• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিটিআইটি ফেয়ার শুরু
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কাজী সামছুদ্দিন আহমেদ লাভলু
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সিটি আইটি
তথ্যসূত্র:
মেলা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিটিআইটি ফেয়ার শুরু


বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দশ দিনের বিসিএস কমপিউটার সিটির ‘সিটি আইটি ফেয়ার ২০১১-১২’। ‘Generating the new era’ স্লোগান নিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মেলা। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তির এই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয় বিসিএস কমপিউটার সিটির নিচতলায় নিজস্ব মঞ্চে। বিসিএস কমপিউটার সিটির সভাপতি এটি শফিক উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে যে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছে, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পেছনে অন্যতম মূল লক্ষ্য একটি বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন করা। একই সাথে বর্তমানে যে ডিজিটাল ডিভাইড তৈরি হয়েছে, তাও দূর করা। সেই লক্ষ্যেই সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সব ক্ষেত্রে তথ্যকে সহজে পৌঁছে দিতে কাজ করছে সরকার। শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও তথ্যপ্রযুক্তির সেবা ও সুবিধা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সরকার বদ্ধপরিকর।’ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য পূরণ করতে বিসিএস কমপিউটার সিটি আয়োজিত এই ধরনের মেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আফতাব উল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিসিএস কমপিউটার সিটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। এই বিশাল কমপিউটার বাজার দেশে তথ্যপ্রযুক্তিকে সুলভ ও সহজলভ্য করে তুলতে রেখেছে অন্যতম প্রধান ভূমিকা।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মেলার প্লাটিনাম স্পন্সর বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির নানা আয়োজনে বাংলালায়ন সবসময়ই এগিয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা এ ধরনের আয়োজনে এগিয়ে থাকবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তথা আইএসপিএবি সভাপতি আক্তারুজ্জামান মঞ্জুকে বিসিএস কমপিউটার সিটির পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়।

বিসিএস কমপিউটার সিটি তার প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রতিবছর বার্ষিক মেলা এবং বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কর্মকান্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে একটি সক্রিয় ‘হাব’ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিসিএস কমপিউটার সিটির প্রত্যেকটি মেলায় দেশের ক্রেতাসাধারণের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার থাকে। এবার আরও বৈচিত্র্যময় এবং নতুন আঙ্গিকে ‘সিটি আইটি ফেয়ার’ আয়োজন করা হয়। বিসিএস কমপিউটার সিটির প্রায় এক লাখ পঞ্চাশ হাজার বর্গফুট আয়তনের সুপরিসর এলাকা নিয়ে এই মেলায় অংশ নেয় প্রায় ১৬০টি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তির অতিপরিচিত পণ্যগুলো প্রদর্শনসহ সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়। বিশ্বখ্যাত প্রায় সব ব্র্যান্ডের কমপিউটার, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার পণ্যসামগ্রী, নেটওয়ার্ক ও ডাটা কমিউনিকেশন পণ্য, মাল্টিমিডিয়া ও আইসিটি শিক্ষা উপকরণ, ল্যাপটপ ও পামটপসহ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সব ধরনের পণ্য ও সেবার প্রদর্শনে ছিল বিশেষ প্যাভিলিয়ন।



দেশের অন্যতম বৃহৎ এই আয়োজন যেনো শুধু প্রযুক্তিপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, সেই লক্ষ্যে মেলায় ছিল একটি নলেজ ম্যানেজমেন্ট জোন, যেখানে দেশের তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি, বিখ্যাত সব আবিষ্কার, বিশ্বের নামকরা সব আইটি ব্যক্তিত্বসহ কমপিউটার ও আইসিটিসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়কে স্কুল শিক্ষার্থীসহ আইটিপ্রেমীদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। এর পাশাপাশি মেলা চলাকালে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তথ্যপ্রযুক্তি, ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির নানা দিক নিয়ে বিশেষ সেমিনার ও আলোচনা। মেলার নিজস্ব মঞ্চে প্রতিদিন এসব আলোচনা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বরেণ্য তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা এসব আয়োজনে অংশ নেন। এ ছাড়া মেলা চলাকালে প্রতিদিনই ছিল তথ্যপ্রযুক্তিকে সাধারণ মানুষ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়ার বিশেষায়িত অনুষ্ঠানসহ ক্যুইজ প্রতিযোগিতা।

মেলায় ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির সহায়তায় ফ্রি ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ ছিল দর্শনার্থীদের জন্য। মেলার প্লাটিনাম স্পন্সর বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ মেলা প্রাঙ্গণে ছিল ফ্রি ওয়াইম্যাক্স জোন, যা মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে ব্যবহার করেন।

এবারের মেলায় ছিল গুণিজন সংবর্ধনা এবং বিশিষ্ট অতিথিদেরকে ক্রেস্ট দেয়া। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ছিল শিশু চিত্রাঙ্কন, গেমিং, ডিজিটাল ফটোগ্রাফি, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতাসহ রক্তদান কর্মসূচি। প্রতিদিন প্রবেশ টিকেটের ওপর র্যা ফেল ড্রর মাধ্যমে দেয়া হয় আকর্ষণীয় পুরস্কার।

মেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে তৃতীয় তলায় বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নের পাশে ছিল একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনী কেন্দ্র। এখানে প্রতিদিন তিনটি করে মুক্তিযুদ্ধের ওপর চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এই তিনটি চলচ্চিত্রের মধ্যে দুটি সবার জন্য ছিল উন্মুক্ত। আর প্রতিদিন বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’। এটি দেখার জন্য অবশ্য ২০ টাকা দর্শনী প্রদান করতে হয়।

মেলায় সাধারণ ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য ছিল তথ্যবিষয়ক মিডিয়া সেন্টার এবং প্রতিনিয়ত ক্রেতাসাধারণের জন্য বিভিন্ন পণ্যের ওপর বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফারের সর্বক্ষণিক ঘোষণা। এবারই প্রথমবারের মতো দর্শনার্থীদের টিকেট কেনার সময় আকর্ষণীয় গিফট হ্যাম্পারের ব্যবস্থা করা হয়। মেলায় প্রত্যেকটি ইভেন্ট, প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য তথ্য প্রতি ১০-১৫ মিনিট পরপর ওয়েব মিডিয়ার মাধ্যমে আপগ্রেড করা হয়। আরও ছিল দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠান।

এবারের মেলার প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে ছিল ওয়াইম্যাক্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেড। এ ছাড়া গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ছিল তথ্যপ্রযুক্তির পরিচিত ব্র্যান্ড এসার, এনওসি এবং তোশিবা। মেলার মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দৈনিক ইত্তেফাক, টেলিভিশন পার্টনার এটিএন বাংলা, এবং রেডিও পার্টনার এবিসি রেডিও।

মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ছিল ১০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে মেলায় বিনামূল্যে প্রবেশ করে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করে। মেলা ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা ছিল।



কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : abir59@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস