হোম > কলসেন্টার উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ফোরাম গঠন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
কামাল আরসালান
মোট লেখা:৫৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
টেলিসেন্টার
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কলসেন্টার উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ফোরাম গঠন
কলসেন্টার উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ফোরাম গঠন
কামাল আরসালান
ডায়াল ম্যানেজমেন্ট এবং বিপিটিআই তথা বাংলাদেশ প্রফেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট -এর যৌথ উদ্যোগে কলসেন্টারের সব কিছু (অল অ্যাবাউট কল সেন্টার) শীর্ষক কর্মশালা গত ১৯ এপ্রিল, ২০০৮ স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়৷ সকাল ও বিকালে দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়৷ কর্মশালায় বক্তারা স্থানীয় এবং আন্তজাতিক কল সেন্টার নিয়ে আালোচনা করেন৷ এই ওয়ার্কশপে ২৪০ জন কলসেন্টার বিষয়ে আগ্রহী উদ্যোক্তা অংশ নেন৷ কেএম হাসান রিপন কর্মশালায় সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন আর অ্যান্ড জি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রশিদ৷
উন্নয়ন সংস্থা ক্যাটালিস্ট-এর বিশিষ্ট আইসিটি বিশেষজ্ঞ শহীদউদ্দিন আকবর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি কলসেন্টারের বিশাল সম্ভাবনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন এবং অনুষ্ঠানের শেষার্ধে ডায়াল ম্যানেজমেন্টের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট www.callcentrebd.info-এর উদ্বোধন করেন৷ ওয়েবসাইট উদ্বোধনের সময় তার সঙ্গে ছিলেন ডায়াল ম্যানেজমেন্টের উপদেষ্টা মুহাম্মদ আতিকুর রহমান৷ ওয়ার্কশপে চারজন মুখ্য স্পীকার ছিলেন৷ এরা হলেন : ড্যাফোডিল অনলাইন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী এস এম আলতাফ হোসেন, উইন ইনকর্পোরেটের প্রধান নির্বাহী ড. কাশফিয়া আহমেদ, ডায়াল ম্যানেজমেন্টেট উপদেষ্টা মুহাম্মদ আতিকুর রহমান এবং কেয়ার বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কোঅডিউনেটর ওমর ফারুক৷ ড. কাশফিয়া কলসেন্টারের বিশেষ করে স্থানীয় কলসেন্টারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন৷ দেশীয় তথ্য বা কনটেন্ট ভিত্তিক ডাটারেজ তৈরি করে স্থানীয় কলসেন্টার কার্যক্রমকে বেগবান করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়৷ ড. কাশফিয়া জানান, তার প্রতিষ্ঠান উইন ইনকর্পোরেট থেকে গ্রামীণ কমিউনিকেশন সেন্টারগুলোর প্রয়োজনীয় কলসেন্টার ডেভেলপ করে দেয়া হয়েছে৷ স্থানীয় জনগণ ফোন করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছে৷ সারাদেশে এই কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে পারলে ডোমেস্টিক কল সেন্টারের মাধ্যমেও অনেক কর্মসংস্থান হবে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপদের উন্নয়ন ঘটবে৷
ড্যাফোডিলের আলতাফ হোসেন কলসেন্টারের কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন৷ আতিকুর রহমান কলসেন্টারে বাণিজ্যিক বিষয়গুলোর আলোকপাত করেন এবং এর জন্য কি কি বিষয়ের উপর জোর দেয়া দরকার তাও উল্লেখ করেন৷ দেশের উন্নয়নে কলসেন্টারের অবদানের বিষয়ে আলোচনা করেন কেয়ার বাংলাদেশের ওমর ফারুক৷
আলতাব হোসেন উল্লেখ করেন যে বিটিটিবির ডিজিটাল ডাটা নেটওয়ার্কটি (ডিডিএন) সারা বাংলাদেশেই জেলা ও উপজেলায় ছড়িয়ে আছে৷ এই নেটওয়ার্কের মূল ক্ষমতার সামান্য অংশ বর্তমানে ইন্টারনেটের কাজে লাগানো হয়েছে৷ দেশের সব প্রান্তে কলসেন্টারের বিস্তৃতির জন্য বিটিটিবিকে এই নেটওয়ার্কের পূর্ন ক্ষমতা ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে হবে৷
বক্তব্য শেষে শুরু হয় প্রশ্নউত্তর পর্ব৷ আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রশ্নের উত্তর দেন মুল আলোচকবর্গ ছাড়াও ক্যাটালিস্টের শহীদ উদ্দিন আকবর, আশরাফ আবীর, ডায়াল ম্যানেজমেন্টেট উপদেষ্টা ও সাইফুর রশিদ৷ লক্ষ্য করা যায় যে, ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণকারী উত্সাহী ব্যক্তিরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছিলেন৷ মহিলাদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়৷ কলসেন্টার কার্যক্রম যে জনগণের মধ্যে বিশেষ উত্সাহের সঞ্চার করেছে৷ ওয়ার্কশপে ডায়াল ম্যানেজমেন্ট ও বিপিটিআইয়ের পক্ষ থেকে কলসেন্টার মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একটি ফোরাম গঠনের সুপারিশ করা হয়৷ উপস্থিত সবাই এই প্রস্তবে সম্মতি দেন৷ ফোরামটির নামকরণ করা হয় কলসেন্টার ফোরাম, বাংলাদেশ (সিসিএফবি)৷ ডায়াল ম্যানেজমেন্টের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটের এই লিন্ক (http://www.callcentrebd.info/ForumForm.php) থেকে কল সেন্টারে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান বা উদ্দোক্তাগন ফোরামের মেম্বার হতে পারবেন৷
ওয়ার্কশপে ডায়াল ম্যানেজমেন্ট এবং বিপিটিআই যে সেবাগুলো কল সেন্টারে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে প্রদান করবেন তার সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়৷ ডায়াল ম্যানেজমেন্টের সেবাসমূহ হলো: টেকনোলজী, অপারেশনস এন্ড ম্যানেজম্যান্ট সাপোর্ট স্ট্রাকচার, কনটেন্ট, বিজনেস প্রোপোজাল এন্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং৷ বিপিটিআইয়ে কল সেন্টার হিউম্যান রিসোর্স ট্রেইনিং দেয়া হবে৷ ওয়ার্কশপে আরো জানানো হয় যে ডায়াল ম্যানেজমেন্ট এবং বিপিটিআইয়ের সাথে বিভিন্ন আন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে এফিলিয়েশন আছে৷
ওয়ার্কশপটি আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্প্রতিক সময়ের উত্সাহিত কলসেন্টার উদ্যোক্তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা৷ আলোচ্য বিষয়টি আমাদের দেশে একটি নতুন কার্যক্রমের সংযোজন হওয়ায় নতুন উদ্যোক্তারা ভুল পথে অগ্রসর হতে পারেন৷ এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনার মাধ্যমে যেন এই শিল্পের বিকাশ ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্যই ওয়ার্কশপটি আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং অদূর ভবিষ্যতে ঢাকার বাইরেও এ ধরনের উদ্যোগ নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে দেশে কলস্টোর শিল্পের বিকাশের জন্য বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ তাই বর্হিবিশ্বের এই বিলিয়ন ডলারের কার্যক্রমে এখন বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো অনেকটাই তৈরি হয়ে গেছে৷ বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ অতি সম্প্রতি কলসেন্টার লাইসেন্স দেয়াও শুরু করেছে এবং ইতোমধ্যে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদানের কাজও সম্পন্ন করেছে৷ এ ধরনের ওয়ার্কশপ দেশে কলসেন্টার কার্যক্রমের অগ্রগতিতে নিশ্চয়ই সহায়ক ভূমিকা রাখবে যা ওয়ার্কশপটিতে ব্যাপক সমাগম লক্ষ করলেই বুঝা যায়৷