• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ডটবাংলা : বাংলার বিজয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মোস্তাফা জব্বার
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৭ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রতিবেদন
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ডটবাংলা : বাংলার বিজয়
অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডটবাংলা ডোমেইন উদ্বোধন করলেন। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ তিনি সেটি উদ্বোধন করেন। অভিনন্দন সরকারের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ডটবাংলার উদ্বোধন করেন। ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এমন একটি অর্জন বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষাকে বিজয়ী করেছে। একুশে ফেব্রম্নয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার পর বিশেষত ডিজিটাল যুগে ডটবাংলা ডোমেইন নেম ব্যবহার করতে পারা আমাদের ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রটির জন্য এক বিশাল মাইলফলক অর্জন। ডিজিটাল রূপান্তরের নামে বাংলা ভাষাকে বিদায় করার এই দেশে বাংলা ভাষা ও বাংলা হরফের এমন সফলতাকে সালাম জানাই। একই সাথে একজন বাঙালি, বাংলাদেশের নাগরিক ও বাংলা ভাষাভাষি হিসেবে এই গৌরবের অংশীদারিত্ব পেয়ে গৌরবান্বিত বোধ করছি।
ডটবাংলা সম্পর্কে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস পরিবেশিত খবরে তথ্যাদি এরকম-
State-owned Bangladesh Telecommunications Company Limited (BTCL), the assigned organization to handle the domain, has completed preparations to start distribution of dot bangla domain among the users after it has been officially allotted to Bangladesh on October 4 after a long process.
After getting the right, state minister for posts and telecommunications Tarana Halim had said that they want to unlock it for the people in the month of victory, as the country attained independence on December 16.
Officials said the BTCL would call for application for the domain. They said customer could complete all procedures for .bangla through online while registration fee would be received using state-owned mobile phone operator Teletalk.
The International Corporation of Assigned Names and Numbers (ICAAN) has officially allotted the dot bangla (.bangla) internet domain to Bangladesh.
The ICANN sent a letter to the Ministry of Posts, Telecommunications and Information Technology informing the decision on October 4.
Indian state West Bengal and Sierra Leone, one of whose official languages is Bangla, had also applied for the internationalized domain name (IDN) label-dot bangla. Earlier, ICANN-approved another domain label for Bangladesh as dot bd or .bd. From now on, .bangla is Bangladesh's own Unicode domain label.
It is the second country code top-level domain (TLD) for Bangla websites.
According to the BTCL, total registered users of .bd have reached 36,500.
Domain names, such as "bssnews.net', were originally designed only to support ASCII characters. In 2003, a specification was released that allows most Unicode characters to be used in domain names. IDNs are supported by all modern browsers and email programmes, so people can use links in their native languages.
Therefore, users can go to the BTCL website (www.btcl.com.bd) by typing btcl.bangla in Bangla fonts in the browser.( http://en.bbarta24.net/sci-tech/2016/12/22/6709)
আমরা সবাই জানি, আমাদের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। এটি শহীদের রক্ত দিয়ে কেনা। আমরা যারা ’৪৮ থেকে ’৫৬ পর্যন্ত লড়াই করে পাকিস্তানে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, তারাই একাত্তরে বাংলা ভাষার একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ফেলি। ভাষার লড়াইয়ের চেয়ে রাষ্ট্র গঠনের লড়াইটা আরও রক্তাক্ত ছিল। দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর এই রাষ্ট্রে বাংলা ভাষার অবস্থা কী সেটি মূল্যায়ন করা যেতে পারে, বিশেষ করে আধুনিক প্রযুক্তিতে তার অবস্থান নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ডিজিটাল প্রযুক্তির নামে বাংলাকে বিদায় করার মহোৎসবের কথা আজকে আমরা আলোচনা না করলেও পারি। বরং ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার অবস্থান-বিষয়ক শেষ খবরটি নিয়ে কথা বলতে পারি। কারণ সাম্প্রতিককালে ডটবাংলা নামের একটি ডোমেইন নেম আইকান কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার ফলে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার অবস্থান বদলেছে। আশাব্যঞ্জক দিক হচ্ছে, এর ফলে বাংলা ভাষা বিশ্বের সেরা ভাষাগুলোর কাতারে শেষ অবস্থানটিও নিশ্চিত করল। বিজয় হলো বাংলা বর্ণমালার।
অনেকেই এটিও ভাবেন, বাংলাদেশের পরিচিতি হিসেবে ডটবিডি নামে একটি টপ ডোমেইন থাকার পরও আবার ডটবাংলা ব্যবহারের কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কী?
