• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > এক্সপিকে ভবিষ্যতের উপযোগী রাখা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তাসনীম মাহ্‌মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
উইন্ডোজ ‍এক্সপি
তথ্যসূত্র:
ব্যবহারকারীর পাতা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
এক্সপিকে ভবিষ্যতের উপযোগী রাখা

মে, ২০০১-এ মাইক্রোসফট তার পরবর্তী ভার্সনের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ভিসতার কাজ শুরু করে। তা অবমুক্ত হয় ২০০৩ সালে। বিভিন্ন কারণে এ অপারেটিং সিস্টেমটি তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। পরবর্তী সময়ে মাইক্রোসফট উইন্ডোজকে আরো উন্নত করে অবমুক্ত করে উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেম। এই অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ ভিসতার ত্রুটিবিচ্যুতিগুলো দূর করা হয়।

লক্ষণীয়, আমাদের দেশে এখনো বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহার করে, যদিও বলা হয় বর্তমানে এক্সপি হচ্ছে পুরনো কমপিউটারের জন্য সেরা অপারেটিং সিস্টেম। ব্যবহারকারী এ অপারেটিং সিস্টেমে তাদের কমপিউটিং জীবনের দৈনন্দিন চাহিদা সফলভাবে পূরণ করতে পারলে তা পরিবর্তন করা কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কমপিউটারকে আপগ্রেড করতে না চান। আপনার এক্সপিকে আগামী কয়েক বছর যাতে ব্যবহার করতে পারেন অর্থাৎ ভবিষ্যতের কম্পোনেন্টের সাথে যাতে সামঞ্জস্য বজায় থাকে তার ওপর ভিত্তি করে উইন্ডোজ এক্সপিকে প্রস্ত্তত রাখার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে দেখানো হয়েছে এবারের ব্যবহারকারীর পাতায়।

যেভাবে প্রস্ত্তত থাকতে হবে

ক্লাসিক গাড়ির মালিকরা জানেন, কয়েক বছর পর তার গাড়ির উপযোগী খুচরা যন্ত্রাংশ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। একই ব্যাপার উইন্ডোজ এক্সপির ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হবে, যদিও বেশিরভাগ কোম্পানি উইন্ডোজ এক্সপির উপযোগী বিভিন্ন ড্রাইভার ও সফটওয়্যার সরবরাহ করে আসছে। কিন্তু, এ ধারা কতদিন অব্যাহত থাকবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো নিয়ে এখন থেকে ভাবতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়।

প্রয়োজনীয় সব ফাইল আলাদা আলাদাভাবে ডাউনলোড না করে মনোনিবেশ করুন www.driverpacks.net/DriverPacks সাইটে। এ সাইটটি উইন্ডোজ এক্সপির জন্য প্রয়োজনীয় সব ড্রাইভার সংগ্রহ ও স্টোর করে রাখে ফাইলে। এই ফাইলগুলো পেজের উপরের দিকে লিস্ট করে রাখে, যা শুরু হয়েছে Driverpack Chipset দিয়ে। প্রতিটিতে ক্লিক করে ইনস্ট্রাকশন অনুসরণ করে হার্ডডিস্কের ফোল্ডারে ডাউনলোড করুন।

ফাইল ডাউনলোড করার পর পরবর্তী পর্যায়ের ধাপ হিসেবে সেগুলো এক্সট্রাক্ট করতে হবে। এজন্য জিপ-৭ (7 Zip) নামের এক ফ্রি টুল ডাউনলোড করতে হবে, যা পাওয়া যাবে www.computeractive.co.uk/2128748 থেকে। এ টুল ডাউনলোড করার পর ফাইলে ডাবল ক্লিক করে ইনস্টল বাটনে ক্লিক করতে হবে। ইনস্টল করা জিপ-৭ দিয়ে ড্রাইভারপ্যাক ফাইলকে এক্সট্রাক্ট করতে পারবেন।

ফাইল ডাউনলোড করার পর ডিকম্প্রেস করে সব ফাইলের কপি তৈরি করে রাখুন নিরাপদ কোনো জায়গায়। এর ফলে এ ফাইল সঙ্কটমুহূর্তে সহায়তা করতে পারে। এগুলোকে মূল ড্রাইভের এক্সটারনাল হার্ডডিস্কে বা ডিভিডি ডিস্কে নিরাপদে কপি করে রাখুন।

সফটওয়্যার লাইব্রেরি তৈরি করা

প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ড্রাইভার সংগ্রহে থাকলে সঙ্কট মুহূর্তে উইন্ডোজ এক্সপি রিইনস্টল করে নিতে পারবেন। তবে এতে প্রয়োজনীয় সব সফটওয়্যার যথাস্থানে ফিরে পাবেন না। সে কারণে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সব সিডি নিরাপদ জায়গায় স্টোর করে রাখুন। হার্ডওয়্যার পণ্যের জন্য ইনস্টলেশন সিডি যেমন- প্রিন্টারের ড্রাইভার ইনস্টল করে নিরাপদে সরিয়ে রাখুন। অনেক প্রোগ্রামের কার্যকারিতার জন্য অ্যাক্টিভেশন কোড দরকার, যা হার্ডওয়্যার প্রস্ত্ততকারীরা আলাদা কাগজে দিয়ে থাকে তা আলাদা কাগজে বা শিটে লিপিবদ্ধ করে রাখুন। এসব বিষয় সিডির সাথে যত্নসহকারে রাখুন। প্রয়োজনে সিডিতে মার্কার পেন দিয়ে লিখে রাখুন প্রত্যেক প্রোগ্রামের নাম, কোড ইত্যাদি। যদি কোনো প্রোগ্রাম কিনে থাকেন বা অনলাইনে ডাউনলোড করে থাকেন তাহলে ব্যাকআপ কপি তৈরি করা উচিত এবং ইনস্টলেশন ফাইল সিডি বা ডিভিডিতে সেভ করে রাখুন। এসব প্রোগ্রামে অ্যাক্টিভিশন কোড যা ই-মেইলের মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে, তা টুকে রাখতে ভুল যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। যদি কমপিউটারটি উইন্ডোজ সিডি ও রেসকিউ ডিস্কসহ সরবরাহ করা না হয়ে থাকে, তাহলে উচিত হবে এ ধরনের টুল সংগ্রহ করে সিডি বা ডিভিডিতে স্টোর করে রাখুন।

নিরাপত্তা বিধান করা

উইন্ডোজ এক্সপিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করা যায়, তবে সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভাইরাস যা পুরো সিস্টেমকে ব্যবহারের অযোগ্য করে। সুতরাং এজন্য সতর্কতামূলকভাবে ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস টুল ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও অ্যান্টিভাইরাস টুলকে নিয়মিতভাবে আপডেট রাখার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সে সাথে এসব টুলের আপডেট ভার্সন সিডি বা ডিভিডিতে স্টোর করুন।

ডিস্ককে প্রোটেক্ট করা

কমপিউটারের বেশিরভাগ অংশই বছরের পর বছর রান করা যায়। তবে বর্তমানে হার্ডওয়্যার পার্টগুলো খুব দ্রুত মুভ করায় প্রচুর তাপ জেনারেট হয়, ফলে হার্ডডিস্ক ফেল করতে পারে খুব সহজেই। বেশিরভাগ হার্ডডিস্ক ফেইল্যুর হয় তাৎক্ষণিক, ফলে নতুন হার্ডডিস্ক কিনে সবকিছুই রিইনস্টল করতে হয়। তবে যদি ডিস্ক এরর মেসেজ আবির্ভূত হয়, তাহলে উচিত হবে রিপেয়ার ডিস্ক টুল ব্যবহার করা। এ টুল উইন্ডোজের তৈরি। এটি ব্যবহার করার জন্য Start-এ ক্লিক করে Run টাইপ করে এন্টার চাপুন। এর পর CHKDSK টাইপ করে এন্টার চাপলে একটি উইন্ডোজ আবির্ভূত হবে যখন একটি টেস্ট প্রসেস চলতে থাকবে। এ টুল কোনো এরর রিপোর্ট দিলে অপেক্ষা করুন যতক্ষণ পর্যন্ত না এ কাজ শেষ হয়। এরপর আবার রান উইন্ডোজ ওপেন করে CHKDSK/F টাইপ করে এন্টার চাপুন। ফলে আপনাকে জিজ্ঞাস করবে যখন আবার রিস্টার্ট করবেন তখন স্ক্যান পারফরম করবেন কি না। Y চাপুন এবং কাজ শেষে রিস্টার্ট করুন।

ব্লটসমূহ অপসারণ করা

সবকিছু ভালোভাবে চললে কয়েক মিনিট সময় ব্যয় করুন কমপিউটারকে টিপটপ করার জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামসমূহ রিমুভ করার উদ্দেশ্যে। কেননা, এসব প্রোগ্রাম শুধু ডিস্কের স্পেসই নষ্ট করে না বরং মেমরিও ব্যাপকভাবে দখল করে। ফলে কমপিউটার ধীরগতিসম্পন্ন হয়ে পড়ে এবং স্টার্ট হতে প্রচুর সময় নেয়।

বেশিরভাগ অপ্রয়োজনীয় ফাইল অপসারণ করার জন্য সিলেক্ট করুন StartControl Panel এবং এরপর সিলেক্ট করুন Add or Remove Programs. এরপর যে মেনু আসবে তা অনুমোদন করবে কাঙ্ক্ষিত ফাইল বা প্রোগ্রামকে আনইনস্টল করার জন্য। সুতরাং নিশ্চিত হয়ে অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামসমূহ আনইনস্টল করুন।

আরো বিস্তৃতভাবে সিস্টেমকে পরিষ্কার করা যায় রেজিস্ট্রি ক্লিন করার মাধ্যমে। উইন্ডোজ মূলত রেজিস্ট্রিতে ডিভাইস ও সফটওয়্যার সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্টোর করে, যেসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ডিভাইস ও সফটওয়্যার পারফরম করে। সুতরাং যখন কোনো প্রোগ্রাম রিমুভ বা আনইনস্টল করা হয়, তখন রেজিস্ট্রিতে তৈরি হওয়া তথ্যসমূহ কারিগরীভাবে রিমুভ হয়, তবে কিছু কিছু তথ্য থেকে যেতে পারে।

রেজিস্ট্রেকে পরীক্ষা ও সুবিন্যাস্ত করা সম্ভব, তবে তা বেশ জটিল। কেননা এখানে হাজার হাজার সেটিং থাকে উদ্ভট নামে। সুতরাং, কোনো সুনির্দিষ্ট সেটিং সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। এসব নিশ্চিত হয়ে ডিলিট না করলে উইন্ডোজকে অকার্যকর করে ফেলতে পারে বা বিশেষ কোনো কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

রেজিস্ট্রিকে সুবিন্যাস্ত করার সহজ উপায় হিসেবে প্রথমে ফ্রি কপি সিক্লিনার (Ccleaner) টুল ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে পারেন www.celeaner.com সাইট থেকে। এটি ইনস্টল করার পর রান করুন এবং বেছে নিন Registry বাম দিকে মেনু থেকে। রেজিস্ট্রিতে কোনো অসংগতি রয়েছে কি না, তা নিরূপণ করার জন্য প্রথমে ক্লিক করুন Scan-এ। সিক্লিনার টুলে সম্পৃক্ত করা হয়েছে বিশেষ টুল যা জাঙ্ক ফাইলগুলো রিমুভ করে। এসব জাঙ্ক ফাইল কমপিউটারে জমা হয়ে পরেছিল। বাম দিকের মেনু টুলস-এ ক্লিক করলে সেসব প্রোগ্রাম রিমুভ করে যেগুলো ইতোপূর্বে আনইনস্টল করা সম্ভব হয়নি।

ব্যাকআপ

অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ও টুল রিমুভ করার পর কমপিউটারকে সজ্জিত করুন সর্বশেষ আপডেট দিয়ে। এরপরের কাজটি হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর তাহলো ব্যাকআপ কপি তৈরি করা। লক্ষণীয়, আমরা সবাই জানি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ব্যাকআপ করা উচিৎ। প্রয়োজনীয় কিছু ফাইল ব্যাকআপ করা সহজ। তবে পুরো কমপিউটারের তথ্য ব্যাকআপ করা যেমনি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তেমনি দরকার বিপুল পরিমাণের স্টোরেজ স্পেস।

স্টোরেজ ক্ষমতা

ডিভিডি ডিস্ক ৪ গি.বা. ডাটা ধারণ করতে পারে, তবে ডাবল লেয়ারের ডিভিডি হলে ৮ গি.বা. ডাটা ধারণ করতে পারবে। তবে ইচ্ছে করলে এক্সটারনাল হার্ডড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন, যা ইউএসবি ড্রাইভের মাধ্যমে যুক্ত করতে হয়। কিছু কিছু হার্ডডিস্ক রয়েছে, যেখানে ব্যাকআপ সফটওয়্যার সম্পৃক্ত থাকে। এ ধরনের হার্ডডিস্ক ব্যাকআপের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

এক্সপি রিইনস্টল করা

উপরের বর্ণিত ধাপগুলো সম্পন্ন করার ফলে উইন্ডোজ এক্সপিকে আগামী কয়েক বছরের জন্য প্রস্ত্ততির কাজ সম্পন্ন হবে। তবে মারাত্মক ভাইরাস আক্রমণ বা হার্ডডিস্ক ফেইলুরের মত বিপর্যয়ে হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবসময় প্রস্ত্তত থাকতে হবে। যদি এমন কোনো বিপর্যয় ঘটে যায়, তাহলে প্রস্ত্তত করা সিডি, ডিভিডি বা স্টোরেজ মিডিয়া থেকে উইন্ডোজ এক্সপিকে রিইনস্টল করার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ড্রাইভারসমূহ রিইনস্টল করে নিতে পারেন এবং থাকতে পারবেন নিশ্চিন্তে।

যেভাবে আপডেট করবেন

উইন্ডোজ এক্সপি এখন বাজারে কেনার জন্য পর্যাপ্ত নয়, যদিও মাইক্রোসফট এক্সপিকে পুরোপুরি বাতিল পণ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়নি। তারপরও অনেকের ধারণা মাইক্রোসফট তার এক্সপি ব্যবহারকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিকিউরিটি আপডেট অবমুক্ত করে যাবে ২০১৪ সাল পর্যন্ত, যাকে বলা হয় মাইক্রোসফটের ‘এক্সটেনডেট সাপোর্ট’ পিরিয়ড।

যদিও ২০১৪ সাল আসতে অনেক দিন হাতে রয়েছে, তথাপি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও আপডেটসমূহ ডাউনলোড এবং ইনস্টল করে রাখা উচিত। এ কাজটি করার জন্য এক্সপিকে হ্যান্ডেল করা উচিত পুরো আপডেট প্রসেসসহ। এজন্য My Computer আইকনে ডান ক্লিক করে Properties সিলেক্ট করুন। System Properties বক্স আবির্ভূত হবার পর Automatic Update ট্যাবে ক্লিক করে যেকোনো একটি অপশন বেছে নিন। ভালো হয় Automatic-এ সেট করা।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : swapan52002@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস