• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বাংলাদেশে ইন্টেল: তৈরি হবে বিপুল কর্মসংস্হানের সুযোগ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: নেবুলা ইসলাম
মোট লেখা:৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৭ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইন্টেল
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বাংলাদেশে ইন্টেল: তৈরি হবে বিপুল কর্মসংস্হানের সুযোগ

বাংলাদেশের আইসিটি খাতে সরাসরি অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণা না দিলেও আইসিটিসংশ্লিষ্ট শিক্ষাখাতে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন ইন্টেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবং জাতিসংঘের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি জোটের চেয়ারপারসন ড. ক্রেইগ ব্যারেট৷ এ লক্ষ্যে তিনি গত ৪ সেপ্টেম্বর ঝটিকা সফরে ঢাকায় এসে বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন৷ এ দেশের শিক্ষা বিস্তার ও প্রযুক্তি বিনিময়ে সরাসরি কাজ করার আগ্রহই বেশি দেখিয়েছেন তিনি৷ ক্রেইগ ব্যারেট স্বীকার করেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইটি খাতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং কমপিউটার বিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান থাকা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে৷



বিশ্বের ৩৫টি দেশে ইন্টেলের ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড কার্যক্রম চলছে৷ এখন নতুন যোগ হলো বাংলাদেশ৷ প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের ৪০-৫০ লাখ লোককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ ড. ব্যারেট মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ অনেক মেধাবী৷ প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে দেশটি প্রভূত উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হবে৷

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গ্রামীণ সলিউশনস-এর সহায়তায় ইন্টেল টিচ কর্মসূচির আওতায় ক্লাসরুমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে শিক্ষা দেয়া যায়, সে ব্যাপারে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ আবার ইন্টেল লার্নবিষয়ক কর্মসূচির আওতায় ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহার, জটিল চিন্তা এবং সমন্বিত শিক্ষাগ্রহণ দক্ষতার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুলে আগামী ৩ বছরে ১ হাজার ল্যাপটপ দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টেল চেয়ারম্যান৷ ৬৪টি জেলায় পিসি ল্যাবরেটরিও স্থাপন করা হবে৷ সাধারণ মানুষ কম দামে ও কম মাসিক কিস্তিতে পিসি কিনতে পারবে পিসি ওনারশিপ প্রোগ্রামের আওতায়৷ গ্রামাঞ্চলে টেলিসেন্টার স্থাপনে সহজশর্তে ক্ষুদ্র ঋণও দেয়া হবে৷

বাংলাদেশে ইন্টেলের কর্মসূচিগুলোকে সফল করতে দরকার সঠিক পরিকল্পনা৷ শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীরা যাতে ইন্টেল ট্রেনিং প্রোগ্রামের আওতায় সঠিক শিক্ষা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ ইন্টেলের এসব কার্যক্রমে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে৷ ইন্টেল যে ১ হাজার ক্লাসমেট পিসি দেবে তা চালাতেও কর্মী লাগবে৷ তাছাড়া সারাদেশে কমপিউটার ল্যাব স্থাপনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতেও দরকার হবে প্রচুর লোকবলের৷ ফলে তৈরি হবে সম্ভাবনাময় চাকরির বাজারের৷ চলতি শতকে যখন দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, তখন তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমেই সৃষ্টি করতে হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের৷

ইন্টেল করপোরেশনের স্লোগান হচ্ছে-লিপ অ্যাহেড অর্থাত্ একধাপ এগিয়ে৷ এরা এদের কর্মসূচির মাধ্যমে সারাবিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ প্রজন্ম গড়ে তুলতে চায়৷ তাদের লক্ষ্য আগামী ৫ বছরের মধ্যে আরো ১শ কোটি কমপিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানো৷ তাদের ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রোগ্রাম মূলত সারাবিশ্বে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার জন্য একটি সামাজিক সচেতনতা এবং দায়বদ্ধতাধর্মী কর্মসূচি৷ এটি বিশ্বের সুবিধাবঞ্চিত ও প্রযুক্তির বিচারে পিছিয়েপড়া শত কোটি মানুষকে প্রযুক্তির ছোঁয়া, দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা, কার্যকর কারিগরি শিক্ষা এবং সেগুলোর সাথে স্থানীয় চাহিদা ও উপকরণ মিলিয়ে ২১ শতকের প্রযুক্তিসেবা পাইয়ে দিতে বদ্ধপরিকর৷ ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রোগ্রামের আওতায় চারটি প্রকল্প রয়েছে৷ এগুলো হলো-এক্সেসিবিলিটি, কানেকটিভিটি, এডুকেশন এবং কনটেন্ট৷

কী পেল বাংলাদেশ

ইন্টেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. ক্রেইগ ব্যারেটের ১৬ ঘণ্টার সফরে বাংলাদেশ কী পেল, তা খতিয়ে দেখলে প্রাপ্তিকে একেবারে কম মনে হবে না৷ যদিও তিনি স্পষ্টতই বলেছেন, বাংলাদেশের আইসিটি খাতে বিনিয়োগের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই৷ তবে এ খাতে সহায়তা দেয়া হবে৷

বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রকল্পের আওতায় যেসব কর্মসূচি রয়েছে সেগুলো হলো :

আগামী ৩ বছরে বিভিন্ন স্কুলে ১ হাজার ক্লাসমেট পিসি অনুদান, ২০০৮ সালের মধ্যেই দেশের সব জেলায় পিসি ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য ইন্টেলের কমপিউটার অনুদান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ইন্টেল টিচ কর্মসূচির আওতায় আগামী ৩ বছরে প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া, ইন্টেল লার্ন প্রোগ্রামের আওতায় ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের প্রযুক্তি ব্যবহার, ক্রিটিক্যাল থিং ঙ্কেং ও সমন্বিত শিক্ষা গ্রহণে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি কার্যক্রমে আঞ্চলিক তথ্যভিত্তিক ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার ব্যবহার শেখানোর লক্ষ্যে স্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কাজ করা, ইন্টেল স্কুল লার্নিং অ্যান্ড টিচিং প্রকল্পের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে সাধারণ মানুষের সংযোগ ঘটানো, আঞ্চলিক চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে গণিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক ইন্টারেকটিভ ওয়েবসাইট চালু করা, ওয়াই-ম্যাক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কম খরচে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বিস্তার ঘটাতে সহায়তা, ইন্টেল ও গ্রামীণ সলিউশনস-এর পিসি ওউনারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় স্বল্প মাসিক কিস্তিতে কমপিউটার দেয়া এবং ইন্টেলকে বাংলাদেশের ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রকল্প বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস৷

ক্রেইগ যা বলেছেন

বাংলাদেশে এটাই আমার প্রথম সফর৷ তাই এখানে প্রযুক্তি প্রকল্পে সহায়তা করা এবং কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার ব্যাপকভিত্তিক প্রচেষ্টার কথা ঘোষণা করতে পেরে ভালো লাগছে৷ আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষার মান বাড়ানো এবং ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা৷ একই সাথে বাংলাদেশীদের জন্য স্থানীয়ভাবে প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করা৷

গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ সলিউশনস-এর সাথে আমরা সম্পর্ক গড়ে তুলেছি৷ আমি মনে করি একত্রে কাজ করার মাধ্যমে গ্রামীণ ও ইন্টেল দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে সহায়ক হবে এবং দেশের মানুষের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে৷ আমরা বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন নিয়েও কথাবার্তা বলছি, যা দেশের ১৪ কোটি মানুষকে সহায়তা করবে৷ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ও আমাদের সাথে রয়েছে৷ আমি গ্রামীণ সলিউশনস-এর প্রতিষ্ঠাতা, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথেও কথা বলার সুযোগ পেয়েছি৷ তিনি বলেছেন, এ ধরনের কর্মসূচি দেশের অগ্রগতিতে সহায়ক হবে৷