প্রশ্নটির জবাব হচ্ছে, ডটবিডি বাংলাদেশের পরিচায়ক হলেও সেটি রোমান হরফে ব্যবহার করতে হয়, বাংলা হরফে ডোমেইন নাম লেখার ব্যবস্থা তাতে থাকে না। বাংলা হরফে রাষ্ট্রের পরিচিতিও তাতে তুলে ধরা যায় না। রোমান হরফে ডটবিডি লেখা দেখে হয়তো বাংলাদেশ বুঝতে হয়, কিন্তু বাংলাদেশের ভাষা যে বাংলা সেটি বোঝা যায় না।
সেই প্রেক্ষেতেই খুব সহজভাবে সাধারণ মানুষের বোঝার মতো করে বললে এটি বলতে হবে, ডটবাংলা অনুমোদনের ফলে আমরা আমাদের পরিচিতি হিসেবে ইন্টারনেটে বাংলা হরফ ব্যবহার করতে পারব এবং বাংলাদেশের পরিচিতি হিসেবে বাংলা শব্দটি বাংলা হরফে ব্যবহার করতে পারব। আমি মনে করি, আমরা বাংলা ভাষা নিয়ে যে লড়াই করে আসছি ডটবাংলার অনুমোদন তার আরও একটি মাইলফলক অর্জন। হাতে লেখা বা সীসার হরফের বাংলার যুগ থেকে প্রকাশনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার একটি বিশাল অর্জন ছিল। ইন্টারনেটে বাংলা লিখতে পারাটাও আমাদের বড় ধরনের সক্ষমতা ছিল। এবার যখন আমি আমার নিজের হরফে নিজের পরিচয় ও রাষ্ট্রের পরিচয় দিতে পারছি, সেটি আরও বিশাল অর্জন। ধন্যবাদ ও অভিনন্দন তাদেরকে, যাদের জন্য আমরা এমন একটি মাইলফলক পেলাম।
আমি যদি ডটবাংলার পেছনের ইতিহাসের দিকে তাকাই, তবে একদিকে ধন্যবাদ দিতে হবে কাউকে কাউকে, অন্যদিকে নিন্দা জানাতে হবে কাউকে কাউকে। ২০০৯ সালে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দলকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই মিসরের দ্বীপ শহর শার্ম আল শেখে ১৫-১৮ নভেম্বর আয়োজিত ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের সভায় উপস্থিত থেকে আইকানের প্রধান নির্বাহীর সাথে আলোচনা করে ডট বাংলার প্রস্তাব করার জন্য। সেই সময়েই আইকানের প্রধান নির্বাহী ডট বাংলা অনুমোদন দিতে সম্মত হন। আমার সেণহভাজন মোহাম্মদ আবদুল হক অনুর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ‘যথারীতি ইনু ভাই দেশে ফিরে তৎকালীন সংসদীয় সভায় এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরলেন এবং পরবর্তী সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানালেন। প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি সম্পর্কে ত্বরিত সিদ্ধান্ত দিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। কাজ শুরু হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২০ ফেব্রম্নয়ারি রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে টপলেভেল ডোমেইন ডট বাংলার জন্য আইকানে অনলাইনের মাধ্যমে ফরম সাবমিট করেন।’
নিন্দা করার প্রয়োজন হচ্ছে এজন্য, এই অনুমোদন পাওয়ার জন্য আমাদেরকে প্রস্তাবনার পর সাত বছর ও আবেদনের পর সাড়ে ছয় বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, অনুমোদনের পর শুধু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তিন বছর হারিয়ে ফেলেছি। টেলিকম বিভাগের অমার্জনীয় অবহেলার জন্য যে সময়টি আমাদের জাতীয় জীবন ও রাষ্ট্রভাষার ইতিহাস থেকে বিনষ্ট হলো তার জন্য কৈফিয়ৎ দেবে কে? রাষ্ট্রভাষার সাথে এই অবহেলা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
যাই হোক প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ইন্টারনেটে একটি রাষ্ট্রের জাতীয় পরিচয়ের স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করে এই ডোমেইন। যেমন- ডটইউএস ডোমেইন নামের কোনো ওয়েবসাইটে ঢুকলে বোঝা যায় সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ওয়েবসাইট। ডটবাংলা তেমনি ইউনিকোড দিয়ে স্বীকৃত বাংলাদেশী ডোমেইন। এই ডোমেইনটির ব্যাখ্যায় উইকিপিডিয়া বলছে, ডটবাংলা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটি দ্বিতীয় ইন্টারনেট কান্ট্রি কোড টপলেভেল ডোমেইন (সিসিটিএলডি)। এই ডোমেইন বাংলা ভাষায় ওয়েব ঠিকানার জন্য বোঝানো হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ দুটি ডোমেইনের মালিক। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ডটবিডি ডোমেইন ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে।
ডটবাংলা ও ডটবিডি ডোমেইন নিয়ে দৈনিক সান পত্রিকার ১৯ জানুয়ারি ১৬ সংখ্যার খবরটি প্রণিধানযোগ্য। সরকারের পক্ষ থেকে ডটবাংলা ডোমেইন ২০১০ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি থেকেই ব্যবহারের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। ২০১১ সালের ৩০ মার্চ সরকার ডটবাংলা ডোমেইনের অনুমোদন পায়। কিন্তু তারপর আর পথ এগোয়নি। আমাদের জানার ও বোঝার বিষয় হচ্ছে এই অথর্বতার কারণ কী? কেন আমরা আবেদনের পর প্রায় সাতটি বছর সময় নিলাম ডটবাংলা ব্যবহার করার পর্যায়ে পৌঁছাতে। আমরা খুঁজেই দেখতে চাই কাদের জন্য বাংলা ভাষা সাত বছর পেছাল। আগামীতে সেই আলোচনাই আমরা করব। (পরের সপ্তাহে সমাপ্য)
দুই
প্রধানমন্ত্রী নিজে যখন ডটবাংলার জন্য আবেদন করেছিলেন তখন খুব সঙ্গতকারণেই এটি প্রত্যাশা করা হয়েছিল, সরকারের টেলিকম বিভাগ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে এবং ডটবাংলা ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু টেলিকম বিভাগ ডটবাংলার হেফাজত করার জন্য কাউকে দায়িত্ব না দেয়ার ফলে তিন বছরে ডটবাংলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমরা আরও স্মরণ করতে পারি, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুসারে টেলিকম প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ২১ ফেব্রম্নয়ারি ২০১৬-এর মধ্যে ডটবাংলা চালু করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি তিনি পারেননি। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত সেই প্রচেষ্টা এগোয়নি।
এরপর মিডিয়ায় বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন তুললে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কাজটি বিটিসিএলকে দিয়ে করান। ডিসেম্বর ’১৬ এটি চালুর ঘোষণা দেন। অবশেষে সেটি ৩১ ডিসেম্বর ’১৬ পর্যন্ত গড়ায়।
স্মরণ করতে পারি, ’১৬ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি শুধু একটি বোর্ড মিটিংয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। বিষয়টি নাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু এবারও দেখলাম, আইকানের সভায় বসে বিটিসিএলকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নেয়ার পর আমরা ডটবাংলার অনুমোদন পাই। এর মানে টেলিকম বিভাগ শেষ পর্যন্ত প্রস্ত্তত থাকতে পারেনি।
ডটবাংলা উদ্বোধন সম্পর্কে একটি ইংরেজি জাতীয় পত্রিকার ১ জানুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়-
The ICANN domain for Bangladesh had been dot bd (.bd) since 2003 and already 36,500 websites use it. Dot bangla was added on October 4 last year.
This kind of domain names makes it easier to identify a certain country's websites, for example; dot UK (.uk) websites belong to the United Kingdom.
Earlier, Indian state of West Bengal and Sierra Leone (one of whose official languages is Bangla) also asked for the .bangla domain and they would also receive another new domain label. And .bangla is Bangladesh's own Unicode domain label.
In the ceremony, Hasina expressed hope that the new domain would lead to an increase in ICT business.
“Those who criticised the announcement of a Digital Bangladesh will now be able to use .bangla domains,” said the PM.
State Minister for Telecom Tarana Halim also spoke at yesterday's ceremony, while Information Minister Hasanul Haq Inu, Expatriates' Welfare and Overseas Employment Minister Nurul Islam, Shipping Minister Shajahan Khan, Railways Minister Mazibul Hoque, and Prime Minister's Advisers HT Imam and Iqbal Sobhan Chowdhury were present.
After the program, Tarana said when she had taken office, she promised the .bangla domain and she did it after more than one year's of effort.
She said the new domain would make it easier for people to use the internet in Bangla and that the image of Bangladesh would be held high in the global arena.
Officials said the BTCL is to start accepting applications for the domain from today. They said customers could complete all procedures for .bangla domain names online while registration fee would be received using state-owned mobile phone operator Teletalk.
Domain names, such as “thedailystar.net”, were originally designed only to support ASCII characters. In 2003, a specification was released that allows most Unicode characters to be used in domain names. All modern browsers and email applications support this, allowing people to use links in their native languages.
Therefore, users can go to the BTCL website (www.btcl.com.bd) by just typing btcl.bangla in Bangla fonts in their browsers.
আমরা বাংলা ভাষার নামে দেশটা তৈরি করেছি। বাংলা ভাষার সাথে সাহিত্য ও সংস্কৃতি মিলে এই জাতির নিজস্ব সত্তা তৈরি হয়েছে। সেই সত্তাকে স্বাধীনতা পূর্বকালে যেমনি আঘাত করা হয়েছে, তেমনি এটি এখনও অব্যাহত রয়েছে। বাংলা ভাষা এখনও সর্বস্তরের ভাষা নয়। এ দেশে বেসরকারি বড় ব্যবসায়, ব্যাংকসহ বাণিজ্যে বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয় না। উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশুরাও মাতৃভাষায় কথা বলতে পারে না। উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা নেই। এমনকি ডিজিটাল রূপান্তরের নামে বাংলা ভাষার পাশাপাশি বাংলা হরফকেও বিদায় করা হয়েছে। সরকারের কেউ কেউ রোমান হরফে বাংলা লেখাকে উৎসাহিত করে। বহু ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট বা অন্য সফটওয়্যারে শুধু রোমান হরফই ব্যবহার করা হয়।
আমরা সারা দুনিয়ার মতো নিজেদের ভাষা নিয়ে ইন্টারনেটেও চ্যালেঞ্জে রয়েছি। ইউনিকোডে বাংলার সমর্থন থাকায় আমরা এখন সব অপারেটিং সিস্টেম ও ডিজিটাল ডিভাইসে বাংলা লিখতে পারি। তবে ইন্টারনেট বাংলার চর্চা কতটা হয় সেটি ফেসবুক-টুইটার-গুগল প্লাস দেখলে বোঝা যায়। ওখানে শুধু যে রোমান হরফ ব্যবহার হয় তাই নয়, বাংলা ভাষাকে বিকৃত করা হয় এবং সরকার এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। আমাদের প--তেরাও এইসব বিষয়ে কোনো ধরনের আপত্তি করেন না। বাংলা টিভি মিডিয়ার নামই শুধু রোমান নয়, এর অনুষ্ঠানমালার নাম খিচুড়ি মার্কা। এসব প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি মিশ্রিত উপস্থাপনা সমাদৃত হয়। সরকারি দলিলপত্র, প্রকল্প ও ওয়েবসাইটগুলোতে বাংলা অবহেলিত ভাষা হিসেবে ব্যবহার হয়। সরকারি ফরম ইত্যাদিতে এখন ডিজিটাল রূপান্তরের নামে ইংরেজি ব্যবহার হয়।
আমরা হতভাগা এজন্য যে, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেটি এসএমএস হোক বা কমপিউটারে হোক কিংবা স্মার্ট ফোনেই হোক, রোমান হরফে বাংলা লেখাকে গ্রহণ করে ফেলেছি। যে জাতি পাকিস্তান আমলে আরবি হরফে বাংলা লিখতে রাজি হয়নি বা রোমান হরফকে বাংলা ভাষার বাহন হতে দেয়নি, সেই দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর ইন্টারনেটের নামটাকে বাংলা করার সুযোগ পেয়েও সেটি ব্যবহার করতে পারছিলাম না, এই কষ্ট রাখার কি কোনো ঠাঁই আছে। আমি মনে করি, যাদের অবহেলায় চার বছরে ডট বাংলা ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি তাদেরকে চিহ্নিত করা উচিত এবং তাদের জন্য বাঙালি জাতি, তার ভাষা ও হরফের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য শাস্তি দেয়া উচিত। সংবিধানের ৩ নম্বর ধারার আলোকে বাংলা ব্যবহার না করা অসাংবিধানিক। আমি মনে করি, জাতিকে বাংলা ভাষাকে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়াতে অবহেলা করা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। কারণ, রাষ্ট্রটাই বাংলার ওপর দাঁড়ানো।
নিবন্ধটি শেষ করার আগে আমি আমার একটি আশঙ্কা দূর করার জন্য অনুরোধ করছি। সেই আশঙ্কাটি ডটবিডি ও ডটবাংলার ব্যবস্থাপক বিটিসিএল সম্পর্কে। অন্যদিকে ডটবিডির অবস্থাও যে ভালো নয়, সেটি একটি দৈনিক পত্রিকার খবরে প্রকাশিত হয়।
Another official said they have so far registered over 25,000 .bd domains. He also said the number of dot bd domain would exceed 50,000 before introduction of the country code top level domain.
The government had registered the dot bd domain in 2003, but only 9,000 web addresses were registered under the domain till 2012 for lack of publicity.
আমরা লক্ষ করেছি, ডটবিডি ডোমেইন নিবন্ধন করতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় এবং সেটি চালু করতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। ডটবিডি সার্ভার সেদিনও বহু ঘণ্টা বন্ধ থাকলা। মাত্র কদিন আগে ডট বিডি হ্যাক হলো। বলা হয়েছে, পাকিস্তানি হ্যাকারেরা এই সাইটটি হ্যাক করে। এখনও স্পষ্টত, ডট বিডির নিবন্ধনের কোনো সুনির্দিষ্ট ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা জেনেছি, ডটবিডি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও এখনও সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারছে না। বলা হচ্ছে, ২১ ফেব্রম্নয়ারি ১৭ থেকে সাধারণ মানুষ ডটবাংলা ব্যবহার করতে পারবে।
এটি বলার অপেক্ষা রাখে না, এই বিলম্বের একমাত্র কারণ বিটিসিএলের দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার ত্রম্নটি। আমি ধারণা করতে পারি না, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তি বাংলা ভাষা নিয়ে বিটিসিএলের এই অমার্জনীয় অদক্ষতার কেন কোনো বিচার হবে না। টেলিকম বিভাগে বাংলা ভাষা ও হরফের প্রতি ভালোবাসা আছে এমন কেউ কি নেই? টেলিকম প্রতিমন্ত্রী নিজে অত্যন্ত সাহসের সাথে সিমের বায়োমেট্রিক্সের নিবন্ধন করেছেন। ডটবাংলা চালুর বিষয়েও তিনি উদ্যোগী ছিলেন। হতে পারে এমন যে, তিনি উদ্যোগী ছিলেন বলেই শেষ অবধি ডটবাংলার উদ্বোধন হলো। কিন্তু তিনি কি বিটিসিএলের এই অদক্ষতার তদন্ত করতে পারবেন না? তিনি কি খুঁজে বের করতে পরবেন না কারা এর জন্য দায়ী? আমি নিজে মনে করি দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের ভাবতে অবাক লাগে, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে পিছিয়ে দেয়ার মতো মানুষেরাও অতি আরামে সরকারের অংশ হিসেবে দিন যাপন করতে পারে
ফিডব্যাক : mustafajabbar@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৭ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস