• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ই-রিডার যেন বহনযোগ্য এক লাইব্রেরি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: সাদা’দ রহমান
মোট লেখা:১৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০২১ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
টেকনোলজি প্রতিষ্ঠান
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ই-রিডার যেন বহনযোগ্য এক লাইব্রেরি
ই-রিডার যেন বহনযোগ্য এক লাইব্রেরি

মো: সা’দাদ রহমান

ই-রিডার। এটি ই-বুক রিডার 
ও ই-বুক ডিভাইস নামেও 
পরিচিত। এটি একটি মোবাইল 
ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এর ডিজাইন 
করা হয়েছে প্রথমত ডিজিটাল ই-বুক 
ও সাময়িকী পড়ার উপযোগী করে। 
যেসব ডিভাইসের পর্দায় কোনো লেখা 
প্রদর্শন করতে পারে, তা কাজ করতে 
পারে একটি ই-রিডার হিসেবে। তা 
সত্তে¡ও বিশেষায়িত ই-রিডার ডিভাইস 
সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছাতে পারে 
এর পোর্টেবিলিটি (বহনযোগ্যতা), 
রিডেবিলিটি (পাঠযোগ্যতা) ও ব্যাটারি 
লাইফ (ব্যাটারির আয়ু)। মুদ্রিত বইয়ের 
তুলনায় ই-বুকের মূল সুবিধা হচ্ছে এর 
পোর্টেবিলিটি। কারণ, একটি ই-বুক 
রিডার ধারণ করতে পারে হাজার 
হাজার বই, যেখানে একটি ই-বুকের 
ওজন একটি বইয়ের চেয়েও কম। 
এতে আরো সুবিধা রয়েছে এর অ্যা ডঅন-ফিচারের। 
পর্যালোচনা আসলে ই-বুক ডিভাইস উদ্ভাবনের 
পেছনে লক্ষ্য ছিল বই পাঠকে 
পাঠকদের কাছে সহজতর করে তোলা। 
ফর্ম ফ্যভক্টরের দিক থেকে এটি ট্যাবলেট 
কমপিউটারের মতোই, কিন্তু এর ইলেকট্রনিক 
পেপার ফিচার এলসিডি স্ক্রিনের চেয়েও 
উন্নত। এর ব্যাটারির আয়ুও অনেক বেশি। 
এর ব্যাটারি একটানা কয়েক সপ্তাহ চলে। 
এমনকি সূর্যের আলোতে এর স্ক্রিনের লেখা 
বইয়ের পাতার চেয়ে স্পষ্টভাবে পড়া যায়। এ 
ধরনের ডিসপ্লের অসুবিধার মধ্যে আছে ‘¯েøা 
রিফ্রেশ রেট’এবং সাধারণত গ্রেস্কেল অনলি 
ডিসপ্লে, যা উপযুক্ত নয় ট্যাবলেটের মতো 
সফিস্টিকেটেড ইন্টারেক্টিভ অ্যাপ্লিকেশনের 
জন্য। এ ধরনের অ্যাপ না থাকাটাকেও 
একটি সুবিধা হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে 
পারে, কারণ এর ফলে ব্যবহারকারী সহজেই 
বই পড়ায় মনোনিবেশ করতে পারে। 
সনি কোম্পানির খরনৎরব ই-বুক উন্মুক্ত 
করা হয় ২০০৪ সালে। ‘সনি রিডার’-এ 
অগ্রদূত এই ই-বুকে সর্বপ্রথম ব্যবহার হয় 
ইলেকট্রনিক পেপার। ঊপঃধপড় লবঃইড়ড়শ 
ঈড়ষড়ৎ হচ্ছে বাজারের প্রথম কালার 
ই-রিডার। তবে কালার বেশ সমালোচিত হয়। 
অনেক ই-রিডার ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট 
ব্যবহার করতে পারে। এবং এগুলোর বিল্টইন সফটওয়্যার সংযোগ গড়ে তুলতে পারে 
একটি ‘ডিজিটাল পাবলিকেশন ডিস্ট্রিবিউশন 
সিস্টেম (ওপিডিএস)’ লাইব্রেরি কিংবা 
কোনো ই-বুক রিটেইলারের সাথে। এর ফলে 
ব্যবহারকারী কিনতে, ধার নিতে কিংবা পেতে 
পারেন ডিজিটাল ই-বুক। একটি ই-রিডার 
ব্যবহারকারী কমপিউটার থেকে ই-বুক 
ডাউনলোডও করতে পারেন কিংবা পড়তে 
পারেন মেমরি কার্ড থেকে। তা সত্তে¡ও 
মেমরি কার্ডের ব্যবহার কমে আসছে, 
কারণ ২০১০-এর দশকের বেশিরভাগ 
ই-রিডারে কার্ড ¯øট থাকে না। 
ইতিহাসের আলোকে
১৯৩০ সালে বব ব্রাউন লিখিত 
মেনিফেস্টো ঞযব জবধফরবং-এ বর্ণনা 
করা হয় ই-রিডারের মতো একটা কিছুর 
ধারণা। এতে তিনি এভাবে বর্ণনা দেন 
একটি সরল রিডিং মেশিনের: ‘এই 
মেশিন আমি চারদিকে বহন করে নিতে 
পারি কিংবা নড়াচড়া করতে পারি, জুড়ে 
নিতে পারি একটি পুরনো ইলেকট্রিক 
প্লাগের সাথে ও ১০ মিনিটে পড়তে 
পারি শত শত, হাজারহাজার শব্দের 
এক উপন্যাস।’ তার এই হাইপোথে
টিক্যাল মেশিন ব্যবহার করবে ক্ষুদ্রায়িত 
টেক্সটের একটি মাইক্রোফিল্ম-ধরনের 
রিবন, যা স্ক্রল করা যাবে একটি 
ম্যাগনিফাইং তথা বিবর্ধক কাঁচের 
সামনে। এর মাধ্যমে পাঠক অক্ষরের 
সাইজ প্রয়োজন মতো ছোট-বড় করে 
নিতে পারবে। তার স্বপ্ন ছিল, শেষ 
পর্যন্ত শব্দগুলো সরাসরি রেকর্ড করা 
যাবে পালপিটেটিং ইথারের ওপর। 
১৯৯৭ সালে ই-লিঙ্ক করপোরেশন 
প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সূত্রে আমরা পেলাম 
‘ইলেকট্রনিক পেপার’প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি 
সাধারণ কাগজের মতো একটি ডিসপ্লে স্ক্রিনে 
ব্যাকলাইট ছাড়াই আলোর প্রতিফলনের 
সুযোগ করে দেয়। ‘রকেট ই-বুক’ হচ্ছে 
প্রথম কমার্শিয়াল ই-বুক রিডার। আরো 
বেশ কয়েকটি ই-বুক রিডারের সূচনা করা 
হয় ১৯৯৮ সালের দিকে; কিন্তু এগুলো 
ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। 
ইলেকট্রনিক পেপার প্রথম ইনকরপোরেটেড 
করা হয় ঝড়হু খরনৎরব-তে, যা বাজারে ছাড়া 
হয় ২০০৪ সালে। আর ‘সনি রিডার’ বাজারে 
আসে ২০০৬ সালে। এরপর আমরা পাই 
অ্যামাজন কিন্ডল। ডিভাইসটি বাজারে ছাড়া 
হয় ২০০৭ সালে। এর সবগুলো বিক্রি হয়ে 
দশদিগন্ত
মো: সা’দাদ রহমান
৫৩ কমপিউটার জগৎ মে ২০২১
ই-রিডার
যেন বহনযোগ্য এক লাইব্রেরি
অ্যামাজনের কিন্ডল কিবোর্ড ই-রিডার : পর্দায় ই-বুকের একটি পৃষ্ঠাযায় সাড়ে ৫ বছরে। কিন্ডল ই-বুক সেলস 
ও ডেলিভারির জন্য কিন্ডল স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। 
২০০৯ সালের দিকে বিপণনের 
জন্য ই-বুকের মার্কেটিং মডেল ও নতুন 
প্রজন্মেররিডিং হার্ডওয়্যার উৎপাদিত হয়। 
ই-রিডারের বিপরীতে ই-বুক তখনো 
বৈশ্বিকভাবে বাজারে সরবরাহ করা হয়নি। 
যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরের দিকে 
অ্যামাজন কিন্ডল মডেল ও সনির ‘পিআরএস 
৫০০’ ছিল প্রধান ই-রিডিং ডিভাইস। ২০১০ 
সালের মার্চের দিকে খবরে প্রকাশÑ ইধৎহবং 
্ ঘড়নষব ঘড়ড়শ যুক্তরাষ্ট্রেবিক্রি হয়ে থাকতে 
পারে কিন্ডলের চেয়ে বেশি পরিমাণে। 
২০১১ সালে প্রকাশিত গবেষণার 
ফলাফলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যুক্তরাজ্যে 
তরুণদের চেয়ে প্রবীণদেরমাঝে ই-বুক 
ও ই-রিডার বেশি জনপ্রিয়। ‘সিলভার 
পুল’ পরিচালিত জরিপ মতেÑ ৫৫ বছরের 
চেয়ে বেশি বয়সীদের ৬ শতাংশের রয়েছে 
ই-রিডার, যেখানে ১৮-২৪ বছর বয়সীদের 
মধ্যে ৫ শতাংশ ই-রিডারের মালিক। ২০১১ 
সালের মার্চেও আইডিসি’র সমীক্ষা মতেÑ 
২০১০ সালে বিশ্বে ই-রিডারের বিক্রির 
পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ২৮ লাখ, 
যার ৪৮ শতাংশই ছিল কিন্ডল। এর পরেই 
রয়েছে যথাক্রমে বার্নিস অ্যান্ড নভেল নুকস, 
প্যানডিজিটাল ও সনি রিডার (২০১০ সালে 
বিক্রি হয় প্রায় ৪ লাখ ইউনিট)। 
২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি অ্যাপল 
ইঙ্ক বাজারে ছাড়ে রচধফ নামে একটি মাল্টিফাংশনাল ট্যাবলেট কমপিউটার। তখন 
অ্যাপল সবচেয়ে বড় ৫-৬টি পাবলিশারের 
সাথে চুক্তির কথা ঘোষণা করে। বলা হয়, 
এগুলো অ্যাপলকে এদের এই ট্যাবলেটের 
মাধ্যমে কনটেন্ট বিক্রি ও সরবরাহের জন্য 
ই-বুক পরিবেশন করতে দেবে। আইপ্যাড 
ই-বুক রিডিংয়ের জন্য অন্তর্ভুক্ত করে আইবুক 
নামের একটি বিল্ট-ইন অ্যাপ। তাদের 
কনটেন্ট বিক্রি ও সরবরাহের জন্য ছিল 
আইবুক স্টোর। বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে 
লাভজনক ট্যাবলেট ‘আইপ্যাড’-এর পর 
২০১১ সালে আসে প্রথম অ্যান্ড্রয়িডভিত্তিক 
ট্যাবলেট ও সেই সাথে আসে নুক ও 
কিন্ডলের এলসিডি ট্যাবলেট সংস্করণ। 
পূর্ববর্তী ডেডিকেটেড ই-রিডারগুলো থেকে 
ব্যতিক্রমী হয়ে ট্যবলেট কমিউটারগুলো 
হচ্ছে মাল্টিফাঙ্কশনাল, এগুলো ব্যবহার 
করে এলসিডি টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে। এগুলোতে 
ইনস্টল করা যায় মাল্টিপল ই-বুক রিডিং 
অ্যাপ। অনেক অ্যান্ড্রয়িড ট্যাবলেট এক্সটার্নাল 
মিডিয়ার সাথে মানানসই। ফলে অনলাইন 
স্টোর বা ক্লাউড সার্ভিস ছাড়াই এগুলো থেকে 
সরাসরি ফাইল আপলোড করা যায়। অনেক 
ট্যাবলেটভিত্তিক ও স্মার্টফোনভিত্তিক রিডার 
পিডিএফ ও ডিজেভিইউ ফাইল প্রদর্শনে 
সক্ষম। খুব কম ডেডিকেটেড ই-বুক রিডার 
তা করতে পারে। এর সম্ভাবনার দুয়ার খুলে 
যায় মূলত কাগজে প্রকাশিত সংস্করণ পাঠের 
ও পরে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে ডাউনলোড 
করার সুযোগ-সূত্রে।তখন এসব ফাইলকে 
প্রকৃত বিবেচনায় ই-বুক বলা যাবে না। 
দেখতে এগুলো মুদ্রণ সংস্করণের মতো। 
২০১২ সালে বিশ্বে ই-রিডারের বিক্রি 
২০১১ সালের তুলনায় ২ কোটি ২০ লাখ 
ইউনিট থেকে কমে ২৬ শতাংশ। এর কারণ 
হিসেবে মনে করা হয় জেনারেল পারপাসের 
ট্যাবলেটের বিক্রি বেড়ে যাওয়াকে।
২০১৩ সালে এবিআই রিসার্চ দাবি 
করেÑ ই-রিডার মার্কেটের পতনের কারণ 
এইজিং অব কাস্টমার বেইস। 
২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত বিমানের 
উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় ই-রিডার 
ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। ২০১৩ সালের 
নভেম্বরে এফএএ বিমানে সব সময় ই-রিডার 
ব্যবহারের অনুমোদন দেয়, যদি তা এয়ারপ্লেন মুডে থাকে
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০২১ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস