লেখক পরিচিতি
																
								
																লেখা সম্পর্কিত
								
									পাবলিশ:
									
										২০০৯ - সেপ্টেম্বর									
									
								 
								
								
																
																
								
								
							 
						 
						
						
										এবার স্বপ্ন পূরণের পালা						
						
							
প্রযুক্তির ওপর ভর করে দেশে গতিশীল উন্নয়ন সূচিত হবে। প্রযুক্তিকে বাহন করে আমরা প্রযুক্তি মহাসড়কে পথ চলবো, সেই সাথে জাতিগতভাবে আমাদের উত্তরণ ঘটবে সমৃদ্ধতর পর্যায়ে। এদেশের মানুষ পাবে প্রত্যাশিত সুখের সন্ধান। অনাবিল জীবনযাপন নিশ্চিত হবে এদেশের ছোট-বড়, ধনী-গরিব সব মানুষের। এটাই তো ছিল আমাদের সাধারণ মানুষের সাধারণ চাওয়া-পাওয়া। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা সে লক্ষ্য পূরণে স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে পারিনি। এটাই জাতীয়ভাবে আমাদের বড় ধরনের ব্যর্থতা। এ ব্যর্থতা সামগ্রিকভাবে এদেশের প্রতিটি নাগরিকের। তাই এ ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস অপরিহার্য। আর এক্ষেত্রে আজ আমাদের বিতর্কাতীত উপলব্ধি হচ্ছে, অতীতের সব ব্যর্থতা আর গ্লানি মুছে সমৃদ্ধ জাতি গড়ার স্বপ্নকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে আমাদেরকে প্রধানতম হাতিয়ার করতে হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে। সুখের কথা, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে এগিয়ে চলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আজ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে অধিষ্ঠিত। সে প্রতিশ্রুতিসূত্রে এ সরকার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে জাতিকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ উপহার দেয়ার। সরকারে বসে এ সরকার সে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার কথাই বলছে। সেক্ষেত্রে সরকারের নানা তৎপরতাও লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নীতি ২০০৯ প্রণয়ন করেছে। এখন কাজ হচ্ছে, এ নীতি বাস্তবায়নে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজে নেমে পড়া। আমরা চাই সরকার তার এই প্রয়াসে সফল হোক। তবে অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের সে আশঙ্কাও রয়ে গেল- এক্ষেত্রে আমরা আবারো ব্যর্থতার অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাবো না তো? এ প্রশ্নের জবাব যেনো ইতিবাচক ফলের দিকে যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে যথা তাগিদটা দিতে চাই।
আমরা জানি, এক্ষেত্রে সময়ের সাথে ও অন্যান্য জাতির সাথে সমান্তরালভাবে চলে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে হলে যেমনি প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক কার্যকর পদক্ষেপ, তেমনি প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণে তহবিলের যোগান দেয়া। কিন্তু সে পর্যাপ্ত অর্থ আমাদের পক্ষে পুরোপুরি দেয়া সম্ভব নয়- এ বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়েও বলবো, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে যে তহবিল বরাদ্দ হয়, তা যেনো সুষ্ঠুভাবে যথার্থ খাতে ব্যয় হয়। সে তহবিল যেনো লুটেরাদের হাতে না পড়ে। এ ব্যাপারে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয়, তাই এই তিক্ত বিষয়টির উল্লেখ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। আশা করি সংশ্লিষ্টজনেরা এ ব্যাপারে সতর্ক হবেন। পাশাপাশি বলবো, জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নীতি ২০০৯ খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের যে পাঁচ শতাংশ ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে, তা পূরণে যেনো সরকার পক্ষ আন্তরিক হয়।
বিদ্যমান অবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে আরো সামনে যাবার জন্য চাই কার্যকর বাস্তবানুগ পদক্ষেপ। শুধু রাবার স্ট্যাম্প পাল্টানো, কমিটির পর কমিটি গঠন, বিসিসি’র নাম পাল্টে একে অধিদফতরে রূপ দিলেই দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন নিশ্চিত হবে, তেমনটি আমরা বিশ্বাস করি না। বরং আমাদের ভয়, বিসিসি তথা বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদফতরে রূপান্তর করে সেখানে একদিকে সরকারের খরচ ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই বাড়ানো হয় কি না। এদেশের এগিয়ে চলার পথে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা যে একটা বড় বাধা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কমপিউটার কাউন্সিলকে অধিদফতরে রূপ দিলে খরচের মাত্রাটাও ব্যাপক বেড়ে যাবে, সে কথাও আমাদের জানা। প্রস্তাবিত এ অধিদফতরের জন্য ৫০৮৫ জনের জনবল প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে অনুমোদিত পদ ১০১টি। নতুন প্রস্তাব করা হয়েছে ৪,৯৮৪টি পদের। তার পরে আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ তো আছেই। সে ব্যাপারটিও ভেবে দেখতে হবে বৈকি।
আমরা এবারের প্রচ্ছদ কাহিনীর বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছি অস্ত্রপ্রযুক্তিকে। আজকের দিনে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। ছোট-বড় সব দেশই প্রযুক্তিকে নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী এক্ষেত্রে কাজে লাগাচ্ছে। আমাদেরকেও এ ব্যাপারে সচেতনপ্রয়াসী হতে হবে। সে তাগিদই রয়েছে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে।
আর মাত্র ক’দিন। এর পরই পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ঈদ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ। এই কামনার পাশাপাশি আমাদের সম্মানিত লেখক, পাঠক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি রইলো পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা।