সেকশন ৮- প্রেজ্যুডিস হচ্ছে ২০০৯ সালে বের হওয়া সেকশন ৮ নামের ফাস্ট পারশন শূটিং গেমের সিক্যুয়াল। গেমটি একাধারে ডেভেলপ ও পাবলিশ করেছে টাইমগেট স্টুডিওস। গেমটি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে অন্যতম শক্তিশালী গেম ইঞ্জিন আনরিয়েল ইঞ্জিন ৩। পুরনো গেমের সিক্যুয়াল হিসেবে গেমে তেমন একটা নতুনত্ব নেই। তাই অনেকের কাছে গেমটি কিছুটা নিরস মনে হতে পারে।
আগের গেমের মতোই এই গেমেও প্লেয়ারকে অত্যাধুনিক ও পাওয়ারফুল ড্রেস বা আর্মর স্যুট পরে গেম খেলতে হবে। স্যুটের পাওয়ারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এর ওভারড্রাইভ মোড, এটি ব্যবহার করে অতিমানবীয় দ্রুততার সাথে চলাফেরা করা যাবে। এছাড়া জেট প্যাক ব্যবহার করে মাটি থেকে অনেক উচ্চতায় লাফিয়ে ওঠা যাবে। গেমের আর্মর স্যুটটির সাথে ক্রাইসিসের স্যুটের তুলনা করা যেতে পারে। তবে এ ভারি আর্মর স্যুট পরিহিত অবস্থায় গেমারকে রোবটের মতো দেখায়। গেমে গেমার যুদ্ধক্ষেত্রের কোনো নির্দিষ্ট অংশ থেকে খেলা শুরু করতে চাইলে সেটি করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গেমার যে স্থানে ল্যান্ড করতে ইচ্ছুক সে জায়গা সিলেক্ট করে দিলে অর্বিটাল ড্রপশিপ থেকে প্লেয়ারকে সে স্থানের ১৫০০০ ফুট ওপর থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। আকাশ থেকে নামার সময় নিচে থাকা শত্রুপক্ষের কেউ গুলি করলে সেটি কাটিয়ে শত্রুর ঘাড়ের ওপর পরে তাকে কাবু করা যাবে।
সিঙ্গেল প্লেয়ার মোডে গেমারকে অ্যালেক্স কোর্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অ্যালেক্সকে নিয়ে গেমারকে ৮টি আলাদা মিশন খেলতে হবে ৪টি আলাদা পরিবেশে। মাল্টিপ্লেয়ার মোডে একে অপরকে সাহায্য করে না খেললে শত্রুপক্ষকে হারানো সম্ভব হবে না। মাল্টিপ্লেয়ার মোডে বেশ কয়েক ধরনের গেমের মধ্যে প্রায় ৩২ জন গেমার একসাথে খেলতে পারবে। গেম খেলার সাথে সাথে গেমার অর্থ ও রিকুইজিশন পয়েন্ট পেতে থাকবে। সেগুলোর বিনিময়ে বিভিন্ন আইটেম কিনে নেয়া যাবে, এদের মধ্যে ট্যাঙ্ক, বাইক, মিনি-গান ডিফেন্স টাওয়ার, এন্টি-এয়ার ডিফেন্স টাওয়ার, সাপ্লাই ডেপো ইত্যাদি অন্যতম। এছাড়া প্লেয়ার তার সাথে নেয়ার জন্য প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি অস্ত্রশস্ত্র নিজের ইচ্ছেমতো পছন্দ করে নিতে পারবে। অস্ত্রের তালিকার মধ্যে রয়েছে অ্যাসল্ট রাইফেল, পিস্তল, মেশিনগান, শটগান, মর্টার লঞ্চার, পালস ক্যানন, স্নাইপার রাইফেল, গ্রেনেড, বিস্ফোরক, ছুরি ইত্যাদি। গেমের পরিবেশ, কাটসিন মুভির গ্রাফিক্স, শব্দশৈলী সবকিছুই বেশ প্রাণবন্ত। গেমটি ফাস্ট পারসন শূটিং গেম না হয়ে থার্ড পারসন শূটিং হলে আরও বেশি ভালো লাগত। গেমের যানবাহন ও অস্ত্রশস্ত্র সবকিছুই বিশাল ও ভারি এবং অত্যাধুনিক। তাই গেমটি খেলার সময় মনে হবে সায়েন্স ফিকশন কোনো মুভি দেখছেন। গেমের কাহিনী তেমন ভালো নয়, তবে গেমপ্লের জোরে গেমটি উতরে গেছে। সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস বা মুভি যাদের পছন্দ তারা বেশ উপভোগ করবেন গেমটি।
গেমটির গ্রাফিক্স ও সাউন্ড কোয়ালিটি বেশ ভালোমানের তবুও গেমটি চালানোর জন্য পিসি কনফিগারেশন চাওয়া হয়েছে মাঝারি মানের। গেমটি চালাতে লাগবে সিঙ্গেল কোরের ৩.০ গিগাহার্টজের প্রসেসর বা ডুয়াল কোরের ২.০ গিগাহার্টজের প্রসেসর, এক্সপি/ভিসতা/সেভেনের আপডেটেড সার্ভিস প্যাক, এনভিডিয়া জিফোর্স ৭৮০০ বা এটিআই রাডেওন এক্স১৯০০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড, ২ গিগাবাইট র্যা.ম এবং ৫.৫ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস। গেমের গ্রাফিক্সের পুরো স্বাদ উপভোগ করতে হলে আরও ভালো সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড ও ভালোমানের প্রসেসর ব্যবহার করতে হবে। কারণ গেমটিতে অ্যান্টি-অ্যালাইসিং অপশন ও রেজ্যুলেশন যত বাড়ানো যাবে গ্রাফিক্সে প্রাণের ছোঁয়া তত বেড়ে যাবে। আর এ সুবিধা পাওয়ার জন্য হাই কনফিগারেশনের পিসি ব্যবহার করা ছাড়া কোনো গতি নেই।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com