টেলিযোগাযোগ খাতের প্রবৃত্তিতে সহায়ক পরিবেশ: চ্যালেজ্ঞ ও সম্ভাবনা গোলটেবিল বৈঠকের সারসংক্ষেপ
গত ২৯ জুন ২০১০ বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা ডি.নেট ‘টেলিযোগাযোগ খাতের প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক পরিবেশ : চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ গোল টেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন। ডি.নেট-এর নির্বাহী পরিচালক ড. অনন্য রায়হান এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম দু’টি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন কর্মসূচীর নীতি-বিশেষজ্ঞ আসিফ সালেহ।
ড. অনন্য রায়হান তার মূল প্রবন্ধে গত দুই দশকে এ খাতের গর্বিত অর্জনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে টেলিযোগাযোগসহ প্রযুক্তি খাতের বিকাশে অনেকগুলো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে টেলিঘনত্বের হার এসময়ে ০.৪% থেকে বেড়ে ৩৫%-এ দাঁড়িয়েছে, ১ কোটি ৯৫ লাখ পরিবার সরাসরি টেলিযোগাযোগের আওতায় এসেছে, অতিরিক্ত ৫৪ লাখ পরিবার পরোক্ষভাবে এ সেবার আওতায় এসেছে। দেশের ৩ হাজারেরও বেশি তথ্যকেন্দ্র মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ পাচ্ছে। প্রথম জেনারেশন মোবাইল ফোনের মূল্য সংযোজন সেবা হিসেবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, রেমিটেন্স-এর মতো সেবা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতে, বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম সারির আউটসোর্সিং টার্গেট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন তথা আইটিইউ-এর মতে, বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম কলচার্জ নেয়া হচ্ছে। গ্লোবাল উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তিগত অবস্থানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩০ থেকে ১১৮-তে উন্নীত হয়েছে। এর বড় কারণ, ব্যক্তি পর্যায়ের প্রস্ত্ততি, যা ৬৩ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি নেটওয়ার্ক রেডিনেস (১২), সরকারি ব্যবহার (১৫) ইত্যাদি খাতে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। অবশ্য একই সময়ে ব্যক্তিগত ব্যবহার (-৪) এবং অবকাঠামো বিস্তারের (-৭) ক্ষেত্রে এ সময়ে নেতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। ড. রায়হান বলেন, মোট জাতীয় আয়ে এখাতের অবদান ৬ শতাংশ, গত ১ দশকে ১৯৮ কোটি ইউএস ডলার বিদেশী বিনিয়োগ ঘটেছে। তিনি বিশ্বব্যাংকের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারের মাত্রা ১ শতাংশ বাড়লে মোট রফতানি ৪.৩ শতাংশ বেড়ে যায়। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টেলিকম খাত ২০০১ সালের ১ শতাংশ থেকে ২০১০ সালে (প্রভিশনাল) ৬০.৩৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকারি রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে এ খাত সর্বোচ্চ (১০%) অবদান রাখছে।
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যদের মাঝে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রালয় সম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু
ড. অনন্য রায়হান উল্লেখ করেন, টেলিকম খাতে প্রথম প্রজন্মের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এখন দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবৃদ্ধির দুয়ার উন্মোচনের জন্য নীতি সংস্কার ও নতুন নতুন নীতির প্রয়োজন রয়েছে।
ড. রায়হান কয়েকটি বিষয় আবারো বিবেচনা করার কথা বলেন :
• ভিস্যাট লাইসেন্স বাতিল করার সাথে সাথে সংশিলষ্ট বিকল্প ইন্টারনেট সংযোগের বিষয়ে চিন্তা করা, যাতে করে আন্তর্জাতিক গেইটওয়ের সাথে সংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন থাকে;
• ৩জি লাইসেন্স দিতে বিলম্ব স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যঅধিকার ইত্যাদি বিষয়ে জনগণের সম্ভাব্য সুফল পাওয়া দীর্ঘায়িত করবে। তাই এ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা দরকার;
• মূল্য-সংযোজন সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বিরাজমান রেভিনিউ শেয়ারিং মডেলের পরিমার্জন আবশ্যক করা, যাতে করে মূল্য-সংযোজন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এরকম আরও সেবা দানে উৎসাহিত হয়;
• এ খাতের ওপর অতিরিক্ত শুল্কায়ন টেলিকম খাতের বিকাশের অন্তরায়, তাই শুল্কায়নের বিষয়টি আবারও বিবেচনা করা প্রয়োজন;
• মোবাইলের ক্ষেত্রে আর্থিক জরিমানা এবং পিএসটিএন-এর ক্ষেত্রে সেবা বন্ধ করে দেয়ার মতো বিভিন্ন শাস্তির বিধানটি বাজারকে ভুল সঙ্কেত দিতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
ড. অনন্য রায়হান তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করেন :
০১.
একটি বাজারমূখী লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বাধীন ও শক্তিশালি নিয়ন্ত্রণ কমিশন প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে কমিশনের কর্মকান্ড মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে নিলে স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ কমিশন কার্যত অচল হয়ে পড়বে। পক্ষান্তরে রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, এগুলো বিক্রি করে দেয়া হবে, না বন্ধ করে দেয়া হবে। কারণ, নিয়ন্ত্রক একইভাবে তার অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান দিয়ে ব্যবসায় করাতে পারে না।
০২.
দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ী খাত সহায়ক নীতিমালা প্রয়োজন। এর জন্য বিরাজমান কর-কাঠামো সংস্কার এবং দমনমূলক আইন সংশোধন করে শিল্প সহায়ক আইন বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
০৩.
সবার জন্য সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য যেকোনভাবে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল তৈরির প্রস্তাব করা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য লাইসেন্স দেয়ার নীতির সংস্কার প্রয়োজন।
ব্যারিস্টার তানজিব-উল আলম তার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ আইনের সাথে সংবিধানের বিভিন্ন অসঙ্গতির দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রস্তাবিত আইনের ‘টেলিযোগাযোগ’-এর কোন সংজ্ঞা দেয়া নেই। প্রস্তাবিত আইনে একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ক্ষমতাকে খর্ব করে বেশিরভাগ ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যাস্ত করা হয়েছে। সংশোধনের দুই তৃতীয়াংশই রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরাধের শাস্তির বিধান। বিভিন্ন অপরাধে সর্বোচ্চ ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এবং কোনো শাস্তিই ১০০ কোটি টাকার নিচে নয়। বিরাজমান আইনে এর সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ১০ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত আইনে জরিমানা অনাদায়ে দিনপ্রতি ১ কোটি টাকা করে অতিরিক্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। প্রশাসনিক জরিমানার যে সীমা ৫০ হাজার টাকা ছিল, তা প্রস্তাবিত নতুন আইনে পরিবর্তন করে ৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া রেডিও যন্ত্রাংশের ব্যবহারের জন্য ১০ বছরের জেল কিংবা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান থাকলেও নতুন আইনে তা ৩০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। কারিগরি অনুমোদন- সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো যন্ত্রাংশ বিক্রি কিংবা ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল কিংবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান থাকলেও নতুন আইনে তা ৩০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। পরিদর্শনকারীকে কোনা বাধা দিলে কিংবা ভুল তথ্য দিলে ৩ বছরের জেল কিংবা ৩ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান থাকলেও নতুন আইনে তা ১০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। এধরনের আরো অনেক উচ্চ জরিমানার কথা প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে। ব্যারিস্টার আলম বলেন, প্রস্তাবিত আইনে এ খাতের যেসব অপরাধ আমলযোগ্য বলা হচ্ছে, তা দেশের ফৌজদারী কার্যবিধির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। উপরন্তু এধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে কোনো আপিলের সুযোগ রাখা হয়নি। ফলে বিনা সমন গ্রেফতারের বিষয়টি এই খাতের সংশ্লিষ্টদের আতঙ্কিত করে তুলছে।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এ আলোচনাকে খুবই সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে তাদের সুস্পষ্ট মন্তব্য ব্যক্ত করেন। বক্তারা সরকারের গৃহীত ভিস্যাট বন্ধের নীতিগত সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন এবং বলেন যোগাযোগে বিভিন্ন বিকল্প উপায় থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীর অগ্রবর্তী কোনো দেশই ভিস্যাট বন্ধ করার মতো আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেয়নি। দেশে যে সময় ঘন ঘন ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হচ্ছে, সে সময় বিকল্প সংযোগ হিসেবে স্যাটেলাইট বন্ধ করা মোটেই যুক্তিসঙ্গত নয়। সরকার যে অজুহাতে ভিস্যাট বন্ধ করছে তার মূল কারণ হলো অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়। কিন্তু তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ভিস্যাট-এর মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপি’র হার ০.৩ - ০.৫ শতাংশ। তাই এ অজুহাতে ভিস্যাট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত দেশকে আরো ১০ বছর পিছিয়ে দিবে। বাংলাদেশে যেখানে মহাকাশে সাটেলাইট পাঠানোর কথা ভাবছে, সেখানে ভিস্যাট বন্ধ করে দেয়া অসঙ্গতিপূর্ণ। ভারতে ৮টি সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ এবং ১১টি স্যাটেলাইট রয়েছে। এক লাখেরও বেশি ভিস্যাট রয়েছে। ভিস্যাট যে শুধু রিডানডেন্সির জন্য নয়, এটি তারই এক ভালো উদাহরণ।
দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের অসহায়ত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের বেশিরভাগই এখাতের বিনিয়োগ তুলে নেয়ার চিন্তা করছেন। ইন্টারনেট খাতে ছোট এবং দেশীয় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের খাত খুবই সামান্য। কিন্তু সামান্য অজুহাতে সরকারের উচ্চ জরিমানা এবং শাস্তির বিধান এমনকি সেবা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত এখাতে বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করছে।
অংশগ্রহণকারীরা টেলিযোগাযোগ খাতের উচ্চ লাইসেন্স হার, উচ্চ জরিমানা এবং শাস্তির বিধানের বিরাজমান প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বক্তারা বলেন, এর ফলে এ খাতে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বাধা সৃষ্টি হবে। উচ্চ জরিমানার হার দূর্নীতিকে তরান্বিত করবে।
টেলিফোন ও নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে বিরাজমান ব্যবস্থা যথেষ্ট প্রতিকুল উল্লেখ করে বক্তরা বলেন, প্রতিটি যন্ত্রাংশ, যত ক্ষুদ্রই হোক না কেনো, আমদানির ক্ষেত্রে বিটিআরসি’র অনুমোদন নিতে হয়। এটা থাকা উচিত নয়। সরকার যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা শুল্ক বিভাগকে হস্তান্তর করলে এবং তা হাল নাগাদ করলে এ হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করেছিলেন এ খাতের বিকাশের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে টেলিফোন ও নেটওয়ার্কের যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করবে। কিন্তু এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় নি।
সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল সম্পর্কে বক্তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। অনেক বক্তা একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল গঠনের বিষয়ে মত প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল তৃণমূল এলাকায় প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সবসময় বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে না। কারণ, তৃণমূল এলাকার জনগণের সেবার মূল্য পরিশোধ করার সক্ষমতা নেই। সেক্ষেত্রে ভর্তুকি দিয়ে হলেও সেবা এবং কানেকটিভিটিতে সবার সুযোগ তৈরি করে দেয়া আবশ্যক। অনেকে মনে করেন, আমাদের দেশে মোবাইল ফোন ব্যাপক বিস্তারের ফলে সবার কাছে যোগাযোগ এবং স্বল্প মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে গিয়েছে। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের প্রয়োজন নেই। কিন্তু ইন্টারনেটের কাঙ্ক্ষিত ব্যান্ডউইডথ স্বল্প হওয়ায় ই-স্বাস্থ্য, ই-শিক্ষার মতো মৌলিক অনেক সেবাই তৃণমুল জনগণের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই যেকোনোভাবে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের প্রয়োজন রয়েছে।
সার্বিকভাবে এখাতের প্রবৃদ্ধির জন্য ৩জি, আইপি টেলিফোনি ইত্যাদির মতো নতুন প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত উদ্ভাবিত হতে থাকবে। আমাদের জাতীয় নীতিমালা এসব নতুন প্রযুক্তিকে সহজে ব্যবহার এবং তৃণমূল জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে প্রয়োগের ব্যাপারে সহায়ক হতে হবে। এ জন্য একটি গণতান্ত্রিক এবং নিয়ন্ত্রিত নিলাম ব্যবস্থা অতি জরুরি। ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, নিলাম ব্যবস্থা স্বচ্ছ ছিল। কিন্তু দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সরকারি নীতি না থাকায় নিলামের হার খুবই বেশি হয়ে দাড়ায়। ফলে ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মূল্য অনেক বেশি হয়ে পড়ে। তাই এ সেবা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার অভীষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়। আগামী দিনগুলোতে এ জাতীয় নিলাম ব্যবস্থায় যথেষ্ট পরিবর্তন আনা দরকার। নিলামে লাইসেন্স ফি’র পরিবর্তে রেভিনিউ শেয়ারিং মডেলে চিন্তা করা যেতে পারে।
দেশের সর্বাধিক বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্টকারী এ খাতে আরও বিনিয়োগকে উৎসহিত করতে হবে। মোবাইল ফোনভিত্তিক নতুন নতুন সেবা চালুর জন্য অনেক বিনিয়োগকারী আগ্রহী। কিন্তু দেশের বিরাজমান নীতি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য এ খাতে উদ্যোগীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আলোচকরা উদাহরণ দিয়ে বলেন, এখন মানুষ থেকে মানুষের সংযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশেই যন্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের দেশেও ক্ষুদ্র পরিসরে চালু হয়েছে। তাই নতুন সেবা চালু করার ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ জরুরি।
গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ঘোষণাকে এ খাতের বিকাশের জন্য সহায়ক বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন আইন এবং নীতি বাস্তবায়নে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা এখাতকে তরান্বিত করার পরিবর্তে সঙ্কুচিত করে দিবে। বিরাজমান পরিস্থিতি প্রতিকূল হওয়া সত্বেও বক্তারা এখাতে আরো অনেক গবেষণা করার আহবান জানান। পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি সার্বিক সেবা তহবিল গঠনের পক্ষে মত দেন। বক্তারা বলেন, আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র যেখানে একাধিক ভিস্যাট সংযোগ নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি জনহিতকর বিষয় জাতীয় তথ্যভান্ডার প্রস্ত্তত এবং পরিবেশন করছে, সেখানে আমাদের দেশে ভিস্যাট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাতিল করে এরকম আরো সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ হাতে নেয়া উচিত।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আসিফ সালেহ জানান সরকার ইতোমধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের ডমোস্টিক নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটিতে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারীদের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রযুক্তিকে প্রযুক্তি দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে, র্যাসব কিংবা পুলিশ দিয়ে নয়। কিন্তু সরকার তা-ই করছে এতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে এবং ব্যবসায়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। একের পর এক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে প্রযুক্তি দমন করা দেশের জন্য একটি লজ্জার ব্যাপার।
তিনি বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়ের যৌথ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চিন্তা অপ্রয়োজনীয়। বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ কমিশন নিয়ন্ত্রক হিসেবে যথেষ্ট কার্যকর করা সম্ভব। বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ কমিশনকে নিয়ন্ত্রকের পরিবর্তে নিয়ামকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত আইনের অনেক ধারাই আপত্তিকর। যেমন, কাউকে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য ১০০ কোটি টাকার জরিমানার বিধান হাস্যকর। বিরাজমান আইনে পুলিশের মাধ্যমেই এ অপরাধের শাস্তির বিধান রয়েছে। তিনি মোবাইল ফোন সেটের করের ক্ষেত্রে একটি ফ্ল্যাট করের প্রস্তাব করেন, যার ফলে অবৈধভাবে মোবাইল সেট আমদানি বন্ধ হবে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সাথে আরো আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরা হবে।
ভিস্যাট বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তকে ভুল অখ্যায়িত করে হাসানুল হক ইনু বলেন, শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগে ভিস্যাট বসানোর অনুমতি দিয়ে আবার সেগুলো বন্ধ করে দিলে এখাতের সংশ্লিষ্ট দক্ষ জনগোষ্ঠী বেকার হয়ে পড়বে। তাছাড়া বিরাজমান সাবমেরিন ক্যাবল যেভাবে মাঝে মধ্যেই কাটা পড়ে সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা অপরিহার্য। চোর ধরতে গিয়ে ব্যবসায় বন্ধ করে দেয়া প্রযুক্তির বিকাশকে বন্ধ করে দেয়ার শামিল। তাই এটি বর্তমান সরকারের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের স্যাবোটাজ।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণ এবং সংশ্লিষ্ট সবার মন জয় করতে পেরেছি। মন জয় করার পর্ব থেকে যখনই আমরা উত্থান পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছি, সে মুহূর্তে এরকম সরকারি সিদ্ধান্ত সবার জন্য অস্বস্তিকর। সংস্কারের নামে প্রযুক্তির বিকাশকে ব্যহত করার উদ্যোগ ‘প্রশাসনের ঘাড়ে ভূত চাপা’-র নামান্তর। তিনি মনে করেন, প্রযুক্তির বিকাশে আমাদের সামনে ৪টি মৌলিক বাধার পাহাড় রয়েছে। সেগুলো হলো বিদ্যুাৎ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, কর কাঠামো এবং আমলাতান্ত্রিক প্রশাসন। এ বাধাগুলোকে অগ্রগণ্য হিসেবে না দেখে প্রযুক্তিকে বন্ধ করে দেয়া আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত।
তিনি আরো মনে করেন, আমাদের সামনে অগ্রাধিকার বিষয় হলো টেলিকম আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, কর কাঠামো সংশোধন, উন্নত প্রযুক্তির সহায়ক সৃষ্টি, তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও শিক্ষা বিকাশে প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল তথ্যভান্ডার প্রস্ত্তত, আগামী দিনের উপযোগী কারিগরিভাবে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা ইত্যাদি। তিনি গোলটেবিল আয়োজনের বক্তব্যগুলো সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরার ব্যপারে তার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বৈঠকের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব
০১. বিটিআরসি-র সংস্কার :
একটি বাজারমূখী লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বাধীন ও শক্তিশালি নিয়ন্ত্রণ কমিশন প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে কমিশনের কর্মকান্ড মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে নিলে স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ কমিশন কার্যত অচল হয়ে পড়বে। পাশাপাশি নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার, লাইসেন্স দেয়া, কল হার ধার্য, নতুন সেবা চালু করা, টেলিকম যন্ত্রাংশ আমদানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিটিআরসি-ও ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি দ্রুত ব্যবহার করতে না পারলে তা কার্যত ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
০২. ভিস্যাট চালু রাখা এবং বন্ধের নীতিগত সিদ্ভান্ত বাতিল :
যোগাযোগে বিভিন্ন বিকল্প উপায় থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীর উন্নত কোনো দেশই ভিস্যাট বন্ধ করেনি। পক্ষান্তরে ভিস্যাটের ব্যবহার নানা ক্ষেত্রে বাড়িয়েছে। পাশের দেশ ভারতে শিক্ষাবিষয়ক তথ্য নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ স্যাটেলাইট চালু করেছে। সরকার যে অজুহাতে ভিস্যাট বন্ধ করছে, তার মূল কারণ অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়। কিন্তু পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিস্যাট-এর মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপি’র হার মাত্র ০.৩ - ০.৫%। ভারতে ৮টি সাবমেরিন কেবল সংযোগ এবং ১১টি স্যাটেলাইট রয়েছে। এক লাখেরও বেশি ভিস্যাট রয়েছে। ভিস্যাট যে শুধু রিডানডেন্সি-র জন্য নয়, এটি তার একটি জলন্ত উদাহরণ। তাছাড়া আমাদেও দেশে যেভাবে সাবমেরিন ক্যাবল লাইন কাটা পড়ছে, সেখানে বিকল্প সংযোগ হিসেবে ভিস্যাটের কোনো বিকল্প আমাদের কাছে নেই। ইন্টরনেট-নির্ভর ব্যবসায়ের প্রসারে ভিস্যাট কোনোভাবেই বন্ধ করা উচিত নয়; বরং আরো নতুন ভিস্যাট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া উচিৎ।
০৩. লাইসেন্সিংয়ের হার কমানো এবং শাস্তি ও জরিমানার বিষয় পুনঃমূল্যায়ন :
টেলিকম খাতে উচ্চ লাইসেন্সিং ফি, শাস্তির বিধান এবং জরিমানার বিধান এ খাতের বিকাশের জন্য হুমকিস্বরূপ। আর্থিক জরিমানা এবং সেবা বন্ধ করে দেয়ার মতো ঘটনা দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বাধা। জরিমানা ও শাস্তির নানারকম বিধান, বিশেষ করে সুস্পষ্টভাবে আইনে উল্লেখ না থাকলেও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার একক বিবেচনার বিষয়টি পূণরায় বিবেচনা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি উচ্চ হারে জরিমানা ও শাস্তির বিধান বিশেষ করে প্রতিদিনের অতিরিক্তি ১ কোটি টাকা জরিমিানার বিধানটি ঘুষ ও দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। তাই লাইসেন্সিংয়ের হার কমানো এবং শাস্তি ও জরিমানার বিষয়গুলো পুনঃমূল্যায়ন করা একান্ত প্রয়োজন।
০৪. মোবাইল ফোনের সিমের শুল্ক প্রত্যাহার:
মোবাইল ফোনের সীমের ওপর কর প্রত্যাহার না করা হলে জনগণের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ওপর প্রভাব পড়বে। নতুন নতুন সেবা চালুর ক্ষেত্রেও এটি অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে।
০৫. মোবাইল ফোন সেটের ফ্লাট হারে শুল্কায়ন :
মোবাইল ফোনের ওপর সেট ভেদে শুল্কায়ন ব্যবস্থা পরিবর্তন প্রয়োজন। মোবাইল ফোন সেট ভেদে শুল্কায়ন কাঠামোর ফলে নতুন ধরনের সেট বৈধ পথে আসা কমে যাবে। কারণ, শুল্ক কর্তৃপক্ষ তাদের শুল্কায়ন কাঠামো হালনাগাদ করতে করতে আরও নতুন ফিচারসমৃদ্ধ সেট বাজারে চলে আসবে। তাই শুল্ক কর্তৃপক্ষের দ্বিধান্বিত শুল্কায়ন ব্যবস্থা আমদানীকারকদের অবৈধ পথে আনাকে উৎসাহিত করবে। তাই সব মোবাইল সেটের ওপর একরকম শুল্ক থাকলে বৈধ পথে আমদানি বাড়বে এবং সরকারি রাজস্ব বাড়বে।
০৬. ইন্টারনেটের ব্যবহারে ভ্যাট প্রত্যাহার :
ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ভ্যাট পক্ষান্তরে ব্যবহারকারীর ওপরেই বর্তায়, যা দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহারের মাত্রাকে শ্লথ করে দিবে। এর ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে ইন্টারনেটের খরচ কমে আসবে এবং আরও বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী এর আওতায় আসবে।
০৭. ৩জি, আইপি ফোনের মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য আইনী কাঠামো সহজ করা:
পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে এবং প্রযুক্তির নতুন সংস্করণ বের হচ্ছে। তাই নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি সার্বিক নীতিমালা প্রয়োজন। নীতিমালা প্রযুক্তি-ভিত্তিক হওয়া উচিত নয়। বর্তমানে একই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। তাই একটি প্রযুক্তির সার্বিক নীতিমালা (Technology Convergence Policy) দরকার।
০৮. টেলিযোগাযোগ খাতে বিকাশে দেশী বিনিয়েগকারী এবং উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করা :
দেশের সর্বাধিক বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্টকারী এ খাতে আরও বিনিয়োগকে উৎসহিত করতে হবে। মোবাইল ফোন-ভিত্তিক নতুন নতুন সেবা চালুর জন্য অনেক বিনিয়োগকারী আগ্রহী। কিন্তু দেশের বিরাজমান নীতি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য এ খাতে উদ্যোগীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
০৯. টেলিফোন ও নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশ আমদানির অনুমোদন শিথিল করা :
টেলিফোন ও নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে বিরাজমান ব্যবস্থা যথেষ্ট প্রতিকূল। বক্তরা বলেন, প্রতিটি যন্ত্রাংশ, অতি ক্ষূদ্রই হোক না কেনো, আমদানির ক্ষেত্রে বিটিআরসি’র অনুমোদন নিতে হয়। এটা পরিবর্তন করে একটি সার্বিক নীতিমালা শুল্ক বিভাগকে হস্তান্তর করা এবং তা হাল নাগাদ করা উচিত।
১০. সামজিক দায়বদ্ধতা তহবিল গঠন :
বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল তৃণমূল এলাকায় প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সবসময় বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে না। কারণ, তৃণমূল এলাকার জনগণের সেবার মূল্য পরিশোধ করার সক্ষমতা নেই। সেক্ষেত্রে ভর্তুকি দিয়ে হলেও সেবা এবং কানেকটিভিটিতে সবার জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয়া আবশ্যক। ইন্টারনেটের কাঙ্ক্ষিত ব্যান্ডউইডথ স্বল্প হওয়ায় ই-স্বাস্থ্য, ই-শিক্ষার মতো মৌলিক অনেক সেবাই তৃণমুল জনগণের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই যেকোনোভাবে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের প্রয়োজন রয়েছে।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mahmud@dnet.org.bd