লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
ট্রিকস এন্ড টিপস
সুসজ্জিত ও সুসংগঠিত রাখুন আপনার পিসি
পিসি ব্যবহার করতে করতে অনেক সময় পিসি কিছুটা ধীরগতির হয়ে যায়। আবার পিসির নানা ছোটখাটো কাজ অপারেটিং সিস্টেমের বিল্ট-ইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ঠিকভাবে করাও যায় না। এসব কাজে ব্যবহার করতে হয় থার্ডপার্টি সফটওয়্যার। পিসির নানা ধরনের মেইনটেন্যান্সের কাজে ব্যবহার করার জন্য কয়েকটি সফটওয়্যারের বর্ণনা নিচে দেয়া হলো।
সিসি ক্লিনার : পিসি অপটিমাইজেশন, প্রাইভেসি ও ক্লিনিং টুল হিসেবে ব্যাপক ব্যবহার হওয়া একটি সফটওয়্যারের নাম সিসি ক্লিনার। ২০০৪ সালে পিরিফর্ম প্রথম বাজারে নিয়ে আসে এটি। তারপর থেকে বিভিন্ন সংস্করণে এর প্রচুর আপডেট নিয়ে এসেছে এরা। এর ফলে এটি পরিণত হয়েছে একটি সফটওয়্যারে। সিসি ক্লিনার পিসির হার্ডড্রাইভের যেকোনো তথ্যই মুছে দিতে সক্ষম। পাশাপাশি পিসির খালি জায়গাগুলোও পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে। এ ছাড়া হার্ডডিস্কের তথ্য পরিপূর্ণভাবে মুছে দিতে এটি একবার ওভাররাইট থেকে শুরু করে বিভিন্ন মোডে ৩৫ বার পর্যন্ত হার্ডডিস্কের চিহ্নিত জায়গায় ওভাররাইট করে তথ্যকে মুছে দিতে পারে। অবশ্য যত বেশিবার ওভাররাইট করার মোড নির্বাচন করা হবে, সময় তত বেশি প্রয়োজন হবে। উইন্ডোজের রিসাইকেল বিন, রিসেন্ট ডকুমেন্টস, টেম্পোরারি ফাইল, লগ ফাইল, ক্লিপবোর্ড, ডিএনএস ক্যাশ, মেমরি ডাম্পসহ সবকিছুই মুছে ফেলা যাবে এর মাধ্যমে। আর ওয়েবব্রাউজার হিসেবে ইন্টারনেট এক্সপ্লরার, গুগল ক্রোম, অপেরা, সাফারি, ফায়ারফক্সসহ সব ব্রাউজারেরই টেম্পোরারি ফাইল, হিস্ট্রি কুকি, সুপার কুকি, ডাউনলোড হিস্ট্রি, ফরম হিস্ট্রিসহ সব রেকর্ড মুছে ফেলতে সক্ষম এটি। এর মাধ্যমে অবশ্য নির্বাচিত কুকিগুলোও মুছে ফেলা যায়।
পাশাপাশি এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রি ক্লিনিংয়ের সব ধরনের কাজও করা যায় সহজেই। সব মিলিয়ে নিজের সিস্টেমটিকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এটি একটি কার্যকর সফটওয়্যার। এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পিসির সব সিস্টেম (প্রসেসর, র্যা ম ও মাদারবোর্ডের বর্ণনা) কনফিগারেশন দেখতে পারবেন। সি ড্রাইভে দখলকারী মাত্র ৫ মেগাবাইটের এ সফটওয়্যারটি http://goo.gl/Nx3bn লিঙ্ক থেকে বা www.cnet.com থেকে সরাসরি ডাউনলোড করা যাবে বিনামূল্যে। www.cnet.com-এ এডিটর ও ইউজার উভয় রেটিংই ৫-এ ৪.৫।
আইওবিট টুলবক্স : পিসির পারফরম্যান্স আপ-টু-ডেট রাখতে আরেকটি কার্যকর সফটওয়্যার হলো আইওবিট টুলবক্স। অমত্মত ২০ ধরনের সিস্টেম টুল নিয়ে বিনামূল্যের এ সফটওয়্যারটি পিসি ক্লিন, রিপেয়ার, সিকিউরিটি ও কন্ট্রোলের যাবতীয় কাজ করতে সক্ষম। পিসি ক্লিনিংয়ের ক্ষেত্রে আইওবিট দিয়ে রেজিস্ট্রি ক্লিনিং, প্রাইভেসি সুইপিং, ডিস্ক ক্লিনিং ও প্রোগ্রাম আনইনস্টলেশনের কাজ করা যায়। অপটিমাইজিংয়ের ক্ষেত্রে এতে রয়েছে মেমরির সর্বোত্তম ব্যবহারে স্মার্ট র্যাাম, ইন্টারনেটের ব্যবহার মনিটর ও গতিশীল রাখতে রয়েছে ইন্টারনেট বুস্টার, পিসির স্টার্টআপ ও বুট করার সময় কমাতে রয়েছে স্টার্টআপ ম্যানেজার ও রেজিস্ট্রি ডিফ্র্যাগ। পিসির বিভিন্ন সিস্টেম রিপেয়ারিংয়ের কাজে রিসাইকেল বিন থেকে ডিলিট করা ফাইল উদ্ধারে আনডিলিট, কার্যকর শর্টকাট ব্যবস্থাপনায় শর্টকাট ফিক্সার, ডিস্কের পারফরম্যান্স বাড়াতে ডিস্ক ডক্টর ও উইন্ডোজের নানা সমস্যা দূর করতে রয়েছে উইনফিক্স। এ ছাড়া সিকিউরিটি হোল স্ক্যানার ও প্রসেস ম্যানেজার পিসির নিরাপত্তা রক্ষায় রাখবে কার্যকর ভূমিকা। আর সিস্টেম কন্ট্রোল, ক্লোনড ফাইল স্ক্যানার, ডিস্ক এক্সপ্লরার বা সিস্টেম ইনফরমেশনের মতো ফিচারগুলো পিসিতে আইওবিটের নিজস্ব কন্ট্রোল প্যানেলের মতো কাজ করবে। আলাদাভাবে এসব টুলের প্রতিটির জন্য আলাদা প্রোগ্রাম ব্যবহার না করে এক আইওবিট টুলবক্স দিয়েই সব কাজ করা যায় নির্বিঘ্নে। http://goo.gl/gMkkC লিঙ্ক থেকে বা www.cnet.com থেকে সরাসরি ডাউনলোড করে নিন আইওবিট টুলবক্স। www.cnet.com-এ এর ইউজার রেটিং ৫-এ ৪।
তবে একেবারেই নতুন ইউজারদের কাছে এ সফটওয়্যারগুলো অনেকটা দুর্বোধ্য ও কঠিন হতে পারে, কেননা এখানে এ তিনটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে পিসির একাধিক কাজ করা যায়। একেবারে না বুঝে কোনো কাজ করতে গেলে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজনীয় ফাইলও ডিলিট করে ফেলতে পারেন। কেননা প্রতিটি সফটওয়্যারের অ্যাপ্লিকেশন বক্সে বুঝে ও প্রয়োজনমতো বক্স চেক অথবা আনচেক করতে হবে, না বুঝে বক্সে চেক বাটন ক্লিক করে রাখলে অনেক দরকারি ফাইল অথবা ডকুমেন্ট ডিলিট হয়ে যেতে পারে। তবে একদম নতুন ইউজারদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তাদের জন্য একাধিক না হলেও শুধু ডিস্ক ডিফ্র্যাগ করার সুবিধার্থে কয়েকটি সফটওয়্যারের বর্ণনা এখানে দেয়া হলো। কেননা কমপিউটারে কাজ করার সময় আমরা প্রচুর ফাইল ব্যবহার করে থাকি। এসব ফাইল সংরক্ষিত থাকে হার্ডডিস্কে। তবে ফাইলগুলো ঠিক গোছানো থাকে না। ডিস্কের মধ্যে ফাইলগুলো গুছিয়ে রাখার কাজটি করতেই রয়েছে ডিফ্র্যাগমেন্টেশন। একেবারেই নতুন ইউজাররা নিয়মিত ডিফ্র্যাগমেন্টেশন করলেও পিসির পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। উইন্ডোজে পিসিতে বিল্ট-ইন হিসেবেই ডিফ্র্যাগমেন্ট করার জন্য টুল থাকে। তবে উইন্ডোজের বিল্ট-ইন ডিফ্র্যাগমেন্টের কাজ করে অনেক ধীরগতিতে। তাই অনেকেই এ বিল্ট-ইন ডিফ্র্যাগমেন্টের ব্যবহার করেন না। তাদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু থার্ডপার্টি অ্যাপ্লিকেশন। অনেক ভালো ডিফ্র্যাগমেন্টের জন্য টাকা খরচ করতে হলেও কিছু ভালো ডিফ্র্যাগমেন্টের রয়েছে, যেগুলো বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যায়। এ ধরনের দুটি ডিফ্র্যাগমেন্টের বর্ণনা এখানে দেয়া হলো।
পিরিফরম ডিফ্র্যাগলার : ধীরগতির পিসির জন্য উপযোগী হতে পারে এ ডিফ্র্যাগলার সফটওয়্যারটি। এর র্যাটমের ব্যবহার খুব সীমিত থাকায় এটি চলাকালে পিসির তারতম্য হয় না। নিয়মিত ডিফ্র্যাগমেন্ট করার জন্য এতেও আছে স্বয়ংক্রিয় ডিফ্র্যাগলার ও স্বয়ংক্রিয় ডিফ্র্যাগমেন্ট করার ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে ডিফ্র্যাগমেন্ট করার প্রয়োজন এমন ফাইলের তালিকাও পাওয়া যায়। এর ফলে সব ফাইল একেবারে ডিফ্র্যাগমেন্ট না করে আলাদা আলাদা করে নির্বাচন করেও ডিফ্র্যাগমেন্ট করা যায়। এর নিচের দিকের ফাইল লিস্ট থেকে ফ্র্যাগমেন্ট ফাইলের তালিকা পাওয়া যাবে ও ডান পাশ থেকে Health ট্যাব থেকে এ ড্রাইভের বিসত্মারিত বর্ণনা পাওয়া যাবে। এর ওপরে Settings→Option থেকে এতে কী আকারের ফাইল বা কোন ফরম্যাটের ফাইল ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে চান, তা সিলেক্ট করতে পারবেন। তার নিচের দিকেই শিডিউল অপশন অর্থাৎ Settings→Schedule থেকে এর ডিফ্র্যাগমেন্টের শিডিউল অর্থাৎ সময় ও তারিখ নির্ধারণ করে ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে পারবেন। এ ডিফ্র্যাগমেন্টটি http://goo.gl/13FcA লিঙ্ক থেকে ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। www.cnet.com-এ এর এডিটর ও ইউজার উভয় রেটিং ৫-এ ৪।
নতুন বা পুরনো ইউজারদের জানানো যাচ্ছে, একেবারে না বুঝে কোনো কাজ করতে যাবেন না। কম সতর্কতার কারণে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজনীয় ফাইলও ডিলিট করে ফেলতে পারেন। কেননা প্রতিটি সফটওয়্যারের অ্যাপ্লিকেশন বক্সে বুঝে ও প্রয়োজনমতো বক্স চেক বা আনচেক করতে হবে। না বুঝে বক্সে চেক বাটন ক্লিক করে রাখলে অনেক দরকারি ফাইল বা ডকুমেন্ট ডিলিট হয়ে যেতে পারে
ফিডব্যাক : kdsubho@gmail.com