• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > আইসিটি ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং করণীয় কিছু প্রস্তাব
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কারার মাহমুদুল হাসান
মোট লেখা:৬
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ডিজিটাল বাংলাদেশআইসিটি, 
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি বিপ্লব
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
আইসিটি ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং করণীয় কিছু প্রস্তাব

বর্তমান সরকারি দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছিল। ইদানীং মোবাইল ফোনে মূলত শহরাঞ্চলে ঘরে বসে বিল পরিশোধ করার সুযোগ সৃষ্টিকে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে দাবি করা হচ্ছে। অতি সম্প্রতি আইসিটি পরিমন্ডলের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাকে ব্যবহার করে এক বা একাধিক বিদেশী কোম্পানি প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকার কয়েকটি বনেদি এলাকার নাগরিকদের জন্য আইসিটিসংশ্লিষ্ট কিছু সেবা দেয়ার কাজ শুরু করার খবর পত্রপত্রিকায় ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচার করে।

জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথমদিকে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন সমাপ্ত হয়েছে। তাছাড়া অতিসম্প্রতি শাসক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং ধরে নেয়া যায়, সরকার পরিকল্পিত ও কার্যকরভাবে জনগণের তথা দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু কিছু কার্যক্রম এখন নিতে পারে। সে প্রেক্ষাপটে নিচে বর্ণিত কিছু প্রস্তাব তথা পরামর্শ তুলে ধরা যেতে পারে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়া বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে শুরু নববইয়ের দশকে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ, উভয় সরকারের আমলেই। এরপর একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে আইসিটির প্রসার বিষয়ে বেশকিছু প্রাথমিক তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়।

২০০২ সালের ১১ মার্চ বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ে সচিবের দায়িত্ব নেয়ার শুরুতেই এ মন্ত্রণালয়ের সবস্তরে এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন দফতর/সংস্থার প্রধান ও সদস্য/পরিচালকদেরকে নিয়ে মন্ত্রণালয় ও সংস্থা ইত্যাদির কাজকর্ম সম্পর্কে, আইসিটিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে অভিজ্ঞ ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধান বিষয়ে সুনামের অধিকারী বিভিন্ন বেসরকারি খাতের কর্মকর্তাদের সাথে কয়েক দিনব্যাপী আলাপ-আলোচনার প্রক্রিয়ায় একটি স্বচ্ছ ও প্রকৃত ধারণা নেয়ার চেষ্টা করি।

আলোচনায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ই-গভর্নেন্স বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বেসিস, বিজিএম, আইএফসি ইত্যাদি সংগঠনের নেতারা তাদের স্ব স্ব মতামত ব্যক্ত করেন। যে যে বিষয়গুলো আলোচিত হয় এবং সে প্রেক্ষিতে সর্বসম্মত সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হয়। সুপারিশমালায় বলা হয়, সরকারের ৩৯টি মন্ত্রণালয় এবং ১২টি বিভাগে জুলাই ২০০২ থেকে পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে ইলেকট্রনিক গভর্নেন্স বা ই-গভর্নেন্স সিস্টেম চালু করা হবে। ই-গভর্নেন্স চালু করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সর্বাধুনিক স্পেসিফিকেশনের ১টি সার্ভার এবং ৯টি পিসি সরবরাহ করা হবে। ই-গর্ভনেন্স চালু করতে হলে প্রয়োজন দক্ষ আইটি জনবল। এজন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে চারজন করে প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ করা হবে, যাদের মধ্যে থাকবেন ১ জন সিস্টেম অ্যানালিস্ট, ১ জন প্রোগ্রামার, ১ জন ওয়েবপেজ ডিজাইনার এবং ১ জন নেটওয়ার্ক এবং হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ার।

ই-গভর্নেন্স আওতায় প্রাথমিকভাবে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ল্যান স্থাপন করা হবে। এছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পে-রোল, মালামাল ও যন্ত্রপাতির ইনভেনটরি ডাটাবেজ আকারে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের যাবতীয় তথ্যাবলী একটি ডাটাবেজের আওতায় নিয়ে আসা এবং এগুলোর যথাযথ নিরাপত্তা বিধানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে শেয়ার করার ব্যবস্থাদিসহ যেসব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ইতোমধ্যে তাদের ডাটাবেজ তৈরি সম্পন্ন করেছে, সেগুলো অন্যদের সাথে সংযুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য ডাটাবেজের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এমন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রথমে চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সেবাসমূহ জরুরিভিত্তিতে অনলাইনের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে জরুরিভিত্তিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হবে, যাতে করে প্রত্যেক কর্মকর্তা খুব সহজেই ই-মেইল দেয়া-নেয়া এবং ওয়েবপেজ ব্রাউজিং সুবিধা পেতে পারেন। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সব পাবলিক ফরম এবং টেন্ডার ডকুমেন্ট সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ওয়েবসাইটে হোস্ট বা আপলোডিং করা হবে। এতে করে গ্রাহক ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার প্রয়োজনীয় ফরম, ডকুমেন্ট ও সরকারি সার্কুলার ডাউনলোড করতে পারবেন। পরে এসব ফরম যাতে অনলাইনের মাধ্যমে সাবমিট করা যায় সে ব্যবস্থা করা হবে। ভিডিও কনফারেন্সিং ও ওয়েবভিত্তিক উপস্থাপনার ব্যবস্থা করে সরকারের কর্মকান্ডে আরো বেশি স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনা হবে এবং পাশাপাশি এর ফলে সময় ও অর্থের অপচয় কমানো হবে।

বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসহ এশিয়ার বেশ কিছু দেশ ই-গভর্নেন্সকে কাজে লাগিয়ে সরকারি সেবা এবং কার্যক্রম জনগণের কাছাকাছি নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। আলোচ্য উদ্যোগের মাধ্যমে ওইসব দেশের অনুসরণে বাংলাদেশে ই-গভর্নেন্স সুবিধা সৃষ্টি করা হবে এবং এর মাধ্যমে সরকারি কাজে দক্ষতা ও গতিশীলতা আনা হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান প্রযুক্তি। বিশ্বে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো এখন তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রশাসন তথা সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। নাগরিক জীবনের প্রতিটি স্তরে যেমন প্রশাসন, অর্থ, বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সর্বক্ষেত্রে এখন তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ব্যাপক বাড়ছে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে আইসিটিকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ঘোষণা করা হয়েছে। উপরে যে প্রোগ্রামগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে তার এক পঞ্চমাংশও বাস্তবায়িত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

বর্তমান সরকার উপরোল্লিখিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কার্যকর কমিটি গঠন করতে পারে, যে কমিটি প্রতি ১৫ দিন পর পর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর থাকবেন। এখানে একটি ইতিবাচক অবস্থা সম্পর্কে উল্লেখ করা প্রয়োজন। দেশের সরকারপ্রধান, বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক, প্রত্যেকে আইসিটির দ্রুত বিকাশে সব রকম ব্যবস্থাদি নিতে আগ্রহী। তাছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন দেশবাসীর সামনে প্রতিক্ষিত-কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ বাস্তবায়নে আইসিটি প্রশিক্ষিত জনবল সরকারের পক্ষে একা বা এককভাবে তৈরি করা সম্ভব নয়। ২০০০ সালের শেষ দিকের তথ্য থেকে জানা যায়, দেশে প্রায় ১৫০০ আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। যার ৮৫ ভাগই ছিল অত্যন্ত নিচুমানের যাদের বেশিরভাগই ২০০-৩০০ বর্গফুট জায়গায় ভাড়া করে অলিগলিতে আইসিটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র খুলে লাগামহীনভাবে ব্যবসায় করে যাচ্ছিল। এসব প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন, পরিবীক্ষণ এবং বিচার বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি থেকে যোগ্য প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অন্তত ৩০টি টিম গঠন করে গ্রেডিং করে তাৎক্ষণিকভাবে নিম্নমানের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার ব্যবস্থা, মধ্যম মানেরগুলোকে কিভাবে আরো উন্নত এবং উন্নতগুলোকে উত্তম মানে উন্নীত করা যায় তার ব্যবস্থা করা। এসব কার্যক্রম ২০০৩-এর শুরুতে হাতে নেয়া হলেও ২০০৩-এর শেষ দিক থেকে তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ কার্যক্রম আবার শুরু করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস তথা বেসিস, বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি তথা বিসিএস ও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি শাখাসমূহের অভিজ্ঞ ও আগ্রহী পন্ডিত ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা নিয়ে এসবের মানোন্নয়নের কাজটি ২-৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারে। বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এজন্য অর্থের অভাব হবার কথা নয়।

এখন দরকার দ্রুত স্কুল ও কলেজের সিলেবাসে কমার্স, বিজ্ঞান, কলা ইত্যাদির মতো আইসিটি বিভাগ খুলে জানুয়ারি ২০১০ থেকে আইসিটি শিক্ষা কোর্স চালু করার ব্যবস্থা করা।

সিলেবাসের পূর্ণাঙ্গ খসড়া প্রণয়ন করার লক্ষ্যে ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত অনেক চেষ্টা এবং অনুরোধের পর ১৬ জুলাই ২০০৩ তদানীন্তন তৃতীয়বার চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত শিক্ষা সচিবের সভাপতিত্বে তার অফিস কক্ষে মূলত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এবং বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে স্কুল ও কলেজের ৩০০ নম্বরে আইসিটি সিলেবাস অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে একটা সভা হয়। সভার মূল সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইসিটি কারিকুলাম প্রণয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে (উভয় মন্ত্রণালয়ের ৭ সদস্যবিশিষ্ট) এক মাসের মধ্যে চূরান্ত সুপারিশ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়, যাতে ১ জানুয়ারি ২০০৪ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সিলেবাসে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ন্তভুক্ত করে আইসিটি শিক্ষাক্রম চালু সম্ভব হয়। কিন্তু নানা কারণে সেক্ষেত্রে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে আইসিটি শিক্ষা প্রসারের অপার সম্ভাবনা হাতছাড়া হয়ে যায়। এ সিলেবাস বিষয়ে পরামর্শগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ে মজুদ আছে এবং এ প্রস্তাবগুলোকে বর্তমান চাহিদার আলোকে কমবেশি ঘষামাজা করে উল্লিখিত দুই মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ে এক বা একাধিক সভা করে সিলেবাস অনুমোদন দিয়ে ১ জানুয়ারি ২০১০ থেকে দেশের সব স্কুল এবং কলেজে আইসিটি শিক্ষা চালুর কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।

আইসিটি সিলেবাস প্রণয়ন কার্যক্রমের পাশাপাশি ইংরেজি এবং ইংরেজিতে প্রশিক্ষিত/ পড়াশোনা করা পদার্থবিদ্যা ও গণিত বিষয়ে প্রায় ৪৫ হাজার শিক্ষক সংগ্রহ করার বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রম তখন থেকেই (২০০২ ও ২০০৩) শুরু করা হয়েছিল। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বিএসসি কিংবা এমএসসি (পদার্থবিদ্যা ও গণিতসহ) বিভিন্ন বিষয়ে ইংরেজিতে/ইংরেজির মাধ্যমে পড়াশোনা করে কর্মজীবনে প্রবেশ করে এদের প্রায় সবাই বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। তাদের মধ্যে থেকে নিজ নিজ পছন্দ বা বাসা/বাড়ির কাছাকাছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চুক্তি ভিত্তিতে/ক্লাসভিত্তিতে আইসিটি কারিকুলাম সংক্রান্ত ক্লাসে নিয়োজিত করার লক্ষ্যে তালিকা প্রণয়ন তথা খোঁজখবর করার প্রক্রিয়াও ওই সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ‘গ্লোবাল নলেজ পার্টনারশিপ’ নামের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সাথে মালয়োশিয়ার কোটা কিনাবালুতে এবং পরবর্তী সময়ে ইতালির রাজধানী রোমে এ লেখকের কার্যকর এবং ফলপ্রসূ আলোচনা হয় এবং GKP প্রধান ৪৫ হাজার শিক্ষকের তিন থেকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণের জন্য ৫০ লাখ ডলার অনুদানের আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল। তাছাড়া, বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ আমন্ত্রণে জিকেপি’র বোর্ডসভাও (সম্ভবত ফেব্রুয়ারি ২০০৩) ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু অতি সম্ভাবনাময় এ উদ্যোগটিও ওই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষা সচিবের অসহযোগিতায় জন্য ভন্ডুল হয়ে যায়। তাছাড়া, এ কাজে বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষব্যক্তির গাফিলতিরও কমতি ছিল না।

বাংলাদেশে আইসিটিবিষয়ক বিভিন্ন ক্ষেত্রকে অগ্রসরমান করার জন্য সময়ে সময়ে বিক্ষিপ্ত কিছু কাজ তথা প্রোগ্রাম গত কয় বছরে গ্রহণ করা হয়েছে, যা প্রয়োজন কিংবা সম্ভাবনার মাপকাঠিতে বিচার করলে নগণ্য। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত এমনকি পশ্চিমবঙ্গ গত ৫/৬ বছরে আইসিটি উন্নয়নে যুগান্তকারী ও পরিকল্পিত কার্যক্রম নিতে সক্ষম হয়েছে।

আমরা বাংলাদেশীরা আইসিটি উন্নয়নে কী করে চলেছি। টকশো, সেমিনার, সিমপোজিয়াম, পত্রিকায় লেখালেখি করে সরকারের নজর কাড়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ অবস্থায় দেশের উচ্চতর শিক্ষা এবং সে সাথে আইসিটি শিক্ষার মান এবং এসবের ডিগ্রিধারীদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হতে পারে- তা নিয়ে আমরা সবাই শঙ্কিত। এ শঙ্কা থেকে দেশবাসীকে রেহাই দেয়ার সরকারের ভূমিকা যে গুরুত্বপূর্ণ তা যেনো আমরা ভুলে না যাই।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক jagat@comjagat.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা