লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মোহাম্মদ ইশতিয়াক জাহান
ইমেইল:rony446@yahoo.com:
মোট লেখা:৮৮
লেখা সম্পর্কিত
নেট সাপোর্ট স্কুল টুল
বিভিন্ন ছোটখাটো থেকে শুরু করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপনী বার্তার মাধ্যমে উল্লেখ করে থাকে যে, কমপিউটারের মাধ্যমে এই সুবিধা দিচ্ছে, ওই সুবিধা দিচ্ছে এমন অনেক। কিন্তু এসব কাজের মধ্যেই কমপিউটারের ব্যবহার সীমাবদ্ধ নয়। বর্তমানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ট্রেনিং সেন্টার কমপিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা করছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ট্রেনিং সেন্টার দূর থেকে ল্যাবের ছাত্রছাত্রীদের ওপর বিশেষ নজর দিচ্ছে ও ভালো সার্ভিস দেয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রিমোট লোকেশন বা রিমোট পিসি থেকে অন্য কমপিউটার ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজন রিমোট পিসি টুল। বাজারে রিমোট কমপিউটারে অ্যাক্সেস করার জন্য বিভিন্ন ধরনের রিমোট টুল রয়েছে। এমনই একটি টুল হচ্ছে নেট সাপোর্ট স্কুল টুল। এই টুলের কার্যপ্রণালী ব্যাপক, যা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেক ধরনের কোম্পানি তা ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক ট্রেনিং সেন্টার থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এই টুল ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে এবং ভালো শিক্ষা দেয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নেট সাপোর্ট স্কুল টুলের ফিচারগুলোর সবার সাথে শেয়ার করার জন্য এবারের সংখ্যায় এই টুলের ওপর আলোচনা করা হয়েছে।
প্রশ্ন করতে পারেন, এ ধরনের টুলের প্রয়োজন কেনো? এর উত্তরে বলতে হচ্ছে, প্রায় সময় দেখা যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু ছাত্র পড়া বা ল্যাবের প্রতি মনোযোগ না দিয়ে পেছনে বসে গেম খেলা, ইন্টারনেট ব্যবহার করা থেকে শুরু করে আরো নানা ধরনের কাজ করে থাকে। তাই বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিন্তায় পড়ে যায় কিভাবে ছাত্রদেরকে সহজেই ম্যানেজ করে ভালো শিক্ষা দেয়া যায়। তাই বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান রিমোট পিসি ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার করছে। এই টুল ব্যবহারের সুবিধা হচ্ছে- এটি দিয়ে একজন শিক্ষক তার কমপিউটার থেকে ছাত্রদের কমপিউটারকে মনিটর করতে পারবে।
নেট সাপোর্ট স্কুল হচ্ছে ক্লাসের ট্রেনিং নেয়ার জন্য এমন একটি সফটওয়্যার বা টুল, যা ব্যবহার করে একজন শিক্ষক ছাত্রদেরকে একা বা গ্রুপের মাধ্যমে শিক্ষাদান করতে পারেন এবং ছাত্রদের কমপিউটারকেও মনিটর করতে পারেন।
নেট সাপোর্ট স্কুল টুলটি ব্যবহার করে একসাথে ক্লাসরুমের অনেকগুলো কমপিউটারকে মনিটর করা যাবে, বিভিন্ন ধরনের রিয়েল টাইম প্রেজেন্টেশনে ব্যবহার করা যাবে। তা ছাড়া ইন্টারনেট ও অ্যাপ্লিকেশন কন্ট্রোল করতে, রিয়েল টাইম অডিও মনিটরিং, অটোমেটেড লেসন প্লান, প্রিন্টার ম্যানেজমেন্ট, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেঞ্জার কন্ট্রোল, কনটেন্ট মনিটর, ডেস্কটপ সিকিউরিটিসহ আরো বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেয়া যাবে। তা ছাড়া বর্তমানে আধুনিক ক্লাসরুম হিসেবে কিভাবে ল্যাবকে তৈরি করে ছাত্রদের ভালো শিক্ষা দিয়ে যাবে তা জানার জন্য নিচের ধাপগুলো খেয়াল করুন :
শক্তিশালী ক্লাসরুম ম্যানেজমেন্ট :
একজন শিক্ষক তার কমপিউটারে বসে থেকেই ল্যাবের সব কমপিউটারের পাওয়ার অন-অফ করতে পারবেন। রিমোট পজিশন অর্থাৎ তার কমপিউটার থেকে এক ক্লিকের মাধ্যমে এক বা একাধিক ছাত্রের কমপিউটারে লগঅন বা লগঅফ করতে পারবেন। ক্লাসের পড়ার সময় ছাত্রছাত্রীরা যাতে অন্য কাজ করতে না পারে তার জন্য তাদের কিবোর্ড ও মাউসকে লক করে দিতে পারবেন। অন্যদিকে কোনো ছাত্রের কমপিউটার রিস্টার্ট হলে তা আবার এই টুলের সাথে রি-কানেক্ট হয়ে যাবে। এসব সুবিধার সাথে আরো বিভিন্ন ধরনের সুবিধা অ্যাক্সেস করা যাবে এই টুলের মাধ্যমে।
প্রিন্টার ম্যানেজমেন্ট :
ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা যেনো প্রিন্টার ব্যবহার করতে না পারে এর জন্য প্রিন্টার অপশন বন্ধ করে রাখতে পারবে বা কিছুসংখ্যক ছাত্রছাত্রীর সাথে প্রিন্টার শেয়ার করতে পারবে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা ইচ্ছে করলেই প্রিন্ট দিতে পারবে না, এর জন্য শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে। এ ধরনের সুবিধাসহ প্রিন্টার সংশ্লিষ্ট আরো সুবিধা রয়েছে এই টুলে।
ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট :
শিক্ষক তার কমপিউটার থেকে ছাত্রছাত্রীর ইউএসবি ডিভাইসের পোর্ট, সিডিরম/ডিভিডিরম, নেটওয়ার্ক কানেকশন এনাবল বা ডিজ্যাবল করে রাখতে পারবেন।
ছাত্রের রেজিস্ট্রার :
ক্লাসের ছাত্রদের উপস্থিতির রেকর্ড জেনারেট করে তা কমপিউটারে স্টোর করে রাখা যাবে এই টুল ব্যবহার করে।
ইন্টারেক্টিভ লেসন প্লান :
শিক্ষক তার কমপিউটারে বসে আগে থেকে তৈরি করা পড়া ও রিসোর্সগুলো সহজেই সব ছাত্রছাত্রী ও অন্যান্য শিক্ষকের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।
স্টুডেন্ট ইনস্ট্রাকশন :
শিক্ষক তার কমপিউটারে বসে ছাত্রছাত্রীদের সাথে তার ডেস্কটপ শেয়ার করতে পারবেন বা বাছাই করা কিছুসংখ্যক ছাত্রছাত্রীর সাথে শিক্ষকের কমপিউটারের স্ক্রিনকে শেয়ার করতে পারবেন। সাথে একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার ওই সব সিলেক্টেড ছাত্রছাত্রীদেরকে দেখাতে পারবেন। আগের সেশন যদি রেকর্ড করা থাকে তাও রিমোট পজিশনে থেকে শিক্ষক তার ছাত্রছাত্রীদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।
অ্যাপ্লিকেশন মিটারিং ও কন্ট্রোল :
ক্লাসের সব ধরনের অ্যাপ্লিকেশনকে (যেমন : যেসব অ্যাপ্লিকেশন খোলা হয়েছে বা বন্ধ করা হয়েছে) মনিটর করা যাবে।
ইন্টারনেট মিটারিং ও কন্ট্রোল :
ওয়েবসাইট ব্লক, কিছু সংখ্যক ওয়েবপেজকে ব্যবহারযোগ্য রেখে বাকি সব ওয়েবসাইটকে ব্লক করে রাখা যাবে এই টুল ব্যবহার করে।
গ্রুপ চ্যাট :
বিভিন্ন ধরনের চ্যাটিং যেমন টেক্সট বা অডিও চ্যাটিং একসাথে করা যাবে, যার সবকিছু শিক্ষকের কমপিউটারের আওতায় থাকবে।
অন্যান্য :
ওপরে আলোচনা করা সুবিধাগুলো ছাড়াও রয়েছে ইনস্ট্যান্ট সার্ভে, পোর্টেবল টিউটর, টেস্টিং ও কুইজ মডিউল, ওয়্যারলেস সাপোর্ট এবং সিকিউরিটি।
ওপরে আলোচনা করা বিষয়গুলো ছাড়াও এর রয়েছে আরো অনেক বেশি সুবিধা। যদি এই টুলটি ব্যবহার করেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন এর সুবিধা কতটা এবং একসাথে ক্লায়েন্ট বা ছাত্রছাত্রীর বা নেটওয়ার্কের অনেক কমপিউটারকে রিমোট স্থান থেকে মনিটর করতে পারবেন। এখানে একটি বিষয় মনে রাখবেন, এই টুলের সিকিউরিটি ফিচারের সুবিধা ব্যাপক, তাই সিকিউরিটি অংশটি ভালোভাবে জেনে ব্যবহার করতে ল্যাবের আরো সুরক্ষা দেয়া সম্ভব।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : rony446@yahoo.com