গেমের জগতে যাদের নিত্য বিচরণ তারা ‘দ্য সিমস’ গেম সিরিজের নাম শুনেননি তা অবিশ্বাস্য। গেমের জগতে অসাধারন ও ব্যতিক্রমধর্মী বিনোদনের উৎস হচ্ছে এ সিরিজের গেমগুলো। এ স্ট্রাটেজিক লাইফ সিমুলেশন গেমের সূচনা করেছিলেন গেম ডিজাইনার উইল রাইট। গেমের পাবলিশার হচ্ছে ম্যাক্সিস এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক আর্টস। এ সিরিজের প্রথম গেমটি গেমের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত গেম এবং ২০০০ সালের সেরা গেমের মর্যাদা পেয়েছিল। মানবজীবনের- দৈনন্দিন কার্যকলাপ, কথোপকথন, তাদের ইচ্ছা, অনুভূতি, ভালো লাগা, মন্দ লাগা, সুখ-দুঃখ, পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদি তুলে ধরা হয়েছে একদল ভার্চুয়াল মানব-মানবীর চরিত্রের মাধ্যমে এই সিরিজের গেমগুলোতে।
গেমটি এতই জনপ্রিয় হয়েছিলো যে প্রতি বছরে প্রায় ৩টি করে এক্সপানশন বের করতে হয়েছে গেম নির্মাতাদের। দ্য সিমসের এক্সপানশন ছিলো ৭টি, এগুলো হলো- দ্য সিমস লিভিং লার্জ, হাউজ পার্টি, হট ডেট, ভেকেশন, আনলিশসড, সুপারস্টার ও ম্যাকিং ম্যাজিক। এই সিরিজের সাফল্যের পরে ২০০৪ সালে বের হলো দ্য সিমস ২। সিরিজের আটটি এক্সপানশন বের হয়েছে, এগুলো হচ্ছে- ইউনিভার্সিটি, নাইটলাইফ, ওপেন ফর বিজনেজ, পেটস, সিজনস, বন ভয়েজ, ফ্রী টাইম এবং অ্যাপার্টমেন্ট লাইফ। দ্য সিমস ২এর অন্তর্ভুক্ত স্টাফ প্যাক নামে আরো কয়েকটি সিরিজ বের হয়েছে এগুলোর মধ্যে হলিডে পার্টি প্যাক, ফ্যামিলি ফান স্টাফ, গ্লামার লাইফ স্টাফ, হ্যাপি হলিডে স্টাফ, সেলেব্রেশন স্টাফ, টিন স্টাইল স্টাফ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ২০০৯ সালে বের হয়েছে গেমের তৃতীয় পর্ব যার নাম দ্য সিমস ৩। এখন পর্যন্ত বের হওয়া নতুন এ সিরিজের গেমগুলো হচ্ছে- ওয়ার্ল্ড অ্যাডভেঞ্চার, অ্যামবিশন, লেট নাইট, জেরেশনস ইত্যাদি। এছাড়াও দ্য সিমস লাইফ স্টোরিস নামে গেম নির্মাতারা লাইফ স্টোরিস, পেট স্টোরিস ও কাস্টএওয়ে স্টোরিস নামে তিনটি পর্ব রিলিজ করেছে। মাইসিমস নামের আরেকটি সিরিজেও বের হয়েছে বেশ কিছু গেমস, যার মধ্যে রয়েছে-মাইসিমস, কিংডম, পার্টি, রেসিং, এজেন্ট, স্কাই হিরোস ও মেডিয়েভেল। অনলাইন ও কনসোল ভিত্তিক গেম হিসেবেও রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। অনলাইন গেমস হিসেবে দুটি ভার্সনের দেখা মেলে, প্রথমটি হচ্ছে দ্য সিমস অনলাইন ও অপরটি কার্নিভালস।
প্রতিটি এক্সপানশন প্যাকে পূর্ববর্তী পর্বের ত্রুটি সংশোধন ও কিছুটা পরিবর্তন করে তা বাজারে ছাড়া হয়। বলতে গেলে সবগুলো খেলার ধাঁচ একই রকমের শুধু কিছু অপশন ও সুযোগ-সুবিধা বেশি থাকে নতুন গেম হিসেবে। এ সিরিজের গেমগুলো খেলার সময় তার মাঝে হারিয়ে যাবেন নিবিড়ভাবে কারণ, মনে হবে যে আপনি নিজেই গেমটির চরিত্র। এটি বানানো হয়েছে মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রার দিক তুলে ধরে, তাই এই গেমে পাওয়া যায় অন্যরকম এক স্বাদ ও অনুভূতি, যা অন্য কোনো গেমে পাওয়া যায় না। গেমগুলো বেশ ধৈর্য সহকারে খেলতে হয় তাই অনেকে তা পছন্দ করেন না। বিশেষ করে যারা অ্যাকশন গেমপ্রেমী। অনেকে বলেন এ গেম মেয়েলি, এটি মেয়েদের খেলা। কিন্তু গেমটি খেললে জীবনযাত্রার ধরন সম্পর্কে অনেক কিছু শেখা যায় যা গেমটির একটি ভালো দিক।
প্রথম গেমের সবগুলো এক্সপানশন একই রকমের গ্রাফিক্সের ছিলো পরে তা উন্নত করা হয়। দ্য সিমস ৩ সিরিজের গেমগুলো বেশ ভালোমানের গ্রাফিক্সযুক্ত। গেমগুলো খেলার জন্য তেম হাই কনফিগারেশনের পিসির দরকার হয় না। নতুন পর্বগুলো খেলার জন্য মাঝারি কনফিগারেশনের পিসির দরকার পড়বে। যারা সিমস ভক্ত তাদের কথা না হয় নাই বললাম, যারা কখনো এই সিরিজের গেম খেলেননি কিন্তু নাম শুনেছেন তারাও খেলে দেখতে পারেন, ভালো লাগবে আশা করি।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com