লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - সেপ্টেম্বর
এয়ন-দ্য টাওয়ার অব ইটার্নিটি
ডেভেলপার: এয়ন টিম
পাবলিশার : এনসিসফট
সিরিজ : ক্রাই ইঞ্জিন
ক্যাটেগরি : অনলাইন রোল প্লেয়িং
মোড : মাল্টিপ্লেয়ার
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসারের কারণে আমাদের দেশে মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন গেমগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে রেসিংয়ের চেয়ে যারা স্ট্র্যাটেজি বা রোল প্লেয়িং গেম খেলতে পছন্দ করেন যেমন- ডটা বা ওয়ার্ল্ড অব ওয়ারক্রাফট, তাদের জন্য একই ধাঁচের আরেকটি গেম হচ্ছে এয়ন, যা কোরিয়ায় দ্য টাওয়ার অব এয়ন এবং জাপানে এয়ন-দ্য টাওয়ার অব ইটার্নিটি নামে পরিচিত।
অ্যাট্রেইয়া গ্রহের অধিপতি এয়ন তার গ্রহের বাসিন্দা হিসেবে মানুষের আগমন ঘটায় এবং তাদের শাসনভার তুলে দেয় বালাউর নামের শক্তিশালী জাতিকে। কিন্তু বালাউরদের পেয়ে বসে ক্ষমতার নেশায়। ক্ষমতা ও শক্তির লোভে অন্ধ বালাউর জাতি তাদের ওপর অর্পিত কাজ বাদ দিয়ে কি করে আরো ক্ষমতা অর্জন করা যায় তার দিকে নজর দিতে শুরু করে। বালাউরদের মাঝে পাঁচজন বেশ ক্ষমতাশীল হয়ে ওঠে এবং আরো ক্ষমতা লাভের আশায় দেবতা এয়নের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু এয়ন সেই পাঁচ বালাউর যারা ড্রাগন লর্ড নামে পরিচিত, তাদের তিনি বিমুখ করেন। এতে বালাউররা ক্ষেপে গিয়ে দেবতার বিরুদ্ধে লিপ্ত হয় যুদ্ধে। তখন তাদের আয়ত্তে আনার জন্য এয়ন নিযুক্ত করেন বারোজন ইমপেরিয়ান লর্ড। ইতোমধ্যে কিছু মানুষও লাভ করে অর্ধ-দেবত্ব যাতে তারা বালাউরদের সাথে লড়াই করার উপযোগী হয়ে ওঠে। সেই ক্ষমতাবান মানুষ বা ডিভারা ইমপেরিয়ান লর্ডদের অধীনে থেকে বালাউরদের সাথে ভয়ঙ্কর যুদ্ধে মেতে ওঠে। দীর্ঘ সময় ইমপেরিয়ান লর্ডদের সাথে ড্রাগন লর্ডদের যুদ্ধের পর তারা এক পর্যায়ে শান্তি চুক্তি করার চিন্তা করে। তারা সবাই এক পাহাড়ে এসে উপস্থিত হয় শান্তি চুক্তির উদ্দেশ্যে। কিন্তু হঠাৎ এক ড্রাগন লর্ড অজানা আততায়ীর হাতে নিহত হয়। ভুল বোঝাবুঝির ফলে তাদের মাঝে জন্ম নেয় আরো কঠিন শত্রুতার। অ্যাট্রেইয়া গ্রহ দুভাগে ভাগ হয়ে যায় এবং সেই সাথে ইমপেরিয়ান লর্ডদের মাঝে জন্ম নেয় শক্তির পূজারী শেডিম লর্ডদের দল ও শান্তিকামী সেরাফিম লর্ডদের দল। শেডিমরা গ্রহের উপরিভাগ ও সেরাফিমরা গ্রহের নিম্নভাগে আলাদাভাবে বসবাস শুরু করে।
শেডিম লর্ডরা অ্যাট্রেইয়া গ্রহের কুয়াশাচ্ছন্ন উপরিভাগ অ্যাসমোডিতে গড়ে তুলে প্যানডিমোনিয়াম নামের শহর। তাদের অনুসারী জাতির নাম আসমোডিয়ান। সাহসী ও শক্তসমর্থ জাতি আসমোডিয়ানদের আকার-আকৃতিতে আসে ব্যাপক পরিবর্তন। তাদের গায়ের রঙ হয়ে যায় মলিন বা ধূসর, তাদের হাত-পা হিংস্র পশুর মতো হয়ে যায়, নিশাচর প্রাণীর মতো তারা রাতে দেখতে পায়, তাদের চোখ হয়ে ওঠে রক্তবর্ণ এবং ওড়ার জন্য তাদের গাঢ় রঙের পালক গজায়।
সেরাফিম লর্ডদের অধীনস্থ জাতি এইয়ো। তারা বাস করে অ্যাট্রেইয়ার নিম্নভাগ ইলাইসিয়ার সুন্দর শহর স্যাঙ্কটামে। তাদের আকার-আকৃতিতে তেমন একটা পরিবর্তন আসে না, তারা সাধারণ মানুষের মতো দেখতে হলেও তাদের রয়েছে স্বর্গীয় দেবদূতের মতো চোখ ধাঁধানো উজ্জ্বল পালকের পাখা এবং অসামান্য শারীরিক শক্তি।
গেমারকে খেলা শুরু করতে হবে ইলাসিয়া বা অ্যাসমোড যেকোনো এক ভূ-খন্ডে এলয়ো বা অ্যামোডিয়ান হিসেবে সাধারণ মার্সেনারি বা রাইডার চরিত্রে। গেমার নিজের পছন্দমতো নিজের হিরোর গঠন ও পোশাক-আশাকের পরিবর্তন করে নিতে পারবে। ক্যারেক্টার এডিটিংয়ের জন্য বেশ ভালো অপশন রাখা হয়েছে যা গেমের আকর্ষণীয় দিকগুলোর একটি। ক্যারেক্টার নির্বাচনের সময় রয়েছে চার ধরনের ক্লাস। তারা হচ্ছে ওয়ারিওর, স্কাউট, মেইজ ও প্রিস্ট। ওয়ারিওর ক্লাসের যোদ্ধা যুদ্ধের কলাকৌশল ও নানারকম অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শী এবং সেই সাথে শারীরিক শক্তির দিকে থেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। ওয়ারিওর ক্লাস নিয়ে খেলাটা বেশ সহজ কারণ এ ক্লাসটি বেশ শক্তিশালী এবং সামনাসামনি লড়াইয়ে তাদের পরাস্ত করাটা বেশ কঠিন। স্কাউট ক্লাস বৈচিত্র্যতায় ভরপুর। তাদের দক্ষতা ও গতির কারণে খেলার মজাই আলাদা। মেইজ ক্লাস জাদুবিদ্যায় পারদর্শী। তারা ক্লোজ কমব্যাটে দুর্বল তবে দূর থেকে শত্রুকে জাদুশক্তি দিয়ে ঘায়েল করার ব্যাপারে বেশ পটু। প্রিস্টরা হাতাহাতি ও দূর থেকে আক্রমণ উভয় ব্যাপারেই সমান পারদর্শী। তাদের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হিলিং পাওয়ার বা জীবনীশক্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা ও জাদুশক্তির সাহায্যে সুরক্ষাকবচ বানানোর ক্ষমতা। পছন্দমতো চরিত্র নিয়ে খেলা শুরু করার পর গেমারকে নির্মূল করতে হবে বালাউর জাতিকে, সেই সাথে বাড়াতে হবে নিজের দক্ষতা ও ক্ষমতা এবং বেশ কিছু ধাঁধার সমাধান করাসহ আরো অনেক কাজ (কোয়েস্ট) সম্পন্ন করতে হবে। ধীরে ধীরে ক্যারেক্টারের লেভেল বাড়তে থাকবে এবং লেভেল নয়ের ঘরে গেলে ক্লাস আপগ্রেড করার সুযোগ দেয়া হবে। ওয়ারিওর নিয়ে খেলা গেমারকে বেছে নিতে হবে টেম্পলার বা গ্লাডিয়েটর ক্লাস, স্কাউট পরিবর্তিত হবে অ্যাসাসিন বা রেঞ্জার ক্লাসে, মেইজ হবে সর্বসেরা বা স্পিরিট মাস্টার এবং প্রিস্ট ক্লাস রূপান্তরিত হবে ক্লেরিক আ চেন্টার ক্লাসে।
গেমের চরিত্রকে বিভিন্ন কাজে পারদর্শী করে নেয়া যাবে যেমন- অস্ত্রবিদ্যা, বর্মবিদ্যা, হস্তশিল্পবিদ্যা, সেলাইবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ও রান্না শিক্ষা। সব ধরনের কাজ শেখানোর সুযোগ রয়েছে তবে ছয়টি থেকে মাত্র দুটিতে পারদর্শী হবার সুযোগ রয়েছে। গেমের আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে ছয়জন আলাদা খেলোয়াড় একত্রে মিলে শক্তিশালী শত্রুকে বধ করতে পারবে এবং টিম আকারে খেলতে পারবে। খেলোয়াড়কে নিয়ে কিছু কিছু ফ্লাইং জোনে ওড়া যাবে কিছু সময়ের জন্য। তবে উড্ডয়ন ক্ষমতা ও সময় বাড়িয়ে নেয়া যাবে। গেমারকে তিন ধরনের কাজ বা কোয়েস্ট সমাধান করতে হবে। এগুলো হচ্ছে- অর্ডিনারি কোয়েস্ট, ক্যাম্পেইন কোয়েস্ট ও ওয়ার্ক অর্ডার। অর্ডিনারি কোয়েস্টগুলো সম্পন্ন করতে হবে বিভিন্ন পুরস্কার লাভের আশায়। ক্যাম্পেইন কোয়েস্টগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে গেমের কাহিনী এগিয়ে যাবে। ওয়ার্ক অর্ডারগুলো সম্পন্ন করা হলে প্লেয়ারের ক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়বে।
গেমের গ্রাফিক্সের বাহার দারুণ চমৎকার এবং এতটাই মনোরম যা গেমারকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পিসির সামনে বসিয়ে রাখবে। গেমের গ্রাফিক্স ও সাউন্ড ইফেক্ট কিছু ক্ষেত্রে ওয়ার অব ওয়ারক্রাফটকেও হার মানায়। বেশ উপভোগ্য গেমপ্লে ও রোমাঞ্চকর অভিযানে ভরপুর গেমটি বাইরের দেশের মতো আমাদের দেশের গেমারদের মাঝেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই গেমটি সংগ্রহ করে অনলাইনে মেতে উঠুন কাল্পনিক এক জগতে বিচরণ করার আনন্দে।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট
প্রসেসর : পেন্টিয়াম ৪, ২.৮ গিগাহার্টজ
মেমরি : ১ গিগাবাইট
ভিডিও : ১২৮ মেগাবাইট (জিফোর্স ৫৯০০ আলট্রা/এটিআই এক্স৭০০)
হার্ডডিস্ক স্পেস : ১৫ গিগাবাইট
ইন্টারনেট স্পিড : ১২৮ কিলোবিট/সেকেন্ড
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com