• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > আইসিটি সহায়ক অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন উদ্ভাবন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: ভাস্কর ভট্টাচার্য
মোট লেখা:২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রতিবেদন
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
আইসিটি সহায়ক অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন উদ্ভাবন
আইসিটি সহায়ক অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন উদ্ভাবন
দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণী
ভাস্কর ভট্টাচার্য/শর্মিষ্ঠা আচার্য্য

মতপ্রকাশ ও সিদ্ধান্ত নেয়ায় সহায়ক তথ্য সন্ধান, পাওয়া ও বিনিময় যেকোনো মানুষের মৌলিক অধিকার। নাগরিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর গুরুত্ব অপরিসীম। এক্ষেত্রে অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন তথা এটুআই প্রধান ভূমিকা পালন করছে। এটুআই হচ্ছে একটি মাল্টি স্টেকহোল্ডার মডেল এর মাধ্যমে সরকার, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে তথ্যে প্রবেশ নিশ্চিত হচ্ছে।

জননিরাপত্তা উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য ভূমিকা প্রচারে আইসিটির গুরুত্ব অনেক। জনসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও অধিক দায়িত্বশীল সরকার ব্যবস্থা চালু এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এসব নতুন প্রযুক্তির সুফল পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে। যেমন¬- শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনয়ন, সিদ্ধান্ত নেয়ায় নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, জনসেবা দান-পদ্ধতির উন্নয়ন প্রকারান্তরে সার্বিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন।

জনসেবা জোগানো ও গণতন্ত্র চর্চা উন্নয়নে স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য তথ্য পাওয়ার অধিকার অপরিহার্য। আর এই লক্ষ্যে One World Foundation India (OWFI) ও World Bank Institute (WBI) যৌথভাবে এটুআই’র আইসিটি সহায়ক উদ্ভাবনাগুলোর ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে।

উদ্ভাবনগুলো
দেড়শ কোটি মানুষের এই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ অধিবাসী নিরক্ষর, অতিদরিদ্র ও প্রযুক্তির ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যও তাদের হাতে নেই। তথ্যের সাথে জনসাধারণের এই দূরত্ব মোচনে ভারত সরকারের নেয়া ‘রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট’ ভূমিকা অপরিসীম। এর মাধ্যমে তথ্য পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই অ্যাক্টের অন্তর্ভুক্ত আইসিটি সহায়ক উদ্ভাবনাগুলোর ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় ভারত থেকে পাঁচটি ও বাংলাদেশ থেকে দু’টি এই মোট সাতটি উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

জনকরি
ভারতবর্ষের বিহার রাজ্যে প্রাথমিকভাবে পরিচালিত Jaankari initiative এক প্রকারের অনলাইন তথ্যভান্ডার। রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্টের আওতায় অনুন্নত ও অনগ্রসর জনপদ Jaankari initiative-এর মাধ্যমে সরকারি পর্যায়ের যেকোনো তথ্য সহজেই পেতে পারছে। আরটিআইর রিকোয়েস্টগুলো পুনর্বিন্যাসের উদ্দেশ্যে রাজ্যভিত্তিক কলসেন্টার স্থাপন ও সম্মিলিত ওয়েবপোর্টাল গঠন করা হয়েছে। টেলিফোন ও অনলাইনে আবেদনপত্র জমা, অনুসন্ধান ও অভিযোগ দায়েরের মধ্য দিয়ে এর সফল বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাই। সময়ের অপচয় ও বিড়ম্বনার হাত থেকে জনসাধারণ এখন অনেকখানি মুক্ত। তবে এই সেবা নেয়ার জন্য জনসাধারণকে প্রযুক্তির ব্যবহারে অভিজ্ঞ হতে হবে।

http://biharonline.gov.in/RTI

আইসিটি ইকোসিস্টেম
রাজস্থান রাজ্যে পরিচালিত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দান। এর চারটি মূল উপাদান হলো Soochona Seba Kendro (info kiosk)। এটি বহনযোগ্য ও বায়োমেট্রিকভাবে সক্রিয় ও জিপিএসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত অ্যাটেনডেনস ট্র্যাকিং টুল আ্যপ্লিকেশন; কমিউনিটি রেডিও ও এসএমএস জব কার্ড। এটি একটি সহজে ও স্বল্প খরচে ব্যবহারোপযোগী ওয়েবপোর্টাল। এর ব্যবহার চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে ঘটিত দুর্নীতি অনেকাংশে কমিয়েছে। জনসাধারণ এই প্রযুক্তি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, তবে এর ব্যবহার সম্পর্কে নয়। সুতরাং জনসচেতনতা আবশ্যক।

ডেইজি ফর অল
ডেইজি তথা ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবল ইনফরমেশন সিস্টেম কমপিউটারভিত্তিক বহুমাত্রিক মাধ্যমের জন্য একটি উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক মানদন্ড। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, ডাইলেক্সিক ও মুদ্রণ প্রতিবন্ধীদের সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ডেইজি কনসোর্টিয়াম সারা দুনিয়ায় তথ্য ও জ্ঞান দেয়া-নেয়ায় প্রতিবন্ধী এবং সাধারণ মানুষের জন্য ব্যবহারোপযোগী বিভিন্ন মাধ্যমের আদর্শ মান নির্ধারণ করে থাকে।

দুনিয়াজুড়ে তথ্য ও জ্ঞান বিনিময়ে প্রতিবন্ধী ও অপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিনির্বিশেষে সবার জন্যই ডেইজি মাল্টিমিডিয়া বা কমপিউটারভিত্তিক বহুমাত্রিক মাধ্যম আদর্শ। ডেইজি উন্নয়নশীল ও উন্নত বিশ্বের মধ্যে ডিজিটাল তথ্য বিনিময়ের সেতুবন্ধন স্থাপন করে। ডেইজি মুদ্রণ প্রতিবন্ধীসহ ভাষাগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ও যেসব জণগোষ্ঠীর নিজস্ব লিপি নেই, সেসব শিক্ষার সুযোগ-বঞ্চিত মানুষের জন্য কার্যকর এক প্রযুক্তি। মানবিক কল্পনার অনেক কিছুই বাস্তবে সত্যি করে তুলেছে এই ডেইজি। তবে সরকারি সহায়তার অভাবে ডেইজি কার্যক্রম ক্রমাগত ব্যাহত হচ্ছে।

www.daisy.org
www.ypsa.org

সিটিজেন’স ভয়েস
জনসেবা জোগানোর পদ্ধতি ও সেবাদানের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোর প্রতি অনলাইনে পাওয়া জনপ্রতিক্রিয়া এই ওয়েবপোর্টালে সংগ্রহ করা হয়। এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন প্রস্ত্তত করা হয়। বাংলাদেশে এই প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত এই ওয়েবপোর্টালটি হাইব্রিড মডেল রূপে পরিচিত। কিন্তু অসচেতনতা ও যথার্থ প্রতিক্রিয়ার অভাবে এর ব্যবহার দিন দিন কমছে। এছাড়া অভিযোগের যথার্থতা যাচাইয়ের কোনো কার্যকর উপায় নেই।

www.nagorikkontho.org/portal

এসএমএস-ভিত্তিক মনিটরিং সিস্টেম
বিহার রাজ্যে পরিচালিত আইসিটি সহায়ক উদ্ভাবনাগুলোর মধ্যে এসএমএসভিত্তিক মনিটরিং সিস্টেম অন্যতম। উচ্চপর্যায়ে নেয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের অগ্রগতির নমুনা- যেমন দৈনিক খরচ, সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ও অন্যান্য বিষয় এসএমএসের সাহায্যে দৈনিক নজরদারির মধ্য দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এটি একটি সহজবোধ্য ও অর্থসাশ্রয়ী প্রযুক্তি। তবে প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এর ব্যবহার গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয় না।

আই পেইড অ্যা ব্রাইব
জনসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ দেয়া-নেয়ার প্রকৃত চিত্র উদঘাটনের লক্ষ্যে এই ওয়েবপোর্টালটি গড়ে তোলা হয়েছে। জনগণের দায়ের করা দুর্নীতির অভিযোগ এখানে সংরক্ষণ করা হয়। ঘুষের মোট পরিমাণ সম্পর্কিত একটি লিখিত ডকুমেন্ট রাখা হয় এবং এটি ব্যবহার করে বর্তমানের ঘুষ প্রথার একটি খন্ডচিত্র তুলে ধরা হয়। ভারতের মতো একটি দেশে যেখানে ঘুষ দেয়া-নেয়া খুব সাধারণ একটি ব্যাপার- এই সংগৃহীত তথ্য সেসব প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করতে পারছে যেগুলো পুরোপুরি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এর মাধ্যমে সরকার ও জনগণের দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরার মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা হচ্ছে।

http://ipaidabribe.com

শেষ কথা
তথ্য ও জ্ঞানের ওপর দখল থাকাটা জীবনধারণের জন্য অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। সর্বস্তরের জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রস্ত্তত করা উপর্যুক্ত আইসিটি সহায়ক উদ্ভাবনাগুলোর কার্যকর ব্যবহার সবার তথ্য পাওয়ার অধিকার রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে-এটাই কাম্য।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন www.access2info.asia
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা