লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
বিদায় অ্যাকসেঞ্চার-ভিজার্টি দোলাচালে প্রযুক্তিপেশা খাত
আগামী ১৯ আগস্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভার্চু্যয়াল স্টুডিও, ব্রডকাস্ট মিডিয়া ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার তৈরিতে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানি ভিজার্টির বাংলাদেশের গবেষণা ও উন্নয়ন শাখা। আর ৩০ নভেম্বর বিদায় নিচ্ছে বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ। মার্কিন মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত৫৫৬ কর্মী। অ্যাকসেঞ্চার কমিউনিকেশন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার সলিউশন্স লিমিটেড (এসিআইএসএল) বাংলাদেশের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) পুরুসওথামা কাদাম্বু কর্মীদের ছাঁটাইয়ের নোটিস দেন। তিনি এসিআইএসএলের এমডিও। এর আগে গত মে মাসে বন্ধ হয়ে যায় ক্ল্যাসিফাইড ই-কমার্স সাইট ‘এখানেই ডটকম’। টিকতে না পেরে ই-কমার্স প্লাটফর্ম কেইমু ডটকম ডটবিডি একীভূত হয়ে যায় আরেক ই-কমার্স দারাজের সাথে। এ ছাড়াকয়েক যুগ ধরে প্রযুক্তি ব্যবসায় করে আসা স্থানীয় আমদানিকারক বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও ইতোমধ্যে বাজার থেকে হারিয়ে গেছে। লাইসেন্স-সর্বস্ব গ্রাহকহীন কাগুজে প্রতিষ্ঠান হয়ে ইতিহাস হয়ে রয়েছে দেশের প্রথম টেলিকম অপরেটরসিটিসেল। গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের মতো ডাকসইটে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা এখন গা-সওয়া হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি খাত জুড়ে চলছে চাপা আর্তনাদ। প্রযুক্তি খাত-সংশ্লিষ্ট পেশাদারদের মধ্যে জুজুবুড়ির ভয়। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই মাত্র ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে গুলশানে সাবলেটে এক কামরার অফিস নিয়ে দুই বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকা লভ্যাংশ করেছে ভারতীয় ভ্যাস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হাঙ্গামা ডিজিটাল মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে ‘হাঙ্গামা’ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড নামে নিবন্ধিত (বাংলাদেশ অফিস অব দ্য রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে নিবন্ধন নম্বর সি-৮৬৪৮৪) এই অখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির অস্বাভাবিক মুনাফার কথা সম্প্রতি জানা গেলেও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে তাদের কর্মীসংখ্যা মাত্র একজন।
এমনই ধুন্ধুমার অবস্থার মধ্য দিয়ে অনেকটা বায়বীয় অবস্থায় পরিণত হতে চলেছে দেশের প্রযুক্তি খাত। চাকরির নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে ফের বিদেশমুখী হতে চলেছে প্রযুক্তি-দক্ষ জনসম্পদ। টেক-সই নীতি এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকলেও এ যেন তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে বানরের ওঠানামা খেলা! ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন হলেও এর মধ্যে পরম্পরা রয়েছে বলে মনে করছেন খাত-সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত, প্রযুক্তি পেশার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে যে রূপকল্প নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে, তা বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রসঙ্গ: হাঙ্গামা
কোম্পানি মূলধনের প্রায় ৩২০ গুণ লভ্যাংশ করে হাঙ্গামা। মাত্র ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ২০১৫ সালে ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ২৫০ এবং ২০১৪ সালে ৬ কোটি ৭ লাখ ৩৩ হাজার ১২৫ টাকা লভ্যাংশ বাবদ ভারতে পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘অস্বাভাবিক ব্যবসায়িক কর্মকা-’ হিসেবে বিবেচনা করে এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানকে দুই দফা চিঠিও দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ-প্রফিট, ডিভিডেন্ড রেমিট্যান্স শাখা) মো: আলী আকবর ফরাজী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বিটিআরসির কাছে এই ধরনের সেবাদানের জন্য কোনো অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে কিনা, এজন্য শতভাগ বিদেশি মালিকানাধীন অখ্যাত একটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেয়ার আদৌ কোনো যৌক্তিকতা আছে কিনা এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের এত উচ্চমূল্যে এসব সেবা (ওয়াপ, সিআরবিটি, আইভিআর ও মিউজিক স্ট্রিমিং সেবা) দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রয়োজন আছে কি না, এসব বিষয়ে অভিমত চাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাঙ্গামার কর্মীসংখ্যা মাত্র একজন। এছাড়া স্থায়ী কোনো স্থাপনা নেই। স্থায়ী স্থাপনাবিহীন ‘স্বল্প মূলধনী’ এ প্রতিষ্ঠানটি তাদের একজন মাত্র কর্মী দিয়ে মূলধনের প্রায় ৩২০ গুণ লভ্যাংশ ভারতে পাঠিয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ‘হাঙ্গামা’ ভারতের হাঙ্গামা ডিজিটাল মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও নিরাজ রায়ের (পরিচালক) শতভাগ মালিকানাধীন একটি কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল ফোনের ওয়াপ, সিআরবিটি (কলার রিং ব্যাক টোন),আইভিআর (ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রিকগনিশন) ও মিউজিক স্ট্রিমিং সেবা দেয়।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিটিআরসিতে শর্টকোড চেয়ে আবেদন করেছে হাঙ্গামা। শর্টকোডটি ই-এন্টারটেইনমেন্ট (মিউজিক, ওয়ালপেপার, অ্যানিমেশন, গেমস, ভিডিও) সার্ভিসের জন্য চাওয়া হয়েছে। শর্টকোড বরাদ্দ দিতে বিটিআরসির অনুকূলে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা (১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ) চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শর্টকোড চেয়ে টাকা জমা দেয়ার আবেদনপত্রে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে নিরাজ রায়ের স্বাক্ষর রয়েছে। স্বাক্ষরের নিচে ভারতের একটি ফোন নম্বর দেয়া রয়েছে। প্যাডে প্রতিষ্ঠানটির গুলশানের ঠিকানা দেয়া থাকলেও তাতে কোনো ফোন নম্বর বা ই-মেইল ঠিকানা নেই। মোবাইল অপারেটর সূত্র বলছে, তাদের গ্রাহকেরা বিভিন্ন কনটেন্ট প্রোভাইডারদের থেকে মোবাইলে গান, ওয়ালপেপার ডাউললোড করেন, রিংটোন বা ওয়েলকাম টিউন সেট (এজন্য মোবাইল গ্রাহকের ব্যালেন্স থেকে টাকা কেটে নেয়া হয়) করেন, তার জন্য ওই প্রতিষ্ঠান (হাঙ্গামার মতো অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে) সংশ্লিষ্ট অপারেটরের সাথে চুক্তির শর্তানুযায়ী রাজস্ব ভাগাভাগি করে। হাঙ্গামাও বিভিন্ন অপারেটরের কাছ থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব ভাগাভাগির বেশিরভাগ অর্থ থেকে লভ্যাংশ (প্রায় ১৩ কোটি) বাবদ ভারতে পাঠিয়েছে।
দেশে দীর্ঘদিনেও ভ্যাস (ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস) গাইডলাইন না থাকায় প্রযুক্তি খাতে এমন ধুন্ধুমার কা- ঘটছে বলে মনে করেন দেশীয় কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিরা। তাদের ভাষ্য, ভ্যাস গাইডলাইন থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিতে হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে লাইসেন্স নিতে হতো। তাহলে জবাবদিহির একটা বিষয় থাকত। অনুমোদন নেয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকলে যেকেউ যেনতেনভাবে ব্যবসায় করে যেতে পারত না।
অ্যাকসেঞ্চার, উইপ্রো; এরপর?
প্রযুক্তি প্রকৌশল ও কারিগরি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে জিপিআইটি। বাজার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ একটি বিভাগকে স্বাতন্ত্র্য কাঠামোয় এনে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলে বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। তবে কৌশলগত কারণে ২০১৩ সালের ৩ আগস্ট জিপিআইটির সংখ্যাগরিষ্ঠ (৫১ শতাংশ) শেয়ার কিনে নিয়ে বিশ্বখ্যাত ব্যবস্থাপনা পরামর্শক, প্রযুক্তিসেবা ও আউটসোর্সিং কোম্পানি অ্যাকসেঞ্চার বিভি অধিগ্রহণ করে। তখন জিপিআইটির কর্মীসংখ্যা ছিল চার শতাধিক। অধিগ্রহণের পর অ্যাকসেঞ্চরে নিয়োগ দেয়া হয় আরও দুই শতাধিক কর্মী। সব মিলিয়ে অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশের মোট কর্মীসংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫৬ জনে। কিন্তু গত ১৮ জুলাই অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ সব কর্মীকেই টার্মিনেশন লেটার পাঠায়। তাতে বলা হয়, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের পাওনা পরিশোধ করে ওইদিন থেকেই অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ বন্ধ করে দেয়া হবে।
এসিআইএসএল বাংলাদেশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) রায়হান শামছি এবং সিওও পুরুসওথামা কাদাম্বু একচিঠিতে কর্মীদেরউদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনারা হয়তো জানেন ভবিষ্যৎ সেবা নিয়ে অ্যাকসেঞ্চারের সাথে টেলিনরের (গ্রামীণফোনের মূল কোম্পানি) অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে অ্যাকসেঞ্চারের সাথে টেলিনরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ব্যবসায়ের চাহিদার দিকে লক্ষ রেখে কী করা যায়, তা নিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি কাজ করছিল। টেলিনরকে এখন যে সেবা দিচ্ছে অ্যাকসেঞ্চার, তা এখন ইন-হাউস এবং অন্যান্য সার্ভিস প্রোভাইডারের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। বাংলাদেশে নতুন একটি সার্ভিস প্রোভাইডার ও টেলিনরের অন্যান্য দেশের অপারেশনে এ কাজ ভাগ হয়ে যাবে। তাই নভেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত সবার চাকরির নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমরা। নভেম্বর পর্যন্ত সবার বেতন-ভাতা যথাযথভাবে পরিশোধ করে দেয়া হবে। এছাড়া সব কর্মীকে অভিজ্ঞতা সনদ দেয়া হবে, যেখানে অ্যাকসেঞ্চারে থাকাকালীন তাদের ভালো কাজ ও ভালো চরিত্রের স্বীকৃতি থাকবে।এখন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ট্রানজিশনাল পিরিয়ড চলবে। এ সময়ের মধ্যে কিছু কিছু কর্মীকে পেইড লিভ দেয়া হবে। পেইড লিভে গেলেও নভেম্বর পর্যন্ত বেতন-ভাতায় এর কোনো প্রভাব পড়বে না। বিচ্ছেদকরণ বেতন-ভাতায়ও এর কোনো প্রভাব পড়বে না। সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ পর্যন্ত যারা ব্যক্তিগত কারণে বা নতুন চাকরির অফারের কারণে নভেম্বরের আগেই চাকরি ছাড়তে চান, তারা টাওয়ার লিড বরাবর আবেদন করতে পারবেন। এ সময়টা কর্মীদের জন্য অনিশ্চয়তাপূর্ণ সময়, সেটি বুঝতে পারছে অ্যাকসেঞ্চারের ম্যানেজমেন্ট টিম। একই সাথে কাস্টমারদের সর্বোত্তম সেবা দেয়ার জন্য কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমকেও স্বীকৃতি দিচ্ছে।এ বিষয়টি অনুধাবন করে আজ (১৮ জুলাই) সব কর্মীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক মাসের মূল বেতন পাঠানো হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ শর্তহীন বেতন। কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এ বেতন দিচ্ছে অ্যাকসেঞ্চার। আগষ্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্তপ্রতি মাসের শেষে সার্ভিস কমিউনিটি বোনাস হিসেবে মূল বেতনের অর্ধেক বোনাস পাবেন কর্মীরা। কর্মীদের যেকোনো তথ্যের চাহিদা মেটাতে আমরা ২২২২ নম্বরের একটি হেল্পলাইন চালু করেছি। এছাড়া BangladeshHelpDesk@accenture.com-এ মেইল করেও কর্মীরা যেকোনো প্রশ্নের উত্তর পাবেন। চিঠিতে কর্মীদের নতুন চাকরি হিসেবে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম সফটওয়্যার পরিসেবা রফতানিকারী প্রতিষ্ঠান উইপ্রোতে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়। কোম্পানিটি গ্রামীণফোনের নতুন সার্ভিস প্রোভাইডার সেটিও উল্লেখ করা হয়।’
তবে এই মেইল পেয়ে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ হন অ্যাকসেঞ্চার বিডি কর্মীরা। সিদ্ধামেত্মর প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের সংগঠন অ্যাকসেঞ্চার এমপস্নয়ী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ১৯ জুলাই থেকে তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানোর দিন থেকেই গুলশানস্থ অফিসে পুলিশ মোতায়েনও করা হয়।অবশ্য এরআগে গত ৬ এপ্রিল অ্যাকসেঞ্চারের ওয়ার্কপ্লেস টিমের মো: আজিজুর রহমানকে (ওয়ার্ক আইডি ১০৯৩০৬৩১) জোরপূর্বক রিজাইন দিতে বলা হয়। তখন তিনি না মানলে তাকে পদচ্যুত করে সেই পত্র নোটিস বোর্ডে টানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। আর এই নিয়েই অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশের কার্যালয়ে শুরু হয় অসমেত্মাষ।এই ঘটনার জেরে ৯ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত টানা কর্মবিরতি চলে। অপরদিকে অ্যাকসেঞ্চারের সাথে দিনদিন দূরত্ব তৈরি হয় গ্রামীণফোনের। সব মিলিয়ে গ্রামীণফোন ও অ্যাকসেঞ্চারের যাঁতাকলে পড়েন এখানকার কর্মরত ৫৫৬ কর্মী। অথচ উভয় প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যবসায় করে সরকার প্রদত্ত নানামুখী সুবিধা ভোগ করে। কিন্তু অ্যাকসেঞ্চার বিদায় নেয়ার আগে সরকারের কোনো বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেনি। সরকারও এ বিষয়ে যুগপৎ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না তাও জানা সম্ভব হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুরুর দিকে টেলিনর গ্লোবালের চার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন, ডিজি মালয়েশিয়া, ডিট্যাক থাইল্যান্ড ও টেলিনর পাকিস্তনের দায়িত্ব পায় অ্যাকসেঞ্চার। এশিয়ার এই চারটি দেশের সাথে সফল ব্যবসায় করার পর টেলিনরের অন্যান্য অঞ্চলের ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল অ্যাকসেঞ্চারের। একসময় প্রতি প্রামিত্মকে গ্রামীণফোনের ৯৭ কোটি টাকার কাজ করত অ্যাকসেঞ্চার। কিন্তু সম্পর্কের অবনতি ঘটায় তা নেমে যায় ৭৬ কোটি টাকায়। এক পর্যায়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের একটি বিষয় আদালত পর্যন্তও গড়ায়। এরই ফাঁকে সম্প্রতি অ্যাকসেঞ্চারের পর গ্রামীণফোনের আইটি ডিভিশনের সব কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় ভারতের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি, কনসাল্টিং ও আউটসোর্সিং কোম্পানি ‘উইপ্রো’কে। এ বিষয়ে গ্রামীণফোন মুখপাত্র তালাত কামাল বলেন, এশিয়া ও ইউরোপে তাদের বিভিন্ন কর্মকা- পুনর্বিন্যাস করতে অ্যাকসেঞ্চার, টেলিনর গ্রুপ ওগ্রামীণফোন একসাথে কাজ করছে। এর ফলে অ্যাকসেঞ্চার কমিউনিকেশন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার সলিউশন্স লিমিটেড (এসিআইএসএল) যেসব সেবা প্রদান করত, সেগুলো নিজেদের ওপ্রখ্যাত বৈশ্বিক আইটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান উইপ্রোর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সূত্রমতে, প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০০ কর্মী নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান উইপ্রো। ইতোমধ্যে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে উইপ্রো। তবে বাংলাদেশে কাজ করার কোনো ঘোষণা এখনও দেয়নি উইপ্রো। জানা গেছে, অ্যাকসেঞ্চারের যে ২৫০ কর্মী গ্রামীণফোনকে আইটি সাপোর্ট দিয়ে থাকেন, তাদের মধ্য থেকেই কর্মীদের নিতে চায় উইপ্রো। এছাড়াসরকার থেকে প্রতিষ্ঠানটির এখনও কোনো অনুমোদন না মিললেও ‘মুন্সি ট্রেডার্স’ নামে লোকবল নিয়োগের কাজ শুরু করেছে তারা। ছাঁটাইয়ের নোটিসে থাকা অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ কার্যালয়ের ৫৫৬ কর্মীর অনেকেই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে উইপ্রোতে চাকরির ইন্টারভিউ দিয়েছেন।তবে সেখানে বর্তমান চাকরির চেয়ে কম বেতন অফার করা হচ্ছে বলে জানান তারা। কেউ কেউ একইবেতনে অফার পেলেও কর্মপরিবেশ বিবেচনায় উইপ্রোকে ভালো ভাবছেন না। কোনো কোনো কর্মী অভিযোগ করে বলছেন, প্রায় ২৫০ কর্মী উইপ্রোতে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত মাত্র সাতজন ডাক পেয়েছেন। তবে তাদের কেউই নিয়োগ পাননি।
অবশ্য ২০০৫ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে শুরুতে ৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে বাংলাদেশে স্থানীয় কোনো কোম্পানির সাথে যৌথভাবে ব্রাঞ্চ চালুর কথা জানিয়েছিলেন উইপ্রোর তৎকালীন স্ট্র্যাটেজিক সেলসের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথান কেসভ। তিনি জানিয়েছিলেন, উইপ্রোর নিকট ভবিষ্যতের লক্ষ্য বাংলাদেশের বাজার, যা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সে সময় তিনি বাংলাদেশের বাজার গবেষণা করার কথাও বলেছিলেন।কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা এক যুগেও বাস্তবায়ন করতে পারেনি উইপ্রো। এবার তারা কী করবে তাই নিয়েও শঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।
এদিকে অ্যাকসেঞ্চার বন্ধ হওয়াতে আমাদের আইটি খাতে তেমন কোনোপ্রভাব পড়বে না বলে গণমাধ্যমকে অবহিত করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে আইটি খাত মোটামুটি দাঁড়িয়ে গেছে। আমরা এখন বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্টের কাছাকাছি আছি। অ্যাকসেঞ্চারের ১০ মিলিয়ন ডলারের মতো এক্সপোর্ট ছিল। আমাদের এই সাড়ে পাঁচশ’ ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হয়েছে এবং তাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এখন আমাদের লিডিং যেসব আইটি কোম্পানি আছে, তারা সেখানে যাবে এবং তারা নিজেরাও উদ্যোক্তা হবে। বড় কোম্পানিতে চাকরি হওয়াতে বা তারা নিজেরাই যদি উদ্যোক্তা হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা আশা করছি আইটি খাতে তেমন কোনোপ্রভাব পড়বে না। আমাদের দেশীয় কোম্পানি ছাড়াও যেমন আইবিএম থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাদের সাথেও আমাদের কথাবার্তা হচ্ছে।’
অবশ্য অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ থেকে চলে গেলে ইমেজের বড় ধরনের একটা সঙ্কট তৈরি হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জববার। তিনি বলেন, ‘আগামীতে যেসব প্রতিষ্ঠান বা বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় বা সরাসরি আসতে চায়, তারা দ্বিতীয়বার ভাববে। আমরা যতই সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য রফতানি করি না কেন, এই ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া কঠিন হবে।’
জববারের কথারই প্রতিধ্বনী হয় জিপিআইটির সাথে প্রথম দিকে কাজ করা তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সৈয়দ আলমাস কবিরের কথায়। তিনি বলেন, ‘আমরা যে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট আশা করি এবং এখানে যে আমরা হাইটেক পার্ক বানিয়ে আশা করছি বিদেশি বড় কোম্পানি এখানে এসে অফিস সেটআপ করবে; সেটাতে একটা বড় প্রভাব পড়বে। অ্যাকসেঞ্চারের মতো বড় প্রতিষ্ঠান চলে যাওয়াতে অন্যরা এখানে বিনিয়োগ করতে ভয় পাবে। তবে একই সময়ে ফরেন ইনভেস্টমেন্টে নিরুৎসাহিত হলেও উইপ্রো বাংলাদেশে আসার কারণে একটি সম্ভাবনা তৈরি হবে। উইপ্রো হয়তো বেশ কিছু ইঞ্জিনিয়ারকেও রাখবে এবং অন্যদের জিপি ফিরিয়ে নিতে পারে। আমরা আশা করছি, উইপ্রো বাংলাদেশে ভালো উদাহরণ তৈরি করতে সক্ষম হবে।’
অ্যাকসেঞ্চারের চলে যাওয়া নিয়ে ফোর কে সফট লিমিটেডের সিইও মাহমুদুল হাসান সাগর বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বিখ্যাত আইটি কোম্পানি অ্যাকসেঞ্চার(Accenture) ব্যবসায় গুটিয়ে চলে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের ইকোনমিক ইন্ডিকেটর হিসেবে একটা গ্রেইভ সাইন। প্রায় ছয়শ’ হাইলি স্কিল্ড পেশাদার ছাঁটাই হবে। এটা পশ্চিমে ঘটলে হইচই শুরু হয়ে যেত। কিন্তু খবর হিসেবেও বাংলাদেশের মিডিয়াতে এটা গুরুত্ব পায়নি।’ তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে ২০০৩-১০ পর্যন্ত নতুন চাকরি বেড়েছিল বছরে ২.৭ শতাংশ হারে, কিন্তু ২০১০-এর পর থেকেই নতুন চাকরি বাড়ার হার কমে দাঁড়িয়েছে বছরে ১.৮ শতাংশে। সংখ্যার বিচারে এটা প্রায় ১০ লাখ। কর্মক্ষম মানুষ বাড়ে বছরে প্রায় ৪.৫ শতাংশ। তাহলে ধরে নিতে পারেন প্রায় ১৫-২০ লাখ নতুন বেকার প্রত্যেক বছর আমাদের দেশে যুক্ত হচ্ছে। বিষয়টি মোটেই স্বসিত্মর নয়।’
প্রযুক্তিখাতের পেশাজীবন নিয়ে এমনই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানালেন অ্যাকসেঞ্চার এমপস্নয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমেদ। অ্যাকসেঞ্চারের মতো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়া বহির্বিশে^ আমাদের ভাব-মর্যাদার সঙ্কট হিসেবে চিত্রিত হবে এবং বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করেন তিনি। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আগেই তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্রম্নত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।’
শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা৫৫৬ কর্মী কোথায় যাব? আমরা সবাই টেলিকম খাতে বিশেষজ্ঞ। যেখানে টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোই কর্মী ছাঁটাই করছে, সেখানে তো আমরা চোখে অন্ধকার দেখছি।’ অ্যাকসেঞ্চার, টেলিনর ওগ্রামীণফোনের পারস্পরিক ব্যবসায়িক জটিলতার কারণে বাংলাদেশ থেকে অ্যাকসেঞ্চার চলে যাচ্ছে।তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অ্যাকসেঞ্চারের অনেক প্রজেক্ট রয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের জন্যই প্রয়োজন ২০০ কর্মী। অবশিষ্ট কর্মী কাজ করেন টেলিনরের বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট নিয়ে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান উইপ্রো এসে যদি আমাদের কর্মীদের নিতে চায়, তাহলেও সর্বোচ্চ ২০০ কর্মীকে নিতে পারবে। অবশিষ্ট ৩৫৬ কর্মীর কী হবে?’
শাহীন আহমেদ আরও বলেন, ‘গ্রামীণফোনের কাজ অ্যাকসেঞ্চারের হাত থেকে চলে গেলেও টেলিনরের যে কাজ থাকবে, তা আমরা ভালোভাবে করে দিলে অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ থেকে মুনাফা করতে পারবে। এজন্য দেশে এ প্রতিষ্ঠানটিকে ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।প্রয়োজনে কর্মীরা অতিরিক্ত সময়ও কাজ করতে রাজি আছে।’
চলে যাচ্ছে ভিজার্টিও
আগামী ১৯ আগস্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভার্চু্যয়াল স্টুডিও, ব্রডকাস্ট মিডিয়া ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার তৈরিতে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানি ভিজার্টির বাংলাদেশের গবেষণা ও উন্নয়ন শাখা। তবে এখানে কর্মরত ৩০ শতাংশ সফটওয়্যার প্রকৌশলীকে সপরিবারে নরওয়ে অফিসে যোগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এই আহবানে সাড়া দিয়ে আগামী ২২ও ২৩ আগস্ট সপরিবারে ঢাকা ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠানটির ৮ কর্মী। ভিসা জটিলতার কারণে এদের মধ্যে একজন যাচ্ছেন সুইডেনে।
এ বিষয়ে ভিজার্টি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হক আজাদ বলেন, ‘এখানে কর্মরত ৪৪ জনের মধ্যে ১৫ জনকে সপরিবারে নরওয়েতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অফার দিয়েছে ভিজার্টি। এটা বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের যোগ্যতা ও সুনামের জন্যই হয়েছে।’ ভিজার্টি কেন বাংলাদেশ থেকে গুটিয়ে নিল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা কৌশলগত কারণে। আসলে ভিজার্টি নরডিক ক্যাপিটেলের কাছে বিক্রি হওয়ার পর তারা ইউরোপকেন্দ্রিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিতে শুরু করে। তাই ভিজার্টির জন্মভূমি খোদ ইসরায়েল থেকেও তারা গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ থেকেও গুটিয়ে নিল। কিন্তু এ ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে আমাদের কর্মীরা কম দক্ষ নন।’ আজাদ জানান, ‘দেশে কোম্পানিটির ৪৫ জন কর্মী দল আছে। সেখান থেকে এই ১৫ জনকে নরওয়েতে নিয়ে কোম্পানিটি যে ব্যয় করবে তা দিয়ে ঢাকায় ১০০ জনের অফিস চালানো যায়।’চলতি বছরের মার্চে ভিজার্টি বাংলাদেশ থেকে রিসার্চ সেন্টার গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়। কোম্পানিটির সবচেয়ে বড় রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটিই (আরঅ্যান্ডডি) বাংলাদেশে। আগামী মাসের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষে সেন্টারটি বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, ফক্স, স্কাই নিউজসহ দেশী চ্যানেল সময়, এসএটিভি, এনটিভি, একাত্তর, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনেও ব্যবহার হয় এ কোম্পানির সফটওয়্যার। বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমেও ব্যবহার হয় ভিজার্টির সফটওয়্যার। ভিজার্টির সফটওয়্যার দিয়ে খেলা বিশেস্নষণ করে থাকে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থা ফিফা। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ফিফার অফিসিয়াল অ্যানালাইসিস পার্টনার ছিল ভিজার্টি। যেখানে গোল হয়েছে কি না, অফসাইড দেখা ও অন্যান্য বিষয় বিশেস্নষণ করা হয় এ কোম্পানির তৈরি সফটওয়্যার দিয়ে।আমেরিকার নির্বাচনেও রিয়েল টাইম অ্যানালাইসিসে বহুল ব্যবহৃত এর সফটওয়্যার। আর এসব সফটওয়্যার তৈরির পেছনে মেধা ও শ্রম রয়েছে বাংলাদেশ আরঅ্যান্ডডির, বাংলাদেশী কর্মীদের।কিন্তু ভিজার্টিও বাংলাদেশ থেকে তাদের গবেষণা গুটিয়ে নেয়ায় দেশে যে প্রযুক্তি-দক্ষ জনসম্পদ তৈরি হতো তার পথটি যেমন স্লথ হয়ে যাবে; একই সাথে বাংলাদেশ তার মেধাবী প্রকৌশলীদেরও হারাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। দেশে প্রযুক্তি পেশার মান ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে ডিজিটাল ইকোনমিনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা বুমেরাং হতে পারে। এত ভর্তুকি, প্রণোদনা, কর অবকাশ সুবিধা দিয়েও শেষতক সুফল মিলবে না।