• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করাটাই সমাধান নয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মোস্তাফা জব্বার
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রযুক্তি
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করাটাই সমাধান নয়
টেলিকম বিভাগ বা বিটিআরসি ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমো ইত্যাদি বন্ধ করার কথা ভাবছে না। প্রথমে টেলিকম প্রতিমন্ত্রী ও পরে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ সিদ্ধান্তে সারাদেশের মানুষের, বিশেষত নতুন প্রজন্মের মানুষ আপাতত হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। কিন্তু কতদিনের জন্য? বিটিআরসির চেয়ারম্যান আবার কবে তার মত পাল্টাবেন? আবার নতুন কে এসে টেলকো অপারেটরদের রাজস্ব বাড়ানোর নামে পুরো ইন্টারনেটই না বন্ধ করে দেন? আইনের দোহাই দিয়ে ‘উবার’ অ্যাপটি নিষিদ্ধ করে বিআরটিএ। বেআইনী ‘রেন্ট এ কার’ সেবা বিআরটিএ’র নাকের ডগায় চললেও ইন্টারনেটনির্ভর উবার জন্ম নেয়ার আগেই নিষিদ্ধ হয়েছে। এটি ঠিক যে, আইন সবাইকেই মানতে হবে। কিন্তু শিল্প যুগের আইন যে ডিজিটাল যুগে অচল, সেটি বুঝতে হবে। ২০১০ সালে প্রাগৈতিহাসিক ট্যাক্সি গাইডলাইন যে ডিজিটাল যুগে বদলাতে হবে সেটি বিআরটিএকে কে বোঝাবে? আমরা নিজেরা যে অ্যাপ তৈরি করে উবারের বিকল্প বানিয়ে ফেলেছি, তার কী হবে সেটি কি কেউ ভেবেছেন? বিষয়টি যে আইনের চাইতে অজ্ঞতার জন্যই ঘটেছে, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনটি দেশের নষ্ট কয়েকটি ট্যাক্সি কোম্পানির স্বার্থরক্ষার জন্যও করা হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। মনে হয়, বিআরটিএ হোক আর বিটিআরসি হোক; প্রযুক্তির পরিবর্তনটা তারা বুঝতে পারেননি।
বলা দরকার, প্রযুক্তি বন্ধ করাটাই সমাধান নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তি বন্ধ করার উপায় যে সমাধান নয়, সেটি বুঝতে হবে।
আমাদের সবার প্রত্যাশা ছিল, বংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন আর যাই হোক টেলিকম খাতের খবর রাখার পাশাপাশি দুনিয়ার ডিজিটাল যাত্রাকেও উপলব্ধি করবে। এর সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম বা জিয়া আহমদ দেশের টেলিকম খাতের বিকাশে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন। তাদের পরে সুনীল কান্তি বোস আসার পর এই সংস্থাটির সাথে তেমন কোনো যোগাযোগ রাখতে পারিনি। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প খাতের চেয়ে মোবাইল অপারেটরদের জন্য অনেক বেশি নিবেদিত ছিলেন। আমাদেরকে সেভাবে ডাকতেনও না। আমি বহুবার বিটিভির ডিজিটাল বাংলাদেশ অনুষ্ঠানে তাকে ডেকেছি। তিনি আসেননি। টেলিকম বিভাগের সচিব থাকাকালে বিটিআরসির হাত-পা ভাঙার কাজটি তিনিই করে গেছেন এবং তার খেসারতও তিনিই বিটিআরসির চেয়ারম্যান হওয়ার পর দিয়ে গেছেন।
আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম, যখন ড. শাহজাহান মাহমুদ বাংলাদেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সংস্থার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার সাথে দু-একবার দেখা হয়েছে। একবার বেসিসের সভাপতি হিসেবে আনুষ্ঠানিক কথা হয়েছে। আমি সেদিন টেলকোদের অত্যাচার, ইন্টারনেটের গতি, দাম এবং টেলিকম সেবার মান নিয়ে কথা বলেছি। সেদিনই একটি সেমিনার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এখনও সেটি আমরা আয়োজন করতে পারিনি। ধারণা করি, টেলকোবিষয়ক তেতো কথাগুলো শোনায় তার আগ্রহ কমে গেছে। তবে যেটুকু আলাপ হয়েছিল তাতে আমি আশাবাদী ছিলাম, তিনি সংস্থাটিকে সঠিক পথে সামনে নিতে পারবেন। দেশের মানুষের কথাগুলোও তিনি হয়তো শুনবেন ও ব্যবস্থা নেবেন। যদিও এর আগে ইন্টারনেট বন্ধ করা বা ফেসবুক বন্ধ করার দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কিছুটা আতঙ্কিত ছিলাম, তবুও ভাবতে পারিনি তার মুখ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার বা স্কাইপের মতো অ্যাপ বন্ধ করে দেয়ার ইচ্ছার প্রকাশ ঘটতে পারে। টেলকোর ভয়েস কল কমার জন্য তিনি এসব অ্যাপকে দায়ী করতে পারেন সেটিও ভাবতে পারিনি। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ভয়েস কলের রাজস্ব হারানোর অজুহাতে এমন একটি বক্তব্য দিতে পারেন, সেটি আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
আমরা ইন্টারনেটে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পেয়েছি। সেটি এখানে তুলে ধরলাম- ‘শুধু অবৈধ ভিওআইপি নয়, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোর মতো স্মার্টফোন অ্যাপে ভয়েস কল সুবিধার কারণে আন্তর্জাতিক ফোনকলের ব্যবসায় বাংলাদেশ মার খাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রধান শাহজাহান মাহমুদ। সম্প্রতি বিটিআরসি কার্যালয়ে ‘অবৈধ ভিওআইপি ও সমসাময়িক বিষয়’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনে এ ধরনের ‘ওভার দ্য টপ’ অ্যাপ ব্যবহার করে ভয়েস কলের সুবিধা নিয়ে আগামী দুই-এক মাসের মধ্যে একটি সিদ্ধান্তে আসতে চায় বিটিআরসি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট বাড়ানোর আগে বৈধ পথে গড়ে দিনে ১২ কোটি মিনিট ইনকামিং কল দেশে আসত। ২০১৫ সালের আগস্টে কল টার্মিনেশন রেট দেড় সেন্ট থেকে বাড়িয়ে দুই সেন্ট করার পর এখন তা দৈনিক গড়ে ৭ কোটি মিনিটে নেমে এসেছে। তবে কল কমার জন্য দাম বাড়ানোকেই মূল কারণ বলে মনে করছেন না তিনি। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার সাথে সাথে স্কাইপ, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো ভিওআইপি অ্যাপের মাধ্যমে ভয়েস কলের সুবিধাও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে বৈধ ভয়েস কলের ওপর। তিনি আরও বলেন, এটি একটি বিরাট সমস্যা আমাদের সামনে। শুধু যে অবৈধ ভিওআইপি হচ্ছে তা নয়, অনেক কল ওটিটি যেমন ভাইবার, ইমো বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হচ্ছে। তবে এর পরিমাণ আমরা এখন বলতে পারছি না।
এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষক্ষপ কী হবে সে বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, এ ব্যাপারে কোনো নীতিমালা এখনও প্রণয়ন করা হয়নি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের উদাহরণ নেয়ার চেষ্টা করছি। কোনো কোনো দেশ এসব অবৈধ ঘোষণা করেছে, অনেক দেশ বলেছে শুধু ডাটা সরবরাহ করা যাবে, ভয়েস নয়।’
খবরটি প্রকাশের পরপরই ফেসবুকে আমি আরও কয়েকটি মন্তব্য দেখে সেটি আপনাদের সামনে পেশ না করার লোভ সামলাতে পারছি না। শহিদুল আলম রায়ান বলেছেন, ‘মেইলের জন্য পোস্ট অফিসের আয় কমেছে। তবে কি মেইলও বন্ধ করা হবে?’
তৌফিকুল করিম সুহূদ বলেছেন, ‘এই জ্ঞান নিয়ে তিনি বিটিআরসির চেয়ারম্যান? তিনি রেভিনিউ জেনারেট করতে মাথা খাটান, মাথামোটা হলে রেভিনিউ আসাই বন্ধ হয়ে যাবে। মোবাইল অপারেটরেরা যদি ঠিক মতো ট্যাক্স দেয়, তাহলে রেভিনিউ আসা বাড়তেই থাকবে। প্রযুক্তি ব্যবহারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নতি বা ডিজিটালাইজেশন অসম্ভব। প্রধানমন্ত্রী যখন ভিডিও কনফারেন্স করেন, তখন কি ভিওআইপি অ্যাপস ব্যবহার করা হয় না? আমরা আসলে এখনও কনফিউজড- এগোতে চাই নাকি আদিম যুগে ফিরে যেতে চাই।’
আমি লিখেছি, মাথা ব্যথার জন্য মাথা কাটার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে নতুন নয়। ফেসবুকের অপরাধের জন্য ফেসবুক বন্ধ করা বা পুরো ইন্টারনেটই বন্ধ করার নজির আমাদের আছে। এখন শুনছি ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপে বন্ধ হবে ভয়েস কল কমে যাওয়ার অজুহাতে। বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের এই শত্রুদের রুখতে হবে। আসুন ঐক্যবদ্ধ হই-আওয়াজ তুলি।
বিটিআরসির প্রস্তাবনার মূল কারণ দেশ-বিদেশে ভয়েস কল কমে গেছে। দিনে দিনে সেটি কমছেই। ভিওআইপি নামের এক ধরনের অদ্ভুত প্রচেষ্টার জন্য বিটিআরসি দুনিয়ার প্রযুক্তির রূপান্তরটাও বুঝতে পারছে না। ওরা জানে না যাকে তারা ফোরজি বলেন, সেটি বস্ত্তত ভিওআইপি। দুনিয়ার সভ্যতার বাহনই ইন্টারনেট। ইন্টারনেটকে পাশ কাটিয়ে কোনো দেশ তো দূরের কথা, কোনো ব্যক্তিরও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। স্পষ্ট করেই বলতে পারি, এক সময়ে ভয়েস কল বলে কিছু থাকবেই না। এটি প্রযুক্তির রূপান্তরের অমোঘ পরিণতি। যেমন করে দাঁড় বাওয়া বা গুনটানা নৌকা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে, যেমন করে সীসার হরফ-টাইপরাইটার কমপিউটার দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে, যেমনি করে ফিক্সড ফোন মোবাইল দিয়ে, মোবাইল কল ভাইবার দিয়ে, পোস্ট অফিস ই-মেইল দিয়ে বদলে গেছে- তেমনি করে অ্যাপ দিয়ে সব ধরনের ভয়েস কল করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। দিনে দিনে সেটি আরও সম্প্রসারিতও হবে। খুব সঙ্গত কারণেই ইন্টারনেটভিত্তিক প্রযুক্তি আমাদের দেশের মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করছে। এরই মাঝে প্রত্যন্ত গ্রামের মা তার প্রবাসী পুত্রের সাথে, স্ত্রী তার প্রবাসী স্বামীর সাথে এবং সন্তান তার প্রবাসী পিতার সাথে ইন্টারনেটে ভিডিওতে কথা বলছেন। দেশের ভেতরেও ভিডিও কনফারেন্সিং থেকে ফোনকলও ভাইবার-হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে হচ্ছে। স্কাইপ বা ফেসবুক তো আছেই। জি-মেইলেও বস্ত্তত ভিডিও কল করা যায়। ফেসবুক এখন লাইভ সম্প্রচারের সুবিধা দেয়। অপেক্ষা করে দেখতে হবে কবে সেটি টিভির বিকল্প হয়ে দাঁড়ায়। মিডিয়া ইউনিটি সেদিন হয়তো ফেসবুক বন্ধ করার জন্য আন্দোলন করবে। অথচ এখনই তারা টিভি সম্প্রচারের জন্য স্কাইপ ব্যবহার করে আনন্দের সাথে। বস্ত্তত ওরাও টেলকোদের ভাত মারছে। বস্ত্তত হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ফেসবুক এখন শুধু স্থির ছবি, টেক্সট বা ভয়েস কল নয়, চলমান ভিডিও দেখার সুযোগ দিচ্ছে। ফেসবুকের লাইভ এখন প্রচলিত সম্প্রচার মাধ্যমের বিকল্প হয়ে উঠছে। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী যথার্থই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা সবাই ইন্টারনেটে বিনা পয়সার ভিডিও কনফারেন্সিং করি। সরকার নিজেই আলাপন নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারী যাতে বিনা পয়সায় ইন্টারনেটে কথা বলতে পারে সেই সুবিধার জন্য। টেলিকম বিভাগেরই ১০ হাজার পোস্ট অফিস অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
টেলিকম অপারেটরদের সাথে কথা বলে জেনেছি, তারাও মনে করেন ভয়েস কলের জমানা সমাপ্তির পথে। বাংলাদেশে এখনও ডাটানির্ভর ভয়েস কল তেমনটা জোরদার হয়নি এজন্য যে, এদেশে স্মার্টফোনের প্রসার শতকরা মাত্র ২০ ভাগ। এটি যত বাড়বে ভয়েস কলের ব্যবহার তত কমবে। শাহজাহান মাহমুদের মন আরও খারাপ করে দেয়ার জন্য আমি জানাতে পারি যে, ভয়েস কল বিলুপ্ত হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার। ইন্টারনেট এই প্রযুক্তিকে বিলুপ্ত করছে এবং করতেই থাকবে। এই শাহজাহান মাহমুদেরা যে বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর দেখেন না এবং তারা যে চলমান বিশ্ব সম্পর্কেও কোনো ধারণা রাখেন না, সেটিও তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে। আমরা লক্ষ করেছি, বিটিআরসির দিক থেকে টেলকোগুলোর অনিয়মগুলোর প্রতিকার করার কোনো উদ্যোগ নেই। টেলকোগুলো গ্রাহককে ভয়েস বা ইন্টারনেট কোনো ক্ষক্ষত্রে যথাযথ সেবা দেয় না। তারা যা খুশি তাই প্যাকেজ বানায় ও নানাভাবে গ্রাহকের টাকা লোপাট করে। টেলকোগুলোর বিরুদ্ধে মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন ছাড়াও সব ব্যবসায় গিলে খাবার অভিযোগ আছে। ফোন, গান, চাল, ডাল বেচা থেকে ৬২৫ টাকার ব্যান্ডউইডথ সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগও আছে। কলড্রপের তো কোনো সীমানাই নেই। বিটিআরসির দায়িত্ব ছিল এসব নিয়ন্ত্রণ করা এবং ভয়েস ও ইন্টারনেটের মূল্য বেঁধে দেয়া। কিন্তু সেই কাজ না করে তারা ইন্টারনেট বন্ধ করে টেলকোদের ব্যবসায় বাড়ানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
বলা দরকার, আমাদের দেশের আউটসোর্সিং বা সফটওয়্যার-সেবা রফতানি বস্ত্তত পুরোটাই ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের যে কোম্পানিটি আমেরিকার ডাক্তারের কথা শুনে রোগীর বিবরণ লিপিবদ্ধ করে, তাকে যদি ভাইবার-স্কাইপ ব্যবহার করতে না দেয়া হয় এবং ভয়েস নেটওয়ার্কের প্রযোজ্য চার্জ দিতে হয় তবে শুধু যে আমাদের রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে তা নয়, আমাদের সামনে চলার সব চাকা বন্ধ হয়ে যাবে। একই সাথে অন্য দেশের সাথে আমরা প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়েও বাইরে যোগাযেগের ক্ষক্ষত্রে দশকের পর দশক পিছিয়ে যাব।
বিটিআরসি জানিয়েছে, দুনিয়ার বহু দেশ নাকি ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা ইন্টারনেটে খুঁজে দেখেছি, কথার আংশিক সত্যতা আছে।
সিরিয়া, তুরস্ক, মিয়ানমার, লিবিয়া, মেক্সিকো, মরক্কো, উত্তর কোরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, আজারবাইজান, চীন, মিসর, ইরান, জর্ডান, কুয়েত, প্যারাগুয়ে, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই, দুবাই, আবুধাবি), ভিয়েতনাম ও ইয়েমেন মাঝে মাঝে বা সব সময়ে ইন্টারনেটের কোনো না কোনো প্রযুক্তিতে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এসব দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলেই সহজে বোঝা যাবে, ওরা আমাদের মতো সভ্য দেশের কাতারে তো নয়ই, আমাদের ডিজিটাল রূপান্তরের কোনো স্বপ্নই তারা ধারণ করে না। এসব দেশের বেশিরভাগে বর্তমানে গৃহযুদ্ধ অথবা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান। তারা আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে প্রায় সব ইন্টারনেটভিত্তিক সেবার ওপরই নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এসব দেশের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্বের এক অন্যতম দেশ।
আমি অবাক হয়েছি এটি দেখে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শাহজাহান মাহমুদ আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের কাতারে বাংলাদেশকে নিতে চান কেন? অন্যদিকে বলতে পারি, বাংলাদেশের তারুণ্য, এ দেশের জনগণ শাহজাহান মাহমুদের মতো প্রযুক্তি-প্রতিবন্দ্বী মানুষের অত্যাচার কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এ দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বুকে ধারণ করে। শাহজাহান মাহমুদেরা আবার প্রমাণ করলেন যে, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ তার জন্য নয়
ফিডব্যাক : mustafajabbar@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস