবে। আমি নিজে এই পদ্ধতি অনুসরণ করি এবং খুব ভালো ফল পাচ্ছি। ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী কোনো কাজ না পারলে তা সাথে সাথে ক্লায়েন্টকে জানিয়ে দিতে হবে। আমি নিশ্চিত সে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবে।

এবার আমি আমার নিজের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করব- যখন আমি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। আমি সে সময় একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তখন একটি তথাকথিত মর্যাদাপূর্ণ গ্রুপ থেকে জানানো হলো এ ধরনের কাজ নিম্নমানের। এমনকি তাদের গ্রুপে আমাকে নিতেও অসম্মতি জানালো। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আমি আমার মনোবল হারাইনি। বর্তমানে আমি ওডেস্কে গত ছয় মাসে ২২০০ ঘণ্টার ওপর ডাটা এন্ট্রির কাজ করেছি। এখন আমি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছি যে, অতিরিক্ত কাজ করার সময় না থাকায় আমাকে প্রতিদিন অনেক কাজের অফার ফিরিয়ে দিতে হয়।
..................................................................................

হাসিব
মিরপুর, ঢাকা

আমি মনে করি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের সবচেয়ে বড় বাধা ব্যয়বহুল ইন্টারনেট ব্যবস্থা। তা ছাড়া আরো যে সমস্যাগুলো আছে তা হলো ফ্রিল্যান্সারদের ইংরেজি জ্ঞানের অভাব, কমপিউটার সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব, অর্থ উত্তোলনের সমস্যা, আউটসোর্সিংয়ের পর্যাপ্ত প্রচারের অভাব, ভুয়া প্রচার ইত্যাদি। আমি মনে করি- শিক্ষার্থীদের যদি কমপিউটার ও ইংরেজি জ্ঞানে প্রশিক্ষিত করা যায় এবং স্বল্পমূল্যে উন্নত ইন্টারনেট সেবা দেয়া যায়, তাহলে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের ব্যাপক অগ্রগতি হবে আশা করা যায়। তবে দুঃখের কথা, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম বা শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং শব্দটির সাথে পরিচিত নয়।
..................................................................................

ডা. আব্দুর রহমান খালেদ
উত্তর শাহজানপুর, ঢাকা

আমি একজন ডাক্তার, কাজের চাপে এত ব্যস্ত থাকতে হয় যে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য সম্পূর্ণরূপে সময় দেয়া যায় না। তবে আমি এটি খুব উপভোগ করি। এটি একজন ব্যক্তির পাশাপাশি দেশের জন্যও উপকারী। এটি দিয়ে বেকার সমস্যার অনেকটাই নিবারণ করা যায়। যদি পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, তাহলে আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের রয়েছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার জন্য ‘কমপিউটার জগৎ’কে অনেক ধন্যবাদ।
..................................................................................

মো: ইব্রাহীম আরমান
ডালমিল, খুলনা

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এদেশে বর্তমানে প্রচুর তরুণ রয়েছে, যারা আইটি নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু তা পেরে উঠছে না শুধু প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে বিশাল কোর্স ফির জন্য, যা একজন ছাত্রের পক্ষ বহন করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের এক বিশাল বাজার। এ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের কাজে লাগানো হচ্ছে না। তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে উন্নত দেশের মধ্যে আমাদের দেশকে অন্যতম হতে আর বোধহয় বেশি সময় প্রয়োজন পড়বে না।
..................................................................................

মো: খালেদুর রহমান (জুয়েল)
চৌগাছা, যশোর

গতানুগতিক চাকরির বাইরে কোনো কিছু করার ইচ্ছে ছোটবেলা থেকেই ছিল। আর তাই প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই মূল লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছি। আউটসোর্সিংয়ে এসে আমার কাছে দুটি সমস্যা সবচেয়ে বেশি বলে মনে হয়, তা হলো- অর্থ উত্তোলন এবং নিম্নগতির ইন্টারনেট। পেপাল চালু না থাকায় বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি খরচ করতে হয়, যা হতাশাব্যঞ্জক। যেমন- যদি আমি Worker-এ ১০ ডলার মূল্যমানের কোনো প্রজেক্টে কাজ করি, সেক্ষেত্রে Worker ৩ ডলার ফি বাবদ কেটে রাখে অর্থাৎ আমি পাই ৭ ডলার। আবার পেওনার মাস্টারকার্ডের সাহায্যে অর্থ উত্তোলনের সময় ৩% ফি দিতে হয়। সবকিছু মিলে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের একটা বড় ধরনের খরচ হয় অর্থ উত্তোলনের জন্য। এক্ষেত্রে পেপাল চালু থাকলে অনেক কম খরচে এবং সহজে আমরা আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে আনতে পারি। পাশাপাশি উচ্চমূল্যের নিম্নগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট আমাদের দেশের আউটসোর্সিং সেক্টরের আরেকটি অন্তরায়। প্রতিবেশী উন্নয়নশীল দেশগুলো অনেক কম মূল্যে আমাদের চেয়ে অনেক গুণ বেশি গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ সব ব্যাপারে জোরালো পদক্ষেপ নিলে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা বেকারত্ব হ্রাসকরণের মাধ্যমে দেশের ন্যুব্জ অর্থনীতিকে অনেকাংশে গতিশীল করতে পারে বলে আমি মনে করি। বর্তমানে আমি আলফা ডিজিটাল টিমের সাথে কর্মরত। আমাদের দক্ষ টিম মেম্বারদের ওডেস্ক মার্কেটপ্লেসের বেশিরভাগ ক্যাটাগরির প্রজেক্ট সম্পন্ন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আলফা ডিজিটাল টিমের স্বত্বাধিকারী মামুনুর রশিদ odesk-bangladesh@googlegroups.com-এর মাধ্যমে ফ্রিলান্সিংবিষয়ক মতবিনিময় করেন, যা বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।

মো: জাকারিয়া চৌধুরী, কমপিউটার জগৎ এবং মামুনুর রশিদ ফ্রিল্যান্সিংবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে যে অসামান্য অবদান রাখছেন, আমরা বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আসুন, দেশের শিক্ষিত বেকার সমাজকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে উদ্বুদ্ধ করে বাংলাদেশকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করি।
..................................................................................

রবিউল ইসলাম অনিক
শিরোমনি, খুলনা

যতদিন আমাদের তিনটি সমস্যা সমাধান না হবে ততদিন আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারদের অগ্রগতি আশা করা যায় না। সমস্যাগুলো হলো- বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট এবং ব্যাংক। সরকার যদি আমাদের দিকে একটু নজর দিত তাহলে আমরা আরও এগিয়ে যেতাম।

পরিশেষে একথা বলা যায়, আউটসোর্সিং কাজে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। এক্ষেত্রে সরকারকে অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে দেশে পেপাল সার্ভিস চালু করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো দিতে, ইন্টারনেটকে আরো সহজলভ্য, সাশ্রয়ী এবং দ্রুতগতি করতে হবে। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে জাতীয় পর্যায়ে একটি নীতিমালা গঠন করতে হবে। পাশাপাশি তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা উচিৎ। এক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে এই সুযোগে কেউ যাতে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের হয়রানি না করে এবং তাদের ভ্রান্তপথে পরিচালিত করতে না পারে। আর ফ্রিল্যান্সারদেরও উচিৎ অযথা সেমিনার আর ওয়ার্কশপের পেছনে না ছুটে সময় নিয়ে পর্যাপ্ত অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করে তোলা।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : zakaria.cae@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
পাঠকের মন্তব্য
১২ মার্চ ২০১১, ৮:০৩ AM
০৭ এপ্রিল ২০১১, ৪:০৪ AM
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস