লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মোস্তাফা জব্বার
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - সেপ্টেম্বর
দু’টি মহাপ্রকল্প ও কিছু উদ্যোগ
ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগের অভাব নেই। নানাজন নানাভাবে কাজের তালিকা বা ইচ্ছে-তালিকা তৈরি করছেন। এগুলো বাস্তবানুগ তেমন ভালো কোনো পরিকল্পনা মনে না হলেও এদেরকে সমন্বিত করার জন্য উৎসাহিত করা দরকার। কারণ, একটি সুনির্দিষ্ট কেন্দ্রবিন্দু ছাড়া এসব পরিকল্পনা কোনোভাবেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে না। বরং অনেক ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তি তৈরি করবে।
আমরা লক্ষ করেছি, প্রধানত সরকারের পক্ষ থেকেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কথা বলা হচ্ছে। অন্যদের পরিকল্পনা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। কারণ, সরকার অন্যদের করণীয় সম্পর্কেও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি। এর আগে সরকারের সবচেয়ে বড় যে পরিকল্পনা, বলা যায় মহাপরিকল্পনা, সেটি অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই নীতিমালাটি আসলে ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তৈরি করা এবং এতে শুধু কসমেটিক সার্জারি করেই এ সরকারের হাতে অনুমোদিত হয়েছে। এটি অনেকটা স্বাধীনতাউত্তর কালে পূর্ব পাকিস্তান স্ট্যাম্পের ওপর বাংলাদেশ সিল দেয়ার মতো। এই নীতিমালাটিতে বিস্তারিতভাবে ৩০৬টি কাজের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী বাস্তবায়নের বিষয়টির কথা বলা হয়েছে। এতে উদ্দেশ্য-বিধেয় যা ছিলো, তাতে শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশ শব্দ দু’টি যুক্ত হয়েছে। কিন্তু স্পষ্ট করেই বলেছি, এসব কর্মপরিকল্পনায় বেশ কিছু ডুপ্লিকেশন আছে এবং কাজগুলোর অগ্রাধিকার চিহ্নিত করা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, এর মাঝে রাজনৈতিক অঙ্গীকারটি নেই। এছাড়াও সব কাজই প্রায় বিচ্ছিন্নভাবে পরিকল্পিত। এর ফলে আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে পারলেও লক্ষ্যহীন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে না, হয়তো অন্য কিছু হবে। ১৯ আগস্ট ২০০৯ সর্বশেষ আইসিটি টাস্কফোর্সের নির্বাহী পরিষদের সভায় যে কার্যপত্র দেয়া হয়, তাতে কিছু কর্মপরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার হিসেবে তারকাচিহ্নিত করা হয়েছে, কিন্তু এক্ষেত্রে লক্ষণীয় ব্যাপার হলো সমন্বয়হীনতা। মনে হয়, এই শত শত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে সরকারের কিছু অগ্রাধিকার নির্দিষ্ট করা দরকার। সরকারকে শুধু দু’টি মহাপ্রকল্প ও কিছু অবকাঠামোগত কর্মকান্ডকে অগ্রাধিকার দিতে অনুরোধ করবো। অন্য সব কাজের গতি তাতে দ্রুততর হবে। নিচে সেগুলো সংক্ষেপে বর্ণিত হলো :
ডিজিটাল সরকার : একটি মহাপ্রকল্প
ডিজিটাল বাংলাদেশের দু’টি বিশাল স্তম্ভের একটি ডিজিটাল সরকার। যতদিন সরকার ডিজিটাল না হবে ততদিন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা ভাবাই যাবে না। ফলে সরকারকে ডিজিটাল বাংলাদেশের গোড়াপত্তন করতে হবে ডিজিটাল সরকার দিয়ে।
ঢাকার তোপখানা রোডের প্রধান সচিবালয়, শেরেবাংলানগর ও অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সরকারি অফিস ও সচিবালয়সহ সব সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভাগ, সংস্থা ও সরকারি, আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এবং দেশের বিভাগ, জেলা, উপজেলা, উন্নয়ন কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, গ্রাম বা ওয়ার্ড পর্যন্ত বিসত্মৃত স্থানীয় সরকারসহ পুরো সরকারটিকে একটি স্থায়ী ও নিরাপদ ফাইবার অপটিক্স/ওয়াইম্যাক্স/ওয়াইফাই/থ্রিজি এবং ভিওআইপি ফোনের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। এই কাজটির জন্য একাধিক সংস্থা বা পদ্ধতি জড়িত থাকলেও পুরোটি হতে হবে একটি সমন্বিত নেটওয়ার্কে।
এটি বাস্তবতা, কোনো মহাপরিকল্পনা ছাড়াই দেশে এখন নানা ধরনের নেটওয়ার্ক বা কানেক্টিভিটি রয়েছে। নানা সংস্থা এসব তৈরি করছে। নানাজন এর স্বত্বাধিকারী। সরকারের প্রথম কাজ হলো, সেই সব কানেকশন বা নেটওয়ার্কের বিদ্যমান অবস্থা জরিপ করে বিদ্যমান অবকাঠামোর কতটা ব্যবহার করা যায় তা নিশ্চিত করা এবং সরকার একেবারে নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরি করবে, না বেসরকারি অবকাঠামো ব্যবহার করবে, সেটিও নির্ধারণ করা।
ইতোমধ্যে বিদ্যমান নেটওয়ার্কগুলোর বাইরে টিঅ্যান্ডটি মন্ত্রণালয় পাঁচ বছর মেয়াদী ‘ইনফোবাহন’ নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পাঁচ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটি দেশের বিরাট অংশকে যুক্ত করবে। অন্যদিকে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ‘বাংলা গভ’ নেটওয়ার্ক নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্প দু’টি একই ধরনের। কর্মপরিকল্পনা দু’টি বাস্তবায়নের ফলে প্রস্তাবিত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। ফলে এই দু’টি প্রকল্পের মাঝে ডুপ্লিকেশন হবে না। বরং যেসব স্থানে ইনফোবাহন নেটওয়ার্ক তৈরি হচ্ছে সেসব স্থান ছাড়া অন্য জায়গায় বাংলা গভ নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে হবে। বরং দু’টি প্রকল্পকে একটি মহাপ্রকল্পে রূপান্তর করা যেতে পারে।
সরকারের প্রস্তাবিত এই নেটওয়ার্কটি শুধু হার্ডওয়্যারভিত্তিক হবে না। এতে সরকার পরিচালনার জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যারও থাকতে হবে। সফটওয়্যারটিকে পুরোপুরি বাংলা ভাষায় কম্প্যাটিবল হতে হবে। এই প্রকল্পের অধীনে উল্লিখিত সব প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তির সব সামগ্রী স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য ‘ইনফোবাহন’ ও ‘বাংলা গভ’ নেটওয়ার্ক প্রকল্পকে একটি মহাপ্রকল্পে রূপান্তর করে একে দীর্ঘমেয়াদী করে তার পরিধি আরও সম্প্রসারিত করে মোট তিনটি স্তরে বিন্যাস করতে হবে।
এই মহাপ্রকল্পের ও ডিজিটাল বাংলাদেশ সব প্রকল্পের প্রথম স্তরটি ২০১৪ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ অবধি পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিসত্মৃত হবে। বিদ্যমান শাসনতান্ত্রিক কাঠামোতে এই সরকারের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়ার ফলে নির্বাচন ও নতুন সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ২০১৪ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে। প্রথম স্তরে সরকারের অবকাঠামোগত সংযুক্তিকরণ ও অন্তত জেলা পর্যায়ের অফিসগুলোকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল করতে হবে। উপজেলা বা তার নিচের পর্যায়ের কিছু কাজও এই স্তরে থাকতে হবে।
মহাপ্রকল্পের দ্বিতীয় স্তরটি হবে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের আগস্ট পর্যন্ত এবং তৃতীয় স্তরটি ২০১৯-এর আগস্ট থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজটি গ্রাম পর্যন্ত বিসত্মৃত হবে। তৃতীয় পর্যায়ে শুধু যেসব কাজ দ্বিতীয় পর্যায়েও সম্পন্ন করা যাবে না তা সমাপ্ত করতে হবে। বস্ত্তত দু’টি স্তরেই এক দশকে সব কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিতে হবে। এবং যেহেতু আমরা কোনো কাজই যথাসময়ে শেষ করতে পারি না সে কারণে তৃতীয় স্তরটি ব্যাকআপ হিসেবে থাকবে।
প্রথমত, এটি হচ্ছে ডিজিটাল সরকারের অবকাঠামো। এই নেটওয়ার্কটি সরকার ব্যবস্থাকে দেশব্যাপী একটি জালের মতো ছেয়ে ফেলবে। সরকারের সব কাজ এই নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় সম্পন্ন হবে এবং একটি সমন্বিত ও মানসম্মত অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম দিয়ে পুরো সরকার কাজ করবে। এই ব্যবস্থায় ভয়েস, ডাটা, অডিও এবং ভিডিও পারাপারের সমন্বিত ব্যবস্থা থাকবে। এই ব্যবস্থায় বর্তমানে বিদ্যমান সব প্রযুক্তির সুযোগ নেয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আসতে পারে এমন প্রযুক্তি গ্রহণ বা বিদ্যমান ব্যবস্থাকে হালনাগাদ করার ব্যবস্থা থাকবে।
ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থার মাঝে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থা, ডিজিটাল স্থানীয় সরকার ও উন্নয়ন ব্যবস্থা, ডিজিটাল বিচারব্যবস্থা, ডিজিটাল আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, ডিজিটাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল পরিচিতি ব্যবস্থা, ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা, অটোমেটেড কর, ভ্যাট ও রাজস্বব্যবস্থা, ডিজিটাল অর্থব্যবস্থা, ডিজিটাল পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সামাজিক সেবা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয় মূল মহাপরিকল্পনার আলোকে তাদের নিজস্ব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
একই প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান সব সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে কমপিউটার শেখাতে হবে এবং বিশেষত সরকার তার নেটওয়ার্কে যে পদ্ধতিতে কাজ করবে, সে বিষয়ে প্রশিক্ষিত করতে হবে। একই সাথে ২০১০ সাল থেকে সরকার কমপিউটার শিক্ষিত নয় এমন কাউকে রিক্রুট করবে না- এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে।
ডিজিটাল সরকারের একটি বড় লক্ষ্য হবে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানো। সরকারের কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হলে এবং সরকারের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে থাকলে গ্রাম পর্যন্ত সব সেবা সরকার ইন্টারনেটের মাধ্যমে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে দিতে পারবে। সরকার তার নিজের একটি একক ওয়েব পোর্টাল তৈরি করবে। সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও সেবা এই পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। জনগণ সরকারের এই একটি ঠিকানায় পৌঁছে সরকারের সাথে ইন্টারেকটিভ পদ্ধতিতে সেবা পাবে বা সরকারের কাজে অংশ নেবে। তারা সেখানে ব্লগ লিখবে ও মতামত দেবে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থানে সে মতামত পৌঁছাবে।
সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মাধ্যমে এই মহাপ্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে এবং এই দফতর থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের নিজেদের করণীয় নির্দেশ আকারে দেয়া হবে। সরকার সব ক্ষেত্রেই একটি আদর্শ বা প্রমিত মান নির্ধারণ করে দেবে এবং বিদ্যমান সব কমপিউটারাইজেশনকে সরকারের এই মহাপরিকল্পনার সাথে সমতুল্য করার জন্য নির্দেশ দেবে।
ডিজিটাল শিক্ষা : আরও একটি মহাপ্রকল্প
ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল সরকারের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হবে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার একটি মহাপ্রকল্প গ্রহণ করবে। ডিজিটাল সরকারের সময়বিন্যাসের মতো করে তিনটি স্তরে এই মহাপ্রকল্পটিও বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পের একাধিক লক্ষ্য থাকবে। একটি লক্ষ্য হবে দেশের সব ছাত্র, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস দেয়া। শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি মহাপরিকল্পনার অধীনে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমপিউটার ল্যাব গড়ে তোলা ও প্রতিটি ছাত্র-শিক্ষকের হাতে কমপিউটার দেয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। একই সাথে প্রকল্পের আরও কিছু কার্যক্রম থাকবে।
কার্যক্রমগুলো হলো :
• পর্যায়ক্রমে শিক্ষার প্রথম স্তর (শিশু শ্রেণী) থেকে কমপিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এজন্য তিনটি পর্যায়ে কমপিউটার ল্যাব গড়ে তুলতে হবে, শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিতে হবে, কারিকুলাম তৈরি করতে হবে, পাঠ্যপুস্তক ও ডিজিটাল কনটেন্ট প্রণয়ন করতে হবে।
• পর্যায়ক্রমে শিক্ষাদানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি শ্রেণীকক্ষে পর্যন্ত নিতে হবে। এজন্য কমপিউটার সরবরাহ করার পাশাপাশি পাঠ্য বিষয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। দেশের সব শিক্ষককে ডিজিটাল কনটেন্ট প্রস্ত্তত ও ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষিত করতে হবে। শিক্ষার বাহন হিসেবে টিভি, রেডিও ইত্যাদির পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে।
• সব ছাত্র-শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ইন্টারনেট দিতে হবে এবং শিক্ষার ব্যবস্থাপনা, পরীক্ষা ও পাঠ্যবিষয় ইন্টারনেটভিত্তিক হতে হবে।
কৃষি-শিল্প-ব্যবসায়বাণিজ্য : সরকারি সহায়তা ও বেসরকারি উদ্যোগ
ডিজিটাল সরকার ও ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা চালু হলে দেশের কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যব্যবস্থায় ডিজিটালপ্রযুক্তির বিকাশ ঘটবে। এই খাতে প্রধান ভূমিকা হবে বেসরকারি খাতের। তবে এর জন্য সরকারকে আইন ও অবকাঠামো এবং লাইসেন্সিং পর্যায়ের কাজ করতে হবে। এই কাজে অন্তত দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় :
• ডিজিটাল পেমেন্ট ও স্বাক্ষরসহ ডিজিটাল বাণিজ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
• তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা রফতানিতে সবধরনের সহায়তা করতে হবে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।
অন্যান্য
প্রতিটি নাগরিকের কাছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সুলভ করতে হবে। গ্রাম-শহর, ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ বা অন্য কোনো বিবেচনায় এর বিভেদ থাকতে পারবে না।
আলোচনার প্রেক্ষিতে মনে হয়, সরকারের শুধু দু’টি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার এবং এর বাইরে কিছু সহায়তা-উদ্যোগ দরকার। সেই উদ্যোগগুলোর মূল লক্ষ্য হবে বেসরকারি খাতকে সহায়তা করা। এই কাজগুলো করার জন্য ৩০৬টি কেনো, আমরা হাজার হাজার ছোট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারি। কিন্তু পরিকল্পনাগুলো যদি মহাপরিকল্পনার অংশ না হয় তবে ছোট ছোট কাজের কোনো সুদূরপ্রসারী সুফল আমরা পাবে না।
লক্ষণীয়, ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে প্রণীত আইসিটি পলিসিতে আমরা সরকারের ডিজিটাল চরিত্র ও ডিজিটাল শিক্ষার বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে শত শত পরিকল্পনার কথা বলছি। এর ফলে মূল ফোকাসটি একেবারেই অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mustafajabbar@gmail.com