গত সংখ্যায় স্ক্যান-লাইন রেন্ডারিং অর্থাৎ রেন্ডারিংয়ের ৩য় ধাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। চলতি সংখ্যায় মেন্টাল-রে রেন্ডারিংয়ের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
চিত্র-০১
চিত্র-০২
চিত্র-০৩
১ম ধাপ
যারা ম্যাক্স-৯-এর পরবর্তী কোনো ভার্সন যেমন ম্যাক্স-২০০৮, ২০০৯ বা ২০১০-এ কাজ করছেন, তারা হয়ত লক্ষ করে থাকবেন মেটিরিয়াল স্লটগুলো ম্যাক্স-৯ বা তার আগের ভার্সনগুলো থেকে ভিন্ন। অনেকের ধারণা, নতুন ভার্সন হিসেবে এতে কিছু সংযোজন করা হয়েছে। ধারণাটি ভূল। মূলত ম্যাক্স-৯ এবং তার আগের ভার্সনগুলোতে বাই-ডিফল্ট হিসেবে স্ক্যান-লাইন বা স্ট্যান্ডার্ড মেটিরিয়ালকে রাখা হয়েছিল আর সর্বোচ্চ ভার্সনগুলোতে বাই-ডিফল্ট হিসেবে Arch & Design মেটিরিয়ালকে সুইচ করা হয়েছে; চিত্র-০১। আপনি ইচ্ছে করলে আগের ভার্সনগুলোতেও অপশনটি অ্যাক্টিভেট করে নিতে পারেন। কাজটি করতে মেইন মেনু>কাস্টোমাইজ>কাস্টম ইউআই অ্যান্ড ডিফল্ট সুইচার লেখাটিতে ক্লিক করুন; চিত্র-০২। এর ফলে ‘ইনিশিয়াল সেটিংস ফর টুল অপশনস অ্যান্ড লে-আউট’ উইন্ডো ওপেন হবে, যার বামের ‘টুল অপশনসের ঘরেও ‘Max’ এবং ডানের ‘ইউআই স্কিমস্’-এর ঘরে ‘ডিফল্ট ইউআই’ চেক করা আছে। এ কারণেই আমরা মেটিরিয়াল এডিটর এবং আরও অনেক টুলসহ ম্যাক্স ইন্টারফেসকে বর্তমান অবস্থায় দেখি। বামের লিস্ট থেকে Max-এর পরিবর্তে Max.Mentalray অপশনকে সিলেক্ট করে দিয়ে সেট বাটনে ক্লিক করলে ম্যাক্সকে রি-স্টার্ট করার জন্য একটি ম্যাসেজ আসবে; চিত্র-০৩। মেসেজটি ওকে করে ম্যাক্স সফটওয়্যারটি একবার রি-স্টার্ট করুন এবং লক্ষ করুন মেটিরিয়ালগুলো আর্ক অ্যান্ড ডিজাইন মেটিরিয়ালে রূপ নিয়েছে। সুতরাং আপনি চাইলেই যেকোনো ভার্সনের ক্ষেত্রে অপশনটিকে এমনটি করে নিতে পারেন। তবে মেন্টাল-রে রেন্ডারিংয়ের জন্য এটা কোনো জরুরি বিষয় নয়। কারণ, রেন্ডারিং অপশনকে স্ক্যান-লাইনের পরিবর্তে মেন্টাল-রে-তে পরিবর্তন করলেই মেন্টাল-রে-র জন্য প্রয়োজনীয় মেটিরিয়ালগুলো ব্যবহার করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
চিত্র-০৪
চিত্র-০৫
২য় ধাপ
মেন্টাল-রে রেন্ডারিং অ্যাসাইন করার আগে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, স্ক্যান-লাইন রেন্ডারিংয়ের তুলনায় মেন্টাল-রে অনেক বেশি সিপিইউ মেমরি ব্যবহার করে। সে কারণে আপনার কমপিউটারের প্রসেসর, র্যা ম এবং এজিপি কিছুটা পাওয়ারফুল বা বেশি থাকবে। চিত্র-৪ এবং চিত্র-৫-এ একই সিনের স্ক্যান-লাইন ও মেন্টাল-রে রেন্ডারিংয়ের সিপিইউ মেমরি ব্যবহারের তুলনামূলক চিত্র দেখানো হয়েছে; চিত্র-০৪, ০৫।
চিত্র-০৬
চিত্র-০৭
৩য় ধাপ
মেন্টাল-রে রেন্ডারিং অ্যাসাইন করার জন্য মেইন মেনু>রেন্ডারিং>রেন্ডারার-এ ক্লিক করে অথবা কিবোর্ডের F10 প্রেস করে ‘রেন্ডারার সিন’ উইন্ডো ওপেন করুন। এর ‘কমন’ ট্যাবের অধীন ‘অ্যাসাইন রেন্ডারার’ রোল-আউটটি এক্সপান্ড করে প্রোডাকশনের ডানের রেডিও বাটনে (চুজ রেন্ডারার) ক্লিক করুন। চুজ রেন্ডারার ডায়ালগ বক্স ওপেন হবে। এখান থেকে ‘মেন্টাল-রে রেন্ডারার’ অপশন সিলেক্ট করে ‘ওকে’ করুন; চিত্র-০৬। সিনে কিছু অবজেক্ট, লাইট ও ক্যামেরা সেট করুন; চিত্র-০৭। সিনটি একবার রেন্ডার করে দেখুন স্ক্যান-লাইন রেন্ডারিং স্টাইল পরিবর্তন হয়ে বাকেট রেন্ডারিংয়ে পরিবর্তন হয়েছে এবং এটিই মেন্টাল-রে রেন্ডারিং।
চিত্র-০৮
৪র্থ ধাপ
এই পর্যায়ে মেন্টাল-রে রেন্ডারিংয়ের বেসিক সেট-আপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। রেন্ডার সিনের ‘রেন্ডারার’ ট্যাবে ক্লিক করুন এবং ওপেন হওয়া বিভিন্ন রোল-আউটের প্যারামিটারগুলো লক্ষ করুন। এখানকার সবগুলো না হলেও বেশিরভাগ প্যারামিটার কন্ট্রোল করেই মূলত ফাইনাল রেন্ডার/আউটপুটের সেটআপ তৈরি করতে হবে; চিত্র-০৮। এখানে বিশেষ কয়েকটি রোল-আউটের বিভিন্ন প্যারামিটার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
স্যাম্পেলিং কোয়ালিটি :
স্যাম্পেলিং মেন্টাল-রে বা অন্যান্য রেন্ডারিংয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার, যার ওপরে রেন্ডারিং টাইম এবং ইমেজ কোয়ালিটি নির্ভর করে। সঠিকভাবে স্যাম্পেলিং করতে জানলেই সঠিকভাবে রেন্ডার টাইম কন্ট্রোল এবং ভালো ইমেজ পাওয়া সহজ হয়ে যায়। সুতরাং স্যাম্পেলিংয়ের অন্তত প্রাথমিক ধারণা এবং কৌশল জেনে রাখা খুবই জরুরি।
স্যাম্পেলিং :
মূলত ক্যামেরা অথবা চোখের আলোকরশ্মি প্রক্ষেপণ এবং অবজেক্টগুলোর বিবিধ রংয়ের পিক্সেলকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সেগুলো থেকে শেডিং অনুযায়ী পিক্সেলকে কালেকশন করে ফাইনাল ইমেজের জন্য একত্রিত করাই স্যাম্পেলিং। সুতরাং স্যাম্পেলিংয়ের সংখ্যা ও রেগুলোর ডেপ্থের পরিমাণের ওপরে রেন্ডারিং টাইম ও ইমেজের কোয়ালিটি নির্ভর করে। শেডারভেদে রেন্ডারিং টাইম কমবেশি হয়। যেমন- ভলিউমেট্রিক, ট্রান্সপারেন্ট, রিফ্লেকটিভ বা রিফ্রাকশনাল শেডারগুলোর ক্ষেত্রে রে-কালেকশন প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় ক্যালকুলেশন টাইম বেড়ে যায়। সুতরাং সিনের অবজেক্ট, ইফেক্ট ও মেটিরিয়ালের ওপর লক্ষ রেখে ‘স্যাম্পলপার পিক্সেলে’র ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ মান নির্ধারণ করতে হবে। বাই-ডিফল্ট এই মান ন্যূনতম = ১/৪ ও সর্বোচ্চ = ৪ দেয়া থাকে। ১টি রে-এর জন্য হিসেবটি এমন ১টি আই রে = ২X২ = ৪। অতএব, ন্যূনতম রেট ১ হলে প্রতি পিক্সেলে রে বা স্যাম্পল সংখ্যা হবে ৪টি, অর্থাৎ একটি পিক্সেলকে সমান চারভাগ করে প্রত্যেকটি থেকে একটি করে রে-কালেকশন করা হবে। রেট যদি ১/৪ বা -১ হয়, তাহলে প্রতি (২X২) বা ৪টি পিক্সেল থেকে ১টি রে সংগ্রহ করা হবে। হিসেবটি জটিল মনে হতে পারে, তাই পাঠকদের সুবিধার্থে একটি সংক্ষিপ্ত চার্ট দেয়া হলো :
স্যাম্পল প্রতি পিক্সেলে আই-রে
-২ অথবা ১/১৬ প্রতি ১৬ পিক্সেল রে-তে ১টি স্যাম্পল
-১ অথবা ১/৪ প্রতি ৪ পিক্সেল রে-তে ১টি স্যাম্পল
০ প্রতি ১ পিক্সেল রে-তে ১টি স্যাম্পল
১ প্রতি ১ পিক্সেল রে-তে ৪টি স্যাম্পল
২ প্রতি ১ পিক্সেল রে-তে ১৬টি স্যাম্পল
৩ প্রতি ১ পিক্সেল রে-তে ৬৪টি স্যাম্পল
৪ প্রতি ১ পিক্সেল রে-তে ২৫৬টি স্যাম্পল
চিত্র-০৯
এখন নিশ্চয় বুঝা গেল, প্রতি একক সংখ্যা কমবেশির জন্য ৪ গুণ স্যাম্পল কমবেশি হবে এবং সেই অনুপাতেই ক্যালকুলেশন ও রেন্ডারিং টাইম কমবেশি হবে। ম্যাক্সিমাম রেটের হিসেবও একই রকম। তবে দুটি মানের পার্থক্য অনেকটা ফ্রেম রেটের মতো অর্থাৎ সর্বোচ্চ রেট সব সময়ই ন্যূনতম থেকে বেশি থাকবে এবং একটি মান ফিক্স করার কারণে ন্যূনতম রেট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ রেটের রেঞ্জ পর্যন্ত মেন্টাল-রে রেন্ডারিং ইঞ্জিন ক্যালকুলেশন করবে। রেট বেঁধে দেয়ায় সে অসীম সময় ব্যয় করার সুযোগ পাবে না। যেমন- ন্যূনতম স্যাম্পল রেট ১/৪, সর্বোচ্চ রেট ৪; ফলে একটি পয়েন্ট এবং তার চারপাশের প্রতি ১৬টি পিক্সেল থেকে সর্বনিম্ন ১টি এবং সর্বোচ্চ ১টি পিক্সেল থেকে ২৫৬টি স্যাম্পল ক্যালকুলেট করার সুযোগ পাবে; চিত্র -০৯।
ফিল্টার :
বিভিন্ন পিক্সেল থেকে সংগৃহীত স্যাম্পলগুলোকে মিক্সিং ও এভারেজ করার জন্য কয়েক অপশনে ফিল্টার করার ব্যবস্থা রয়েছে। অপশনের ভিন্নতার কারণে আপনার ইমেজ ব্লারি বা সার্পার হতে পারে। আই-রেকে স্যাম্পল কালেকশনের জন্য অসীম দূরত্বে রান করতে না দেয়া এবং তাদের নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আউট লাইন তৈরির মাধ্যমে বেঁধে রাখা ফিল্টারিংয়ের অন্যতম কাজ। ম্যাক্স-৯-এ মোট পাঁচ ধরনের ফিল্টার ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে-
a. Box b. Gauss c. Triangle d. Mitchell e. Lanczos
a. Box :
সরল গাণিতিক নিয়মে স্যাম্পল কালেকশন করে দ্রুত রেন্ডার করে এবং বেশি পরিমাণ ব্লারি ইফেক্ট তৈরি করে। সুতরাং ফাইন ডিটেইল অনেকটা এড়িয়ে যায়। এনিমেশনের ক্ষেত্রে ফিল্টারটির ব্যবহার বেশি।
b. Gauss :
মধ্যমমানের সফট ইমেজ তৈরি করে দ্রুত রেন্ডার করে।
c. Triangle :
বক্সের থেকে সার্প ইমেজ তৈরি করে কিন্তু সময় বেশি নেয়। পিক্সেলের সেন্টার স্যাম্পল কম পরিমাণ কালেকশন করে।
d. Mitchell :
সময় বেশি নিলেও সবচেয়ে উন্নত ও রিয়েলিস্টিক ইমেজ আউটপুট দেয়। কোনো ব্লারি ইফেক্ট থাকে না।
চিত্র-১০
চিত্র-১১
e. Lanczos :
বেশ ধীরগতির ফিল্টার কিন্তু অনেক শার্প ইমেজ আউটপুট দিতে পারে। চিত্র-১০, ১১।
চিত্র-১২
সাধারণত জটিল ফিল্টারিংয়ের জন্য বড় সাইজের ফিল্টারের প্রয়োজন হয়। যেমন- রিফ্লেকশন বা রিফ্রাকশনের ক্ষেত্রে কয়েক স্তরের রে-বাউন্সকে ক্যালকুলেট করার জন্য Lanczos বা Mitchell ফিল্টার ব্যবহার করা উচিত, কারণ এদের উভয়ের ফিল্টার সাইজ ৪ মাত্রার। এমন ক্ষেত্রে যদি আপনি ১ বা ২ মাত্রার (Box বা Triangle) ফিল্টার ব্যবহার করেন, তাহলে আশানুরূপ ফল পাবেন না; চিত্র-১২। (বাকি অংশ পরবর্তী সংখ্যায়)।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : tanku3da@yahoo.com