প্রায় সবার ঘরে কমপিউটার কয়েকবছর আগে চিন্তা করা যেতো না। তখন কি আর গেমাররা চুপ করে ঘরে বসে থাকতো? তারা ভিড় করতো গেমসের দোকানগুলোতে। আর্কেড গেমিং বক্সগুলোতে ফাইটিং গেমগুলো খেলার মজাই ছিলো আলাদা। কারণ তখন অনেক প্রতিযোগীর সাথে মোকাবেলা করার সুযোগ ছিলো। নানা রকমের গেমারের মিলনমেলা ছিলো গেমসের দোকানগুলো। আবার অনেকে দোকানের ভিড়-ভাট্টায় না গিয়ে নির্বিঘ্নে ঘরে বসে টিভিতে কনসোল লাগিয়ে এসব গেমের মজা নিতো। ফাইটিং গেমগুলোর মধ্যে স্ট্রিট ফাইটার, ডাবল ড্রাগন, কিং অব ফাইটারস, আর্ট অব ফাইটিং, ফ্যাটাল ফুরি, সামুরাই শোডাউন ইত্যাদি গেম বেশ জনপ্রিয় ছিলো এবং এখনো আছে। যাদের ঘরে কমপিউটার আছে তারা আর্কেড ধাঁচের সে গেমগুলো ইমুলেটর সফটওয়্যারের মাধ্যমে পিসিতে খেলতে পারে। তাই গেমসের দোকানগুলোতে আগের মতো ভিড় তেমন একটা দেখা যায় না। আর্কেড গেমভক্তদের জন্য সুখবর হচ্ছে এই যে, জনপ্রিয় আর্কেড ফাইটিং গেম কিং অব ফাইটারসের ১৩তম পর্ব বের করা হয়েছে পিসির জন্য। এ গেম সিরিজের কাহিনির ওপরে নির্মিত হয়েছে একটি মুভি যার নাম কিং অব ফাইটারস। তবে মুভিটি তেমন একটা নাম কামাতে পারেনি কারণ গেম ক্যারেক্টারগুলোর সাথে মিল রেখে কাস্টিং করা হয়নি। তাই কে কোন ক্যারেক্টার তা নাম শুনে বুঝতে হয়েছে, ড্রেসআপ দেখে তা বোঝা যায়নি।
আর্কেড গেমগুলো ইমুলেটর দিয়ে পিসিতে চালানোর মূল সমস্যা হচ্ছে লো রেজ্যুলেশন ও লো কোয়ালিটি সাউন্ড। ইমুলেটরের সাহায্যে গেমগুলো বেশ ভালোই চলে তবে ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লে খুবই বাজে। কিং অব ফাইটারের জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা যাতে আরো ভালোভাবে গেম উপভোগ করতে পারে সেজন্য তা পিসির জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। এতে গেমের গ্রাফিক্স ও সাউন্ড কোয়ালিটি অনেক ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। গেমের কাহিনী পূর্বের গেমের সাথে মিল রেখেই বানানো হয়েছে। নতুন এ গেমে পুরনো গেমের থেকে অনেকগুলো অপশন বাদ দেয়া হয়েছে, যেমন- গার্ড অ্যাটাক সিস্টেম, ক্রিটিক্যাল কাউন্টার সিস্টেম, ক্ল্যাশ সিস্টেম ও ক্যামেরা জুমিং। নতুন সংযোজনের মধ্যে রয়েছে ইএক্স স্পেশ্যাল মুভ, ডাবল বার পাওয়ার গজ, ইএক্স ডেস্পেরাশন মুভ, হাইপার ডাইভ মোড ইত্যাদি। গেমটিতে ৯৭, ২০০২ ও ২০০৩ সালে বের হওয়া গেমের কিছু বৈশিষ্ট্যও যোগ করা হয়েছে যা এ সিরিজের গেমারদের কাছে বেশ ভালো লাগবে। কিছু প্লেয়ারের মারামারির কৌশল বদল করা হয়েছে এবং যোগ করা হয়েছে নতুন কিছু কম্বো। এবারের গেমের মেইন ভিলেন হিসেবে থাকবে অ্যাশ। আগের গেমের ভিলেন মুকাইকে মেরে তার পাওয়ার নিয়ে গেমারের সাথে মোকাবিলা করবে এলিজাবেথ। গেমারের কাছে পরাজয়ের পর এলিজাবেথের পাওয়ার শুষে নিয়ে অ্যাশ আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং পরিণত হবে এক দানবে। যার মোকাবিলা করতে হবে গেমারকে তার সিঙ্গেল ক্যারেক্টার বা তিনজনের গ্রুপ ক্যারেক্টার নিয়ে। গেমে বেশ কিছু ক্যারেক্টারের মধ্যে পোশাক আশাকের কিছুটা পরিবর্তন দেখতে পাবেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে ক্যারেক্টারের জন্য প্রায় ১০টি আলাদা রঙের পোশাক-আশাক সিলেক্ট করে নেয়া যাবে গেম শুরুর আগে।
সেই ৯৪ সাল থেকে যাত্রা শুরু করা গেমের ডেভেলপার ও পাবলিশার হিসেবে এখনো কাজ করে যাচ্ছে এসএনকে প্লেমোর নামের কোম্পানি। গেমটি এক্সপি সার্ভিস প্যাক ২ বা ৩-এ চলার উপযোগী। উইন্ডোজ সেভেনে গেমটি কিছুটা স্লো চলে। গেমটি চালাতে লাগবে ২.০ গিগাহার্টজের ডুয়াল কোরের প্রসেসর, ভিজিএ (৬৪০ বাই ৪৮০) মোড বা এইচডিটিভি (১২৮০ বাই ৭২০) মোডের মনিটর, ১ গিগাবাইট ডিডিআর২ র্যা ম, এটিআই এক্স১৬০০ সিরিজ বা এনভিডিয়া জিফোর্স ৭০০০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড ও প্রায় ২ গিগাবাইটের মতো হার্ডডিস্ক স্পেস।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com