অনেকেই মনে করেন যে, আর্টে বা চারুকলায় বিশ্বে ক্যারিয়ার খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। অনেকেই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, চারুকলাকে যারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ অভাব-অনটনের কারণে। আর এ কারণেই অনেকেই বলে থাকেন, শিল্পী বিশেষ করে চারুকলা শিল্পীদের ভাত নেই। এ অবস্থা শুধু আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য ছিল, তা নয়। উন্নত বিশ্বেও এমন বিরাজমান ছিল। এখন এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন ডিজিটাল মিডিয়ার যুগ বা বিশ্ব যার চালক হলো অতীতের চারুশিল্পী আর বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার। এক্ষেত্রে খুব সহজেই এখন ক্যারিয়ার খুঁজে পাওয়া যাবে। সৃজনশীল ও মেধাবীদের জন্য চারুকলা তথা আর্ট হলো এক চমৎকার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য আদর্শ ক্ষেত্র যেখানে বিরাজ করছে এক তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশ কিংবা বলা যায় সৃজনশীলদের সেরা কর্ম তুলে ধরার আদর্শ ক্ষেত্র। বলা হয়ে থাকে, গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্যাপক বিস্তৃত ক্ষেত্রের কারণে ক্যারিয়ার গড়ার এখন উপযুক্ত সুযোগ। যেকোনো চারুশিল্পী বা আর্টিস্ট তার ক্যারিয়ার হিসেবে এ সেক্টরকে বেছে নিতে পারেন নির্দ্বিধায়। কেননা বর্তমানে এটি বেশ চাহিদাপূর্ণ ও দৃঢ় একটি খাত।
গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি ডিজিটাল মিডিয়াম বা মাধ্যম যার ফোকাস হলো ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন এবং কমিউনিকেশনের ওপর। কিছু কিছু ডিজাইন খুবই সাধারণ কর্পোরেট লোগোর মতো, আবার কিছু কিছু ডিজাইন বেশ জটিল ধরনের এক সিরিজ পূর্ণপৃষ্ঠা প্রিন্ট বিজ্ঞাপন বা ওয়েব ডিজাইন ধরনের। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা প্রকাশের অনেক সুযোগ রয়েছে যেমন, তেমন রয়েছে কাজের স্বাধীনতাও।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তরুণ প্রজন্ম যারা গ্রাফিক্স ডিজাইনকে নিজেদের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাদের অনেকেই বিভিন্ন চুক্তিতে কাজ করছেন। আর তা মূলত তাদের মেধা বা প্রতিভা বিকাশের পথকে রুদ্ধ করে ফেলছে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে এ কথা সত্য, সৃজনশীলতাকে অন্য যেকোনো বিষয়ের জ্ঞানের বা দক্ষতা থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। সাধারণত ডিজাইনারেরা মানসম্মত ও আকর্ষণীয় হৃদয়গ্রাহী কোনো ডিজাইন করার জন্য চূড়ান্ত সময় পর্যন্ত কাজ করে যান। তারা তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করার জন্য ইচ্ছেমাফিক কাজ করতে পারেন, কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়া। গ্রাফিক্স ডিজাইনকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি ইতিবাচক দিক হলো কাজের অর্থাৎ পেশার স্থায়িত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যায়। ডিজিটাল যুগে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে বিশেষ করে ওয়েবপেজে ডিজাইনিংয়ের চাহিদার কারণে। এক্ষেত্রে ব্যাপক চাহিদার কারণে গ্রাফিক্স ডিজাইনারেরা কোনো কোম্পোনিতে স্বাভাবিক নিয়মে নিয়োজিত যেমন থাকতে পারেন তেমনি, থাকতে পারেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে এবং বেছে নিতে পারেন নিজের শিডিউল অনুযায়ী কাজ।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আপনার জন্য প্রধান এবং প্রথম কাজ হবে সঠিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ডিজাইনের ক্ষেত্র বেছে নেয়া। আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে রয়েছে ভালোমানের প্রশিক্ষণসহ চমৎকার শিক্ষার পরিবেশ। সেসব প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। সুতরাং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হবার আগে ভালো করে খোঁজ নিয়ে জেনে নিন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকের যোগ্যতা, মেধা, মনন, শিক্ষার পরিবেশসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনার কী
গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো সাম্প্রতিক সময়ের অতি দ্রুত সম্প্রসারণশীল এক শিল্পকর্ম। পেশাজীবীরা গ্রাফিক্স ডিজাইনে যেমন চান সৃজনশীলতার ছোঁয়া থাকুক, তেমনি চান এক্ষেত্রে থাকুক সাংগঠনিক সুযোগ-সুবিধা, যা গ্রাফিক্স ও ওয়েব ডিজাইনারদের সহায়তা দেবে। বহির্বিশ্ব ছাড়া বর্তমানে আমাদের দেশেও এখন অনেকেরই ওয়েবসাইট রয়েছে বা অন্যভাবে বলা যায় ওয়েবে উপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং তা ক্রমশ বাড়ছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনে ক্যারিয়ারকে মোটেও হাল্কাভাবে নেয়া উচিত হবে না। গ্রাফিক্স ডিজাইনের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোকে গুরুত্বের সাথে নিতে চান, তাহলে সবচেয়ে জরুরি হলো আপনার দক্ষতা ও সৃজনশীলতার ওপর ভিত্তি করে ডিজাইন তৈরি করা এবং সবচেয়ে সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়ার মনোবাসনা থাকা। আমাদের সবারই মনে থাকা দরকার সুনাম এবং সেবার মান যেকোনো ধরনের ক্যারিয়ারের সফলতার চাবিকাঠি।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের শিক্ষা
বর্তমান অর্থনীতিতে কাজ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হলেও যেগুলো সৃজনশীলতার জন্য পুরস্কৃত হতে হয় এমন কাজ সচরাচর পাওয়া যায়, তা বিশ্বাস করা কঠিন। গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি স্থিতিশীল এবং দ্রুত সম্প্রসারণশীল শিল্প। বিশ্বের প্রতিটি একক সংস্থাকে কোনো না কোনো সময় গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাছে ধর্ণা দিতে অর্থাৎ শরণাপন্ন হতে হয় তাদের কর্পোরেট লোগো, বিজ্ঞাপনের লেআউট, ওয়েব ডিজাইন বা বিপুলসংখ্যক ফরমের ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন ও প্রেজেন্টেশনের জন্য। লক্ষণীয়, ডিজিটাল যুগে গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা কখনই সেকেলে হয়ে যান না বা কর্মহীন হয়ে হতাশায় ভোগেন না। ইদানীং ডিজিটাল মিডিয়া এনভায়রনমেন্টের ধরন-প্রকৃতির কারণে সম্ভাব্য গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য দরকার হয় শৈল্পিক প্রতিভার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর পড়াশোনা ও বিভিন্ন সফটওয়্যারের ওপর দক্ষতা। যেকোনো গ্রাফিক্স ডিজাইন স্কুল থেকে ভালোভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে যথাযথভাবে নিজেকে প্রস্ত্তত করে বর্তমান ডিজাইন মার্কেটে সম্পৃক্ত করা উচিত। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ছাত্রদেরকে শিখতে হবে এইচটিএমএল, জাভাসহ অন্যান্য ওয়েব ডিজাইন সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন, যাতে বেসিক কোডিং ও ওয়েব ডিজাইনে সক্ষমতা অর্জন করা যায়। এতে গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা বাড়তি সুবিধা পাবেন ফ্রিল্যান্স মার্কেটে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের বাজার চাহিদা নির্ভর করে মূলত দুটি প্রধান উপাদানের ওপর। গ্রাফিক্স ডিজাইনে প্রতিভাদের সাথে মিশে আছে অনেক ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রফেশনাল, যেমন- ভিডিও গেম, বিজ্ঞাপন, খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন, ওয়েবসাইট ডিজাইনসহ আরো অনেক। বলা যায়, গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের বেতন আইটি খাতের অন্য প্রফেশনালদের তুলনায় বেশ কম। তারপরও এ ক্ষেত্রে প্রফেশনালদের সবচেয়ে সুবিধা হলো গ্রাফিক্স ডিজাইনে প্রফেশনালদের চাকরি আইসিটি খাতের অন্যান্য সেক্টরের মতো তেমন অস্থায়ী এবং অনিশ্চয়তাপূর্ণ নয়। কেননা ইন্টারনেট বর্তমানে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অংশে পরিণত হওয়ায় গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদাও ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। তা আগামী দিনেও বাড়তে থাকবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের মধ্যে প্রচুর প্রতিযোগিতা থাকলেও গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রফেশনালেরা কখনই বেকার হয়ে থাকবেন না।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজ
গ্রাফিক্স ডিজাইনারেরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সৃষ্টি করেন ভিজ্যুয়াল ইমেজ, যা সমস্যার সমাধান করে কিংবা কমিউনিকেট করে এক মেসেজ। ইদানীং গ্রাফিক্স ডিজাইনারেরা ব্যবহার করেন কমপিউটার সফটওয়্যার। মূলত তাদের সৃষ্ট কর্মের ইলেক্ট্রনিক ভার্সন তৈরি করতেই এই কমপিউটার ও সফটওয়্যারের ব্যবহার হয়। অনলাইন মিডিয়ায় বা প্রিন্ট মিডিয়ায় গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা নিয়োজিত হতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন ধরনের কাজের উদ্দেশ্যে। গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের দক্ষতা হলো ইমেজ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ডিজাইন সফটওয়্যার ব্যবহারের সক্ষমতা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের থাকতে হবে ইউনিক, কার্যকর ডিজাইন তৈরির সক্ষমতা যা প্রজেক্টের উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারে।
কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা অনেক সময় প্রয়োজনবোধে ক্লায়েন্টের সাথে মতবিনিময় করেন তাদের প্রজেক্ট নিয়ে। যদি ওয়েবসাইটের ডিজাইন তৈরির কাজ হয়ে থাকে, তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা ক্লায়েন্টের কাছ থেকে জেনে নিয়ে ওয়েবপেজের লেআউট তৈরি করার জন্য সিলেক্ট করেন কালার, ইমেজ, টেক্সচার ও শেপ। কমপিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাফিক্স ডিজাইনারেরা ওয়েবসাইটের জন্য টেম্পলেট তৈরি করেন।
বর্তমানে ওয়েবসাইট ডিজাইন একটি ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে, যেখানে গ্রাফিক্স ডিজাইনারেরা ওয়েব পেজের লেআউট তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। এই ইন্ডাস্ট্রিতে আরো যেসব বিষয় সম্পৃক্ত থাকে তা নিম্নরূপ : ভিডিও গেম ডিজাইন, বিজ্ঞাপন, ব্র্যান্ডিং, সাংবাদিকতা, পত্রিকা বা ম্যাগাজিনের লেআউট তৈরিসহ অন্যান্য বিষয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বোচ্চ বেতন : গ্রাফিক্স ডিজাইন ক্ষেত্র দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। নতুন নতুন টেকনোলজি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৃষ্টি করছে নতুন নতুন চাহিদা। গ্রাফিক্স ডিজাইন তেমন এক চাহিদাসম্পন্ন টেকনোলজি ক্ষেত্র, যা অতীতে ছিল শুধু আর্টিস্টকেন্দ্রিক। ইন্ডাস্ট্রিতে এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কাজ বা চাকরি রয়েছে যার জন্য দরকার মাল্টিমিডিয়া ও বিভিন্ন ধরনের কমপিউটার সফটওয়্যার কাজে দক্ষতা, যারা কাজ করবেন মার্কেটিং ও প্রমোশনাল ম্যাটেরিয়াল, মিউজিক, ভিডিও, প্রিন্টেডে ডকুমেন্ট, ওয়েবপেজসহ আরও অনেক ক্ষেত্র নিয়ে। গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের ক্ষেত্রে সম্প্রতি আরও একটি মাধ্যম যুক্ত হয়েছে। তা অনেক দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নতুন এ মাধ্যমে যেকেউ কাজ করতে পারেন যেমন- ইন্টারেক্টিভ মিডিয়া অর্থাৎ ওয়েব ও মোবাইল ফোন ইত্যাদি।
গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়ার কয়েকটি কারণ
গ্রাফিক্স ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রি ক্রমসম্প্রসারণশীল ইন্ডাস্ট্রি :
সব ইন্ডাস্ট্রির যে ক্রমোন্নতি হয় তা নয়, যেহেতু আমাদের অর্থনীতি এবং জীবনধারা পরিবর্তনশীল। তাই কখনো কখনো কোনো কোনো পেশা সেকেলে বা বাতিল হয়ে গেলেও গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে না। ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকের পরিসংখ্যানমতে জানা যায়, ২০১৮ সাল পর্যন্ত গ্রাফিক্স ডিজাইনের অবস্থান কমপক্ষে ১৩ শতাংশ বাড়বে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা প্রতিযোগিতামূলক বেতন পান : c
আর্ট কলেজের ডিগ্রিধারীদের রয়েছে কমপিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইনের অভিজ্ঞতা তাদের স্টার্টিং বেতন আমাদের দেশে ক্ষেত্রবিশেষে ন্যূনতম ২০,০০০ টাকা, আর আমেরিকায় ১৬,০০০-২০,০০০ ডলার। অবশ্য আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব গ্রাফিক্স আর্টের ২০০৮ সালের তথ্যমতে শুরুতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের গড় বেতন ৩৫,০০০ ডলার।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের সম্ভাব্য পদোন্নতি :
বেশিরভাগ গ্রাফিক্স ডিজাইনার তাদের ক্যারিয়ার শুরু করেন এন্ট্রি লেভেলের ডিজাইনার হিসেবে বা গ্রাফিক্স ডিজাইন অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে। অবশ্য তাদের এ অবস্থান বেশিদিন স্থায়ী হয় না। গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা ২/৩ বছরের মধ্যে তাদের দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে পদোন্নতি লাভ করতে পারেন খুব সহজেই। কেননা এক্ষেত্রে এখনো জনবল খুব কম।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের নমনীয়তা :
গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা স্বতন্ত্র বিভিন্ন ধরনের কাজের উপযোগী। যদি আপনি অন্যদের সাথে কাজ করতে উপযোগী হয়ে থাকেন, তাহলে ডিজাইন ফার্মে কাজ করতে পারবেন ডিজাইনার টিমের সাথে। এক্ষেত্রে আপনার সারাদিন কেটে যাবে ব্রেইনস্ট্রিমিংয়ের সেশনের কাজে। এছাড়া ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইন এক চমৎকার ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিতে পারেন যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনে অভিজ্ঞ ও সৃজনশীল হয়ে থাকেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন সৃজনশীল :
গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আপনাকে সবসময় নতুন কিছু করতে হয়, নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করতে হয়, নতুন নতুন ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে হয়। ভালো ও সৃজনশীল গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা তাদের ক্লায়েন্টদের সাথে ভিজ্যুয়ালি কমিউনিকেট করার নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি ধৈর্যের কাজ, মোটেও তা বিরক্তিকর নয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা সৃষ্টি করতে পারেন ভিন্নতা :
ছবি হাজার কথা বলে। কিছু গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা তাদের কর্মে ছবি ব্যবহার করেন ভিন্ন পরিবেশ সৃষ্টি করতে, যা জীবন্ত করে ফুটিয়ে তুলতে পারে পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা বিখ্যাত হতে পারেন :
পুরনো দিনের আর্টিস্টের কাজ আজকের যুগের গ্রাফিক্স ডিজাইনার দিয়ে সম্পন্ন করা হচ্ছে অনেকখানি। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আপনি নিজেকে তুলে ধরতে পারেন। এর ফলে পরে হয়তো হয়েও যেতে পারেন বিখ্যাত কোনো শিল্পী। পাবলো পিকাসো, ভ্যান গগ, জয়নুল আবেদিন প্রভৃতি শিল্পী তাদের সৃজনশীল শিল্পকর্ম দিয়ে যেমন জগৎখ্যাত হয়েছেন তেমনি আপনিও আধুনিক গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে আপনার সৃজনশীল অভিব্যক্তি তুলে ধরে জগৎখ্যাত হাতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাফিক্স ডিজাইনারের বার্ষিক বেতনের চার্ট নিচে দেখানো হয়েছে, যা ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিক্স ওইএম-২০০৮-এ প্রকাশ করা হয়। এ চার্টে শীর্ষ পাঁচ ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ গড় বেতন কমপিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইনার থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন গড় বেতন প্রিন্টিং গ্রাফিক্স ডিজাইনারের তুলনামূলক চিত্র দেখানো হয়েছে। গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা কমপিউটারে আর্ট লেআউট, ইন্টারনেট, প্রিন্ট অ্যাডভার্টাইজিং ম্যাটেরিয়াল, খবরের কাগজ, বই ছাপা, ভিডিও তৈরি ইত্যাদিসহ অনেক কাজ করেন। এছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইনারেরা আরো অগ্রসর পর্যায়ে, কাজ করতে পারেন সফটওয়্যার ব্যবহার করে। যেমন- স্পেশাল ইফেক্ট, অ্যানিমেশন ইন্টারেক্টিভ টেকনোলজি ও গেম ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : swan5200@yahoo.com