মধ্যযুগীয় পটভূমিতে নির্মিত দ্য ফাস্ট টেম্পলার নামের গেমটি অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার ধাঁচের গেম। গেমের পটভূমি হচ্ছে ক্রুসেডের প্রথম যুদ্ধ। গেমের মূল বিষয়বস্ত্ত রচিত হয়েছে নাইটস টেম্পলারদের পক্ষে। গেমের কাহিনী গড়ে উঠেছে দুটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে। একজন হচ্ছে ফ্রেঞ্চ টেম্পলার সেলিয়ান ডি অ্যারেস্টাইড এবং তার সহযোগী মেরি ডি ইবেলিন নামের এক উচ্চবংশীয় ভদ্রমহিলা। গেমটিতে তাদের নিয়ে ভেদ করতে হবে রহস্যের মায়াজালে আচ্ছন্ন টেম্পলার অর্ডারের গুপ্ত কার্যক্রম। চার্চে ভেতরে ভালো সেজে বসে থাকা উপাসকরা কি ষড়যন্ত্র ফাঁদছে তা ধীরে ধীরে উন্মোচন করতে হবে নবীন নাইট খেতাবপ্রাপ্ত সেলিয়ানকে নিয়ে। সেই সাথে আরও উদঘাটন করতে হবে হোলি গ্রেইলের রহস্য। গেমটি সিঙ্গেল প্লেয়ার ও কো-অপ উভয় মোডেই খেলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সিঙ্গেল প্লেয়ার মোডে খেলার সময় প্লেয়ার বদল করে খেলার সুযোগ রয়েছে। কীবোর্ড ও গেমপ্যাডের সাহায্যে দুজন একসাথে খেলা যাবে এ গেমটি। একা খেলার সময় গেমের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে অপর ক্যারেক্টারটি পরিচালিত হবে। কখন গেমটির সাথে অ্যাসাসিন’স ক্রিড গেমের বেশ মিল রয়েছে। কারণ অ্যাসাসিন’স ক্রিডে যেসব স্থানের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে সেসব স্থানের দেখা মিলবে এ গেমে। অ্যাসাসিন’স ক্রিডে আততায়ীদের পক্ষে থেকে টেম্পলারদের বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছে এবং এ গেমে গেমারকে টেম্পলার হয়ে আততায়ী ও অন্যদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। অ্যাসাসিন’স ক্রিডে টেম্পলারদের নেতিবাচক চরিত্রে দেখানো হয়েছে, কিন্তু এ গেমে তাদের ইতিবাচক চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
গেমটি ডেভেলপ করেছে হিমিমন্ট গেমস এবং পাবলিশ করেছে ক্যালিপসো মিডিয়া। হিমিমন্ট গেমস বুলগেরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান, যা স্ট্যাটেজিক গেম ইমপেরিয়াম রোমানাম ও ট্রপিকো ৩ নামের গেমের জন্য খ্যাতি পেয়েছে। গেমটি শুধু মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ও এক্সবক্স ৩৬০ প্লাটফর্মের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। গেমে ত্রয়োদশ শতকের ইউরোপীয় ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। প্রায় ২০টি ঐতিহাসিক স্থানের সমন্বয়ে গেমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ইউরোপীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির কথা। চরিত্রগুলোর বেশভূষা ও পরিবেশে খুবই সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুরনো দিনের ছাপ। সেলিয়ানের হাতে শোভা পাবে ঢাল ও তলোয়ার এবং মেরির হাতে ক্রসবো। অস্ত্রের ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে সেলিয়ান মিলি অ্যাটাক বা সামনাসামনি লড়াইয়ে পারদর্শী এবং মেরি দূর থেকে শত্রুকে ঘায়েল করতে পটু। গেমপ্লে টাইম তেমন বেশি নয় মাত্র ৯-১০ ঘণ্টা, তাই খেলতে খেলতে গেমটি কখন শেষ পর্যায়ে চলে আসবে টেরই পাবেন না। তবে গেমের কাহিনী ও কনসেপ্ট বেশ ভালো। গ্রাফিক্স, সাউন্ড ও গেমপ্লে মোটামুটি মানের। মাল্টিপ্লেয়ার মোড বেশ ভালো। গেমের গ্রাফিক্সে আরও কিছুটা পালিশ করা ও সাউন্ডের দিকে আরেকটু নজর দিলে গেমের মান আরও ভালো হতো। সব মিলে গেমটি অ্যাসাসিন’স ক্রিডের কাছাকাছি মজা লাগবে। অ্যাসাসিন’স ক্রিডের প্রথম পর্বের সাথে তুলনা করলে বলতে হয় গেমটি বেশ ভালো, তবে অ্যাসাসিন’স ক্রিডের পরের পর্বগুলোর সাথে তুলনা করলে তা অতটা আহামরি মনে হবে না।
গেমটি উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা বা সেভেন সব ভার্সনেই চালানো যাবে। গেমটি চালাতে লাগবে ইন্টেল কোর টু ডুয়ো ২.০ গিগাহার্টজের প্রসেসর, এক্সপির জন্য ১ গিগাবাইট র্যা ম ও ভিসতা/সেভেনের জন্য ২ গিগাবাইট র্যাপম, ৪ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস ও ২৫৬ মেগাবাইট মেমরির পিক্সেল শেডার ৩.০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড। গ্রাফিক্স কার্ডের বেলায় এনভিডিয়া জিফোর্স ৮০০০ সিরিজ বা এএমডি (এটিআই) রাডেওন এইচডি ৩৮০০ সিরিজ হলে ভালো হয়।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com