আমি মনে করি, বিশেষভাবে উপযোগী ক্লাসমেট পিসি শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাযুক্তিক আধুনিকতা এনে দেবে৷ আর ওয়াই-ম্যাক্স প্রযুক্তির কল্যাণে এরা খুব সহজেই ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগের সাথে যুক্ত হবে৷ এর ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া হয়ে উঠবে আনন্দময়৷ প্রকল্পের একটি বড় কাজ হবে বিদেশী ভাষা থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয় বিষয় অনুবাদ করা৷ ফলে বাংলা ভাষাতেই সহজে জ্ঞানার্জন সম্ভব হবে৷

বিগত বছরগুলোতে ইন্টেল বিশ্বের ৩০টি দেশে পরিচালিত ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রকল্পে ১শ কোটি ডলার ব্যয় কছে৷ বাংলাদেশসহ নতুনভাবে যুক্ত দেশগুলোতে ৩ বছরের প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ডলার৷

সবচেয়ে বড় কথা, আগামী ৩ বছর বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বিচার করে দেখবো এদেশে ইন্টেলের বিনিয়োগের সুযোগ কতটা রয়েছে৷ সে অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে৷ তবে তৃতীয় বিশ্বে কম দামে কমপিউটার তৈরির যে প্রকল্প ইন্টেলের রয়েছে, তাতে বাংলাদেশও যুক্ত হতে পারে৷

উপদেষ্টা যা বলেছেন



বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা তপন চৌধুরী বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে আরো উন্নত করা ও আধুনিকায়নে বাংলাদেশ সরকার ইন্টেলের সাথে থাকবে৷ তিনি মনে করেন, ইন্টেল ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের সম্ভাবনা সৃষ্টি করা সম্ভব৷ কেননা, আঞ্চলিক চাহিদা পূরণে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ, সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, উন্নতমানের শিক্ষা দেয়া ও প্রক্রিয়া তৈরি সাধারণ মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম৷

তিনি বলেন, পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে ইন্টেলের কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে৷ ইন্টেলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়৷

ইন্টেল আসায় এখানে প্রচুর কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে : কাজী ইসলাম



গ্রামীণ সলিউশনস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী ইসলাম কমপিউটার জগত্কে দেয়া বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ইন্টেল এবং গ্রামীণ সলিউশনস বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার, ইন্টারনেট প্রযুক্তি ও সফটওয়্যারের ব্যবহার সহজলভ্য করতে একযোগে কাজ করবে৷ লোকাল সফটওয়্যার তৈরি করে তা কাস্টমাইজেশন বা লোকালাইজেশন করা হবে৷ খরচ যাতে কম হয়, সেজন্য ওপেন সোর্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে৷

তিনি বলেন, গ্রামীণ সলিউশনস গ্রামীণের একটি প্রযুক্তি বাহু হিসেবে কাজ করছে৷ যেসব কোম্পানি ও প্রযুক্তি এখনো বাংলাদেশে আসেনি গ্রামীণ সলিউশনস তাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে৷ এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আনা হয়েছে ইন্টেলকে৷ যেসব কোম্পানি বাংলাদেশে আসেনি ভবিষ্যতে তাদেরকেও আনার চেষ্টা করা হবে৷ আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করে তাদেরকে বাংলাদেশে আনতে চাই৷ প্রতি বছর বা দেড় বছরে একটি করে নতুন কোম্পানি বাংলাদেশে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন৷ কাজী ইসলাম বলেন, গ্রামীণ সলিউশনস হবে টেকনোলজি আর্থ৷ এর কাজের পরিধি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না৷ ইন্টেল বাংলাদেশে আসায় এখানে প্রচুর কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে৷ ইন্টেলের কর্মসূচির ৪টি পিলারের মধ্যে মাত্র একটি হলো ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রোগ্রাম৷ আমরা আশাবাদী, ইন্টেল যেহেতু বাংলাদেশে আসছে, তাই বাকি প্রোগ্রামগুলোও সফলভাবে পরিচালিত হবে৷ আর এজন্য প্রয়োজন হবে প্রচুর জনশক্তি৷

তিনি মনে করেন, শুধু আইসিটির উন্নয়ন নয়-যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হলে এদেশে গাড়ি এবং নতুন নতুন ইঞ্জিনের নকশাও তৈরি হতে পারে৷ হতে পারে চিপ ডিজাইন প্ল্যান্ট, প্রসেসর তৈরি, হাইটেক পণ্য তৈরি এবং সেল ফোন অ্যাসেমব্লিং৷ তিনি বলেন, সব দেশে ইন্টেল ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রোগ্রাম একরকম নয়৷ একেক দেশে একেক রকমের এই কর্মসূচি৷ বাংলাদেশে এই কর্মসূচি ঠিক কেমন হবে তা নির্ধারণ করতে আমাদের সাথে বৈঠকের জন্য শিগগিরই ইন্টেলের একটি দল বাংলাদেশে আসবে৷ একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি চাই এখানে অনেক কিছু করতে, যাতে দেশের মানুষের উপকার হয়৷

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইন্টেল কতো টাকা বিনিয়োগ করবে সেটা বড় কথা নয়৷ বড় কথা হচ্ছে কোম্পানিটি বাংলাদেশে আসছে৷ এর সুনামটাই তো বড় বিনিয়োগ৷ একই সাথে তাদের বিনিয়োগ হচ্ছে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা৷ গ্রামীণ সলিউশনস এখন সার্ভিস আউটসোর্সিং, বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং নিয়ে কাজ করছে৷ গ্রাহকদের ৯৫ শতাংশই বিভিন্ন বিদেশী প্রতিষ্ঠান৷

কাজী ইসলাম বলেন, আমরা হচ্ছি ইন্টেলের ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রোগ্রামের বাংলাদেশে ইমপ্লিমেন্Uশেন পার্টনার বা বাস্তবায়ন অংশীদার৷ এই প্রোগ্রামের ৪টি স্তম্ভ রয়েছে৷ প্রতিটি স্তম্ভের আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে, প্রকল্প রয়েছে৷ এগুলোর সবই আমরা বাংলাদেশে করবো৷ অন্য কোম্পানিগুলোও প্রয়োজনে আমরা এই প্রোগ্রামে যুক্ত করবো৷

তিনি বলেন, ইন্টেল এবং গ্রামীণ সলিউশনস-এর লক্ষ্য হলো সারাদেশে ওয়াই-ম্যাক্স ছড়িয়ে দেয়া৷ তবে এ কাজ শুরু করতে একটু দেরি হবে৷ প্রথম কাজ হবে শিক্ষা খাতে৷

কমপিউটার ও ইন্টারনেট সহজলভ্য করবে ইন্টেল : জিয়া মঞ্জুর



ইন্টেলের ওয়ার্ল্ড অ্যাহেড প্রকল্পের আওতায় প্রতিষ্ঠানটি এখন বাংলাদেশে কমপিউটার ও ইন্টারনেট প্রযুক্তিকে সহজলভ্য করবে এবং এরা শিক্ষা ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে৷ বিশ্বের ৩৫টি দেশে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সাফল্যের সাথে কাজ করছে ইন্টেল করপোরেশন৷ গ্রামীণ সলিউশনস-এর সাথে তাদের যে চুক্তি হয়েছে তার আওতায় বাংলাদেশেও এরা আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে৷ বাংলাদেশে ইন্টেলের কান্ট্রি বিজনেস ম্যানেজার জিয়া মঞ্জুর একথা বলেছেন৷ গত সংখ্যায় ভুলক্রমে তাকে ইন্টেলের প্রোডাক্ট ম্যানেজার বলা হয়েছিল৷

তিনি বলেন, আগামী বছরের মধ্যে দেশের ৬৪টি জেলায় একটি করে স্কুলে কমপিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে৷ ফলে সেখানের শিক্ষার্থীরা উন্নত শিক্ষা পাবে৷ তাছাড়া উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ইন্টেল প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমপিউটার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেবে৷ এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে গ্রামীণ সলিউশনস-এর মাধ্যমে৷ তিনি বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন দেশকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদী৷

ক্লাসমেট পিসিতে যা আছে

যেকোনো দেশের জন্যই শিক্ষার মান বাড়াতে কমপিউটারের বিকল্প নেই৷ তাই ইন্টেল চাইছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে তাদের ক্লাসমেট পিসির সাহায্যে শিক্ষার মান বাড়াতে সহায়তা করতে৷ ক্লাসমেট পিসি শুধু ছাত্রদের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে৷ এটি পুরোপুরি একটি শিক্ষামূলক কমপিউটার৷

এই ক্লাসমেট পিসিতে রয়েছে : ইন্টেল মোবাইল প্রসেসর ৯০০ মেগাহার্টজ, ইন্টেল ৯১৫ জিএমএস মাদারবোর্ড, ডিডিআর-২ (২৫৬মেগাবাইট) ৠাম, ৭ ইঞ্চি এলসিডি মনিটর, ৮০০ * ৪৮০ এলভিডিএস ইন্টারফেস, ১/২ গিগাবাইট ফ্ল্যাশ মেমরি, ল্যান, ৪ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ, লাইট পেন এবং ওজন ১ দশমিক ৩ কেজি৷

এই পিসিতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে রয়েছে উইন্ডোজ এক্সপি, লিনআক্স, স্পেশাল গ্রাফিক্স সফটওয়্যার, টিচারস কন্ট্রোল সফটওয়্যার এবং শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্য রয়েছে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল নামে বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার৷ এছাড়া প্রচলিত সব সফটওয়্যারই এতে ব্যবহার করা যাবে৷

ড. ক্রেইগ ব্যারেট বাংলাদেশ সফরের সময় বলেছেন, তাদের উদ্ভাবিত ক্লাসমেট পিসির দাম ২০০ থেকে ৩০০ ডলার৷ তবে দাম যাতে ২০০ ডলারের নিচে নিয়ে আসা যায়, সেজন্য ইন্টেল কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ বাংলাদেশের ৩৫ হাজার স্কুলে কম দামের এই পিসি দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইন্টেল চেয়ারম্যান৷

সাধারণ ল্যাপটপে নেই-এমন বহু সুযোগসুবিধা পাওয়া যাবে ক্লাসমেট পিসিতে৷ এর মনিটরটি বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে৷ ফলে সরাসরি সূর্যের আলোতেও এই ল্যাপটপের মনিটর স্মার্টভাবে দেখা এবং কাজ করা যায়৷

ওয়াই-ম্যাক্স নেটওয়ার্ক

ওয়ার্ল্ড-ওয়াইড ইন্টারঅপারেবিলিটি মাইক্রোওয়েভ অ্যাক্সেস-এর সংক্ষিপ্তরূপ হচ্ছে ওয়াই ম্যাক্স৷ এটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁ ছে দিতে পারে৷ এমন বহু এলাকা রয়েছে যেখানে তারের সংযোগ দেয়া কোনো অবস্থাতেই হয়তো সম্ভব নয়৷ সেই সব এলাকায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁ ছে দিতে দরকার তারহীন সংযোগ৷ এই কাজটি করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে ওয়াইফাই৷ এর উন্নত সংস্করণ হলো ওয়াই-ম্যাক্স৷

ওয়াই-ম্যাক্সের একটি মূল কেন্দ্র থেকে অন্তত ৭০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত সংযোগ বিস্তৃত করা সম্ভব৷ এ কাজে কোনো তারের প্রয়োজন হবে না৷ মূল কেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় হবে ২০ হাজার ডলার৷

ওয়াই-ম্যাক্স প্রযুক্তি বিস্তারে ইন্টেল ও গ্রামীণ সলিউশনস যৌথভাবে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে৷
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
২০০৭ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা