লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যপ্রযু্ক্তি খাত ও আগামী বাজেট
‘এ বিশ্বে যা কিছু কল্যাণকর, অর্ধেক তার করেছে নারী, অর্ধেক তার নর’- কবির এ উচ্চারণকে যদি আমরা সত্য বলে জানি এবং আন্তরিকভাবে ব্যক্তি, সমাজ ও সামাজিক জীবনে এ সত্যের প্রতিফলন ঘটাই, তবে আমরা নিশ্চিতভাবে জাতিকে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। কবির এ উচ্চারণের অন্তর্নিহিত তাগিদ হচ্ছে আমাদের সামগ্রিক কর্মকান্ডে পুরুষের সাথে নারীদের সংশ্লিষ্ট করতে হবে, নারীদের অংশ নেয়া নিশ্চিত করতে হবে। অতএব তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান্তরাল অংশ নেয়া নিশ্চিত করার তাগিদটিও এসে যায়। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশে নারী একযোগে কাজ করবে, এ বিষয়টি আমরা যখন নিশ্চিত করতে পারব, ঠিক তখনই কার্যত আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রত্যাশিত গতি আসবে। আর তখনই তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগমন ঘটবে। দেশের অর্থনীতিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভূমিকা একটা সিদ্ধান্তসূচক পর্যায়ে উঠে আসবে। সেই সূত্রে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিয়ে দাঁড় করাতে পারব। দূর হবে আমাদের অর্থনীতিসহ অন্যান্য সব ধরনের পরনির্ভরশীলতা। আর আমাদের লক্ষ্যও তো তাই। অতএব আমাদের জোর উদ্যোগ-আয়োজন নিতে হবে আমাদের নারী সমাজকে আরো বেশি থেকে বেশি সংখ্যায় তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্ট করার। এমনটি বোধে আনা কঠিন নয় যে, যেখানে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, সেখানে নারীকে বাদ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিকে কোনো সমৃদ্ধ পর্যায়ে নিয়ে দাঁড় করার চিন্তা-ভাবনা করাটা যেমনি একটি বড় ধরনের বোকামি, তেমনি বড় ধরনের এক পাপও। এ বোকামি ও পাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উপায় খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ তাগিদটি সামনে রেখে এবার আমরা তৈরি করেছি আমাদের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। আশা করি, প্রতিবেদনটি আমাদের জাতীয় নেতানেত্রী ও নীতি-নির্ধারকদের নতুন করে ভাববার সুযোগ করে দেবে।
গত ৬ জুন বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগে দুইজন পূর্ণ সচিবের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো: আব্দুর রব হাওলাদার এবং একই মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো: রফিকুল ইসলাম। উল্লেখ্য, বর্তমান মহাজোট সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে দুটি বিভাগে ভাগ করার সরকার সিদ্ধান্ত নেয় কয়েক মাস আগে। একটি হচ্ছে ‘তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ’ এবং অপরটি ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ’। তবে পৃথক এই বিভাগ দুটি একজন মন্ত্রীর অধীনেই থাকবে। শুধু সচিব থাকবেন দুজন। গত ৬ জুন এই দুই বিভাগে দুজন সচিব নিয়োগের মধ্য দিয়ে কার্যত বিভাগ দুটিতে আলাদা আলাদাভাবে কর্মকান্ড পরিচালনার সূচনাই করা হলো। আমরা সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কারণ, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কার্যক্রম কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে নিয়ে পৌঁছাতে আইসিটি কর্মকান্ডকে আরো ব্যাপকতর করে তুলতে হবে। আর এক্ষেত্রে বিজ্ঞান এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ে এই দুটি আলাদা বিভাগ গঠন সহায়ক ভূমিকাই পালন করবে। এক্ষেত্রে ধন্যবাদ পাবার দাবি রাখেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ, তার ব্যক্তিগত উদ্যোগেই গত বছরের আগস্টে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছিল। সেই সাথে আমরা স্বাগত জানাই নবনিযুক্ত এই দুই সচিবকে। এখন আমাদের স্বাভাবিক প্রত্যাশা- এ দুটি বিভাগ দুই নবনিযুক্ত সচিব সমান্তরালভাবে তাদের সুষ্ঠু কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে দেশে বিজ্ঞান ও আইসিটি খাতকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে দাঁড় করাতে সক্ষম হবেন।
কজ ওয়েব