২০০০ সালে জন্ম নেয়া ডেওস ইএক্স গেম সিরিজ প্রথম গেমটি বেশ সাড়া ফেলেছিল। এরপর ২০০৩ সালে বের হলো তার দ্বিতীয় পর্ব, যা বছরের সেরা গেমগুলোর তালিকায় ছিল। অন্য নামকরা ফার্স্ট পারসন শূটিং গেমগুলোর ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছিল এ সিরিজের গেমগুলো। কিন্তু হঠাৎ করেই তা আবার উদয় হলো এ বছরে নতুন এক রূপে, যা বেশ নাম করেছে। রোমহর্ষক গেম ট্রেইলার দেখে গেমটি হাতে পাওয়ার জন্য গেমাররা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। তাদের অপেক্ষার পালা শেষ করে গত মাসে গেমটি বাজারে এসেছে। প্রথম দুটি গেমের ডেভেলপার ছিল ইয়ন স্ট্রম ইঙ্ক এবং পাবলিশার ছিল ইডিওস ইন্টারঅ্যাক্টিভ। গেমগুলো ডেভেলপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল আনরিয়েল ইঞ্জিন। কিন্তু নতুন গেমের ক্ষেত্রে অনেক ব্যতিক্রম ঘটেছে। ডেওস ইএক্স-হিউম্যান রেভ্যুলুশন গেমটি যৌথভাবে ডেভেলপ করেছে ইডিওস মন্ট্রেয়াল ও নিক্সেস সফটওয়্যার এবং গেম ডেভেলপে গেম ইঞ্জিন ও টুলস দিয়ে সাহায্য করেছে ক্রিস্টাল ডায়নামিক্স। গেমটি পাবলিশ হয়েছে স্কয়ার ইনিক্সের অধীনে। গেমটি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে ক্রিস্টাল ইঞ্জিনের উন্নত রূপ। গেমের ডিজাইনার জিয়ান ফ্রাঙ্কোয়িস ডুগাস ও ডেভিড অ্যানফসসি। গেমটি কম্পোজ করেছেন মাইকেল ম্যাককান। গেমটি সায়েন্স ফিকশনভিত্তিক ফার্স্ট পারসন শূটিং গেম।
গেমের প্রধান চরিত্র হচ্ছে ৩৪ বছর বয়সের লম্বা ও সুঠামদেহী অ্যাডাম জেনসেন। সে সোয়াট টিমের সদস্য ছিল। বেশ কম সময়ে দক্ষতার বলে সে নিজেকে কমান্ডারের পদে বহাল করতে পেরেছিল, কিন্তু বিধিবাম। এক মিশনে কাজের ব্যাপারে অসম্মতি জানানোয় তাকে বরখাস্ত করা হয়। তাই সে চাকরি নেয় উত্তর আমেরিকার বিখ্যাত একটি বায়োটেকনোলজি কোম্পানিতে, যার নাম সারিফ ইন্ড্রাস্টিজ। কোম্পানিটিতে বেশ কিছু গোপনীয় রিসার্চ চলছে, তাই তার সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত জেনসেন। হঠাৎ করে একদল ব্ল্যাক অপস টিম ল্যাবে হামলা চালিয়ে মেরে ফেলে অনেক বিজ্ঞানী ও নষ্ট করে দেয় রিসার্চের কাজ। শত্রুপক্ষের হাত থেকে ল্যাবটি রক্ষা করার সময় জেনসেন মারাত্মকভাবে আহত হবে। তার বাঁচা-মরা নিয়ে প্রশ্ন জাগবে ডাক্তারদের মনে। তখন তারা ঠিক করে তাকে মেকানিক্যাল বডি পার্টস যুক্ত করে নতুন জীবন দান করবে। বায়োনিক ম্যান হিসেবে তাকে গড়ে তোলা হবে। পূর্বের দক্ষতার পাশাপাশি বায়োমেকানিক্যাল টেকনোলজির ফলে সে হয়ে উঠবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
ফার্স্ট পারসন শূটিং গেমের পাশাপাশি গেমটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে অসাধারণ এক অ্যাকশন গেম ও রোল প্লেয়িং গেমের ধাঁচ। কমব্যাট, স্টিলথ, হ্যাকিং ও স্যোশাল- এ চার ধরনের কাজ করতে হবে গেমারকে। নানা রকমের অস্ত্রের সাহায্যে মোকাবেলা করতে হবে শত্রুর, গোপনে শত্রুর চোখ ফাঁকি দিয়ে হানা দিতে হবে শত্রু শিবিরে, চলতি পথে বাধা পার করতে পাসওয়ার্ড হ্যাক ও তালা খোলার কাজ করতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের লোকের সাথে মেলামেশা করে তাদের সাথে সম্পর্কে জেনে তাদের নিজের মিশনের কাজে ব্যবহার করতে হবে। গেমের শুরুর দিকে গেমটি সাদামাটা মনে হলেও পরের দিকে গেমটি বেশ দুর্ধর্ষ হয়ে উঠবে। উত্তেজনায় গেমারের ঘাড়ের রোম খাড়া করে দেওয়ার মতো একটি গেম ডেওস ইএক্স। গেমের গ্রাফিক্স ও সাউন্ড সিস্টেমের মান ভালোই বলা চলে।
গেমটি চালানোর জন্য মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট হচ্ছে- ২ গিগাহার্টজের ডুয়াল কোর প্রসেসর, এক্সপির জন্য ১ গিগাবাইট ও ভিসতা/সেভেনের জন্য ২ গিগাবাইট র্যালম, এনভিডিয়া জিফোর্স ৮০০০ সিরিজ বা এটিআই রাডেওন এইচডি ২০০০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড এবং ৮.৫ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস। গেমটি ভালোভাবে চালানোর জন্য রিকমেন্ডেড সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট হচ্ছে- উইন্ডোজ সেভেন, ইন্টেল কোর টু কোয়াড বা এএমডি ফেনম ২ এক্সফোর প্রসেসর, ২ গিগাবাইট র্যা ম, এনভিডিয়ার সেকেন্ড জেনারেশন গ্রাফিক্স কার্ড বা এএমডি রাডেওন এইচডি ৫৮৫০ গ্রাফিক্স কার্ড।